হোয়াট এ শেষকৃত্য....!!!!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৪ মে, ২০১৫, ০৭:৫৫:৫১ সকাল
আমার হাউসমেট বেশ বয়ষ্ক। বলল, রাতে সে ফিরবে না, কারন তার ভাই মারা গেছে। কুকুরটিকে সময়মত খেতে দিতে বলল। বললাম,ঠিক আছে। কুকুরটা বেশ শান্ত,কখনও ডাকেনা। ইসলাম নিরাপত্তা ও শিকারের জন্যে কুকুর অনুমোদন করে বটে,কিন্তু এদের সাথে মাখামাখি করার অনুমতি দেয়না। আমি সব প্রাণীকে আল্লাহর উদ্দেশ্যেই ভালবাসি ,তাই কুকুরটিকেও ভালবাাসি যদিও এর কাছাকাছি যাইনা। সময় মত দেখাশুনা করলাম। রাতে কুকুরটি তার মালিকের জন্যে বেশ অস্থির হল মনে হল। একস্থানে মন খারাপ করে শুয়ে ছিল। তা দেখে আমারও বেশ মায়া লাগল। এই কুকুরটি বেশ কমান্ড শুনে । কিছু বললে বুঝতে পারে। যাইহোক তাকে খেতে দিয়ে আমি আমার কাজে ব্যস্ত হলাম।
আজ শুনলাম রাতে তার ভাইয়ের শেষকৃত্য কিভাবে হল। জানলাম তার ভাই মরেছে ৭ দিন আগে। গত ৭দিন হিমাগারে রাখা ছিল। রাতে বেশকিছু আত্মীয়,বন্ধু বান্ধব মিলে পার্টি দিয়েছে। এখানে সবথেকে নিকটাত্মীয় ছিল আমার হাউসমেট লোকটি। এটি তার ভাই,কিন্তু বাপ তার আপন নয়...একেবারে বলা যায় প্লাস্টিকের বাপ, মানে হাউসমেট ছিল তার দত্তক নেওয়া সন্তান। সে তার বাপকে ছোটবেলায় হারিয়েছে।.....না , তিনি মারা যাননি...উনি এর শৈশবে একে তার মায়ের কাছে রেখে আরেকজনের সাথে চলে গিয়েছিলেন। আমেরিকাতে এটা ডাইল-ভাত ব্যাপার। তার মাও আরেক জনকে বেছে নিয়েছিলো। আর হাউসমেট যখন যুবক তখন সে আলাদা থাকা শুরু করে এবং তার মায়ের সাথেও ভাল যোগাযোগ ছিলনা। এক সময় সে শুনেছিল তার মা মারা গেছে। যাইহোক মূল ঘটনায় আসি।..
রাতে মরার উপলক্ষ্যে এক জাঁকজমকপূর্ণ পার্টি হল। যে মারা গেছে সে ছিল ব্যপক ফুর্তিবাজ। পার্টিতে ফুর্তিবাজরাই উপস্থিত হয়েছে। পার্টিতে সকলে মারা যাওয়া লোকটির বিভিন্ন ঘটনা উপস্থাপন করে হেসে গড়াগড়ি খেয়েছে। আবার কখনও কখনও কিছু দু:খের ঘটনায়ও বেশ চুপচাপ হয়ে পড়েছিলো। এভাবে সকলে স্মৃতিচারণ শেষ করে নৃত্যগীতে । এরপর মদ পর্ব চলে। ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনা, তারা দল বেধে সারারাত একে একে শহরের ৪টি মদের বারে গিয়ে মদ পান করে।
হাউসমেটের ভাইকে গতকালই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে,,মানে ইলেকট্রিক চুল্লিতে পুড়িয়ে ছাই বানানো হয়েছে। ....সব শুনে মনে মনে বলে উঠলাম হোয়াট এ শেষকৃত্য..। তবে আমার হাউসমেট লোকটা খারাপ না। ঈশ্বর বিশ্বাস করেনা,এমনকি এটা নিয়ে কথা বলাও পছন্দ করেনা,সাধারনত সে কথাই বলেনা,তবে মাঝে মাঝে বলে। সে আমাকে বেশ কয়েকবার বিভিন্নভাবে সাহায্যও করেছে। .....আমি বহু চিন্তা করেও তার এবং তার কুকুরটির মধ্যে বৈসাদৃশ্য খুব একটা খুজে পাইনি। এরকম মানুষে গোটা আমেরিকা ভরা। মাঝে মাঝে ভেবে শিউরে উঠি যদি কোনো শক্তি কখনও আমেরিকা আক্রমন করে এবং ভেতরে ঢুকে পড়ে,তাহলে এই অন্ত:স্বারশূণ্য জাতির শেষকৃত্য দেখার লোকও খুজে পাওয়া যাবেন না !
বিষয়: বিবিধ
১৯২৩ বার পঠিত, ৬৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তো আপনার খাই খাই পালা কই?
ধর্মীয় নৈতিকতাহীন মানুষরাই এমন শোকময় পরিবেশ কেও ভোগ সর্বস্ব অনুষ্ঠানে পরিণত করতে পারে! ভোগই মূখ্য ওদের কাছে!!
