আজকের সকালটা ছিল খুবই রঙিন
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২২ আগস্ট, ২০১৫, ১২:১৭:০৭ দুপুর
আমার সাইকেল কপাল সুবিধার না মনে হয়, তা না হলে এরকম হবে কেন !!! সাইকেল চুরি হল,দু চাকা চুরি হল,টিউব নষ্ট তো প্রতিনিয়ত হচ্ছে। কিন্তু পয়সা খরচের চাইতে বেশী সমস্যাটা হল এর ধকলে। গতকাল সকালে ওয়ালমার্ট থেকে সাইকেলের টিউব কিনতে গেলাম আর সেসময় হঠাৎ দেখী আকাশে শত শত নানান রঙের বেলুন। সে দৃশ্য সত্যিই অসাধারণ। কিন্তু স্টোরে ঢুকে ভুলে গেলাম যে পার্শ্ববর্তী মাঠ থেকে এসব উঠছে। যখন বের হলাম তখন সব বেলুন ওড়া শেষ। তারপরও মাঠে গেলাম কিন্তু সব উঠে গেছে। ভাবলাম আগামী কাল সকালে আসব।
সাইকেল মেরামতের দোকান বেশ দূরে তাই নিজে মাতব্বী করে টিউব লাগালাম কিন্তু ভিন্ন ধরনের ভাল্ভ হওয়াতে আমার পাম্পার দিয়ে পাম্প দেওয়া গেলনা। আবার স্টোরে গিয়ে নতুন ধরনের পাম্প কিনলাম। একে বলে থাজনার চেয়ে বাজনা বেশী। কিন্তু এটা দিয়ে পাম্প দেওয়া গেলনা। নেট থেকে দেখে নিলাম কিভাবে কি করতে হয় কিন্তু ভাল্ভ ছোট হওয়াতে কাজ হলনা।
এবার সাইকেলের দোকানে গেলাম এবং নতুন টিউবটি ফেলে দিয়ে আরেক টিউব লাগালাম,কাজ হল। সাইকেল সচল হল। ওদিকে আরেক সাইকেল দেখলাম বিনা কারনে চুপসে আছে। মানে টিউব বাবাজির হায়াত শেষ। এরা এত পাতলা টিউব ব্যবহার করে যাতে সাইকেলের ব্যবসা সর্বদা জমজমাট থাকে। তবে বেশ দামী কিছু টিউব আছে যাতে পেরেক ঢুকলেও সমস্যা হয়না। যাইহোক আজ সকালে দ্বিতীয় ইনিংসের ঘুমটা হলনা। কি মনে করে সকালে সাইকেল চালাতে বের হলাম,আরেকটা ছোট কাজও ছিল কাছাকাছি,যদিও তা সম্পন্ন হয়নি। কিন্তু হঠাৎ আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখী বহু বেলুন উড়ছে।
সব ভুলে গেলাম। আকাশে বিশাল সাইজের গ্যাস বেলুন যে আমার কি ভালো লাগে !! কখনই দেখিনি এটা কাছ থেকে। আমি দ্রুত সেই মাঠের দিকে ছুটলাম। মাঠে গিয়ে দেখী শত শত বেলুন উড়ছে এবং অনেকগুলো ওড়ার অপেক্ষায়। অামেরিকার সবথেকে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকটা এটা প্রমোট করছে।
আমি দৌড় দিলাম মাঠের মাঝ বরাবর। কুব আনন্দ হতে লাগল। একেবারে বাচ্চাদের মত মজা হচ্ছিলো। সুবিধাল সব বেলুন। কিছু বেলুন আবার কার্টুন চরিত্রের অনুকরনে বা জীব জন্তুর অনুকরনে তৈরী। প্রথমে বেলুনটি চুপসে থাকে। এর মুখ দুজন ধরে ফাক করে রাখে এবং সেই বরাবর গরম হাওয়া ভরা হয়। বেলুনের নীচে একটি বাস্কেট রয়েছে,যেখানে গাদাগাদি করে ৫/৬ দাড়ানো যায়। উপরে গ্যাস ফায়ার করার দুটি যন্ত্র আছে, যা সুইচ চাপলেই গ্যাস ফায়ার করে। অনেকক্ষন ধরে বিশাল বেলুন ফোলানো হয়। একটা দড়ি দিয়ে এটি গাড়ির সাথে আটকানো থাকে। বেলুন সোজা হয়ে দাড়ালে মানুষ বাস্কেটের ভেতর উঠে পড়ে এবং দড়ির গিট খুলে দেওয়া হয়। এসময় কয়েকবার গ্যাস ফায়ার করলে বেলুন একটু উপরে উঠে যায় ও চলতে থাকে। তবে অনেক ভেবেও বের করতে পারলাম না ,কিভাবে যানে বা বায়ে,সামনে পেছনে যাওয়া যায়। উপর থেকে ঝুলন্ত দুটো দড়ি দেখেছিলাম,হতে পারে সেটার সাহায্যে দিক পরিবর্তন করা যায়। এর প্রযুক্তি এমন কিছু না।,কিন্তু এটা আবিষ্কার করতে অনেক সময় লেগেছে নিশ্চয়ই।
প্রায় সবগুলো বেলুনই বহু রঙে রঞ্জিত। বেলুন ওড়ার সময় আমার মনে হচ্ছিলো যদি এটা ফুটো করে দেওয়া যেত ,তবে কি ঘটত !!! বুড়ো বয়সেও শয়তানী চিন্তা আমার গেলনা !
বিশাল মাঠে শত শত মানুষ ভী করেছিলো সকালে এবং শোরগোল ছাড়াই তারা উপভোগ করছিলো। আমি অনেক কাছ থেকে অনেক খেয়াল করে এদের কারবার দেখছিলাম। খুবই উপভোগ করলাম। জীবনে প্রথমবার এমন বেলুন ওড়া দেখলাম। আজকের সকালটা ছিল সত্যিই রঙিন। অনেকদিন মনে থাকবে আমার।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৫ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খবরে দেখলাম তিনজন দমকল কর্মী কাবাব হইছে!
মন্তব্য করতে লগইন করুন