একটি সত্য গল্প
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:১৮:৪০ সকাল
বাবা মার পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে
নিয়ে আসলাম!
_
সবকিছুই তড়িঘড়ি করে হওয়ায় এখনো নতুন বউয়ের নামটি জানার সুযোগ হয়ে উঠেনি আমার। প্রতিটি পুরুষ এবং নারীর অনেক বেশী কৌতুহল ও স্বপ্ন থাকে "বাসর রাত" নামক রাত্রিটিকে নিয়ে।
_
আমার বেলায়ও এর বিপরীত কিছু হয়নি।
ঘরে প্রবেশ করেই প্রথমে আমি আমার নববধূকে। সে সালামের উত্তর নিয়ে খাট থেকে নেমে এসে আলতো করে আমার পায়ে সালাম করলো। আমি আমার নববধূটি কে তার নাম জিজ্ঞেস করলাম।
_
সে তার নাম বলল "নিলুফা "
অল্প সময়ই এই অপরিচিত মানুষটির প্রতি হৃদয়ের গহীনে "অকৃত্রিম ভালোবাসা অনুভব করতে লাগলাম!
নিলুফা খুব অল্প দিনেই আমার হৃদয় রাজ্যের রাজত্ব দখল করে নিলো।
তার অসীম ভালোবাসা দিয়ে আমার শুন্য হৃদয়কে পরিপূর্ণ করে দিলো।
তার স্বামীভক্তি আমার পরিবারের সবাইকে দারুনভাবে পুলকিত করে দিলো।
_
৭ মাস অতিক্রম হতে না হতেই নিলুফা আমাকে এমন সুসংবাদ দিলো যা শুনার জন্য প্রতিটি বিবাহিত পুরুষই অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে।
আমি সেই সুসংবাদে এতোটাই আনন্দিত হলাম যা ভাষায় করার কোন পন্থা আমার জানা নেই!
_
আমার বন্ধু সোহাগ,অত্যন্ত ভালো ছেলে!
একসাথেই খেলা খেলে বড় হয়েছি আমরা।
মাঝে মাঝেই আমার বাসায় আসতো।
নিলুফা ছিলো বেশ আপ্যায়ন প্রিয় মানুষ।
বাসায় কোন মেহমান আসলেই তার যেন মাথা খারাপ হয়ে যেতো।
কোনটা রেখে কোনটা রাঁধবে এই চিন্তায় তার মাথা খারাপ হওয়ার উপক্রম হয়ে যেতো।
যেহেতু সোহাগ আমার ছেলেবেলার বন্ধু,
সেহেতু সোহাগের প্রতি ওর আপ্যায়নের মাত্রাটা একটু বেশীই ছিলো!
_
সোহাগ বাসায় আসলে নিলুফা সবসময়ই তাকে নিজ হাতে বেড়ে খাওয়াতো!
সোহাগ ছিলো কিছুটা দুষ্টামি প্রিয় ছেলে।
অনেক সময়ই নিলুফার সাথে ও অনেক দুষ্টামি করত। ছেলেবেলার বন্ধু বলে কখনো কিছুই মনে করতাম না,।
_
ইদানিং, নিলুফার কিছু আচরণে আমি বেশ কষ্ট পাচ্ছি! দিনরাত চেষ্টা করেও এটা বুঝতে পারলামনা "কেন এমন হচ্ছে "!?
রমজানের ঈদ আসন্ন। দোকানের জন্য ঈদের মালামাল কিনতে ঢাকায় যাবো।
বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কয়েকবার ডেকেও নিলুফার কোন
সাড়া না পেয়ে ঘরে ঢুকে দেখলাম নিলুফা মোবাইলে কথা বলছে।
_
ও আমাকে দেখে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলল: বড় আপু ফোন দিয়েছিলো।
আমি তাড়াহুড়ার কারণে বিষয়টি তেমন একটা আমলে নিলাম না।
ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলাম।
_
কেনাকাটা শেষ করতে করতে রাত হয়ে গেলো।
বিভিন্ন কিছু চিন্তা করে আজকের রাত ঢাকায় এক আত্মীয়র বাসায় কাটানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।
রাতে শুয়ে শুয়ে নিলুফার কথা ভাবছি,
হঠাৎ মোবাইলে একটি মেসেজ আসলে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি আমার প্রানপাখী টি মেসেজ দিয়েছে। খুব আগ্রহ নিয়ে মেসেজটি ওপেন করে যা লিখা দেখলাম সেটা দেখার আগে আমার মৃত্যু হওয়াটা অনেক ভালো ছিলো!
মেসেজের কথাগুলো :
_
নিজের অজান্তেই সোহাগকে আমি অনেক ভালোবেসে ফেলেছি!
তাকে ছাড়া জীবন যাপন করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়! আমি সোহাগের সাথে চলে যাচ্ছি,
সম্ভব হলে আমাকে ক্ষমা করবেন!
সেই মেসেজ দেখার পর থেকে আজ পর্যন্ত আমার এমন কোন রাত
অতিবাহিত হয়নি, যে রাতে আমর চোখের জলে বালিশ ভিজেনি!
-
"জাহাঙ্গীর ভাই অশ্রুশিক্ত চোখে এভাবেই তার জীবনের ঘটে যাওয়া একটি দুর্ঘটনার কথা বর্ননা করছিলেন।
আমি জাহাঙ্গীর ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম,
আপনার সাথে এমনটা ঘটার কারণ কি আজও খুঁজে পেয়েছেন?
জাহাঙ্গীর ভাই না সূচক উত্তর দিলেন।
তখন আমি তাকে বললাম :
আমি যদি আপনাকে এর কারণ সম্পর্কে অবহিত করি তাহলেআপনি কি বিশ্বাস করবেন?
সে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলে আমি তাকে বললাম;
_
জাহাঙ্গীর ভাই!
আপনার এই অবস্থার জন্য প্রথমতঃ আপনি দায়ী! তারপর আপনার স্ত্রী!
আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে ইসলামের সাজে সজ্জিত করতেন।
আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে মহান আল্লাহর হুকুম পর্দার বিধান পালন করাতেন,
তাহলে হয়তো আপনাকে আজ কেঁদে কেঁদে বালিশ ভিজাতে হতো না!
_
আচ্ছা!
আজ পর্যন্ত এমনটা কখনো শুনেছেন যে,
অমুক হুজুরের বউ অন্য একজনের সাথে পালিয়ে গেছে?
আজ পর্যন্ত এমনটা কখনো শুনেছেন যে,
অমুক পর্দানশীল মেয়ে কোন ছেলের সাথে
ভেগে গেছে?
জাহাঙ্গীর ভাই "না সূচক মাথা নেড়ে,
আস্তে করে বললেন যে, আসলেই সব দোষ আমারই!!!
_
এবার আপনারাই বলুনতো "নিলুফা নামক নববধূর "সাজানো
সংসার ভেঙ্গেছে কোন জিনিসের অভাবে???
সংগৃহীত
বিষয়: বিবিধ
৩৬৪০ বার পঠিত, ৩৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ যা কিছুই চুরি যায় গিন্নী বলে :কেষ্টা বেটাই চোর
পিলাচ পিলাচ + + + + + +
ঘটনাটি পড়লুম!!
মনে হয় সোহাগ রান্নার প্রেমে পড়েছিলো! বেটা গর্দভ!!!!
সোহাগ ছিলো কিছুটা দুষ্টামি প্রিয় ছেলে।
জাযাকাল্লাহু খায়েরান
মন্তব্য করতে লগইন করুন