জিবনের যখন কোন উদ্দেশ্য থাকেনা কিংবা উদ্দেশ্য হয়ে যায শুধু ভোগ করা তখন এই রকম অ্ন্তঃসার শুন্য জাতিতে পরিনত হওয়া স্বাভাবিক।
অন্যান্য জাতি তো মৃত্যুর পর কান্নাকাটি করে, কেউ ব্যথিত হয়, কেউ পুড়িয়ে ফেলে, তবুও খুব কান্না করে। বেশিরবাভ তো মাটি চাপা দেয়। আবার চিনের একটি এলাকায় নাকি মৃত ব্যক্তিকে কেটে খায়।
পৃথিবীর কিছু মানুষকে আমার কাছে কেমন যেন জানোয়ারের চেয়েও অধম মনে হয়।
অনেক ভাবনার বিষয়....... শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
পৃথিবীতে মুসলমানের ধর্ম ব্যতীত (মানে মুসলমানের মৃত্যুর পর সুন্দর দাফন ব্যতীত) আর কোন ধর্মে এতো সুন্দর পদ্ধতি নেই! আলহামদুলিল্লাহ আমরা গর্বিত মুসলমান হয়ে পৃথিবীতে এসেছি বলে!
আর নয়, কেন? নিশ্চয় বুঝে নিয়েছেন। ভালো সময় আসুক, নাতিদীর্ঘ মন্তব্য নিয়ে হাজির হবো।
আমরা মুসলমান বড়ই ভাগ্যবান, যা স্রষ্টার মহানুভবতার দান।
দেশীয় অনেক সংস্কৃতির আলোচনা সমালোচনাময় স্টিকি হবার জন্য নির্বিত্তে কাঁদে.....
আমেরিকার সংস্কৃতি কেন স্টিকিতে জুলবে বুঝে আসেনা।
দেশীয় সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দেবার জন্য সম্পাদকের প্রতি বিনিত আহবান জানাচ্ছি।।
পুঁটির বাপ আমার প্রিয় ব্লগাররের মাঝে অন্যতম একজন! যার লেখা প্রকাশিত হলে অনলাইনে থাকলে কখনো এড়িয়ে যায়না!
আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ....
বাস্তবতা এমনই হবে। অতীতে এরকম অনেক জাতি পরিণতি এমন হয়েছে।
এখানের লাশঘরে গিয়েছি যে কয়বার অমুসলিম লাশ দেখেছি অনেক! আমাদের জীবনব্যবস্থায় একজন মৃত মানুষকেও পবিত্রকরনের ব্যবস্থা আছে গোসলের মাধ্যমে ওদের সেটা নেই! আরো অদ্ভুত হলো প্রায় প্রত্যেকেই মারা যাওয়ার আগে বলে যায় শেষ কৃত্যের সময় তাঁকে কোন পোষকে আবৃত করা হবে। কেউ বিয়ের পোষাক কেউ বা স্মৃতিবিজরিত কোন পোষাক আবার অনেকেই রাতে ঘুমানোর ড্রেসকে পছন্দ করে! তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো এই কাজটি ম্বড়টের কোন আপন জনেরাই করটএ চায় না । নির্দিষ্ট লোকের মাধ্যমে এই কাজ করানো হয়! এদের মৃতের প্রতি এত ভয় । আমার প্রতিবেশির সাথে কথা হচ্ছিলো , আমি যখন বলেছি আমি একজন লাশকে গোসল করানোতে অংশগ্রহন করেছিলাম সে খুবি অবাক হয়ে আমাকে বলেছিলো সে তাঁর বাবাকেই মৃত্যুর পরে দেখতে যায়নি ! বাবার চেহারায় যদি বিভৎসতা ধরা পড়ে এজন্য! যখন তার বাবাকে পোষাক পড়িয়ে কফিনে রাখা হয়েছে তখন দেখেছে!
ওদের ধারনা মানুষ মৃত্যুর পর আরামে ঘুমায় । তাই যার মৃত্যু হয়েছে তার পছন্দের কাজগুলো করে তাঁর আত্নাকে শান্তি দিতে এই ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালায়!
কোনদিন অমুসলিমদের কবরস্থানে গিয়েছেন?
যাইহোক আপনার হাউসমেট কে সময় সুযোগ বুঝে ইসলামের দাওয়াত দিতে মুখে বা আচরনের মাধ্যমে ভুলবেন না ভাই!
স্টিকি পোস্টে অভিনন্দন গ্রহন করুন!
বেশি বেশি লিখুন এবং স্টিকিতে ঝুলুন!
মৃত বাক্তিকে নিয়ে লেখা পোস্ট তাই অভিনন্দন জানালাম না। অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে
অন্য দেশে ঢুকে মানুষের সাজানো সংসার ও স্বপ্ন ভেঙ্গে দেয় কিন্তু তাদের কিছুই মনে হয়না... মূলত এদের আর কুকুরের মাঝে পার্থক্য নেই।
-আলে ইমরান-১৮৫
শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন