কুৎসিত বিভৎস্য পরিবেশ
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৬ মে, ২০১৬, ০৯:৫৯:৩৭ রাত
১৯৭১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত নানান ধরনের শাসন-শোসন চলেছে দেশে ,তখনও প্রতিহিংসা ছিলো। রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিলো। ভিন্ন মতের রাজনীতির প্রতি বিতশ্রদ্ধতা ছিলো। কিন্তু বিভৎস্যতার মাত্রা আজকের মত ছিলোনা। তখনও রাজনৈতিক কর্মীরা একে অপরের প্রতি ধাওয়া করেছে,ভাংচুর হয়েছে কিন্তু মানুষ হত্যার বিষয়টি আজকের মত সস্তা ছিলোনা। প্রকাশ্যে কুপিয়ে,টুকরো টুকরো করে মানুষ হত্যা এ পর্যায়ে কোনো কালেও ছিলোনা।
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কখনও কখনও কেউ কেউ হত্যা করে লাশটি প্রতিপক্ষের ঘরে রেখে পুলিশকে খবর দিয়ে হেনস্থা করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এটি ছিলো রেয়ার। আর আজকে স্বয়ং পুলিশকেই এ কাজে ব্যবহার করা হয়। রাজনৈতক-অরাজনৈতিক নির্বিশেষে প্রতিবাদ করলেই তার উপর শাসিত নেমে আসে।
বাংলাদেশের অবস্থাদৃষ্টে স্পষ্ট মনে হচ্ছে সরকারের নিজের উপর কোনো নিয়ন্ত্রন নেই,যেন তারা যে কোনো মূল্যে কারো আদেশ পালন করছে। কিছুদিন পূর্বে মন্ত্রী তারানা হালিম ইন্টারনেট থেকে পর্ণো ওয়েব সাইট ১ সপ্তাহের ভেতর বন্ধ করে দিবেন বলে ঘোষনা করেন। কিন্তু কয়েক ঘন্টা পর তিনি নিজ থেকেই তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেন এবং প্রকাশ্য অশ্লীলতার পক্ষে অবস্থান গ্রহন করেন বা বাধ্য হন। স্পষ্ট হয়ে যায়- তিনি তার উপরের কারো আদেশ পালন করেছেন।
তরুন-যুবক শ্রেনীর চারিত্রিক অধ:পতন ঘটাতে সমস্ত উপকরন প্রকাশ্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। মারাত্মক নেশার দ্রব্য তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। তাদের পিতা-মাতার হাতে নোংড়া সাংষ্কৃতির উপকরন ও উপায় তুলে দেওয়া হচ্ছে অঅর তারা তা গ্রহনও করছে। ছোট বাচ্চারা পর্যন্ত খুন খারাবীতে পটু হয়ে উঠেছে। সমাজ থেকে শালীনতাবোধ উঠে গেছে। অশ্লীলতার চর্চাকে মানবাধীকার বলে চিহ্নিত করে তার সংরক্ষনে আন্দোলন পর্যন্ত হচ্ছে।
একদিকে নেশার দ্রব্য অন্যদিকে অশ্লীলতা সমাজকে সয়লাব করেছে। এর ভেতর আছে নানামুখী ভেজাল। অত্যন্ত জটিল কঠিন উপায়ের নকল খাবার ও ভেজালের কৌশল সাধারন মানুষকে সুচতুরভবে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে তারা ঘরে ঘরে ভেজালের কারখানা খুলে বসেছে। আর মারাত্মক সব রাসায়নিক দ্রব্য দেদারছে সরবরাহও করা হচ্ছে।
সমাজে যে শ্রেণী ছিলো অন্যায়ে প্রতিবাদী তারা কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। নতুন এক প্রজন্মকে জন্মানো হয়েছে যারা নীতি নৈতিকতার স্থলে নিজেদের ইচ্ছাকেই গ্রহন করেছে। যার যা মনে চাচ্ছে করছে। অপরাধ গা সওয়া হয়ে পড়েছে। নির্দিধায় মানুষ খুন করছে এবং এর বিচারও হচ্ছেনা। যে আদালতের উপর মানুষের অঅস্থা ছিলো তা আর সে পর্যায়ে নেই। বিচার বিভাগকেও মানুষ হত্যার হাতিয়ার বানানো হয়েছে।
সব পাল্টে গেছে। পূর্বে বিশ্বে কোথাও বোমা বিস্ফোরিত হলে আলকায়েদার নাম শোনা যেত ,কিন্তু আজ একই ক্ষেত্রে আই.এস এর নাম শোনা যায়। এটি স্পষ্ট যে-সবকিছুতে আলকায়েদা জড়িত এটা মানুষ বিশ্বাস করছিলো না। তাই নতুন গ্রুপ আই.এস তৈরীর প্রয়োজন দেখা দিলো। আগামী দশক অন্তত এরাই সকল অপরাধের দায়-দায়ীত্ব স্বীকার করবে। মানুষ তা বিশ্বাসও করবে,বা মিডিয়াকে দিয়ে বিশ্বাস করানো হবে।
এক অরাজকতাপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। মানুষের ভেতর থেকে বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে দ্রত। ব্যপক পারিবারিক-সামাজিক সমস্যা গ্রাস করছে। সর্বত্র অস্থিরতা।
এতক্ষন যা বললাম সবই সত্য এবং এসবই কিয়ামতের পূর্ব লক্ষন। এরপর আরও বড় বড় আলামতগুলো প্রকাশিত হবে। কিন্তু মানুষ এমনই বিকারগ্রস্থ যে অনুধাবনের যোগ্যতাও হারিয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১৪০৬ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ হুজুর ।
মহান আল্লাহ
আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে হেফাজত করুন
আমিন।
যারা নেতা পর্যাযে আছেন, তাদের হেদায়েত করুন।
বিজ্ঞভাবে যে বীভৎস চিত্রের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরেছেন তা যেকোন ভয়ঙ্কর যুদ্ধের চিত্র। যা বাংলাদেশে বিরাজ করছে। আপনার লিখাটি পড়ে গা শিউরে উঠছে। এযেন জাহান্নামের দোরগোড়ায় আমরা।
নামেমাত্র গদিতে শাসক আছে কিন্তু ক্ষমতা অন্যের। ভাবতেই আঁতকে উঠে মানুষ।
মহান রব এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির অবসান করুন। এটাই আমাদের প্রার্থনা।
সুন্দর ও যথার্থ বিশ্লেষণের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন