তৃপ্তীদায়ক দিনটি ! নিউ চায়না ....৯
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৬ মার্চ, ২০১৩, ০৪:৩২:২২ বিকাল
শু হুইমিন আমাকে শাওশিংএর দর্শনীয় স্থান দেখাতে নিয়ে যাবে বলেছিল, এমনকি আমার শিডিউল টাইট তা জানানোর পরও শনি,রবীবারের ছুটির কথা মনে করিয়ে দিল কিন্তু আমি মুসলিম বলে এখন বোধহয় তার সে চিন্তা অস্ত গেছে। ভালই হয়েছে, আল্লাহ আমাকে কিছু হারাম থেকে বাঁচালো।
গত কয়েকদিন খেয়ে তেমন তৃপ্তি হচ্ছেনা। প্লেনে মুরগী খাইনি কারন তা আল্লাহর নামে জবাই করা নয়। লোভ লাগলেও নিজেকে সংবরণ করেছি। সন্ধ্যায় রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছিলাম একটা ভাল রেস্টুরেন্টে খাব বলে। মোটমুটি পরিচ্ছন্ন একটাতে ঢুকে পড়লাম। দেখলাম একজন ফ্রাইড রাইসের সাথে চমৎকার ভেজিটেবল খাচ্ছে। আমি সেটা দেখিয়ে বললাম আমাকেও এটা দিন। তারা খানিকপর দিয়ে গেল। আমি দেখলাম ভেজিটেবলের ওপর অতি চমৎকার করে গরুর মাংস বসে আছে। রান্নাটা দেখে মনে হল এটা ভারতীয় রান্নার কাছাকাছি। রাইস এবং ভেজিটেবল খেয়ে দেখলাম স্বাদ খুব ভাল। তবে মাংসটি আমার জন্যে হালাল হবেনা বলে আল্লাহর ভয়ে তা খাওয়া থেকে বিরত হলাম। এতটাই ক্ষুধার্ত ছিলাম যে, চারিদিকে না তাকিয়ে গো-গ্রাসে খেতে থাকলাম চপটিস্ক দিয়ে এবং গো-মাংসের দিকে করুনভাবে তাকাচ্ছিলাম। খানিকপর মাধা উচু করে সামনে তাকিয়ে দেখলাম ক্যাশিয়ারের মাথায় টুপি। যিনি রান্না করছেন তার মাথায় টুপি এবং মুখে ২০/৩০টা দাড়ি। পেছনে তাকিয়ে দেখলাম একজন মহিলা জিন্স পরিহিতা কিন্তু মাথা ঢাকা। আবারও সামনে ক্যাশিয়ারের দিকে তাকালাম তিনিও আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। আমি মাংস আলাদা করে রাখছি দেখে তিনি বোধহয় বুঝতে পারলেন যে, আমি হারাম-হালাল জটিলতায় পড়েছি। আমি জিজ্ঞেস করলাম-আপনি মুসলিম ? তিনি বললেন-হ্যা,আমি মুসলিম। বললাম,আস সালামুআলাইকুম। আমার তখন যে কি খুশী লাগছিল তা বোঝাতে পারব না।
তিনি সঙ্গে সঙ্গে দেওয়ালে টাঙানো ইয়াক নামক বনগরু জাতীয় প্রাণীর ছবি দেখিয়ে বললেন-হালালী(হালাল)। আমার প্লেটের দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বললেন-হালালী। আমি যেন প্রাণ ফিরে পেলাম। আনন্দচিত্তে গরুর মাস খেতে থাকলাম। মনে হল,আমার আনন্দ দেখে স্বয়ং আল্লাহও সন্তুষ্ট এবং তিনি হয়ত তার ফেরেশতাদের ডেকে বলছেন-এই আহাম্মক একটু আগে আমাকে ভয় করে মাংসটা খেলনা,এখন ওকে খাওয়ানো আমার দায়িত্ব। সমস্ত শিরা উপশিরার ভেতর দিয়ে যেন আনন্দ প্রবাহিত হল। ভাবলাম এই জিনিস,যা একটু আগে আমার জন্যে হারাম ছিল তা হালাল হয়ে গেল। আলহামদুলিল্লাহ !
খাবার শেষে বিল দিতে গেলে বাধল বিপত্তি। বিল নিবেনা। আমি বিল দিতে যাই আর তিনি অন্যদিকে চলে যান। ভারি বিপদ। শেষে বললাম,বিল না নিলে আর আসব না,বিল নিলে বারবার আসব। তারপর তিনি নিলেন তবে ডিসকাউন্ট দিলেন। খুব ভাল লাগল। একটা দোকান থেকে ভেজিটেবল জুস কিনে হোটেলে ফিরলাম। জুসটা খুব স্বাস্থ্যসম্মত এবং খেতেও ভাল।
চলছে......
বিষয়: বিবিধ
১২৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন