কারবালা

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১১ নভেম্বর, ২০১৫, ০১:২৩:৪১ দুপুর

কারবালা:::::::

কারবালার ঘটনাটি ছিল নি:সদ্বেহে ইসলামের ইতিহাসের সবথেকে বেদনাবিধুর ঘটনা।কারন যাদের জন্যে আমরা দোয়া করি বা দোয়া করা কর্তব্য তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।অনেক সম্মানিত সাহাবীও শহীদ হয়েছেন আল্লাহর রসূলের(সাঃ)পরিবারের,বংশের সম্মানিত লোকদের সাথে। কিন্তু তার চাইতেও দু:খজনক হল এখান থেকে শিক্ষা গ্রহন না করে আমরা মারামারি,দলাদলীতে লিপ্ত হয়েছি। সে সময়ে কুচক্রী মহল কৌশলে ঘটনা ঘটিয়ে ছিল ,যার প্রকৃত স্বরূপ একেক দলের কাছে একেক রকম। এক্ষেত্রে বক্তব্যে সংযত হওয়াই শ্রেয়। মুয়াবিয়া(রাঃ) এর পুত্র ইয়াজিদ সাহাবী ছিলেন না,ফলে তার ভুল হলে সমালোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু সেই সমালোচনাটা যেন কেবল বিষদগার করে সময় নষ্ট করার জন্যে না হয়,কারন এতে কোনো কল্যান নেই। আল্লাহ সাহাবীদের ভূল ক্রুটি ক্ষমা করেছেন,তাই তারা সমালোচনার উর্ধ্বে।

শিয়ারা প্রায় সকল সাহাবীকে গালি,অভিশাপ দেওয়াকে তাদের ধর্মের অংশ মনে করে যা গোমরাহী ছাড়া কিছু নয়। তারা আল্লাহর রসূলের(রাঃ) সাথীদেরকে কাফির মনে করে এবং আল্লাহর রসূলের সাহাবী আলী(রাঃ),তার পুত্র ঈমাম হাসান ও হুসাইনের সাথীদেরকে একমাত্র মুসলিম মনে করে। যার কারনে তারা সম্মানিত তিনিই(সাঃ) সবথেকে অসফল ব্যক্তি(নাউযুবিল্লাহ)এটা শিয়ারা তাদের কর্মকান্ডে প্রমান করে।

যাইহোক ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়া ভূল করেছে,তার সমালোচনা করা যায়,যদিও ইয়াজিদ বলেছিলো যে ঈমাম হুসাইন ও তার সাথীদের হত্যার আদেশ সে দেইনি। কিন্তু যদি সে দিয়েও থাকে তার সমালোচনা করা যায়। তবে এই সমালোচনাটা যেন নিছক অপবাদের জন্যে না হয়,বরং শিক্ষা গ্রহনের জন্যে হয়,তাতেই অামাদের কল্যান।

বি:দ্র: মক্কা বিজয়ের সময় ইসলামের সবথেকে বড় দুশমন আবু সুফিয়ান ইসলাম গ্রহন করেন। তার স্ত্রী হিন্দাও ইসলাম গ্রহন করেন ফলে তাদের পাপ আল্লাহ ক্ষমা করেছেন। তার পুত্র মুয়াবিয়াও ইসলাম গ্রহন করেন এবং তিনি ছিলেন ওহী লেখক অত্যন্ত সম্মানিত সাহাবীদের অন্যতম। জেনে রাখা জরুরী-এই আবু সুফিয়ান(রাঃ) ও তার স্ত্রী হিন্দা মুসলিমদের সাথে রোম ও পারস্যের যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন এবং বীরত্ব প্রদর্শন করেছিলেন। আবু সুফিয়ান তার এক চোখ হারায় এই যুদ্ধে। আর হিন্দা জ্বালাময়ী কবিতা আবৃত্তি করে মুসলিম যোদ্ধাদেরকে চাঙ্গা করে, যেভাবে সে ওহুদের যুদ্ধে কাফিরদেরকে চাঙ্গা করেছিলো।

এই আবু সুফিয়ানের আরেক পুত্রের নাম ছিল ইয়াজিদ,যিনি ইসলামের প্রথম দিকে ইসলাম গ্রহন করেছিলেন ও সম্মানিত সাহাবীর মর্যাদা লাভ করেছিলেন। তিনি ছিলেন মুসলিমদের একজন নেতা ও শাম বিজয়ী বাহিনীর অধিনায়কদের একজন। মুয়াবিয়ার(রাঃ) ভাই। ফলে ইয়াজিদ বিন সুফিয়ান ও ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়া এক ব্যক্তি নন। যে ইয়াজিদকে ঈমাম হুসাইন ও পরিবারের হত্যার আদেশদানকারী বলা হয় ,সে ছিল মুয়াবিয়া(রাঃ)এর পুত্র।

পরিশেষে বলতে চাই-আল্লাহর রসূলের বংশের সৎপথ প্রাপ্ত লোকদেরকে সম্মান করার ও তাদের জন্যে দোয়া করা অামাদের জন্যে অবশ্য কর্তব্য। এটি আমাদের জন্যে একটি নির্দেশ। কিন্তু তাদেরকে ভালোবাসার নামে মুহাররমের ১০ তারিখে তাজিয়া মিছিল করা,মাতম করা ও চাবুক মেরে নিজেদেরকে রক্তাক্ত করার মধ্যে কোনো কল্যান নেই,এটি কোনো ভালোবাসা প্রকাশের পদ্ধতি নয়। বরং তারা যেভাবে তাদের জীবন পরিচালনা করেছেন ইসলাম অনুযায়ী সেভাবে জীবন পরিচালনা করা ও ত্যাগ স্বীকার করার মাধ্যমেই তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা প্রকাশ কর্তব্য। এটাই অধিক যুক্তিযুক্ত। আর সর্ব বিষয়ে আমাদের মাপকাঠি হল কুরআন ও সুন্নাহ।

আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন। ইসলামের সঠিক বুঝ দান করুন !

বিষয়: বিবিধ

১১১০ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

349377
১১ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:৫৬
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআ'লাইকুম।
অত্যন্ত বিতর্কিত একটি বিষয় তুলে ধরেছেন, সমাপ্তি সুন্দর করে টেনেছেন! শুকরিয়া! বিভ্রান্তি থেকে আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিফাজত করুন।
১১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:১১
290021
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ খায়রান Happy
349397
১১ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:০৫
কুয়েত থেকে লিখেছেন : সংস্কারের উদ্দেশ্য সমালোচনা তাও আমাদের শিক্ষানেওয়ার জন্য। সাহাবাদের সমালোচনা আমাদের না করাই উচিৎ। কারবালার ঘটনাটি আমাদের জন্য অত্যান্ত দুঃখ জনক তা কেয়ামতের আগ র্পযন্ত। শিয়ারা যা করছে তা ইসলাম সম্মত নয়। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ লেখাটির জন্য।
১১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:১২
290022
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ খায়রান জনাব সুন্দর উপলব্ধী
349411
১১ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার পোষ্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। কারবালা নিয়ে বিশেষ কোন সমস্যা ছিলনা। কিন্তু কিছু অতি সালাফি আলেম শিয়াদের বিরোধিতা করতে গিয়ে অতি বাড়াবাড়ি করে ফেলেন। শিয়াদের সাথে খিলাফত এবং এর উত্তরাধিকার নিয়ে বিতর্ক করা যায়। কিন্তু কারবালায় ইয়াযিদ কে নিরপরাধ প্রমান করার চেষ্টা অত্যন্ত অনুচিত।
১১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:১৬
290023
দ্য স্লেভ লিখেছেন : রাজনৈতিক মতভেদের ফসল হল ইয়াজিদ,তার নিয়োগ অবশ্যই বৈধ ছিলনা। হযরত হাসান(রাঃ)ই ছিলেন বৈধ ও যোগ্য। তাই ইয়াজিদের পক্ষ নেওয়ার সুযোগ নেই। আবার তার সমালেঅচনা করতে গিয়ে সাহাবাদের গালি দেওয়া এবং ইসলামের সর্বনাশ করা মহা পাপের। শিয়ারা তো অধিক বাড়াবাড়িতে সর্বনাশ করেছে,আর সুন্নিদের কিছু লোক শিয়াদের বিরোধীতা করতে গিয়ে ইয়াজিদকে নির্দোষ প্রমানের চেষ্টা করেছে।
349423
১১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:১৬
শেখের পোলা লিখেছেন : ১০ মহররমের আরও তাৎপর্য আছে যার জন্য সুল সঃ ঐ দিন রোজা রাখতেন৷ আমরা শুধুই কারবালারটাই জানি৷ তর্ক করি৷ অন্যগুলো খুঁজুন৷ ধন্যবাদ৷
১১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:১৮
290024
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ১০ই মহররমের বিষয় তো পুরোনো...ইনুস(আঃ)মাছের পেট থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন এরকম আরো অনেক বিষয়। কারবালা ঘটেছে তো অনেক পরে। জাজাকাল্লাহ
349482
১২ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:১৭
সময়ের কন্ঠ লিখেছেন : শিয়ারা সাহাবীদের গালি দেয়। আর সুন্নীরা হুসাইনকে দোষারোপ করে এবং ইয়াজিদকে ‘রাঃ’ বলে।
১২ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:২৬
290124
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আপনার ধারনা সত্য নয়,কারন আপনি অল্প কিছু মানুষকে দোষারোপ করেছেন যারা ইয়াজিদকে(রঃ) বলেন, সে অবশ্যই সাহাবী নয়। আর হুসাইনকে দোষারোপ করেছে এমন লোক অবশ্যই ভ্রান্ত। আমি কোনো আলেমের মুখে এটা শুনিনি। শুনলে মুখে জুতা মারতাম
349505
১২ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৮
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : আমি প্রিয় ভাইদেরকে বিশিষ্ট লেখক আকরাম ফারূকের লিখা, "ইমাম হোসাইন(রা)এর শাহাদাত" বইটি সম্ভব হলে পড়ার অনুরোধ করছি। প্রকাশনায় বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, কাঁটাবন, ঢাকা..
ধন্যবাদ সবাইকে..
১২ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:২৬
290125
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ইনশাআল্লাহ, জাজাকাল্লাহ খায়রান

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File