সুন্নতি পোষাক কি ?
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১২ আগস্ট, ২০১৫, ১২:১৫:২৩ দুপুর
সুন্নতি পোষাক কি ?
রসূল(সাঃ) কিছু বিষয় পছন্দ করেছেন যা তার একান্ত ব্যক্তিগত। আর তার একান্ত ব্যক্তিগত পছন্দনীয় বিষয়গুলো পছন্দ বা অপছন্দ করার ক্ষেত্রে প্রত্যেকে স্বাধীন। যেমন-খাবার দাবার,পোষাক,ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ ইত্যাদী। রসূল(সাঃ) তৎকালীন আরবের প্রচলিত পোষাক পরতেন। ইসলাম আসার পর আরবের পোষাকের পরিবর্তন হয়নি,বরং সতরের সঙ্গা পরিবর্তিত হয়েছে। নারী ও পুরুষের পোষাক কেমন ধরনের হবে সেটা এসেছে। পুরুষের জন্যে স্বর্ণ ও রেশমী কাপুড় নিষিদ্ধ হয়েছে। তবে এটা ঠিক রসূল(সাঃ)এর একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়টিকেও যদি কেউ পালন করে ,তাতে বরকত রয়েছে কিন্তু সেটি বাধ্যতামূলক নয়।
রসূল(সাঃ)আর আবু লাহাবের চেহারার মধ্যে মিল ছিল।তারা একই রকম পোষাক পরতেন। পেছন থেকে দেখলে একজনকে আরেকজন বলে ভুল হত,অথচ দুজনের মধ্যে পার্থক্য আসমান জমিন। তাদের ভেতরকার পার্থক্য হল চিন্তাগত ও আচরণগত। মজার ব্যাপার হল কিছু মানুষ সুন্নতি পোষাক হিসেবে যা পরেন ,তা হল পাঞ্জাবী-পাজামা ,যা আরবের পোষাক নয়,এটি পাঞ্জাবের পোষাক। রসূল(সাঃ)এটা পরেননি। তবে রসূল(সাঃ)যে পোষাক পরতেন হুবহু সেটা পরলেও সুন্নাহ পালিত হবে। তাকে ভালোবেসে তার ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়টিকে নিজের পছন্দের বিষয় বানালে তাতে বরকত রয়েছে। কিন্তু যে বিষয়ে তিনি নির্দেশ দেননি সেখানে আমাদের স্বাধীনতা রয়েছে মূল সূত্র ঠিক রেখে নিজের মত করবার।
প্রখ্যাত ইসলাম প্রচারক ড: জাকির নায়েক সম্পর্কে এক বিশাল সংখ্যক মানুষ এমন বিষয়ে সমালোচনা করে যাতে তাদের জ্ঞান,বিবেক সম্পর্কে করুনা হয়। বেশীরভাগ মানুষই প্রচারিত কুরআন,সুন্নাহর বিষয়ের চাইতে পোষাক নিয়ে মন্তব্য করে ,এমনকি শুধু পোষাক দেখেই তাকে খ্রিষ্টানদের দালাল এমনকি কাফিরও বলে।
ডা. জাকের নায়েক কেন পাঞ্জাবি বা সুন্নতি পোশাক পরেন না- এক নারী এমন একটি প্রশ্ন করলে বিষটি আলোচনায় আসে। এরপর ‘ডা. জাকির নায়েক এর উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তরসমূহ’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে ওই প্রশ্নকারীর প্রশ্নের প্রেক্ষিতে জবাব দেয়া হয়েছে। ওই পেজে দেয়া সেই উত্তরটি হুবুহু দেয়া হলো-
উত্তর: বোন আপনি সঠিক বলেছেন, ডা জাকির নায়েক নিঃসন্দেহে একজন দীনের দা’য়ী, একজন দা’য়ী ইলাল্লাহ। ডা জাকির নায়েক সুন্নতি পোশাক পরেন না, এমন কথা আমার জানা নেই। আমার জানা মতে তিনি সুন্নতি পোশাক পরেন। আমার জানা মতে কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী সুন্নতি পোশাক হোলঃ
ক। সুন্দর ও পবিত্র-পরিচ্ছন্ন পোশাক।
খ। ছতর আবৃত করে এমন পোশাক।
গ। টাখনুর উপরে পরিহিত পোশাক।
ঘ। দাড়ি।
ঙ। টুপি।
চ। নিষিদ্ধ নয় এমন পোশাক। যেমন- রেশমি পোশাক, সোনা খচিত পোশাক, নারীর পোশাক। আমার জানা মতে তিনি সুন্নতি পোশাকের সবগুলো শর্ত পূরণকরেই পোশাক পরেন। সুন্নতি পোশাকের শর্ত সমূহ: শর্ত নং-১, পোষাকের প্রথম শর্ত, পোষাক পুরুষের নাভি থেকে হাটু পর্যন্ত ঢাকতে হবে। ( সুনানে তিরমিজি, ৫/১১০)। শর্ত নং-২, পোষাক পাতলা ও অাটোসাটো হবে না। ( হাইসামী, মাযমাউয যাওয়াইদ, ৫/১৩৬, এই পৃঃ দুটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, মুসান্নাফে ইবনে অাবি শাইবা, ৫/১৫৭, ইবনু সাদ, অাত তাবাবাত, ৫/১৯১, ৩২৮) ।
শর্ত নং-৩, পুরুষরা মেয়েদের পোষাক ও নারীরা পুরুষের পোষাক পরতে পারবে না। ( অাবু দাউদ, ৪/৬০, হাকিম, অাল মুসতাদরাক, ৪/২১৫, হাইসামী, মাওয়ারিদুয যামঅান, ৪/৪৫০, বুখারি, ৫/ ২২০৭,তাবারানি, অাল মু ‘জামুল অাউসাত,৪/২১২, মুসনাদে অাহমাদ, ২/৯৫৬)। শর্ত নং ৪, পোষাক অহংকারী হতে পারবে না। ( অাবু দাউদ, ৪/৪৩, ইবনে মাজাহ, ২/১১৯২, ১১৯৩)।
পুরুষরা রেশমি পোষাক পরতে পারবে না। ( নাসাঈ, ৮/১৬১, বুখারি, ৫/২২০২, সহিহ মুসলিম, ৩/১৬৩৫, বুখারি, ১/৩০২, ৫/২১৯৪)।
শর্ত নং ৫, পোষাক টাকনুর নিচে যাবে না। ( বুখারি, ৫/২১৮২, অাবু দাউদ, ৪/৫৯, বুখারি, ৩/১৩৪০, ইবনে হিব্বান, ১২/২৬২, অাবু দাউদ, ১/১৭২) ।
অনেকে আবার ডা, জাকের নায়েকের টাই পরাকে খ্রিস্টানের ক্রুসের প্রতীক বা পোশাক বলে থাকেন। এ বিষয়ে সঠিক উত্তর হলো- . উত্তর: টাই খ্রিষ্টানদের ক্রুসের প্রতীক হবে কেন? টাই একটি পোশাক। এর সাথে খ্রিষ্টানদের ক্রুসের কোন সম্পর্ক নেই। পোশাক হিসেবে প্যান্ট, শার্ট, টাই - এগুলোর সাথে ইসলামের কোন বিরোধ নেই। শীত প্রধান দেশে গলাবন্ধনী হিসেবে টাই এর প্রচলন শুরু হয়। আর কেউ ক্রুশ হিসেবে টাই পরেনা। এ নিয়ে জ্ঞানী মুসলিমদের মধ্যে কোন মতভেদও নেই। আর কেউ মতভেদ করলেও এগুলো সুন্নতি পোশাক হবার ক্ষেত্রে কোন ব্যত্যয় ঘটবে না। মতভেদ আরও বড় বড় বিষয় নিয়েও হয়।
বিষয়: বিবিধ
৩৬৬১ বার পঠিত, ৪৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কোর্ট টাই হচ্ছে সুন্নাতি পোষাক। আপনি না মানলে আমার কিছু করার নাই। আমার পীর সাহেব মানেন ও তা ব্যাবহার করেন।
অনেক ধন্যবাদ
১. পুরুষের পোশাক রেশমের তৈরি হতে পারবে না। রেশমি পোশাক পরা পুরুশের জন্যে হারাম।
২. সতর খুলে যায়, অর্থাৎ নাভির উপর থেকে হাঁটুর নীচ পর্যন্ত কোনো অংশ উন্মুক্ত হয়ে যায়, এমন পোশাক পরা নিষিদ্ধ।
৩. পুরুষের পোশাক যেনো নারীদের মতো না হয়। অথবা এভাবেও বলা যায় যে, নারীর পোশাক পুরুষের জন্যে পরা নিষেধ।
৪. পোশাক যেনো এমন না হয়, যা পরলে তার মধ্য থেকে অহঙ্কার প্রকাশ পায়। এই রীতি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যে প্রযোজ্য।
৫. পুরুষের পোশাক পায়ের গোড়ালির নীচে যেনো ঝুলে না যায়। টাখনুর নীচে নেমে যায় এত লম্বা পোশাক পরা হারাম।
৬. ইচ্ছাকৃতভাবে কাফের-মুশরিকদের সাদৃশ্য অবলম্বন করার উদ্দেশ্যে তাদের পোশাক পরিধান করা হারাম। [হাশিয়ায়ে শামায়েলে তিরমিজি-২৯]
আহলে হদস আর জাকির নাটকের পূজারিরা কিন্তু অনিচ্ছা পরে
জাকির নায়েককে প্রতিষ্ঠা করতে আহলে হদস গোষ্টি এখন পাগলের মত প্রলাপ শুরু করে দিয়েছে ।
এতদিন ছিল মউদুদীর অপর্কম গুলির জন্য ্ওদের মিশন ।আর এখন মউদুদীর যোগ্য উত্তরসুরি ,মউদুদীর অসমাপ্ত অপকর্মের বাস্তবায়নের অন্যতম ব্যাক্তি জাকির নাটকের মিশন।
সেলুকাস
জাকির অনুসারিরা এখন থেকে আল্লাহকে ভগবান ডাকছে ।কারন তাদের গরু এটাকে জায়েয ফতোয়া মারছে।
হুজুর অপ্রিয় সত্যবাদী মশাই। আপনি ছবিটাকে এডিট করে দিলেন কেন? ওখানে দেওবন্দের বিখ্যাত আলেম ও ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা এবং লোক সভার সদস্য মাওলানা মাহমুদ মাদানী সাহেবও তাদের সাথে ছিলেন। তার ছবিটাকে কেটে বাদ দিলেন কেন? এটা কেমন অপ্রিয় সত্য বুঝলাম ভাইজান।
০ এর উপরে নিচে যদি খালি গা থাকে তাহলে সেটা কি সুন্নতি পোশাক থাকবে ? এমতাবস্থায় নামাজ পড়া কি জায়েজ হবে?
(জ্ঞানী ভাইয়েরা আছেন, আমার কথায় ভূলও হতে পারে)
তাই আপনাকে কাঁধের উপর একটি কাপড় রাখতে হবে।
ত্রিকোয়াটার প্যান্ট প্রশ্ন: আপনার কি ত্রি কোয়াটার ছাড়াও অন্য কাপড় আছে?
যখন নাকি হালাকু খান বাগদাদ অভিযান করছিলেন তখন বাগদাদ এর দারুল হিকমাহ এর আলিম রা লিপ্ত ছিলেন ইসলামের আলোকে পায়জামার দৈর্ঘ কতটুক হবে সেই বিতর্কে!!
এখনও আমাদের তথাকথিত আলেমরা সেই অভ্যাস ছাড়তে পারেন নাই।
হুজুরের প্যান্ট কি গোড়ালির উপরে থাকে ? হুজুরের গালে কি দাড়ি আছে নাকি ??
দাড়ি রাখা ওয়াজিব, টাখনুর নিছে কাপড় পরা হারাম। আমিও হুজুরের জাওয়াবের অপেক্ষায়.......
দ্য স্লেভ এর সমর্থনে লেখা !
যাই হোক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন