সত্যিই দিনটি ছিল থ্যাংকস রিসিভিং ডে ! ........৭
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৪ মার্চ, ২০১৩, ১০:০৯:১২ সকাল
আজ ১১সেপ্টেম্বর,২০১২। দিনটি আমার কাছে শ্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারন আজকের দিনটিকে নামকরন করেছি দ্য থ্যাংকস রিসিভিং ডে।
দুপুরে একটা রেস্টুরেন্ট থেকে লা-মিয়ান নামক স্যুপ নুডলস খেলাম। সাথে সতেজ ভেজিটেবল। হাটতে শুরু করলাম রেস্টুরেন্টের সামনে দিয়ে। দেখলাম এক তরুন তার ইলেকট্রনিক মোটরসাইকেল নিয়ে উঁচু সিড়ি বেয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। আশপাশে কিছু তরুনিও ছিল,তাদের সামনে নিজেকে হিরো হিসেবে তুলে ধরতে হয়ত তার এ কসরত। কিন্তু শেষ সিড়িতে ওঠার সাথে সাথে সে তার গতি এবং নিয়ন্ত্রণ হারালো এবং যে গতিতে সে উঠেছিল,তার দ্বিগুন গতিতে নীচে আছড়ে পড়ল। অমি লাফ দিয়ে সিড়িতে উঠে তার মোটর বাইক ধরে ফেললাম। প্রচন্ড গতির মোটরবাইক ধরার কারনে আমার হাতের আঙুল মচকে গেল কিন্তু সে ছিল নিরাপদ। সে উঠেই আমাকে বলল-স্যাংকিউ(থ্যাংকিউ)
এবার চামৎকার একটি রাস্তা ধরে হাটছি। আমার সামনের দিক থেকে এক বৃদ্ধা তার মোটর বাইক চালিয়ে আসছিল। দেখলাম হটাৎ তার ব্যাগটি মাটিতে পড়ে গেল। তিনি বেশ কিছুদূর সামনে চলে গেছেন। আমি তাকে আসতে নিষেধ করলাম এবং ব্যাগটি তুলে তাকে ফেরত দিলাম। তিনি আমাকে বললেন-শিয়েশিয়া(ধন্যবাদ)
হাটছিলাম ফুরফুরে মেজাজে। আমার ড্রেসটা বেশ হালকা পাতলা। আবহাওয়া চমৎকার। এটা গৃষ্মের বিকেল কিন্তু মোটেও গরম নয়। মানুষ তাকাচ্ছে বারবার কারন এরা বিদেশীদের ব্যাপারে বরাবরই কৌতুহলী। হঠাৎ দেখলাম এক লোকের মোটরবাইক থেকে একটি ইলেকট্রনিক পার্টস পড়ে গেল। দেখে মনে হল দামী হবে। তাকে ইশারায় থামতে বলে সেটি ফেরত দিলাম। তিনি চায়নিজ ভাষায় আমাকে ধন্যবাদ দিলেন।
হেটেই চলেছি। দেখলাম একটি চমৎকার টুইন টাওয়ার,এটা ৪০তলা তো হবেই। এটা যে বিদেশীদের ইনভেস্ট তা বুঝতে পারলাম। একটা বহুজাতিক কোম্পানী এটা ভাড়া নিয়েছে। চীনের হাউজিং ব্যবসার প্রায় পুরোটাই চায়নিজ সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এবার একটি বিশাল চার রাস্তার মোড়ে চলে আসলাম। রাস্তা পার হলাম এবং এখানে দেখলাম এক বিশাল লেক। আমি ফুটপাথের ওপর দাড়িয়ে ছবি তুলছিলাম তখন দেখলাম এক তরুনী তার পোষা কুকুরটিকে নিয়ে দাড়িয়ে আছে। কখনও তাকে কোলে তুলে আদর করছে,কখনও নীচে নামিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু সে এক স্থানেই দাড়িয়ে আছে। সে আমার দিকে তাকাচ্ছে,আমি যখনই তার দিকে তাকাচ্ছি তখনই সে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিচ্ছে। বাহ মজার তো ! অনেকক্ষন এমন চলল। সন্ধ্যা হয়ে আসছে। আমি রাস্তার আরেক পাশে আসলাম। ঘাড় ঘুরিয়ে দূর থেকে দেখলাম,মেয়েটা চলে যাচ্ছে। এখানে নদীর ওপর একটা চমৎকার ব্রিজ। সেটার ওপর খানিকক্ষন দাড়ালাম। সুন্দর একটা হাওয়া বইছিল। তা বেশ ভাল লাগছিল। আমি চলে আসলাম,এত ভাল; ভাল না।
হাটতে লাগলাম আমার হোটেলের পথে। এখানে এ্যাপলের শো-রুমে ঢুকলাম। দেখলাম ধনী চায়নিজরা এ্যাপল ভালবাসে। আমিও ভালবাসি তবে সেটা খাওয়ার ক্ষেত্রে,কারন ওই বিশেষ এপলের মূল্য দিতে পারব না। নতুন মডেলের ল্যাপটপ,আইপড,আইপ্যাড,আইফোন সবই আছে। এদের পণ্য দেখলে মনে হয় কিনে ফেলি। চমৎকার ডিজাইন এবং উৎকৃষ্ট পারফর্মেন্স হল এ্যাপলের বৈশিষ্ট্য। ‘স্টিভ জবস জিন্দাবাদ !’ না বলে উপায় নেই। ভদ্রলোক একটা প্রমদ তরীরও ডিজাইন করেছিল যা অতি সম্প্রতি তার পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেটার ডিজাইনও অতি চমৎকার। কিন্তু ভদ্রলোক চড়ে যেতে পারলেন না,হায় পরিতাপ ! শো-রুমে সকল পণ্য জনগনের ব্যবহারের জন্যে রাখা হয়েছে। এখান থেকে যে কেউ এটা খানিকক্ষন ব্যবহার করে এর কার্যকারীতা পরিক্ষা করতে পারে। কেউ কেউ কম্পিউটারে দেখলাম গেম খেলছে। ঢাকার বাজারের মতই দাম আকাশ ছোয়া দেখলাম। আরেক দোকানে দেখলাম হাজার হাজার চায়নিজ মোবাইল সেট। সেগুলোর ডিজাইন অতিশয় চমৎকার,তবে কার্যকারীতা সুবিধার নয়।
চায়নিজ ব্রান্ডের মধ্যে ‘লেনোভো’ বেশ জাতের। এদের ল্যাপটপ,ডেস্কটপ,মোবাইল ফোনসহ অনেক রকমের পণ্য আছে। ডিজাইনও চমৎকার। বিশ্বের সবথেকে পাতলা ল্যাপটপ এরা তৈরী করেছে,অবশ্য আসুসের একটা অতি পাতলা নোটবুক দেখেছি। এ্যাপল আরও স্লিম ল্যাপটপ তৈরী করছে। এরা এখন স্লিম হওয়ার প্রতিযোগীতায় নেমেছে। লেনোভো বর্হিবিশ্বের সাথে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত এবং এদের সে সক্ষমতাও রয়েছে। এবার ঢুকলাম একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে,এক বোতল মিক্সড ফ্রুট জুস কিনলাম এবং খেতে খেতে হোটেলে ফিরলাম। আজকের দিনটির উল্লেখযোগ্য দিকটি হল তিনবার বিশেষ কারনে ধন্যবাদপ্রাপ্ত হওয়া। সত্যিই দিনটি ছিল থ্যাংকস রিসিভিং ডে !
বিষয়: বিবিধ
১৩৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন