হায়াতুন্নবী সম্পর্কে আহলে হাদীস ও দেওবন্দীদের আক্কীদাহ
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৯ মে, ২০১৬, ১১:৪৩:২৪ রাত
আস সালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মঝে মাঝে আমি এমন কিছু বিষয়ে এমন কিছু লেখা পড়ি যেটাতে লেখার মূলভাব প্রকাশিত না হয়ে খন্ডিত অংশ প্রকাশ করে। কখনও কখনও কোনো আলেমের বক্তব্যের সংক্ষিপ্তাংশ প্রকাশিত হয় ,এতে কখনও কখনও পুরো ভাব প্রকাশিত হয়না। এছাড়া এক শ্রেণীর অনুসারী রয়েছেন,যারা কারো পুরো বক্তব্যের খন্ডিত অংশ প্রচার করে কাওকে দোষারোপ করে থাকেন। এদের কেউ কেউ উম্মাহর ঐক্যে কথা বলেন কিন্তু তাদের আচরন প্রমান করে ,তারা যেন বলতে চান- যতক্ষন পর্যন্ত তিনি নিজে যেভাবে ইসলাম বুঝেছেন সেভাবে যদি বিশ্বাস না করা হয় তাহলে ঐক্য সুদূর পরাহত। আমার ধারনা কিছু অতি আবেগী অনুসারী ও বিপদগামী আলিমই মুসলিমদের ঐক্য বিনষ্টে দায়ী। এরা নিজেদের মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে ইসলামচর্চা করে বলে মনে হয়েছে। যাইহোক অনেক খারাপ ঘটনার ভেতর কিছু ভালো ঘটনাও পাওয়া যায়।
গতরাতে হায়াতুন্নবী বিষয়ে আহলে হাদীস ও দেওবন্দীদের একটি বাহাস দেখছিলাম ইউটিউবে। সেখানে আহলে হাদীসদের পন্ডিত শাইখ আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম ,মুরাদ বিন আমজাদ,আরেকজন উচ্চপদস্থ শাইখ...দেওবন্দীদের ভেতর লুৎফর ফরায়েজী ও অন্য দুজন আলিম উপস্থিত হয়ে বক্তব্য পেশ করছিলেন। ভালো লেগেছে এ কারনে যে তারা পরষ্পরের ভেতর দূরত্ব কমানোর জন্যেই এই বাহাসের আয়োজন করেছেন।
দেওবন্দী আলেমগন বললেন-রসূল(সাঃ)এ পৃথিবী ত্যাগ করেছেন,তার মৃত্যু হয়েছে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তিনি কবর নামক বারযাখী জীবনে জীবিত আছেন। কেউ তাকে সালাম দিলে তিনি তার উত্তর প্রদান করেন, আল্লাহ তাকে সালাম পৌছে দেন। এ বিষয়ে তারা কুরআন ও সুন্নাহর দলিল পেশ করলেন। বারযাখী জীবনে যেহেতু তিনি জীবিত আছেন এবং সালামের উত্তর দেন,নবীগন সালাত আদায় করেন বলেও সহি হাদীসে উল্লেখ রয়েছে তাই তাকে হায়াতুন্নবী বলে থাকেন। তবে এই জীবিত থাকাটি পৃথিবীর মত নয়,বারযাখী জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত আমাদের জানানো হয়নি।
দেওবন্দীদের বিভিন্ন আলেম যেমন মাওলানা জাকারীয়া(তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা) উনার কিতাবে রসূল(সাঃ)এর হাত বের হয়ে আসা.....এবং এরকম কিছু বিষয় উল্লেখ করে আলেমগন বললেন যে এটি দেওবন্দী আক্কিদা নয় বরং এটি মূলত উক্ত আলেমের অভিমত এবং কারামত। যেটি কারামত সেটি শরিয়তের দলিল নয়। কারামত বিষয়টি আলোচনার বিষয় নয়। দেওবন্দী আরও অনেক আলেমের লিখিত কিতাবে এরকম কিছু বিষয় এসেছে যে সম্পর্কে তাদের বক্তারা বলেছেন সেটি আক্কীদার অংশ নয়। এটি ব্যতিক্রম ও কারামত সংক্রান্ত।
দেওবন্দী আলেমগন বলেছেন যে, তাদের আক্কদিা এটা নয় যে, রসূল(সাঃ)কে হাজীর নাজির মনে করেন। বরং ব্রেলবী আকিদার লোকেরা মনে করে মিলাদে স্বয়ং রসূল(সাঃ)হাজির হন ,এবং তিনি চেয়ারে এসে বসেন,তার সম্মানে উঠে দাড়াতে হয়,...এটি স্পষ্ট শিরক। আমরা এটিতে বিশ্বাসী নই।
অপরদিকে আহলে হাদীস পন্ডিতরা একইভাবে বললেন যে, রসূল(সাঃ) এর ওফাত হয়েছে কিন্তু তিনি বারযাখী জীবনে জীবিত। সেখানে নামাজও আদায় করেন,তবে সেটা আমাদের মত সালাত কিনা সেটার ব্যাপারে জানানো হয়নি। আর যখন কেউ তাকে সালাম দেয়,তখন তার রুহ ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং আল্লাহ তাকে সালাম পৌছে দেন এবং তিনি সালামের উত্তর প্রদান করেন।
সাহাবায়েকেরাম হায়াতুন্নবী পরিভাষাটি ব্যবহার করতেন না। ফলে এটা আমরা ব্যবহার করিনা। উভয়ের চিন্তাগত মিল থাকলেও পরিভাষাগত পার্থক্য রয়েছে। আর রসূল(সাঃ)কে হাজির নাজির মনে করা,তার কাছে প্রার্থনা করা শিরক।
আহলে হাদীস আলিমদের কিতাবের কিছু অংশ তুলে ধরা হল যেখানে কিছু বক্তব্যের বিষয় অনুরূপ কারামতপূর্ণ। তখন আহলে হাদীস আলেমগন বললেন-আমরা কেবল কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরন করি, ব্যক্তি তো ভুল করতেই পারে। তাদের ভুলের সাথে আমরা একমত নই।
জনাব মুরাদ বিন আমজাদ এর একটি বক্তৃতায় দেওবন্দীদের বিরুদ্ধে খারাপ কিছু ছিলো যাতে আলেমগন আহত হয়েছেন,এটা উল্লেখ করাতে তিনি বললেন-বিশ্বাস করেন,আল্লাহর কসম ! আমার অন্তরে কোনো কপটতা ও শত্রুতা ছিলো না। তবে বক্তব্য পুরো প্রচারিত না হওয়ায় বিষয়টি পরিষ্কার হয়নি। আপনাদের প্রতি আমার বিদ্বেষ নেই আর আমি মানুষ, মানুষের ভুল হবেই। আমি এই বক্তব্য প্রত্যাহার করছি।
=============================
আমার বিশ্লেষন: আমি উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেছি এবং আমার মনে হয়েছে বাংলাদেশের অধিকাংশ আলেমই ভালো আরবী জানলেও বাংলা ভাষার জ্ঞান সীমিত। শুধুমাত্র ভাষাগত দূর্বলতার কারনে উভয়ের ভেতর নানান সমস্যা তৈরী হয়েছে। মনে হচ্ছিলো যদি উপযুক্ত শব্দ প্রয়োগ করতেন তাহলে তাদের বাহাস ২০ মিনিটেই শেষ হত এবং একে অপরের সহযোগী হতেন। যে ভাষার লোকদেরকে দাওয়াহ করা হচ্ছে তাদের ভাষা আত্ত্বস্থ করা জরুরী।
বাংলাদেশের একটি বিরাট সংখ্যক মানুষ মূর্খ ও তর্কবাজ। তারা যুক্তি দিয়ে পেচিয়ে সহজকে কঠিন করে ফেলে,অনেক আলেমও এটা থেকে মুক্ত নয়।
শেষে এসে আমি খুব খুশী হলাম কারন তারা একটি সুন্দর বন্দুত্বপূর্ণ সমাধানে এসেছেন। উভয়ের অঅন্তরিকতা ছিলো চোখে পড়ার মত। প্রকৃতই মনে হয়েছে তারা দূরত্ব মেটাতে চান।
আহলে হাদীস ও দেওবন্দী উক্ত আলেমগন হায়াতুন্নবী সম্পর্কে একই ধারনা পোষন করেন কিন্তু শব্দ প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু তারতম্য হয়েছে। হায়াতুন্নবী শব্দটিও হিন্দী,এটি আরবী নয়। এটি উচ্চারিত হলে যদি জনতার মনে রসূলের(সাঃ)বাস্তবে জীবিত হওয়ার চিত্র ভেসে ওঠে তাহলে সতর্কতার জন্যে আলেমদের এই শব্দটি প্রয়োগে বিরত থাকাই উত্তম।
আমরা মূলত: মুসলিম,এটিই পরিচয়। কুরআন ও সুন্নাহ আমাদের পাথেয়। কিন্তু এটির ব্যাখ্যাগত বিষয়ে অপরের সাথে কিছু পার্থক্য তৈরী হতে পারে। এটা স্বাভাবিক এবং সাহাবদের সময়েও ছিলো। কিন্তু এটাকে পুজি করে অপরকে কটাক্ষ না করে পরষ্পরিক আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য কমিয়ে আনাই শ্রেয় ও সুন্নাহ সমর্থিত। উয়ের ক্ষেত্রে এই বিষয়টিতে অত্যন্ত সুক্ষ্ণ দু একটি ব্যাখ্যাগত পার্থক্য ছাড়া আর কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়নি।
পূনশ্চ: রসূল(সাঃ) পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি এখানে ফিরে আসবেন না। তবে যারা নবী-রসূল,শহীদ, আল্লাহ তাদেরকে অতিরিক্ত মর্যাদা দান করেন। রসূলগন অধিক মর্যাদা প্রাপ্ত। আর সে কারনে বারযাখী জীবন,যেখানে সকলের রুহ অবস্থান করে হাশরের পূর্ব পর্যন্ত সেখানে নবী-রসূলগন বিশেষ সম্মানস্বরূপ জীবিত থাকেন,রিজিকপ্রাপ্ত হন,তারা নামাজ আদায় করেন। তবে সে রিজিক আমাদের মত নয়,সে নামাজ আমাদের মত বাধ্যবাধকতাপূর্ণ নয়,সময়ের সাথে সম্পৃক্ত নয়। আর যেহেতু সেই অবস্থাটা সম্পর্কে তেমন কিছুই জাননো হয়নি তাই তর্ক বিকর্ত না করাই উত্তম। তবে রসূল(সাঃ)সেই বারযাখী জীবন থেকে আমাদের কল্যান করতে পারেন না,আমাদের কাছেও উপস্থিত হন না। কারন এটি আল্লাহর বৈশিষ্ট। তবে কেউ তাকে সালাম দিলে আল্লাহ সেটি তার কাছে পাঠিয়ে দেন আর তিনি(সাঃ) সালামের উত্তর প্রদান করেন।
রসূল(সাঃ)যে কুরআন ও সুন্নাহ রেখে গেছেন সেটি অনুসরনেই আমাদের কল্যান। আমরা যেন মতভেদ এড়িয়ে পারষ্পরিক ঐক্যের দিকে ধাবিত হই। ঐক্য আসলেই সম্ভব,যদি আমরা সত্যিই আল্লাহর ভয়ে ও ভালোবাসায় আগ্রহী হই। আর অবশ্যই কিছু মত পার্থক্য থাকবে,সেটি নেয়ই আমরা ঐক্য তৈরী করব এবং পরষ্পরের বিরুদ্ধাচারন করব না। তাহলে সম্মিলিত যে দাওয়াহ হবে তার গতি হবে অনন্য। ইসলামের শত্রুরা এই ঐক্যকেই ভয় করে। অতএব শয়তানকে শক্তিশালী হতে না দেওয়াই মুমিনের একান্ত কর্তব্য।
বিষয়: বিবিধ
৩৩৪২ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
প্রকৃতপক্ষে যেই বিষয়ে আমাদের জ্ঞান সীমাবদ্ধ সেই বিষয়ে বেশি আলোচনা না করাই উত্তম। রাসুল (সাঃ) কি অবস্থায় আছেন এর এটা থেকে বেশি গুরুত্বপুর্ন তার আদর্শ অনুসরন করা। আর তাদে দরুদ ও সালাম পেীছানর জন্য তো সেটা জানার প্রয়োজন নাই। দরুদ তো আমরা সব নামাজের মধ্যেই পড়ি অন্য সময় ও পড়তে পারি এবং পড়া উচিত।
এক গ্লাস পানি পান করতে ৫/৭ টা সুন্নত পালন করতে হয়, আমরা কয়জন সেটা করি!!!???
যদিও আমরা নিজেকে রাসুলের উম্মত বলে দাবী করি,
অথচ রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কিসের তৈরি, মাটির নাকি নুরের??
উনি কবরে জীবিত নাকি মৃত???
এই সব বেহুদা বিষয় নিয়ে কাদা ছুড়াছুঁড়ি করে আমরা
নিজেদের কে মুসলিম হিসাবে জাহির করি।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে
সঠিক দ্বীন মেনে চলার তৌফিক দিন
আমিন
ঐ বেলুনে করে কি আপ্নে উড়েছিলেন নাকি
কিসের তৈরি, মাটির নাকি নুরের??
উনি কবরে জীবিত নাকি মৃত???
এই সব বেহুদা বিষয় নিয়ে কাদা ছুড়াছুঁড়ি করে আমরা
নিজেদের কে মুসলিম হিসাবে জাহির করি।"
ভালো লাগলো
ভালো লাগল,ধন্যবাদ।
হাত বের হওয়ার ঘটনাটি অবিশ্বাসকারী হলঃ বিদআতী
এবং মু'তাজিলা কাদেরিয়া ফিরকার উত্তরসূরি
==============================
============
ফাজায়েলে হজ্বে বর্ণিত ঘটনাটি হলঃ
শাইখুল হাদীস যাকারিয়া রাহঃ এর লিখিত ‘ফাযায়েলে
হজ্ব’ নামক কিতাবে (হজ্জের সাথে সম্পর্কিত)‘নবী প্রেমের
বিভিন্ন কাহিনী’ নামক শিরনামের অধিনে ১২ নম্বর
কাহিনীটি নিম্নরুপ
বিখ্যাত ছুফী ও বুজুর্গ হজরত শায়েখ আহমদ রেফায়ী (রাহঃ)
৫৫৫ হিজরী সনে হজ্ব সমাপন করিয়া জেয়ারতের জন্য
মদিনায় হাজির হন। তিনি রওজা শরিফের সামনে দাড়াইয়া
এ দুইটা বরাত পড়েন ---
“দূরে থাকা অবস্থায় আমি আমার রূহকে হুজুর (ছঃ) এর
খেদমতে পাঠাইয়া দিতাম, সে আমার নায়েব হইয়া আস্তানা
শরীফে চুম্বন করিত। আজ আমি সশরীরে দরবারে হাজির
হইয়াছি। কাজেই হুজুর আপন দস্ত মোবারক বাড়াইয়া দিন
যেন আমার ঠোঁট তাহা চুম্বন করিয়া তৃপ্তি হাছেল করিতে
পারে।”
বয়াত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কবর শরীফ হইতে হাত মোবারক
বাহির হইয়া আসে এবং হযরত রেফায়ী রাহঃ তাহা চুম্বন
করিয়া ধন্য হন।"
বলা হয় বা কথিত আছে , সেই সময়ে মসজিদে নববীতে নব্বই
হাজার লোকের সমাগম ছিল। সকলেই বিদ্যুতের মত হাত
মোবারকের চমক দেখিতে পায়। তাদের মধ্যে মাহবূবে
ছোবহানী হজরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) ছিলেন।
(ফাজায়েলে হজ্ব, পৃষ্ঠা ১৪০,১৪১)
------------------------------
----------- ---------------
--------------------------- --------------
উক্ত ঘটনাটি শায়েখ যাকারিয়্যা (রহ) নিজে থেকে লিখেন
নি বরং পূর্ববর্তী আলিমদের কিতাব থেকে নকল করেছেন।
যারা কিনা উল্লেখিত ঘটনাটি সহিহ সনদেই নিজেদের
কিতাবে বর্ণনা করেছেন। সনদটির তাহকিকই এই আলোচনার
মূল বিষয়।
------------------------------
----------- ---------------
--------------------------- --------------
[[[[[[[ প্রথম সনদ ]]]]]]]
ইমাম আব্দুল কারীম বিন মুহাম্মাদ আর রাফা'ঈ রহ. (মৃত্যুঃ
৬২৩ হিঃ) বলেনঃ
ﺍﺧﺒﺮﻧﻲ ﺷﻴﺨﻨﺎ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﺍﻟﺤﺠﺔ ﺍﻟﻘﺪﻭﺓ ﺍﺑﻮ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﻋﻤﺮ ﺍﻟﻔﺎﺭﻭﺛﻲ ﺍﻟﻮﺍﺳﻄﻲ ﻗﺎﻝ
ﺣﺞ ﺳﻴﺪﻧﺎﻭﺷﻴﺨﻨﺎ ﺍﻟﺴﻴﺪ ﺍﺣﻤﺪ ﺍﻟﺮﻓﺎﻋﻲ ﻋﺎﻡ ﺧﻤﺲ ﻭﺧﻤﺴﻴﻦ ﻭﺧﻤﺴﻤﺎﺋﺔ
ﻓﻠﻤﺎ ﻭﺻﻞ ﺍﻟﻤﺪﻳﻨﺔ …….
সনদটি হলঃ
ইমাম রাফা'ঈ রহ.---> ইমাম আবুল ফার্জ উমর আল ফারুসি রহ. ---
> ইমাম কাবীর আহমাদ রাফি'ঈ রহ.
[ সাওয়াদ উল আইনাইনঃ পৃ:১০-১১]
<===== সনদের রাবীদের তাহকিক ======>
((((( প্রথম রাবী সম্পর্কে আলোচনা )))))
[১] ইমাম আবদুল কারীম বিন মুহাম্মাদ আর রাফা'ঈ রহ.
( মৃত্যুঃ ৬২৩ হিঃ) সম্পর্কে
ক) ইমাম যহাবী রহ. (মৃত্যুঃ ৭৪৮ হিঃ) তার প্রশংসা করে
বলেন,
ﺷَﻴْﺦُ ﺍﻟﺸَّﺎﻓِﻌِﻴَّﺔِ، ﻋَﺎﻟِﻢُ ﺍﻟﻌَﺠﻢِ ﻭَﺍﻟﻌَﺮﺏِ، ﺇِﻣَﺎﻡُ ﺍﻟﺪِّﻳﻦِ
তিনি শাফীঈদের শাইখ । আরব আযমের আলিম এবং দ্বীনের
ইমাম।
খ) ইমাম তাকীউদ্দীন রহ. (মৃত্যুঃ ৬৪৩ হিঃ) বলেন,
ﺃﻇﻦُ ﺃﻧّﻲ ﻟﻢ ﺃﺭَ ﻓﻲ ﺑﻼﺩ ﺍﻟﻌَﺠَﻢ ﻣﺜﻠﻪ
আমার ধারনা মতে দেশের শহরে তার মত আর কাউকে দেখি
নি।
গ) ইমাম নববী রহ. (মৃত্যু ৬৭৬ হিঃ) বলেন,
ﺍﻟﺮَّﺍﻓﻌﻲّ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﺎﻟﺤﻴﻦ ﺍﻟﻤُﺘَﻤﻜّﻨﻴﻦ، ﻛﺎﻧﺖ ﻟَﻪُ ﻛﺮﺍﻣﺎﺕٌ ﻛﺜﻴﺮﺓ ﻇﺎﻫﺮﺓ .
ইমাম রাফা'ঈ রহ. ছিলেন নেককার, মুত্তাকিন এবং তার
অনেক প্রকাশ্য কারামত রয়েছে।
ঘ) ইমাম ইবনে উস সাফফার রহ. (মৃত্যুঃ৬৪৮ হিঃ) বলেন,
ﻫُﻮَ ﺷﻴﺨُﻨﺎ، ﺃﻣﺎﻡُ ﺍﻟﺪِّﻳﻦ ﻭﻧﺎﺻﺮ ﺍﻟﺴُّﻨَّﺔ ﺻِﺪﻗًﺎ .
ইমাম রাফা'ঈ রহ. আমাদের শাইখ, দ্বীনের ইমাম এবং
সুন্নাতকে জীন্দাকারী।
[ দেখুনঃ সিয়ার আলামুন নুবালা: খন্ড-২২,পৃ-২৫২] এবং
[তারীখ উল ইসলাম লিয যহাবী: খন্ড- ১৩,পৃ-৭৪২]
সুতরাং এটা স্পষ্ট হল যে, ইমাম রাফা'ঈ (রহ) একজন সিক্বাহ
এবং সত্যবাদী রাবী।
((((( দ্বিতীয় রাবী সম্পর্কে আলোচনা )))))
[২] ইমাম আবুল ফার্জ উমর আল ফারুসি রহ (মৃত্যুঃ ৫৮৫ হিঃ)
সম্পর্কে -
ক) ইমাম রাফা'ঈ রহ. ( মৃত্যুঃ ৬২৩ হিঃ) বলেন,
ﺍﻻﻣﺎﻡ ﺍﻟﺤﺠﺔ ﺍﻟﻘﺪﻭﺓ
তিনি হলেন ইমাম, দলীল এবং ক্বিদওয়াহ [ সাওয়াদুল
আইনাইনঃপৃ-১০]
একই কিতাবের অন্যত্র তিনি বলেনঃ
ﺷﻴﺨﻨﺎ ﺍﻣﺎﻡ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﻭﺳﻴﺪ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﺍﺑﻮ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﻋﻤﺮ ﺍﻟﻔﺎﺭﻭﺛﻲ
আবুল ফার্জ উমর আল ফারুসি রহ. হলেন আমাদের শাইখ,
ফকীহদের ইমাম এবং উলামাদের নেতা [ সাওয়াদুল
আইনাইনঃপৃ-০৮]
খ) ইমাম সুয়ুতী রহ. ( মৃত্যুঃ ৬৭৬ হিঃ) তার স্বলিখিত কিতাব "
শারফ উল মুত্তাহাম " এ লিখেনঃ
ﺇﻣﺎﻡ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﻭﺍﻟﻤﺤﺪﺛﻴﻦ ﻭﺷﻴﺦ ﺃﻛﺎﺑﺮ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﻭﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﺍﻟﻌﺎﻣﻠﻴﻦ ﺍﻟﺸﻴﺦ ﻋﺰ
ﺍﻟﺪﻳﻦ ﻋﻤﺮ ﺃﺑﻲ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﺍﻟﻔﺎﺭﻭﺛﻲ ﺍﻟﻮﺍﺳﻄﻲ
তিনি হলেন মুহাদ্দিস এবং ফুকাহাদের ইমাম, বড় ফকীহ,
উলামা এবং আলিমদের শাইখ।
গ) ইমাম আহমেদ বিন ইবরাহিম আল ফারুসী রহ. (মৃত্যুঃ ৬৯৪
হিঃ) বলেন
ﺍﻻﻣﺎﻡ ﺍﻟﻔﻘﻴﻪ ﺃﺑﻲ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﻋﻤﺮ ﺍﻟﻔﺎﺭﻭﺛﻲ
.আবুল ফার্জ উমর আল ফারুসী রহ. হলেন ইমামদের ফকিহ।
( ইরশাদ উল মুসলিমিন, পৃ- ৮৮)
ঘ) ইমাম তাক্বীউদ্দীন আবদুর রহমান আল আনসারী আল
ওয়াসতী রহ. (মৃত্যুঃ ৭৪৪) বলেনঃ
ﺍﻟﻌﺎﺭﻑ ﺍﻟﻜﺒﻴﺮ ﻭﻟﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻌﻼﻣﺔ ﺍﻟﺴﻨﺪ ﺍﻟﺜﺒﺘﺎﻟﻔﻘﻴﻪ ﺍﻟﻤﻘﺮﻱ ﺍﻟﻤﺤﺪﺙ ﺃﺑﻲ ﺍﻟﻔﺮﺝ
ﻋﻤﺮ ﺍﻟﻔﺎﺭﻭﺛﻲ
আবুল ফার্জ ওমর ফারুসি রহ. হলেন আল আরিফুল কাবীর,
ওয়ালিউল্লাহ, আল্লামা, আল মুসনাদ, আল সাবাত, ফকিহ,
মুহাদ্দিস। [তারীখুল মাহবীনঃ খন্ড-০১; পৃ-৮]
অরএব, প্রমাণিত হল যে, ইমাম আবুল ফার্জ উমর আল ফারুসি
রহ হলেন সিক্বাহ, মজবুত এবং হুজ্জাত।
((((( তৃতীয় রাবী সম্পর্কে আলোচনা )))))
[৩] ইমাম কাবীর আহমাদ আর রিফা'ঈ রহ. (মৃত্যুঃ ৫৭৮ হিঃ)
সম্পর্কে,,,,
ক) ইমাম যহাবী রহ.( মৃত্যুঃ ৭৪৮ হিঃ) বলেন:
ﺍﻹِﻣَﺎﻡُ، ﺍﻟﻘُﺪْﻭَﺓُ، ﺍﻟﻌَﺎﺑِﺪُ، ﺍﻟﺰَّﺍﻫِﺪُ، ﺷَﻴْﺦُ ﺍﻟﻌَﺎﺭِﻓِﻴْﻦ
ইমাম, ক্বিদওয়া, ইবাদাতকারী (আবিদ), দুনিয়াত্যাগী এবং
আরিফীনদের শাইখ।
. [ সিয়ার আলামুন নুবালা; খন্ড -২১; পৃ-৭৭]
খ) ইমাম তাজউদ্দীন সুবকী রহ. (মৃত্যুঃ ৭৭১ হিঃ) বলেন
ﺃﺣﺪ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻌﺎﺭﻓﻴﻦ ﻭﺍﻟﺴﺎﺩﺍﺕ ﺍﻟﻤﺸﻤﺮﻳﻦ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻜﺮﺍﻣﺎﺕ ﺍﻟﺒﺎﻫﺮﺓ ﺃَﺑُﻮ
ﺍﻟْﻌَﺒَّﺎﺱ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺍﻟْﺤﺴﻦ ﺑﻦ ﺍﻟﺮِّﻓَﺎﻋِﻲ ﺍﻟﻤﻐﺮﺑﻲ
ইমাম রিফা'ঈ রহ ছিলেন আওলিয়া আল্লাহ, আ'রিফিন এবং
সাদাত ও প্রকাশ্য কারামত ওয়ালা । [তাবকাত উশ শাফীইয়া
লিস সুবকী রহ; খন্ড-০৬; পৃ-২৩]
গ) ইমাম ইবনে খালকান রহ. (মৃত্যুঃ ৬৮১ হিঃ) এবং ইমাম
খলীল বিন আইবাক আস সাফাদি রহ. (মৃত্যুঃ ৬৮১ হিঃ) এই
দুইজন আলিমই ইমাম কাবীর আহমাদ আর রিফা'ঈ রহ. সম্বন্ধে
বলেনঃ
ﻛَﺎﻥَ ﺭﺟﻼ ﺻَﺎﻟﺤﺎ ﺷﺎﻓﻌﻴﺎ ﻓَﻘِﻴﻬﺎ
তিনি ছিলেন সলিহীন (নেককার), শাফীই ফকীহ।
[তাবকাত উশ শাফীইয়া লি ইবনে কাজী শাইবা রহ; খন্ড-০২;
পৃ-০৫]
ঘ) আস সাফাদি রহ. অন্যত্র বলেন:
ﺍﻟﺰَّﺍﻫِﺪ ﺍﻟْﻜَﺒِﻴﺮ ﺳُﻠْﻄَﺎﻥ ﺍﻟﻌﺎﺭﻓﻴﻦ ﻓِﻲ ﺯَﻣَﺎﻧﻪ
তিনি ছিলেন বড় যাহিদ (দুনিয়াত্যাগী) , যামানার
আরিফিনদের সুলতান। [ আল ওয়াফি বিল ওয়াফিইয়াত;
খন্ড-০৭, পৃ-১৪৩]
বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ
[ সিয়ার আ'লামুন নুবালা:খন্ড-২১,পৃ-৭৭]
[তাবক্বাত উশ শাফীয়্যাহ লিস সুবকি রহ: খন্ড-০৬,পৃ-২৩; ]
[ তাবক্বাত উশ শাফীয়্যাহ লি ইবনে ক্বাযি শাইবা:
খন্ড-০২,পৃ-৫;]
[ আল ওয়াফি বিল ওয়াফিইয়াত; খন্ড-০৭, পৃ-১৪৩]
অতএব প্রমাণিত হল,ইমাম কাবীর আহমাদ আর রিফা'ঈ রহ.ও
"সিক্বাহ"।
সুতরাং সনদটি সহিহ হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
- ------------------------------
----------- ---------------
--------------------------- --------------
[[[[[[[ দ্বিতীয় সনদ ]]]]]]]
ইমাম রাফা'ঈ রহ (মৃত্যুঃ ৬২৩ হিঃ) বর্ননা করেন,
সিক্বাহ রাবী শাইখ আব্দুস সামী রহ. বলেন, আমি ঐ ঘটনাটি
স্বচক্ষে দেখেছি। যেখানে হযরত কাবীর আহমাদ রিফা'ঈ
রহ. রাসুলুল্লাহ (সা) এর সাথে মুসাফাহ করছেন।
[সাওয়াদ উল আইনাইনঃ০৯-১০]
সনদটি হলঃ
ইমাম রাফা'ঈ রহ.---> শাইখ আবদুস সামী আল হাসমী আল
ওয়াসতী রহ.
<===== সনদের রাবীদের তাহকিক ======>
((((( প্রথম রাবী সম্পর্কে আলোচনা )))))
১) ইমাম আব্দুল কারীম বিন মুহাম্মাদ আর রাফা'ঈ রহ. (মৃত্যুঃ
৬২৩ হিঃ): ইমাম রাফা'ঈ রহ. একজন সিক্বাহ রাবী। যার
আললোচনা উপরে করা হয়েছে।
((((( দ্বিতীয় রাবী সম্পর্কে আলোচনা )))))
২) শাইখ আবদুস সামী আল হাসমী আল ওয়াসতী রহ. (মৃত্যুঃ
৫৮০ হিঃ):
শাইখ আবদুস সামী আল হাসমী আল ওয়াসতী রহ. (মৃত্যুঃ ৫৮০
হিঃ)। যিনি খোদ ইমাম রাফা'ঈ রহ. এর সনদ উল মুহাদ্দিসীন।
ইমাম ইযউদ্দীন আল ফারুসী রহ. (মৃত্যুঃ ৬৯৪ হিঃ) এর শাইখের
শাইখ এবং আবু আব্দুল্লাহ আদ দুবাইসী রহ. (মৃত্যুঃ ৬৩৭ হিঃ)
আব্দুস সামী (রহ) কে শারীফ, সত্যবাদী এবং আবিদ হিসেবে
বর্ণনা করেছেন।
দেখুনঃ
[ ইরশাদুল মুসলিমীন: পৃ-২৬৫]
[ তারীখ ইবন উদ দুবাইসি: পৃ-৭৯]
বি. দ্রঃ শাইখ আবদুস সামী আল হাশমি রহ. এর আসল নাম
মুহাম্মাদ বিন আব্দুস সামী আল হাশমী রহ.। আবার তাকে
আব্দুস সামী আল হাশমী আল ওয়াসতী রহ.ও বলা হয় তবে
অধিকাংশ মুহাদ্দিসীনের কাছে তার কুনিয়াত নাম আবু
তালিব রহ. আবার শারফুদ্দীনও বলা হয়ে থাকে। [ ইরশাদুল
মুসলিমীন: পৃ-৯০]
-- ------------------------------
----------- ---------------
--------------------------- --------------
[[[[[[[ তৃতীয় সনদ ]]]]]]]
ইমাম, মুফতি, আবিদ এবং সালাফি শাইখ ইয উদ্দীন রহ. তার
লিখিত কিতাব " ইরশাদ উল মুসলিমীন " এ এই ওয়াক্বিয়াটি
সনদসহ নকল করেছেন।
ﺍﺧﺒﺮﻧﻲ ﺍﺑﻲ ﺍﻟﺤﺎﻓﻆ ﻣﺤﻴﻲ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﺍﺑﻮ ﺍﺳﺤﺎﻕ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﻋﻦ ﺍﺑﻴﻪ ﺍﻟﺸﻴﺦ ﻋﻤﺮ
ﻗﺎﻝ ﻟﻪ
ﻛﻨﺖ ﻣﻊ ﺳﻴﺪﻧﺎ ﻭ ﻣﻔﺰﻋﻨﺎ ﻭ ﺷﻴﺨﻨﺎ ﺍﻟﺴﻴﺪ ﺍﺣﻤﺪ ﺍﻟﻜﺒﻴﺮ ﺍﻟﺮﻓﺎﻋﻲ ﺍﻟﺤﺴﻴﻨﻲ
…….
সনদটি হলঃ
ইমাম ইয-উদ্দীন আহমাদ বিন ইবরাহিম রহ---> ইমাম আবু
ইসহাক্ব ইবরাহিম আল ফারুসি রহ.--> ইমাম আবু ফার্জ আল
ফারুসি রহ. -----> সায়্যিদ কাবীর আহমাদ রিফা'ঈ রহ.
[ ইরশাদ উল মুসলিমীনঃ পৃ-৮৮]
<===== সনদের রাবীদের তাহকিক ======>
((((( প্রথম রাবী সম্পর্কে আলোচনা )))))
(১)ইমাম ইয-উদ্দীন আহমাদ বিন ইবরাহিম আল ফারুসি রহ.
(মৃত্যুঃ৬৯৪ হিঃ)। যিনি একজন সিক্বাহ রাবী। যার সম্পর্কে
ইমাম যহাবী রহ বলেনঃ তিনি হলেন ইমাম, আল মুক্বরি,
বক্তা, মুফাসসির,খাতীব, শাইখদের শাইখ, ফকীহ, সালাফি,
মুদাররিস,মুফতি, আবিদ, এবং সুফী। [ তারীখুল ইসলামঃ
খন্ড-১৫,পৃ-৭৮২]
((((( দ্বিতীয় রাবী সম্পর্কে আলোচনা )))))
২) ইমাম আবু ইসহাক্ব ইব্রাহিম আল ফারুসি রহ.ও একজন
সিক্বাহ রাবী।
>>যার সম্পর্কে ইমাম ইয-উদ্দীন আহমাদ বিন ইবরাহিম রহ.
বলেন, তিনি হাফিয, সিক্বাহ,সাঈদ,সা
লীহ।
[ দেখুনঃ ইরশাদুল মুসলিমীন: পৃ-৮৮, ১০৫]
>>ইমাম সুয়ুতী রহ. ( মৃত্যুঃ ৯১১ হিঃ) তার রিসালা " শার্ফ উল
মুত্তাহাম" এ ইমাম আবু ইসহাক্ব ইব্রাহিম আল ফারুসি রহ. কে
উস্তায উল আসীল, আল্লামা উল জালীল হিসেবে আখ্যায়িত
করেছেন।
>>শাইখুল ইসলাম মাখযূমি রহ. ( মৃত্যুঃ৮৮৫ হিঃ) তাকে
হুজ্জাত (দলিল)বলেছেন। [ সিহাহুল আখবার: পৃ-৬৯]
((((( তৃতীয় ও চতুর্থ রাবী সম্পর্কে আলোচনা )))))
৩) ইমাম আবু ফার্জ আল ফারুসি রহ.( মৃত্যুঃ ৫৮৫ হিঃ) এবং
৪) সায়্যিদ কাবীর আহমাদ রিফা'ঈ রহ. ( মৃত্যুঃ ৫৭৮ হিঃ)
সম্পর্কে আলোচনা উপরে(প্রথম সনদে) করা হয়েছে। যেখানে
দুইজনই সিক্বাহ প্রমাণিত হয়েছে।
সুতরাং প্রমাণিত হল যে,সনদটি বিলকুল সহিহ।
- ------------------------------
----------- ---------------
--------------------------- --------------
[[[[[[[ চতুর্থ সনদ ]]]]]]]
স্বয়ং শাইখ শারফুদ্দীন মুহাম্মাদ বিন সামী রহ. (মৃত্যুঃ ৫৮০
হিঃ) ইমাম কাবীর আহমাদ রিফা'ঈ রহ. এর কিতাব " আল
বুরহান উল মু-আয়্যাদ"এর মুকাদ্দামে এই কারামতটি বয়ান
করেছন। [আল বুরহান উল মু-আয়্যাদ: পৃ-১২, ইরশাদ উল
মুসলিমীনঃ পৃ-১৫৪]
প্রকাশ থাকে যে, শাইখ শারফুদ্দীন মুহাম্মাদ বিন সামী রহ.
হলেন ইমাম কাবীর আহমাদ রিফা'ঈ রহ.এর শাগরিদ।
তো সনদটি সহিহ হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহের অবকাশই
নেই।
-- ------------------------------
----------- ---------------
--------------------------- --------------
[[[[[[[ পঞ্চম সনদ ]]]]]]]
ইমাম উল হাফিয উল মুহাদ্দিস, জালাল উদ্দীন আস সুয়ুতী রহ.
(মৃত্যুঃ ৯১১ হিঃ)। যিনি হলেন উলামাদের ইমাম, হাফিয,
মুফাসসীরিনদের তাজ এবং মুহাদ্দিসীনদের ইমাম। [ দেখুনঃ
আল আ'লাম লিয যিরকালিঃ খন্ড:০৩,পৃ-৩০১]
তিনিও এই ওয়াক্বিয়াটি তার রিসালা "তনভীর উল হালাক "
এ সনদ সহ উল্লেখ করেছেন।
[ দেখুনঃ তানভীর উল হালাক লিস সুয়ুতীঃ পৃ-৫১]
এই রিসালাটি সুয়ুতী রহ. এর " আল হাওয়ী লিল ফাতওয়া লিস
সুয়ুতী " কিতাবে মওজুদ রয়েছে।
যেখান থেকেই হযরত মাওলানা যাকারিয়্যা রহ. এই ঘটনাটি
নকল করেছেন এবং এরই হাওয়ালা দিয়েছেন।
সনদটি হলঃ
ইমাম জালালুদ্দিন সূয়তী(রহ) ---> শায়েখ কামাল উদ্দিন রহ.---
> শায়েখ শামসুদ্দিন জাযিরী রহ---> শায়েখ যয়নুদ্দীন রহ.----->
ইমাম ইয-উদ্দীন আহমাদ বিন ইবরাহিম রহ---> ইমাম আবু
ইসহাক্ব ইবরাহিম আল ফারুসি রহ.--> ইমাম আবু ফার্জ আল
ফারুসি রহ. -----> সায়্যিদ কাবীর আহমাদ রিফা'ঈ রহ.
এই সনদটি এখানে উল্লেখ না করলেও হতো। কেননা এই
সনদটি পূর্বে উল্লেখিত তৃতীয় সনদেরই বর্ধিতাংশ। আর যা
সহিহ হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এটা কেবল
এইজন্য উল্লেখ করেছি যেহেতু শাইখ যাকারিয়্যা রহ. এই
ঘটনাটি ইমাম জালাল উদ্দীন আস সুয়ুতী রহ. এর কিতাব
থেকে চয়ন করেছেন।
-- ------------------------------
----------- ---------------
--------------------------- --------------
অসংখ্য নির্ভরযোগ্য (সিক্বাহ) উলামায়ে কেরাম এবং
মুহাদ্দিস, মুফাসসীরিনগন উক্ত ওয়াক্বিয়াটি তাদের
নিজেদের কিতাবে নকল করেছেন। তাদের মধ্যে
কিয়দাংশ------
[১] ইমাম আলী বিন আনজাব রহ. (মৃত্যুঃ ৬৭৪ হিঃ)। যিনি
উলামাদের ইমাম, মুহাদ্দিস, আল মুয়াররিখ উল কাবীর,
ফাযিল,সাহিত্যিক।
দেখুনঃ
[ তারীখ উল ইসলাম লিয যহাবী: খন্ড-১৫, পৃ-২৭৮;]
[তাবক্বাত উল হুফফায লিয সুয়ুতী: খন্ড -০১, পৃ-৫১২,
[ তাবক্বাত উশ শাফীইয়া লিয ক্বাযী শাইবা: খন্ড-০২;
পৃ-১৪০]
তিনি তার কিতাবে ৫ টি আলাদা আলাদা সনদে শাইখ
কাবীর আহমেদ রিফা'ঈ রহ এর ঘটনাটি নকল করেছেন।
[ মুখতাসার তারীখ উল খুলাফা: পৃ-৯৭-৯৯]
[২] ইমাম আলী ইবনুল হাসান বিন আহমাদ আল ওয়াসতী রহ.
(মৃত্যুঃ ৭৩৩ হিঃ)। যার সম্পর্কে হাফিয যহাবী রহ. বলেন
তিনি ইমামুল ক্বুদওয়া, আবিদ,ক্বানিত,যাহিদ এবংউঁচু
মর্যাদা সম্পন্ন।
[দেখুনঃ মুয়াজ্জামুল শুয়ুখুল কাবীর লিয যহাবী: পৃ-৩৬৫; আদ-
দুররুল কামিনাহ লি ইবনে হাজার: খন্ড-০৩, পৃ-৩৭]
তিনি তার স্বরচিত কিতাব" খুলাসাতুলল আকসীর ফী নাসাব
সাইয়্যিদিনা রিফা'ঈ আল কাবীর" এ উক্ত কারামত নকল
করেছেন। ( খুলাসাতুল আকসীর: পৃ-৩০)
[৩]মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ আল মাখযুমি রহ.( মৃত্যুঃ৮৮৫ হিঃ)
। যিনি তার সময়ের শাইখুল ইসলাম ছিলেন। [ দেখুনঃ আল
আ'লাম লিয যিরকালি: খন্ড-০৬,পৃ-২৩৮]
তিনি তার কিতাবব "সিহাহুলল আখবার" এ হযরত শাইখ
কাবীর আহমাদ রিফা'ঈ রহ এর ঘটনাটি সনদ সমেত উল্লেখ
করেছেন। [ সিহাহুল আখবার: পৃ-৬৯]
[৪] শাইখ ইয-উদ্দীন আহমাদ আস- সায়্যাদ রহ. (মৃত্যুঃ ৬৭০
হিঃ)। যার সম্পর্কে ইমাম আহমাদ ইয-উদ্দীন আল ফারুসি রহ
( মৃত্যুঃ ৬৯৪ হিঃ) বলেনঃ
ﺍﻟﺴﺒﻂ ﺍﻻﻋﻈﻢ , ﻛﻨﺰ ﺍﻟﻌﺮﻓﺎﻥ , ﻓﻄﺐ ﺍﻟﺰﻣﺎﻥ , ﻏﻮﺙ ﺍﻟﺮﺟﺎﻝ , ﻛﻌﺒﺔ ﺍﻫﻞ
ﺍﻻﺣﻮﺍﻝ , ﺭﻓﻴﻊ ﺍﻟﻌﻤﺎﺩ , ﺍﺑﻮ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﺴﻴﺪ ﻋﺰ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﺍﺣﻤﺪ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﺮﻓﺎﻋﻲ
তিনি বড় খান্দান ওয়ালা, মারিফাতের সমৃদ্ধ ভান্ডার,
যামানার কুতুব, মানুষের সাহায্যকারী এবং বড় মর্তবা
ওয়ালা। [ইরশাদ উল মুসলিমীনঃপৃ২০৩]
তিনিও তার কিতাবে কাবীর আহমাদ রিফা'ঈ রহ. এর
ঘটনাটি নকল করেছেন।
[ আল মুআ'রিফুল মুহাম্মাদিয়া: পৃ-৫৯]
[৫] হাফিয তাক্বীউদ্দীন আবদুরর রহমান আল ওয়াসতী রহ.
(মৃত্যুঃ ৭৪৪ হিঃ)। তিনি হলেন উলামাদের ইমাম,
শাইখ,মুফতি,মুহাদ্দিস,আল্লামা এবং হাদিসের হাফিয।
[ বিস্তারিত দেখুনঃ
আল-মুজ্যামুল মুখতাস বিল মুহাদ্দিসীন লিয যহাবী: খন্ডঃ০১,
পৃ-১৩৭;
আল ওয়াফি বিল ওয়াফিইয়াত লিস সাফাদি: খন্ড:১৮,পৃ-১০৪;
আল ওয়াফিইয়াত লি ইবনে রাফি: খন্ড-০৩, পৃ-৪৬০;
আল আ'লান লিয যিরকালিঃ খন্ড:০৩, পৃ-৩১৪]
এই হাদিসের হাফিয এবং মুহাদ্দিস রহ.ও তার কিতাবে
শাইখ ইমাম কাবীর আহমাদ রিফা'ঈ রহ. ঘটনাটি নকল
করেছেন। [ দেখুনঃ তারীআখুল মাহবিন: খন্ড:০১, পৃ-১২]
[৬] আল্লামা আহমাদ বিন মুহাম্মাদ রহ. (মৃত্যুঃ ৯৮০হিঃ)।
যাকে উলামা গন ইমাম উল কাবীর, আল্লামা,
আরিফবিল্লাহ, তীক্ষ্ণ স্মরনশক্তি ওয়ালা, মাহির, অধিক
সমজ রাখনে ওয়ালা ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত
করেছেন।
[দেখুনঃ আল আ'লাম লিয যিরকালিঃ খন্ড:০১, পৃ-২৩৪;]
[ হিলিয়াতুল বাশারঃপৃ-১৩]
তিনি তার কিতাব "রওজাতুন নাযিরীন" এ উক্ত ঘটনাটি নকল
করেছেন।
[ রওজাতুন নাযিরীন: পৃ-৫৪]
[৭] ইমাম মুহাম্মাদ বিন আবদুর রওফ আল মানাওয়ী রহ (মৃত্যুঃ
১০৩১ হিঃ)। যার সম্পর্কে উলামাদের বক্তব্য হল, তিনি
আরিফবিল্লাহ, উস্তাদ উল কাবীর, ইমাম উল কাবীর আলিম
এবং দ্বীনের বড় উলামা ইত্যাদি।
[ দেখুনঃ খুলাসাতুল আসার: খন্ড- ০২, পৃ-১৯৩ ; ]
[আল আ'লাম লিয যিরকালিঃ খন্ড-০৬, পৃ-১৯৩]
তিনি তার কিতাব " কাওয়াকিব উর দুররিয়্যাহ" তে এই
ওয়াক্বিয়াটি নকল করেছেন।
[ দেখুনঃ আল কাওয়াকিব উর দুররিয়্যাহ: খন্ড-০২, পৃ-২২০]
- ------------------------------
----------- ---------------
--------------------------- --------------
আরও যে সমস্ত ইমামগন উক্ত ওয়াক্বিয়াটি তাদের কিতাবে
নকল করেছেন, তাদের কিয়দাংশ নিচে উল্লেখ করা হলঃ
[১] ইমাম আহমাদ ইয-উদ্দীন আস সাইয়্যাদ রহ. ( মৃত্যুঃ ৬৭০
হিঃ) " আত-তারীখ উল ক্বাওঈম" কিতাবে
[২] ক্বাসিম বিন মুহাম্মাদ আল ওয়াসতী রহ. (মৃত্যুঃ ৬৮০ হিঃ)
"উম্মুল বারাহীন" কিতাবে
[৩] শাইখ আলী আল হাদ্দাদি রহ. (মৃত্যুঃ ৭৩৩হিঃ) "রাবী উল
আশিক্বীন " কিতাবে
[৪] আল্লামা মুহাম্মাদ বিন আবু বকর আল আনসারী আল
ওয়াসতী রহ. (মৃত্যুঃ ৭৫০ হিঃ) " রওজাতুল আ'ইয়ান " কিতাবে
[৫] শাইখ আবদুর রহমান বিন আব্দুস সালাম আস সাফুরি রহ.
(মৃত্যুঃ৮৯৪ হিঃ) "নুযযহাতুল মাজালিস" কিতাবে
[৬] ইমাম আব্দুল খাদার বিন মুহাম্মাদ আল হুসাইনি রহ. (মৃত্যু
১০৩৩ হিঃ) তার কিতাব "কাসফুন নিক্বাব" এ
[৭] আল্লামা আলি বিন ইবরাহিম আল হালাবি রহ.( মৃত্যু -
১০৩৩ হিঃ) "তা'রিফু আহলে ইসলাম ওয়াল ঈমান" কিতাবে
[৮] আল্লামা খাফফাজি রহ. (মৃত্যুঃ ১০৬৯ হিঃ) " নাসীব উর
রিয়াদ" কিতাবে
[৯] শাইখ ছায়াদী রহ. তার "ওয়াযায়িফি আহমাদী " কিতাবে
[১০] শাইখ আততার রহ. তার "আত তাজকিরাহ" কিতাবে
[১১] শেখ আবুল কাসিম বরজঞ্জী রহ. "ইজাবাতুতদ্বায়ী"
কিতাবে
[১২] ইমাম শা'রানী রহ. "মানাকিবুস সলিহীন" কিতাবে
[১৩] শাইখ মুহাম্মাদ ওয়াসিতী রহ. " বাহজাতুল কুবরা"
কিতাবে
[১৪] শাইখ সাবী মিসরী রহ. "আসরারি রাহমানী " কিতাবে
[১৫] শাইখ ঈদ হুসাইনী রহ. "আননাজমু সাব্বায়ী" কিতাবে
[১৬] শাইখ আল্লামা খাফফাজী রহ. " শারহুশ শিফা" কিতাবে
[১৭] শাইখ আলী ওয়াসিতী রহ " খাযানাতুল আসীর" কিতাবে
[১৮] আল্লামা সামিরায়ী রহ. "মাজালিসি রিফা'ঈ "
কিতাবে
[১৯] শাইখ আবদুল হুদা সায়াদী রহ. " আত-তারীকাত উর
রিফা'ঈ " কিতাবে
[২০] আল্লামা যাফর আহমাদ উসমানী রহ. " বুনইয়ানুল
মুশাইয়্যাদ" কিতাবে
[২১] শাইখ ইউনুস সামিরায়ী রহ. "হায়াতুস সাইয়্যিদ রিফা'ঈ "
কিতাবে
শাইখ ইমাম কাবীর আহমাদ রিফা'ঈ রহ. ঘটনাটি নকল
করেছেন।
------------------------------
------------ ---------------
--------------------------- --------------
[[[[ কি বলবেন ?]]]]
ইন্টার্নেটে সৌদি ফাতওয়া বোর্ড নামে প্রচলিত ফাতওয়া
বোর্ডের ফাতওয়া হল ঘটনাটি ভিত্তিহীন, বানোয়াট
ইত্যাদি ব্লা,ব্লা। সেজন্যই ঘটনাটির সনদ সহ তাহকীক
আপনাদের খিদমতে উপস্থান করা হল। যাতে প্রমাণিত হয় এই
ঘটনাটি ১০০% সহিহ এবং এর সহিহ হওয়ার ব্যাপারে কোন
আপত্তি নেই। এখন বিচার আপনাদের হাতে। হয় ইন্টার্নেটে
প্রচলিত সৌদির ফাতওয়া বোর্ড নামের সাইটটি ভুয়া নতুবা
তারা ভুল করেছে।
আমি এখানে সলফে সলিহীন এবং ইমামদের লিখিত ৩০ এরও
অধিক কিতাবের হাওয়ালা দিয়েছি। আর এই সংখ্যাটা
ত্রিশেই (৩০) সীমাবদ্ধ নয় বরং ৫০ এরও অধিক সলফে
সালিহীনের কিতাবে এই ঘটনাটি নকল করা হয়েছে। এত
সমস্ত কিতাবে এই ঘটনাটি নকল হওয়া শুধু এটাই প্রমাণ করে
না যে এর ভিত্তি আছে বরং এটাও প্রমাণ করে যে, সলফে
সালিহীনদের কাছে এই ঘটনাটি খুবই প্রসিদ্ধ এবং সমাদৃত
ছিল।
আর আজকাল তথাকথিত কিছু সহিহ আক্বিদার ভাইদের
কাছে এটা শির্ক হয়ে উঠেছে।
হায় ! তারা যে কত কিছুতে শির্ক বিদআত খোজে পাবে,
আল্লাহ্ই ভালো জানেন। সহিহ আক্বিদার ভাইদের কাছে
আমার জিজ্ঞাসাঃ ভাই যদি উক্ত ঘটনাটি শির্ক এবং এতে
বিশ্বাসী বিদআতী হয় তাহলে এই অর্ধশত পরিমাণ ইমাম,
শাইখ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির এবং সিক্বাহ রাবীর ব্যাপারে
আপনাদের ফাতওয়া বোর্ড কি ফাতওয়া দিবে? আর
আপনারাই কি ফাতওয়া দিবেন ?
-- ------------------------------
----------- ---------------
--------------------------- --------------
[[[[[[[ বিশেষ সতর্কিকরন ]]]]]]]
ঘটনাটির শেষাংশে একটি কথা নিয়ে অনেকেই দ্বিধায়
পড়েছেন বা পড়ছেন। ঘটনাটির শেষে বলা হয়েছেঃ ////////
বলা হয় বা কথিত আছে , সেই সময়ে মসজিদে নববীতে নব্বই
হাজার লোকের সমাগম ছিল। সকলেই বিদ্যুতের মত হাত
মোবারকের চমক দেখিতে পায়। তাদের মধ্যে মাহবূবে
ছোবহানী হজরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) ছিলেন। /////
এই কথাটির উপর কিয়াস করে অনেকে মুল ঘটনাটিকে
বানোয়াট, মিথ্যা বলেছেন। অথচ এটা ঘটনাটির কোন অংশ
নয়। এটা একটা প্রচলিত কথা। এটা সত্যও হতে পারে আবার
মিথ্যাও হতে পারে। কিন্তু মূল ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে কোন
দ্বীমত নেই। সুতরাং একটা সহিহ ঘটনাকে একটা প্রচলিত
কথা দিয়ে বিচার করা বোকামী বৈ আর কিছু নয়।
------------------------------
----------- ---------------
--------------------------- --------------
[[[[[[[ একটি প্রশ্ন ]]]]]]]
অনেকেই বলে থাকেন ঘটনাটি সহিহ হাদিস ও কুরআনের
আয়াতের বিপরীত। তাদেরকে বলবো ভাই, কোন্ হাদিস ও
আয়াতের বিপরীত একটু জানিয়ে বাধিত করবেন।
((((( ঘটনাটিকে সমর্থন করে এমন একটি সহিহ হাদিস )))))
ফাজায়েলে হজ্বেতো শুধুমাত্র হাত বের হওয়ার ঘটনা বর্ণনা
করা হয়েছে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওসাল্লামতো কবর থেকে সম্পূর্ণ দেহ বের হওয়ার ঘটনা
বর্ণনা করেছেন।
হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল স.
বলেন,----------
তোমরা বনী ইসরাইলদের ঘটনা বর্ণনা করো। কেননা তাদের
মাঝে অনেক আশ্চর্যজনক ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। এরপর
রাসূল স. একটি ঘটনা বর্ণনা করলেন,
একদা বনী ইসরাইলের কয়েকজন বন্ধু ভ্রমণে বের হল। তারা
একটি কবরস্থান দিয়ে অতিক্রম করছিল । তারা একে -
অপরকে বলল, "আমর যদি, দু'রাকাত নামায আদায় করে
আল্লাহর কাছে দুয়া করি, তাহলে আল্লাহ তায়ালা হয়তো
কবরের কোন ব্যক্তিকে আমাদের সামনে উপস্থিত করবেন।
সে মৃত্যু সম্পর্কে আমাদেরকে বলবে।
তারা দু'রাকাত নামায আদায় করল। এরপর আল্লাহর কাছে
দুয়া করল। হঠাৎ এক ব্যক্তি মাথা থেকে মাটি পরিষ্কার
করতে করতে কবর থেকে বের হয়ে এল। তার কপালে সিজদার
চিহ্ন ছিল। সে বলল, তোমরা কী চাও? আমি একশ বছর পূর্বে
মৃত্যুবরণ করেছি। এখনও আমার দেহ থেকে মৃত্যুর যন্ত্রনা
উপশমিত হয়নি। আল্লাহর কাছে দুয়া করো, যেন তিনি
আমাকে পূর্বের স্থানে (কবরে) ফেরত পাঠিয়ে দেন"
যেসব বিখ্যাত মুহাদ্দিস হাদীসটি তাদের কিতাবে উল্লেখ
করেছেন,
১. ইবনে আবিদ দুনিয়া রহ., মান আশা বা'দাল মাউত। হাদীস
নং ৫৮
২. মুসনাদে আব্দ ইবনে হুমাইদ, হাদীস নং ১১৬৪
৩.ফাওয়াইদু তামাম আর-রাজী, হাদীস নং ২১৭
৪. আল-জামে লি আখলাকির রাবী, খতীব বাগদাদী, হাদীস
নং ১৩৭৮
৫. আল-বা'স, ইবনে আবি দাউদ, হা.৫
৬.আজ-জুহদ, ইমাম ওকী ইবনুল জাররাহ, হাদীস নং৮৮
৭. আজ-জুহদ, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহ.
৮. মাজালিস মিন আমালি ইবনে মান্দাহ, ইবনে মান্দাহ,
হাদীস নং ৩৯৩
৯. আল-মাতালিবুল আলিয়া, ইবনে হাজার আসকালানী রহ.
হাদীস নং ৮০৭
১০. ফুনুনুল আজাইব, হা.১৯
১১. শরহুস সুদুর, জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহ. পৃ.৪২-৪৩
ঘটনাটি বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত। তামাম আর-রাজী এটি
সরাসরি রাসূল স. থেকে বর্ণনা করেছেন। ইবনে হাজার
আসকালানী রহ. হযরত জাবির রা. থেকে মওকুফ সূত্রে বর্ণনা
করেছেন, যেটি মরফু এর হুকুমে। সুতরাং ঘটনার প্রামাণ্যতার
ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
(((((ঘটনাটির অনুরূপ বর্তমান সময়ের একটি কারামত )))))
শহীদ হওয়ার তিন দিন পরে পিতার সাথে মুসাফাহা
ঘটনার বিবরণ নিম্নরূপ,
"আমার নিকট বিশিষ্ট মুজাহিদ ওমর হানিফ বর্ণনা করেছে,
১৯৮০ সালে রাশিয়া আফগানিস্তানে একটি বড় সেনাদল
পাঠায়। তাদের সাথে সত্তরটি ট্যাং ছিল। সাথে বিপুল
পরিমাণ অন্যান্য সমরাস্ত্র ছিল। এ সেনাদলকে বারটি
হেলিকপ্টার নিরাপত্তা দিচ্ছিল। তাদের মোকাবেলায় ১১৫
জনের একটি মুজাহিদ বাহিনী অগ্রসর হয়। কাফেরদের সাথে
প্রচন্ড লড়াই হয়। অবশেষে শত্রু পরাজিত হয়ে পলায়ন করে।
মুজাহিদ বাহিনী তাদের ১৩ টি ট্যাং ধ্বংস করে।
মুজাহিদদের মাঝে ৪ জন শাহাদাৎ বরণ করে। এদের মাঝে
ইবনে জান্নাত গুল নামে এক ভাই ছিলেন। আমরা তাকে
যুদ্ধের ময়দানে দাফন করে আসি। তিন দিন পরে আমরা
সেখানে গিয়ে তাকে তার পিতার কবরস্থানে দাফনের জন্য
স্থানান্তর করি। তার পিতা জান্নাত গুল এসে ছেলেকে
উদ্দেশ্য করে বললেন, " প্রিয় ছেলে !, তুমি যদি শহীদ হয়ে
থাকো, তাহলে আমাকে তোমার শাহাদাতের একটি নিদর্শন
দেখাও? হঠাৎ শহীদ ছেলেটি হাত বাড়িয়ে তার পিতার
সাথে মুসাফাহা করল এবং তাকে সালাম দিল। এমনকি
মুসাফাহা করে পনের মিনিট যাবৎ পিতার হাত ধরে রাখল।
এরপর হাত তার ক্ষতস্থানে রাখল। শহীদের পিতা পরে
বলেছেন, ছেলে মুসাহাফা করার সময় এতো জোরে চাপ
দিচ্ছিল যে আমার হাত ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা হচ্ছিল।
উমর হানিফ বলেন, এই ঘটনা আমি নিজের চোখে দেখেছি।
[সূত্র : আয়াতুর রহমান ফি জিহাদিল আফগান, পৃ. ১০২-১০৩]
এই লিখা পড়ে
জ্ঞান কত ভাগ বাড়বে জানি না,
তবে মনে হয়
, অজ্ঞান হবার সম্ভাবনা শতভাগের কাছাকাছি
যার কারণে উম্মহর মাঝে বিভক্তি বেড়েই চলছে।
ফাজায়েলে আমালের আশ্চার্য ঘটনাসমূগের প্রায় সবকটি শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ) এর লিখিত কিতাব اقتداء صراط المستقيم থেকে ও ইবনুল কায়্যিম রহ. লিখিত কিতাব كتاب الروح থেকে নেওয়া, যা ফাযায়েলে আমালের উর্দেূ সংস্করণে পাবেন।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া। অনেক অনেক ধন্যবাদ
যার কারণে উম্মহর মাঝে বিভক্তি বেড়েই চলছে।
সত্য বলেছেন। আমিও এটা লক্ষ্য করেছি। তবে দোয়া করি আল্লাহ উভয়কে আরও কাছে অঅসার তাওফিক দিক।
মন্তব্য করতে লগইন করুন