আজকের স্বপ্ন
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১০ এপ্রিল, ২০১৫, ০৭:৫৬:৩২ সন্ধ্যা
আজ ৯ই এপ্রিল। একটু আগে ঘুম ভেঙ্গে গেল এবং ফজরের নামাজ আদায় করে লিখছি।
আমি স্বপ্ন দেখলাম আমি ঘুমিয়ে আছি আর একটি দুষ্ট জীন পাশ থেকে আমাকে ধরে রেখেছে। আমি খুব দ্রুত তার প্রচন্ড শক্ত এবং একটু মোটা হাতদুটো ধরে ফেললাম এবং দুটো সূরা তিলাওয়াত করলাম, আর সঙ্গে সঙ্গে সে আমার বশ্যতা স্বীকার করল। আমি হাত ধরেই রাখলাম এবং প্রশ্ন করলাম-আর কখনও এরকম করবি ? সে বলল- না। আমার মনে হল সে মিথ্যা বলছে। তারপর বললাম-তোর নাম কি ? সে একটা নাম বলল। আমার মনে হল সে নিশ্চিত মিথ্যা বলছে। আবারও বললাম, এই আমার সাথে মিথ্যা বলবি না,ভাল করে বল তোর নাম কি ? সে আরেক নাম বলল। আমার মনে হল এরা ব্যপক মিথ্যাবাদী।
এরপর জিন আমাকে কোথাও নিয়ে যেতে চাইল,আমি রাজি হলাম। এসময় আমার সাথে একজন ছোটভাই ও ছিল। জীন আমাকে তার পিঠে নিল আর আমার পেছনে ছিল সেই ছোটভাই। আমি তার গলা জড়িয়ে পিঠে বসে ছিলাম,আমার শরীরের কোনো ভার অনুভূত হলনা। মনে হচ্ছিলো আমার শরীরের ওজন শুন্য। আমি জিনের মুখ দেখিনি এমনকি তাকেও দেখা যাচ্ছিলো না,শুধু অনুভব করছিলাম তাকে ধরে রেখেছি।
সে হাটছিল, হঠাৎ দেখলাম রাস্তায় পানি জমেছে । ভাবলাম আমি পিঠ থেকে নেমে যাই আর তারপর হেটে পার হই। সে আমাদের দুজনকে পিঠে নিয়ে হয়তা চলতে পারবে না। কিন্তু সে ছোট্ট একটা লাফে পানির অংশটুকু পার হয়ে গেল। আমি অবাক হলাম তার শক্তিতে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম যদি বাঘ সিংহ পড়ে রাস্তায় তুমি ভয় পাবে ? সে বলল-ওসব বাঘ সিংহ আমার ভয়েই অস্থির থাকে,ওসবে ভয় পাওয়ার কোনো কারন নেই।
দেখলাম একটি উচু গেট,আমি দরজা খুলে বের হবার কথা বললাম কিন্তু সে এক লাফের উচু গেটের উপর দিয়ে ওপাশে গিয়ে পড়ল। আমরা কোনো এক গন্তব্যের উদ্দেশ্যে চলললাম। চলতে চলতে দেখলাম বিশাল বড় একটি বিল্ডিং এটি আইফেল টাওয়ারের চাইতে উচু হবে। আমি ভাবলাম এটা কি পার হওয়া সম্ভব ! কিন্তু সে আমাকে অবাক করে দিয়ে অতি দ্রুতগতির লিফটের মত উপরে উঠতে লাগল,অথবা আমার মনে হতে থাকল সে দাড়িয়ে আছে কিন্তু তার দেহ উপরের দিকে বাড়তেই আছে। কয়েক মুহুর্তেই সে আমাকে এবং আমার পেছনে ছোটভাইকে নিয়ে বিল্ডিং পার হল এবং আমরা একটি ব্যস্ত শহরে চলে আসলাম। আমরা অনেক উপর দিয়ে উড়ছিলাম,এরপর একটি একতলা বিল্ডিং এর ছাদে এসে নামলাম। আমার পেছনে সর্বদা ছোটভাই থাকলেও আমার সাথে তার স্পর্শ লাগেনি অথচ সেও একইভাবে আমার সাথে উড়ছিল। বিষয়টা বুঝতে পারলাম না,একইসাথে কিভাবে একই নিয়মে দুজনকে এভাবে নেওয়া সম্ভব !
