দেখতে কেমন ছিলেন রসূল(সাঃ) !!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:২৮:০৫ রাত
রসূল(সাঃ) ছিলেন মধ্যম গড়নের। তবে এটি আরবের তুলনায় মধ্যম। আমাদের তুলনায় উচ্চতা একটু বেশী হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
“রসূল(মাঃ) বলেন-আল্লাহ তায়ালা হযরত ইসমাঈল(আএর বংশধর থেকে কেনানাকে পছন্দ করেছেন,কেনানার বংশধর থেকে কুরাইশ বংশকে পছন্দ করেছেন,কুরাইশ থেকে বানু হাশিমকে পছন্দ করেছেন এবং হাশিম গোত্র থেকে আমাকে পছন্দ করেছেন”-(মুসলিম,তিরমিযি)
“হযরত জাবির ইবনে সামুরা(রাঃ)বলেন-রসূলের(সাঃ)দাড়ির অগ্রভাগে কিছুটা শুভ্রতা দেখা দিয়েছিল। যখন তিনি তাতে তেল দিতেন তখন তা প্রকাশিত হতনা। কেশরাজি বিক্ষিপ্ত হলে তা প্রকাশিত হত। তার দাড়ি ছিল খুব বেশী। ....তার মুখমন্ডল ছিল গোলগাল এবং চন্দ্র ও সূর্য্যরে মত উজ্জ্বল। আমি তার কাধের কাছে(উভয় কাধের মধ্যস্থলে-মুসলিমের আরেকটি বর্ণনা) কবুতরের ডিমের মত মোহরে নবুয়্যত দেখেছি,তার বর্ণ ছিল তার গায়ের রঙের সদৃশ।”-মুসলিম
“রসূল(সাঃ) অতিরিক্ত লম্বাও ছিলেন না আবার খাটোও ছিলেন না(অন্য বর্ণনায় আছে তিনি মধ্যম আকৃতির ছিলেন)। তিনি ধবধবে সাদাও ছিলেন না,আবার শ্যাম বর্ণও ছিলেন না। তাঁর মাথার চুল খুব বেশী কোকড়ানো ছিল না আবার সোজাও ছিলনা। ষাট বছর বয়সে তার মাথার চুল ও দাড়ির বিশটি চুলও সাদা হয়নি। ....তার গায়ের রঙ ছিল উজ্জ্বল। তার মাথার চুল উভয় কানের মাঝামাঝি এবং কাধের মাঝামাঝি পৌছাত। -(বুখারী-মুসলিম), বুখারীর অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে,আনাস (রাঃ) বলেন-তাঁর মাথা ছিল বড় এবং উভয় পা ছিল মাংসল। আমি তাঁর পূর্বে এবং পরে অনুরূপ আকৃতির আর কোনো মানুষ দেখিনি। তার উভয় হাতের তালু ছিল প্রশস্ত।
“হযরত বারা(রাঃ) বলেন-তাঁর উভয় কাধের মধ্যবর্তীস্থল বেশ প্রশস্ত ছিল। তার মাথার চুল তার কানের লতির কাছ পর্যন্ত পৌছাত। ...অমি তার চাইতে এত অধিক সুন্দর আর কাওকে দেখিনি। -(বুখারী-মুসলিম)
“....তিনি ছিলেন গৌর বর্নের লাবণ্যময় এবং মধ্যম গড়নের। শরীর ছিল সামঞ্জস্যপূর্ণ।.....ঠোটের নীচের পশমে,কানের মধ্যবতুী পশমে এবং মাথার অন্য অংশের মধ্যেও কয়েকটি চুল সাদা ছিল-(মুসলিম)
“...রসূল(সাঃ) গৌর বর্ণের ছিলেন। তার ঘাম ছিল মুক্তার মত। হাটার সময় তিনি সামনে ঝুকে চলতেন.....তাঁর শরীরের সুগন্ধ অপেক্ষা অধিকতর সুগন্ধ কস্তুরী কিংবা মেশক আম্বর আমি আর কখনও শুকিনি।-(বুখারী-মুসলিম)
“হযরত উম্মে সুলাইম(রাঃ) বলেন-রসূল(সাঃ) প্রায়ই তাদের ওখানে আসতেন এবং দিনে সেখানে বিশ্রাম নিতেন। তখন উম্মে সুলাইম তার জন্যে চামড়ার একটি ফরাশ বিছিয়ে দিতেন এবং রসূল(সাঃ) তাতেই বিশ্রাম নিতেন। রসূল(সাঃ)এর শরীর থেকে অত্যধিক ঘাম বের হত,আর উম্মে সুলাইম তা একত্রিত করে অন্য সুগন্ধরি সাথে মেশাতেন। তখন রসূল(সাঃ) জিজ্ঞেস করলেন- হে উম্মে সুলাইম ! তুমি এটা কি করছ ? তিনি বললেন, এটা আপনার শরীরের ঘাম। একে আমরা আমাদের সুগন্ধীর সাথে মিশ্রিত করব। বস্তুত এটা সর্বোত্তম সুগন্দী। অন্য বর্ণনায় এসেছে,ইয়া রাসূলুল্লাহ(সাঃ) আমরা এতে বরকতের আশা করি। তিনি বললেন,তুমি ঠিকই বলেছ।-(বুখারী-মুসলিম)
“ তিনি শিশুদেরকে খুব ভারবাসতেন। যাবির ইবনে সামুরা বলেন একদা যোহরের নামাজের পর তিনি ঘরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলে কিছু সংখ্যক মিশু তার সামনে উপস্থিত হয়। তিনি প্রতিটি শিশুর গালে হাত বুলিয়ে দিলেন। অবশেষে তিনি আমার দুগালে হাত বোলালেন ,সেখান থেকে চমৎকার সুগন্ধ ছড়াচ্ছিল।-মুসলিম
তার গায়ের সুগন্ধীর কারনে কোনো রাস্তা দিয়ে তিনি গমন করলে তা বোঝা যেত।
“ আলী (রাঃ) বলেন- তিনি লম্বাও ছিলেন না খাটোও ছিলেন না। তার মাথা ছিল বড় এবং দাড়ি ছিল ঘন। দুহাত এবং উবয় পায়ের তালু ছিল পুরু। গায়ের রং ছিল লাল মিম্রিত্ হাড়ের জোড় সমূহ ছিল মোটা মোটা(শক্তিশালী)। বক্ষের ওপর থেকে নাভি পর্যন্ত পশমের সরু রেখা ছিল। চলার সময় সম্মুখে ঝুকে চলতেন,যেন তিনি উচু স্থান থেকে নীচে নামছেন। তার(সাঃ) আগে বা পরে তার মত সুন্দর পড়নের কোনো মানুষকে আমি দেখিনি।-তিরমিযি)
“....তুমি যদি তাকে দেখতে তাহলে তোমার এমনি ধারণা হত যে, সূর্য উদীত হয়েছে।-(দারেমী)
“...তিনি উচ্চস্বরে হাসতেন না। জাবির ইবনে সামুরা বলেন ,আমি তার চোখের দিকে তাকালাম এবং আমার মনে হল তিনি চোখে সূরমা লাগিয়েছেন কিন্তু আসলে তিনি তা ব্যবহার করেননি।-(তিরমিযি)
“ আবু হুরায়রা বলেন, তার চাইতে সুন্দর মানুষ আমি আর কখনই দেখিনি। তার দিকে তাকালে মনে হত সূর্য্য সূর্য্য তার মুখমন্ডলে ভাসছে। তার চাইতে দ্রুতগতিসম্পন্ন আর কাওকে দেখিনি। তার চলার সময় যেন যমিন সঙ্কুচিত হয়ে আসত। আমরা তার সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করতাম অথচ তিনি স্বাভবিক নিয়মে চলতেন।-(তিরমিযি)
“রসূল(সাঃ)ছিলেন সবচেয়ে সুন্দরতম,সর্বাপেক্ষা অধিক দানশীল এবং সবচাইতে বেশী সাহসী”-(বুখারী-মুসলিম)
আনাস (রাঃ) বলেন আমি দশ বছর তার খেদমতে ছিলাম কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে তিনি কখনও বলেননি ,এই কাজটি কেন এমন করেছ,এটি কেন এমন হয়নি এমনকি উহ্ শব্দটিও উচ্চারণ করেননি।-(বুখারী-মুসলিম)
“তাকে(সাঃ)কাফির মুশরিকদের উদ্দেশ্যে বদদোয়া করতে বললে তিনি বলেন,আমাকে অভিসম্পতকারী হিসেবে প্রেরণ করা হয়নি,আমাকে রহমতস্বরূপ প্রেরণ করা হয়েছে।-(মুসলিম)
তিনি লাজুক ছিলেন এবং অনর্গল কথা বলতেন না,তিনি ব্যক্তিগত ব্যাপারে কারো ওপর প্রতিশোধ নিতেন না। -বুখারী-মুসলিম, তিনি অত্যধিক লাজুক ছিলে॥....তিনি কাওকে প্রহার করেননি-(মুসলিম)
তিনি ছিলেন ক্ষমাশীল-(তিরমিযি),কাওকে কখনও তিরষ্কার করেননি—(বায়হাকী),গৃহের সমস্ত কাজ করতেন,স্ত্রীদের সহায্য করতেন..(বুখারী,তিরমিজি)
তিনি মানুষের সাথে মোসাফাহা করতেন এবং মানুষ হাত সরিয়ে না নিলে তিনি হাত সরাতেন না। কোনো ব্যক্তির থেকে নিজের মুখ ফিরিয়ে নিতেন না যতক্ষন না তিনি ফিরিয়ে নিতেন। নিজের সামনে বসা লোকদের সম্মুখে তাকে হাটু বাড়িয়ে বসতে দেখা যায়নি। -(তিরিমিযি)
তিনি আগামী দিনের জন্যে কোনো কিছু জমা করতেন না-(তিরিমিযি)
তার কথায় ছিল অতি স্পষ্টতা এবং ধীরগতি-(আবু দাউদ),তিনি ছিলেন অধিক স্নেহময়-(মুসলিম)
আরো কিছু হাদীস এ ব্যাপারে রয়েছে যা পরে সংযুক্ত হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৭৫৯ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আঃ এর জায়গায় ইমু এসেছে!! সেটা সংশোধন করে দেয়ার অনুরোধ রহিলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন