আস সালামুআলাইকুম ইয়া রাসূলুল্লাহ(সাঃ)
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:৩৪:৩৮ সকাল
আমি একজন আদর্শ মুসলিম হতে চাই। একজন টগবগে যুবকের জন্যে দায়িত্ব সচেতন,আদর্শ মুসলিম হতে পারা কষ্টকর বৈকি। কিন্তু যৌবনের ইবাদতকে যারা মূল্যায়ন করে তাদের জন্যেই সফলতা। আমি সফল হতে চাই ইহকাল এবং পরকালে। কিন্তু আমার কোনো রসদ নেই। তবে আমি আল্লাহর অশেষ দয়ার ওপর নির্ভর করি, আমার ভেতরের একটি চাওয়া আছে,তা হল সু-মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যেন আমাকে ক্ষমা করেন এবং যারা সফল হয়েছেন,তাদের কাতারে রাখেন। তিনি যেন আমাকে মানুষের মুখাপেক্ষী না করেন ! পৃথিবী এবং আখিরাত সকল স্থানে যেন আমাকে শান্তি দান করেন ! মহান আল্লাহ যেন আমাকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করেন ! আমার আমলের অবস্থা অনুযায়ী এই চাওয়া ধৃষ্টতামূলক মনে হলেও রসূল(সা জান্নাতুল ফিরদাউস চাইতে বলেছেন। আর আমি চরম পাপী,অযোগ্য এতে সন্দেহ নেই, কিন্তু আল্লাহ তো ক্ষমাশীল ! আমি নি:স্ব , কিন্তু আমি যার কাছে প্রার্থনা করছি তিনিই তো গোটা মহাবিশ্ব এবং এর ভেতর-বাইরে যা কিছু আছে তার স্রষ্টা ! তিনি অনাদী,অনন্ত,অসীম,চীরস্থায়ী,অ-মুখাপেক্ষী, সকল বিষয়ে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিপতী। তিনি সু-বিশাল,তিনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন,তিনি দান করতে পছন্দ করেন,তিনি কিছু দিলে তা কখনই কমে যায় না। ফলে আমি সেই মহা পরাক্রমশালী,ক্ষমাশীল আল্লাহর কাছে বেশী বেশী চাচ্ছি। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নিলে, সে ব্যাপারে তিনি একক ক্ষমতাশালী। আমি সেই মহা ক্ষমতাশালী আল্লাহর কাছে আমার বিষয়ে সাহায্য চাচ্ছি ! আমি আল্লাহকে চরমভাবে ভয় করি, কিন্তু একইসাথে আমি ভুল করি,পাপ করি,ভুলে যাই, আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন ! চীরস্থায়ী শান্তি দান করুন !
আমি অনেক বছর পূর্ব থেকে সীরাত গ্রন্থ রচনার স্বপ্ন দেখতাম। এবং সেটি হবে এমন একটি সীরাত গ্রন্থ যেটি রচিত হবে সহজ-সরল ভাষায় ,যেখানে মানুষ সত্য জানতে পারবে সূত্রসহ। ...............(এরপর আরও কিছু বক্তব্য ছিল যেটা কেটে দিলাম। মূল বইতে যুক্ত হবে)
আমি যা সত্য বলে জানি সেটাই এই কিতাবে অন্তর্ভূক্ত করেছি। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা কিছু মিথ্যা বা মিথ্যার সংমিশ্রণ মনে হয়েছে বা অধিক প্রচলিত হওয়ার কারনে সত্য বলে মনে হয় কিন্তু আদতে মিথ্যা; তাও সাধ্য অনুযায়ী পরিহার করেছি। কিন্তু তারপরও আমার লেখা বাহুল্য দোষে দুষ্ট হতে পারে,জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারনে অসত্য তথ্য অন্তর্ভূক্ত করা হয়ে থাকতে পারে, সেসব বিষয় পাঠকের চোখে পড়লে জানাতে অনুরোধ করছি। আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই এই সীরাত গ্রন্থটি লিখেছি। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যেন আখিরাতে এটাকে আমার নাযাতের ওসিলা হিসেবে গ্রহন করেন !
(যে কেউ তাদের মূল্যবান পরামর্শ দিতে পারেন,আর রেফারেন্স দিয়ে সহায়তা করলে উপকৃত হব)
প্রথম অধ্যায়
আল-কুরআনে(সূরা যারিয়াত: ৫৬) মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা জানিয়েছেন,তিনি মানুষ এবং জ্বিনকে একমাত্র তাঁর ইবাদতের জন্যে সৃষ্টি করেছেন। যদিও তিনি কারো ইবাদতের মুখাপেক্ষী নন,বরং সকল সৃষ্টি তার মুখাপেক্ষী,কিন্তু মানব সৃষ্টি ছিল তার একটি ইচ্ছা। তিনি এটি চেয়েছিলেন। আর তিনি যখন কোনো কিছু করতে ইচ্ছা করেন,তখন শুধু বলেন “হও”, আর তা সঙ্গে সঙ্গে হয়ে যায়। প্রথম মানুষ হযরত আদম(আঃ)কে সৃষ্টি করে,তার(আঃ) থেকে প্রথম মানবী মা হাওয়াকে সৃষ্টি করে তিনি পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন। এটি ছিল বসবাসের উপযোগী একটি নতুন স্থান।
পৃথিবীতে কিভাবে চলতে হবে, মহান আল্লাহ তাদেরকে তা শেখালেন। মহান আল্লাহ তাদেরকে সত্য-মিথ্যা,ভাল-মন্দ,ন্যায়-অন্যায়,হালাল-হারামসহ যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে শিক্ষা দিলেন(হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেই আল্লাহ তায়ালা তাকে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বিশেষ জ্ঞানের ক্ষেত্রে জিন ও ফেরেশতাদের ওপর প্রাধান্য দিয়েছিলেন)। কোনটা করলে কি পরিণতী হবে তা জানালেন। জীবনোপকরণ দিলেন,তার ব্যবহার শিক্ষা দিলেন। সন্তান সন্ততি দিলেন এবং তাদেরকে সঠিকভাবে পরিচালনার শিক্ষা দিলেন। একটি নির্দিষ্ট সময় এবং রিজিক দান করলেন। সুস্পষ্ট প্রজ্ঞা,দিক নির্দেশনা দান করলেন এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকল।
সে-সময়ে আল্লাহ তায়ালা আদমকে(আঃ) অধিক সন্তান দান করেন। প্রতিবার গর্ভধারনে মা হাওয়াকে একেক জোড়া সন্তান(ছেলে-মেয়ে) দান করা হত। এক গর্ভের সন্তানের জন্যে অপর সময়ের গর্ভের সন্তানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াকে হালাল করা হয়।-(সূত্র দরকার) পরবর্তীতে তার সন্তানগণ বসতি স্থাপনের নিমিত্তে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন বর্ণের,রূপের সন্তান দান করতে থাকেন।
আদম(আঃ) জীবিত থাকা অবস্থায় আল্লাহর ওহীর মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞান দ্বারা তার সন্তানদেরকে পরিচালিত করতেন,বিচার-ফয়সালা করতেন,শিক্ষা দিতেন। হযরত আদম(আঃ)এর ওফাতের পর,তার(আঃ) সন্তানদের মধ্যথেকে আল্লাহ তায়ালা কাওকে কাওকে পছন্দ করলেন তাদের এলাকার মানুষ এবং নিজ সন্তানদেরকে,সম্প্রদায়কে পরিচালনা করার জন্যে। এভাবে হযরত আদমের(আঃ) সন্তানদের বংশ বৃদ্ধি পেতে থাকল এবং পৃথিবীর বুকে তারা ছড়িয়ে পড়তে থাকল। তবে যেখানেই তারা থাকুক না কেন,তাদের কাছে মহান আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে প্রতিনিধি বা সতর্ককারী বা নবী-রসূল পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেনঃ-
“ আর এমন কোনো সম্প্রদায় নেই,যাদের কাছে সতর্ককারী আগমন করেনি”
(আল-কুরআন,সূরা ফাতির: ২৪)
“আর প্রত্যেক জাতির কাছেই পথ প্রদর্শক প্রেরিত হয়েছে।”(আল-কুরআন,সূরা রা’আদ: ৭)
তবে পূর্বের নবীদের বিধি-বিধান ছিল তাদের নিজেদের সম্প্রদায়ের জন্যে নির্দিষ্ট এবং সেগুলো ছিল একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে। সময় অতিবাহিত হলে আল্লাহ তায়ালা নতুন নবী প্রেরণ করতেন। নতুন নবীর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা পূর্বের নবীগনের শরীয়াহ পরিবর্তন,পরিবর্ধন করতেন। আল্লাহ তায়ালা কোনো কোনো নবীকে আসমানী কিতাব দান করেছেন, তারা সে কিতাব মোতাবেক নিজেরা চলতেন এবং নিজ সম্প্রদায়কে পরিচালনা করতেন। যেসব নবীগণ কিতাব প্রাপ্ত হননি, তারা আল্লাহর নির্দেশে পূর্ববর্তী নবীগনের কিতাব অনুযায়ী উম্মতদেরকে পরিচালনা করতেন। তবে অধিকাংশ মানুষই নবীদেরকে অনুসরণ করেনি।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-“হে নবী ! এরা যদি আপনাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে তবে উদ্বেগের কারণ নেই,এর পূর্বে তারা নূহ এর জাতি,আদ ও সামুদের লোকেরাও(তাদের নবীদেরকে)মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিল। ইব্রাহিমের জাতি এবং লুতের জাতিও তাই করেছিল। মাদায়েনের অধিবাসীরাও (তাদের নবীদেরকে অস্বীকার করেছিলো)মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করেছিল এবং অস্বীকার করা হয়েছিলো মূসাকে.....”(আল-কুরআন,২২: ৪২,৪৩,৪৪)। সর্বদা কম সংখ্যক মানুষই নবীদের ডাকে সাড়া দিয়েছে।
-----চলমান
বিষয়: বিবিধ
১২৬৯ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ তায়ারা আপনার মনের আশা পূর্ণ করুন।
সৎকাজে সৎসাহসের সাথে এগিয়ে যান, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালার সাহায্য পাবেন। জাযাকাল্লাহ খাইর
ভালো করে আবার পড়াবো
অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ।
জাযাকাল্লাহ খাইর!
মন্তব্য করতে লগইন করুন