আমাদের মোহাম্মদ আলী
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৫ জুন, ২০১৬, ০৯:৫৭:৪৫ সকাল
পৃথিবীতে বক্সিংয়ে বহু খেলোয়াড় এসেছিলো। তাদের খেতাবও অনেক,কিন্তু তারা সাধারন জন মানুষের অন্তরে স্থান করে নিতে পারেনি। কারন শুধু খেলার কৌশলে অন্যের অন্তরে স্থান পাওয়া যায়না। খেলোয়াড়ের চাইতে প্রকৃত মানুষ হতে হয়। মোহাম্মদ আলী ছিলেন সত্য প্রকাশে এক অনুকরনীয় আদর্শ। তিনি যা বিশ্বাস করতেন,তা প্রকাশ করতে ভয় পেতেন না। খ্যাতির চূড়ায় বসে হতাশ হয়ে যখন তিনি ইসলামকে আলিঙ্গন করে সত্য খুজে পেলেন,সেদিন থেকে তার জীবনে প্রকৃত পরিবর্তন সূচিত হয়। প্রকাশে তিনি তার বিশ্বাস নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে শুরু করেন এবং নানান বক্তব্যের মাঝেই নাস্তিকদেরকে চ্যালেঞ্জ করেন। এসংক্রান্ত ভিডিও রয়েছে অনলাইনে। তিনি চরম সাহসীকতার পরিচয় দেন ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ না নিয়ে। মার্কিন সরকার তার সর্বোচ্চ হওয়ার খেতাব কেড়ে নেয়। তিনি রাগে ক্ষোভে তার পদক পানিতে ছুড়ে ফেলেন। তার বক্সিংএর লাইসেন্স বাতিল করা হয়। আদালতে তিনি বলেছিলেন-"আমার ধর্ম বিশ্বাস আমাকে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো যুদ্ধে অংশ নেওয়া সমর্থন করেনা"। ...অনেক পরে অবশ্য তাকে সব খেতাব ফেরৎ দেওয়া হয় এবং তিনি পৃথিবীবাসীর সামনে একটি আইকনে পরিনত হন।
মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি ছিলেন স্বোচ্চার এক ব্যক্তি। জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে ছিলেন দূর্দদমনীয়। তার অতি উচ্চ স্তরের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তাকে পৃথিবীবাসীর কাছে অধিক সম্মানিত করেছে। তাই বক্সিং না বুঝলেও মোহাম্মদ আলীকে মানুষ চিনেছে। তীক্ষ্ণ মেধার এই লোকটির বক্তৃতার ধরন ও বক্তব্যের বিষয় মানুষকে চিন্তা করতে শিখিয়েছে। এক অসাধারন ব্যক্তি তিনি,যিনি বক্সিংএর ক্ষেত্রে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ খেতাব পেয়েও খেলার উর্ধ্বের এক অসাধারন দৃঢ়চেতা ব্যক্তিত্ব হিসেবে ইতিহাসে নিজের অবস্থান পোক্ত করেছেন। গতকাল এই মহান ব্যক্তি তার রবের কাছে পৌছে গেছেন।তিনি বলেন,
"আমি সিগারেট না খেলেও এক বাক্স দিয়াশলাই রাখি পকেটে। আমার পাপের ইচ্ছা প্রবল হলে আমি একটি কাঠি জ্বালি আর তার উপর হাত রেখে ভাবি, একটি কাঠির আগুনের তাপ সহ্য করতে পারিনা আমি, তাহলে জাহান্নামের আগুন কিভাবে সহ্য করব !!!"
তার প্রত্যেকটি বানী মানুষের অন্তরে আলোড়ন তৈরী করে। এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব তিনি।
================================
মোহাম্মাদ আলী হচ্ছেন সাবেক মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা, ৩ বারের ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাপিয়ন এবং ওলিম্পিক লাইট-হেভিওয়েট স্বর্ণপদক বিজয়ী। ১৯৯৯ সালে মুহাম্মদ আলীকে বিবিসি এবং স্পোর্টস ইলাট্রেটেড স্পোর্টসম্যান অব দ্যা সেঞ্চুরী (শতাব্দীর সেরা ক্রীড়াবিদ) হিসেবে ঘোষণা করে।
মোহাম্মাদ আলী প্রথম জীবনে খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারি ছিলো, তখন তার নাম ছিলো ক্যাসিয়াস মারকেলাস ক্লে জুনিয়র। ১৯৬৪ সালে তিনি নেশন অব ইসলাম (Nation of Islam- NOI) নামক একটি দলের সাথে যোগদান করেন এবং নিজেকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দান করেন। নেশন অব ইসলাম নামক সংগঠনটি ছিলো ডেট্রয়েট ভিত্তিক কালোদের একটি সংগঠন, এরা নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করলেও আসলে সংগঠনটি ছিলো কাদিয়ানী টাইপের সংগঠন, যারা আরো নবীর আগমনে বিশ্বাসী। ১৯৭৫ সালে অবশ্য মোহাম্মাদ আলী ভুল বুঝতে পারেন এবং নতুন করে সুন্নী মুসলিম-এ কনভার্ট হন। ১৯৮০ সালে রহস্যজনক ভাবে তার পারকিনসন রোগ ধরা পড়ে এবং প্রচার করা হয় বক্সিং খেলার কারণেই সে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এবং এতেই তার ক্যারিয়ারের পরিসমাপ্তি ঘটে।
====================
মহান আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন ! জান্নাতুল ফিরদাউস দান কুরন !! আমিন !!!
বিষয়: বিবিধ
১৩৬২ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
http://epaper.prothom-alo.com/
ছবি আছে ? গোলাম আযম , নিজামী এদের নামাজে জানাজার ছবি পাওয়া যাবে । এমনকি দেশের বাইরেও যে গায়েবানা জানাজা হয়েছে তারও ছবি পাওয়া যায় ।
মো'হাম্মাদ আলীর যে নামাজ-এ-জানাজা হয়েছে সেটার ছবি কি আছে ?
আপনারা আমেরিকায় থাকেন বিধায় আপনাদের কাছেই ছবির শেয়ার চাচ্ছি। ।
পার্কিনসন রোগ হয় নার্ভ এর দুর্বলতার জন্য। এটার সাথে কি বক্সিং এর সম্পর্ক আছে?
মহান আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন ! জান্নাতুল ফিরদাউস দান কুরন !! আমিন !!!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
মহান আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন ! জান্নাতুল ফিরদাউস দান কুরন !! আমিন
মন্তব্য করতে লগইন করুন