আরেকটু ভাবুন !!!

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ০১:১৭:৪১ রাত

নাস্তিকরা বিশ্বাস করে যে এই মহাবিশ্ব হঠাৎই সৃষ্টি হয়েছে কারন ছাড়াই। কেউ সৃষ্টি করেনি বরং এটা এভাবেই ছিলো। আর এটা ধ্বংসও হবেনা। বরং একরূপ থেকে আরেক রূপে রুপান্তরিত হবে। তাদের সকল বিষয় এই চিন্তার আলোকে বিশ্লেষন করতে চায়।

আরেকটা বিশ্বাস হল মহাবিশ্বসহ সকল কিছু এতটাই পরিকল্পিত ও ভারসাম্যপূর্ণ,বিজ্ঞানময় যে এটি কারো দ্বারা সৃষ্ট। হঠাৎ করে এমনটা ঘটতে পারেনা। বিগ ব্যাং হল একটি বিস্ফোরন,অার একটি বিস্ফোরন কখনও নির্ভূল সিস্টেম তৈরী করতে পারেনা। আর মহাবিশ্ব হল কিছু বস্তুর ও প্রানীর সমন্বয়। এরা নিজেরা নিজেদের সৃষ্টি করতে পারেনা। যেমন বৃহৎ সূর্য হল জ্বলন্ত হিলিয়াম গ্যাস। বাজার থেকে খানিক হিলিয়াম গ্যাস কিনে তাতে আগুন ধরিয়ে জ্বালালে যা হবে সূর্য হল সেটাই। উভয়ের মধ্যে পার্থক্য এই যে,সূর্য আকারে অনেক বড়। কিন্তু বৈশিষ্ট্য এক। মঙ্গলগ্রহ যদি পাথরের তৈরী হয়,তাহলে আমার হাতে থাকা এক খন্ড পাথর আর মঙ্গল গ্রহের ভেতর পার্থক্য হল এই যে, গ্রহটা এটার থেকে অনেক বড় কিন্তু বৈশিষ্ট্য এক। এরকমই গ্রহ নক্ষত্র বা বস্তু মিলেই মহাবিশ্ব। আর এদের কারো স্রষ্টা হওয়ার ক্ষমতা নেই। আর যে নির্ভল সিস্টেমে গোটা প্রকৃতি চলছে সেটা এমনিতেই সৃষ্টি হতে পারেনা। বেশীরভাগ বিজ্ঞানীই এই মত বিশ্বাস করে।

আল্লাহ তায়ালা গোটা মহাবিশ্ব,ও এর উপরের আসমানসমূহ তৈরী করেছেন নিখুতভাবে। এখানে সিস্টেম চলতে চলতে যেসব এক্সিডেন্ট হয় সেটাও আল্লা কতৃক নির্ধারিত নিয়মের ভেতরের বিষয়। যেমন একটি আয়াতে আল্লাহ বলছেন-"শপথ সেই স্থানের যেখানে তারকাপুঞ্জ পতিত হয়" বিজ্ঞানীরা দেখেছেন মহাবিশ্বে জ্বলতে জ্বলতে ও কক্ষপথে চলতে চলতে একসময় তারকাসমূহ প্রায় নিষ্প্রভ হয়ে আসে, তখন তারা অন্ধকার গহবর বা ব্লাকহোলের ভেতর পতিত হয়ে চিরতরে অন্ধকার হয়ে যায়। .....তো এই ধ্বংসও আল্লাহর তৈরী করা নিয়মের ভেতরের বিষয়। কোনো কিছুই তার নিয়ন্ত্রনের বাইরের নয়। কিন্তু প্রত্যেকের জন্যেই একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত রয়েছে।

আল্লাহ যে নিয়ম কানুন তৈরী করেছেন,সেখানে আল্লাহ ইচ্ছা করলেই হস্তক্ষেপ করতে পারেন এবং তিনি মানুষকে দেখানোর জন্যে বা অনুধাবন করানোর জন্যে প্রকৃতিতে কখনও উলোটপালট করেন। যেমন তিনি পৃথিবীর ভেতর যে প্লেটসমূহ তৈরী করেছেন(সম্ভবত ট্যাকটনিক প্লেট)সেটা নড়াচড়া করে। এর কারনে মহাদেশসমূহ একে অপরের কাছাকাছি চলে আসে অথবা দূরে সরে যায়। এটা বিজ্ঞান প্রমান করেছে। কিন্তু এই প্লেটসমূহ কেন নড়াচড়া করে এর সদূত্তর জানা নেই। আবার বিজ্ঞানীরা কার্য-কারন অনুধাবন করে বা কিছু প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসরন করে অনুমান করেন, এই প্লেটটি এত বছর পর ওইদিকে সরে যেতে পারে অথবা এরকম কিছু। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় কোনো রকম নিয়মের তোয়াক্কা না করেই পৃথিবীর কোনো স্থানে অস্বভাবিকভাবে নড়াচড়া হয়ে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হচ্ছে। নাস্তিকদের কাছে এটার ব্যাখ্যা হল সেই প্লেটের গতিবিধী দেখা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। কারন তারা এর পেছনে গেলে সেখানে সৃষ্টিকর্তা সংক্রান্ত প্রশ্ন রয়েছে,ফলে তারা প্রাকৃতিক যুক্তি দিয়ে সকল ঘটনা ব্যাখ্যা করে। কোনো উত্তর না পেলে বলে বিজ্ঞান সামনে হয়ত এর কারন উদঘাটন করবে।

কিন্তু বিজ্ঞান হল কিছু নিয়ম কানুনের সমষ্টি,যার সবকিছু পরিক্ষাগারে পরিক্ষা করা সম্ভব নয়। আর এর যেসব থিওরী রয়েছে তা বিজ্ঞানীদের কল্পনা নির্ভর বিষয়। এমনকি পরিক্ষাগারে প্রমানিত "ল" ও অন্য বিজ্ঞানীদের বিপরীত পরিক্ষায় ভুল প্রানিত হয় কখনও। নাস্তিকরা শুধুমাত্র ঘটনা বা উপসর্গ দেখে বিচার বিবেচনা করে। তাদের থিওরীগুলোও এইসব ঘটনা নির্ভর। কিন্তু ঘটনার পেছনে কোনো দক্ষ চিন্তা কাজ করছে কিনা সেটা তারা বিবেচনা করেনা। তাদের দৃষ্টিতে সেটা চিন্তা করা অবৈজ্ঞানিক।

ধরুন একজন মেশিনগান দিয়ে একটি দেওয়ালে অত্যন্ত নিখুতভাবে গুলি করে পাশাপাশি ফুটো তৈরী করল। কিছু বিজ্ঞানী ফুটোগুলো পর্যবেক্ষন করল,ফুটোগুলোর পারষ্পরিক দূরত্ব,গভীরতা নির্ণয় করল। এরপর এই সিদ্ধান্তে আসল যে প্রথম ফুটোটিই শুরু আর এই ফুটোটিই অন্যদের সৃষ্টি করেছে। কারন প্রথমটির সাথে অন্যদের বৈশিষ্ট্য পুরোপুরি মিলে গেছে। এরকমটাই হল নাস্তিকদের থিওরী। অথচ যে লোকটি ফুটো করল,তাকে দেখল না। কি দিয়ে ফুটো করল তাও এড়িয়ে গেল। এবং যিনি উক্ত ফুটো তৈরী করেছেন,তিনি যে আরও ফুটো তৈরী করতে পারেন সেটাও অনুধাবন করল না। বরং এরকম ভাবনাটাকেই অবৈজ্ঞানিক বলে এড়িয়ে গেল।

আল্লাহ তায়ালা সবকিছু একটি নিয়মে তৈরী করেছেন। সেটা সেভাবেই চলছে। কিন্তু তিনি ইচ্ছা করলেই সেই নিয়মে হস্তক্ষেপ করতে পারেন। আল্লাহর হস্তক্ষেপের বিষয়টিকে আমরা মিরাকেল বলতে পারি। নিশ্চয় এর ব্যাখ্যা রয়েছে কিন্তু এটি আল্লাহ জানেন। আল্লাহর কাছে এটি মিরাকেল নয়।

বিষয়: বিবিধ

১২৯২ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

356361
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৩:০৬
আরিফা জাহান লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০১:২৯
295898
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ খায়রান
356362
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৪:৪৬
শেখের পোলা লিখেছেন : আল্লাহ তার সৃষ্টির উপর পুরাই কর্ত্বতৃশীল৷ ইচ্ছে করলে কিছু বানাতে পারেন আর ইচ্ছে করলে তা ধ্বংসও করতে পারেন৷ কেউ মানুক আর না মানুক৷ ধন্যবাদ৷
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০১:৩০
295899
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জি সেটাই সঠিক Happy
356369
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৯:১৭
তট রেখা লিখেছেন : পিলাচ
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০১:৩০
295900
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ধনবাদ ভাই
356370
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৯:৩৮
হতভাগা লিখেছেন : মধ্য এশিয়া ও মধপ্রাচ্যেই দেখা যাচ্ছে বেশী বেশী ভূমিকম্প হচ্ছে । আগে বাংলাদেশে প্রতি বছর ২/৩ বার ঘুর্নিঝড় আসতো এবং বন্যা প্রায়শঃই হত । এখন দেখা যাচ্ছে যে সেটা বেশী বেশী হচ্ছে চীন সাগরের আশে পাশে এবং আমেরিকার পূর্ব পশ্চিমে ।

১৯৮৬ এর ওয়ার্ল্ড কাপ হবার কথা ছিল কলাম্বিয়াতে । তাদের অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে সেটা ১৯৮২ সালে চলে যায় মেক্সিকোতে যারা ১৯৭০ এর বিশ্বকাপও আয়োজন করেছিল ।

বিশ্বকাপের কয়েকমাস আগে মেক্সিকোতে ভুমিকম্প হল । পরে মেক্সিকো সেটাকে ভালই ট্যাকল দিতে পেরেছিল । পরে ১৯৯৪ সালে আমেরিকা পায় Greatest show on Earth আয়োজন করার সুযোগ .

সব কিছু আল্লাহর হাতেই থাকে । আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউ কিছুই করতে সক্ষম নয় । তার মানে এই নয় যে আমি অন্যায় করলাম সেটা আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়েছে , ফলে আল্লাহ আমায় শাস্তি দেবেন না '' আল্লাহ এর মাধ্যমে মানুষকে পরীক্ষা করেন সব সময় ।

আমাদের দেশে বন্যার কারণ ছিল মনুষ্য সৃষ্ট । কারণ শুষ্ক মৌসুমে বাঁধ আটকে রাখা ভারত ভরা মৌসুমে সেটা খুলে দেয় ।

CTBT চুক্তি যখন করা হয় সেখানে চায়না ও আমেরিকা স্বাক্ষর করলেও র‍্যাটিফাই করে নি ।

https://en.wikipedia.org/wiki/Comprehensive_Nuclear-Test-Ban_Treaty

http://www.nti.org/treaties-and-regimes/comprehensive-nuclear-test-ban-treaty-ctbt/

যে মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়াতে আল্লাহর নবী-রাসূল , ওলি আউলিয়ারা বেশী এসেছেন সে অন্চল কেন এত ভূমিকম্প প্রবন হবে ?

পৃথিবীর আরেক প্রান্তে এরকম মহামানবরা এসেছিলেন বলে আমার অন্তত জানা নেই ।

আমেরিকা , ইউরোপে মধ্য এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের মত এত ঘন ঘন ভূমিকম্প হয় না ।

আল্লাহর সৃষ্ট এই প্রকৃতিকে মানুষই কলুষিত করছে একে (সবল + চালাক)অন্যের(সরল+বোকা) উপর প্রভাব বিস্তার করার জন্য ।
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০১:৩৫
295901
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আমেরিকাতে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। সেটা রিখটার স্কেলে ৬ এর বেশীই হয়। ওরেগনেও গতকাল হয়েছে। আরো কিছু স্টেটেও হয়েছে কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এসব খবর তেমন জোরালো নয় বলে য়ত আপনার কাছে পৌছেনি। জাপানে নিয়মিত হয়। মেক্সিকোতেও হয়।

আদ সামুদ জাতির কাছে নবী এসেছিলো সেখানেও ভূমিকম্প হয়েছে। আল্লাহ এটা বলেননি যে মুসলিমরা যেখানে থাকবে সেখানে ভূমিকম্প কম হবে।

আর মানুষ্য সৃষ্ট গজব থেকে আমরা নিষ্কৃতি পাবনা এরকমটা রসূল(সাঃ)জানিয়েছেন। আর আল্লাহ বলছেন প্রত্যেক জাতির কাছে নবী পাঠানো হয়েছে।

আমরা প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে অনেক কাজ করে প্রকৃতিকে বিষিয়ে তুলেও সমস্যাগ্রস্ত হই।
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:৫০
295915
শেখের পোলা লিখেছেন : সতর্ক করার পরও যারা সাবধান হয়না শাস্তিতো তাদেরই আগে প্রাপ্য৷ এ জন্যই বাংলাদেশ নিয়ে দুশ্চিন্তা হয়৷
356380
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ সকাল ১১:৩৬
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। প্রিয়তে রাখলাম।
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০১:৩৫
295902
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ খায়রান জনাব। Happy
356382
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:০০
আবু জান্নাত লিখেছেন : সবই মহান আল্লাহর সৃষ্টি, তারই নিয়ম অনুস্বরণ করে সবকিছুই পরিচালিত হচ্ছে। তবে কিছু জিনিস আল্লাহ তায়ালা মানুষের কর্মের উপর ছেড়ে দিয়েছেন, আর মানুষকে অর্জন ও বর্জন করার ইখতিয়ার দিয়েছেন।

সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া।
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০১:৩৬
295903
দ্য স্লেভ লিখেছেন : সুন্দর বলেছেন জনাব। জাজাকাল্লাহ খায়রান
356429
০৭ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:২৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার পোষ্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। নাস্তিকরা নিজেদের যুক্তিবাদি দাবি করলেও আসলে তারা কোন যুক্তিই মানতে চায়না।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File