স্ট্যানলী পার্ক (কানাডা ভ্রমন-২)

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১১ জুন, ২০১৬, ১২:৩৪:৩২ দুপুর









আজ দুপুরে স্ট্যানলী পার্কে যাবার পরিকল্পনা। কিন্তু সকালে কেউ বোধহয়

ছাতি দিয়ে আকাশের পেট ফুটো করে দিয়েছে। অনবরত বৃষ্টি পড়ছে সেসব ফুটো

দিয়ে। তবে এসব পরোয়া করা লোক আমি না। পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম

জি.পি.এস অনুযায়ী।

সাগরের কিনার ঘেষে পার্কটির অবস্থান। এখানে সাগরের কিনার সমতলে এসে

মিশেছে। স্থানটি খুবই চমৎকার করে গড়ে তোলা হয়েছে। বালুকাময় তীরে বেশ

কিছু ভিন্ন জাতের তালগাছ আছে। এখানে বিকেলে প্রচুর মানুষ আসে ঘুরতে।

সাগরে অংশ এখানে নদীর মত ভেতরে ঢুকেছে। ওপারে পোতাশ্রয়ে বড় বড় জাহাজ

নোঙ্গড় করে আছে। এপাশের সমতল থেকে আস্তে আস্তে পাহাড় শ্রেনী শুরু

হয়েছে। এরকম টিলাময় স্থানসমূহকে কেন্দ্র করেই স্ট্যানলী পার্ক।

প্রবল বৃষ্টির ভেতরই পার্কে প্রবেশ করলাম। পার্কের ভেতর সুন্দর রাস্তা

রয়েছে আর রাস্তার পাশ ধরেই চমৎকার গাছগাছালি,ফুলের বাগান। বিশাল বিশাল

বৃক্ষ এখানে রয়েছে যাদের বয়শ এক'শ বছরের বেশী। পার্কটির বয়সও শত বছরের

বেশী। কিন্তু সমস্যা হল বেশীদূর দেখা যাচ্ছে না বৃষ্টির প্রবলতায়।

তারপরও গাড়ি থেকে দ্রুত নেমে ছবি তুলেই অঅবার ভেতরে প্রবেশ করেছি। এভাবে

ভিজে গেছি কিন্তু যতটুকু সম্ভব দেখেছি। পার্কের কিছু কিছু পয়েন্টে না

থেমে পারা যায় না। একস্থানে এসে দেখলাম উচু কিনার,আর তার ওপাশে সাগর এবং

একটি ঝুলন্ত ব্রিজ চলে গেছে ওপারে। এটা খুব দর্শনীয় ব্রিজ।বৃষ্টিতে অবশ্য ঝাপসা দেখা গেল। আরেক

পয়েন্টে এসে নানান গাছগাছালির সারী তার ওপাশে সমুদ্র। বুঝতে কষ্ট হলনা

যে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে স্থানটির আবেদন অনেক বেশী।

ভর-দুপুরে খাদকের ক্ষুধা লাগবে না তা তো হয়না। অনতিদূরে একটি হালাল

রেস্টুরেন্ট আছে ইন্টারনেটে দেখেছি। সেটাকই টার্গেট করলাম। এই স্থানটির

নাম ভুলে গেছি,তবে এটি ভ্যাঙ্কুভারের একটি উল্লেখযোগ্য শপিং জোন। এখানে

দীর্ঘ রাস্তা জুড়ে নানান শপিংমল এবং নানান সব দোকানপাট। অনেকগুলো

গ্রোসারী দোকান,আর আছে টাটকা সব্জী ও ফলমূল। এখানে কয়েকটা হালাল

রেস্টুরেন্ট দেখলাম। কিন্তু এগুলো মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমদের দোকান। মেনু

দেখে ঠিক করতে পারলাম না যে কি খাব। যতদূর মনে পড়ছে আফগান স্টাইলের

খাবারও ছিলো। ছবি দেখে পছন্দ হলনা।

এই রাস্তায় অনেকক্ষন ধরে ভিজতে ভিজতে হাটলাম। নানান গ্রোসারী দোকানের

খাদ্যদ্রব্য দেখলাম। ফলমূল,শাকসব্জী দেখতে ভালো লাগে। দেশী পরিচিত কিছু

পাওয়া যায় কিনা সেটা খোজাই উদ্দেশ্য। ওরেগন ও এখানে মোটামুটি একই ধরনের

জিনিস দেখলাম। পেটে ক্ষুধা কিন্তু খেলাম না,ওদিকে ভিজে একাকাকার। কারন

ফ্রেজার রোজে পাকিস্থানী রেস্টুরেন্টে টানব। সোজা সেখানে গেলাম এবং মাথা

পর্যন্ত খেলাম।

এখানে বেশ কিছু দেশী গ্রোসারী দোকানে কৈ,শিং,ইলিশ,কাচকি মাছ বরফজাত অবস্থায় বিক্রী হচ্ছে দেখলাম। অনেক দূর হয়ে যায় তাই কিনলাম না। তবে কালো জাতের ছোলা কিনলাম,ছোট দানা। এটার ঘুগনি দারুন।

এলাকায় কিছু ছোট ছোট সুন্দর পার্ক আছে সেখানে হাটাহাটি করলাম। এরপর গেলাম ডাউনটাউন, খুব সুন্দর এটি। উচু উচু বিশাল ভবন দাড়িয়ে আছে। রাস্তাগুলো সরু কিন্তু খুব পরিচ্ছন্ন্। রাস্তায় থামার অবকাশ পেলাম না,কারন অফিস ছুটির সময় রাস্তায় গাড়ি আর গাড়ি। আবার বেশীরভাগ রাস্তায়ই মানুষ গাড়ি পার্ক করে রেখেছে,ফলে রাস্তা আরও সরু হয়ে পড়েছে। চারিদিকে ঠাই নেই ঠাই নেই অবস্থা। সোজা চলে গেলাম শহরের শেষ অংশে। এখানে সাগরের প্রান্তভাগ এসে মিশেছে। শত শত ইয়ট ও নানান জাতের নৌযান নোঙ্গর করে রাখা দেখলাম। কোনো কোনোটার দাম মিলিয়ন ডলারের উপর। গৃষ্মে ধনীরা এটাতে সময় কাটায়। তবে বেশীরভাগ মানুষই সাধারণ কর্মজীবী,যাদের মোটামুটি বেশ চলে যায়।

এই স্থানটি আমার বেশ দারুন লাগল। রাতে হাজার হাজার বাতি জ্বলতে থাকে। সে সময় খুব দারুন লাগে। একটু হাটাহাটি করলাম কিন্তু পেটফুটো আকাশের কবলে পড়ে দৌড় দিতে হল। আগামী কাল ভিক্টোরিয়া আইল্যান্ড...এটাই মূল আকর্ষণ .....

বিষয়: বিবিধ

১৫৪১ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

371688
১১ জুন ২০১৬ দুপুর ১২:৫৫
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : ভালো লাগলো আপনার ভ্রমন সংক্রান্ত লিখাটি, শেয়ার করার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
১২ জুন ২০১৬ রাত ১২:০৬
308494
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
371706
১১ জুন ২০১৬ দুপুর ০২:৩৪
আবু জান্নাত লিখেছেন : সফরের চেয়ে কিন্তু খাবারের বর্ণনাই বেশি দেখা যাচ্ছে। লিখতে থাকুন।
১২ জুন ২০১৬ রাত ১২:০৭
308495
দ্য স্লেভ লিখেছেন : খাবারের বর্ননা না দিলে লোকে বলে খাওয়ার কথা নেই কেনো ??? Happy
371710
১১ জুন ২০১৬ বিকাল ০৪:২৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আরবি খাবার তো ভালই শুনছি।
১২ জুন ২০১৬ রাত ১২:০৮
308496
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হ্যা অঅমি খেয়েছি। তবে মশলা একটু কম দেয়।
371718
১১ জুন ২০১৬ বিকাল ০৫:০৫
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু সুহৃদ ছোট ভাইয়া।

স্ট্যানলী পার্কের ভ্রমণ কাহিনী অনেক সুন্দর হয়েছে।

অত্যন্ত প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপন করেছেন। মাশাআল্লাহ।

রমযানে এতো লোভনীয় খাবারের বর্ণনা?
১২ জুন ২০১৬ রাত ১২:০৯
308497
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জি সবটা দেইনি..কারন তাইলে তো আপনার রোজা হালকা হয়ে তুলোর মত নাকের কাছে ভাসতে থাকবে। তবে রমজানে খাবারের স্বাদ বেশী লাগে Happy
371729
১১ জুন ২০১৬ রাত ০৮:১১
শেখের পোলা লিখেছেন : ভাল লাগল। ভিক্টোরিয়া গেলে বুচার্ড গার্ডেনে অবশ্যই গিয়ে থাকবেন। ছবি চাই।
চুপি চুপি বলি গা দিয়ে পাকিস্তানী খাবারের গন্ধ বেরুচ্ছে। ওটা অপরাধ। ভাল করে ব্লীচ দিয়ে গোসল করবেন। কথা হবে।ধন্যবাদ।
১২ জুন ২০১৬ রাত ১২:১০
308498
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জি বুচার্ট গার্ডেনে গেছিলাম...অসাধারন স্থান। আর ধরেন আমি পাকিস্থানী,,,,,কেউ কিছু পারলে করে নিক Tongue Tongue
371755
১২ জুন ২০১৬ রাত ০৩:৩০
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম।

ভালো লাগলো ভ্রমণ কাহিনী। শুকরিয়া।
১২ জুন ২০১৬ রাত ১০:৩৬
308549
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ওয়া আলাইকুম আস সালাম। পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ
371786
১২ জুন ২০১৬ বিকাল ০৫:৪১
আফরা লিখেছেন : যত্তসব খাদক মার্কা লিখা । সবাই তো আপনার লিখা পছন্দ করে আমি না করলেও সমস্যা নেহি !
১২ জুন ২০১৬ রাত ১০:৩৭
308550
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হুম পছন্দ তো করবেই কারন সবাই খায়,আপনি ছাড়া। আপনার তো আবার খাওয়া দাওয়া পছন্দ নেহী

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File