একতলা যে ছাদের উপর এসে দাড়ালাম সেটা ছিল একটি ব্যস্ত এলাকা। সামনে ছিল রাস্তা,বামে ছিল ৩ রাস্তার সংযোগস্থল। রাস্তায় গাড়ি চলছিল। হঠাৎ দেখলাম রাস্তার অপর প্রান্তের বিল্ডিংএ আগুন লেগেছে। দুজন মানুষ ভেতরে আগুনে পুড়তে থাকা একটি লোককে বাইরে নিয়ে আসল। লেঅকটা নিথর পড়ে ছিল উপুড় হয়ে। হঠাৎ দেখলাম লোকটার বুকের নীচে জ্বলন্ত কাঠ এবং সে পুড়ছে,লোকটা ছটফট করতে লাগল। আমি তা দেখে পাশে থাকা ছোটভাইকে বললাম-দ্যাখ এই আগুনই এই লোকটা সহ্য করতে পারছে না, তাহলে জাহান্নাম কত ভয়াবহ ! যে লোকগুলো এই লোকটাকে ভেতর থেকে টেনে এনেছিল তাদের একজন এই লোকটাকে আগুনের হাত থেকে বাচাতে না পেরে বসে বসে মাথা চাপড়ে কাদতে লাগল।
রাস্তার এক পাশে কিছুটা বৃষ্টির পানি জমে ছিল। কিছু লোক পাত্রে ভরে পানি এনে এই লোকটার গায়ে ঢেলে দিল তাতে সে আরাম বোধ করল। আমি তখন লোকদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বললাম, আপনারা লোকটাকে ওই পানির মধ্যে নিয়ে ছেড়ে দেন,সে সুস্থ্য হবে। ওদিকে যে লোকটা বাঁচাতে না পেরে কাদছিল সে আশাবাদী হয়ে উঠে দাড়ালো এবং এই লোকটাকে সাহায্য করল। লোকটা হামাগুড়ি দিয়ে পানির উপর গিয়ে পড়ল এবং শরীরের আগুন নিভে গেল।
লোকটা তখন তার শার্ট খুলে ফেলল এবং আমি দেখলাম তার শরীরে পোড়ার কোনো চিহ্ন নেই একেবারে নিঁখুত শরীর। আর সঙ্গে সঙ্গে ওই লোকটা তার সম্পদের খবর নিতে থাকল। মানুষের সাথে এমনভাবে কথা বলতে শুরু করল,যেন একটু আগে সে আগুনেই পুড়েনি। আমি তার আচরনে অবাক হলাম। ভাবলাম মানুষ এরকমই...
এরপর ঘুম ভেঙ্গে গেল, আমি আউযুবিল্লাহ হিমিনিাশ শয়তান হিররাজিম পড়ে পার্শ্ব পরিবর্তন করলাম এবং স্বপ্নে বিষয়টা ভাবতে থাকলাম। এর পূর্বে দেখেছিলাম-আমি একটি ইসলামিক সেমিনাকে বক্তব্য রাখছি। স্বপ্নের কিছু বিষয় আমি ভুলে গেছি। ......অন্য আরেকটি স্বপ্নের অংশ ছিল এমন যে, সেই ইসলামিক সেমিনারে আমি আমার প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকালাম, এটা ছিল এমন প্যান্ট যেটা দীর্ঘদিন পরিনি। পকেটে অনাকাঙ্খিতভাবে ১৫০ টাকা পেলাম। খুব ভাল লাগল, মনে হল এটা দিয়ে নিজেসহ অন্যকে কিছু কিনে খাওয়ানো যাবে। আবারও পকেটে হাত দিয়ে দেখলাম ১৫০ নয়, বরং ৩০০ টাকা রয়েছে পকেটে.....কিছু লোককে বললাম আমার সাথে রেস্টুরেন্টে যেতে....
বিষয়: বিবিধ
১০৩১ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
স্বপ্ন হলেও খুব শিক্ষনীয় বিষয় ছিল! মানুষের সারাদিনের করা চিন্তা চেতনার অনেকটাই স্বপ্নে দেখে থাকে। জাহান্নামের আগুনকে ভয় পান এজন্যই স্বপ্নেও এই চিন্তা করতে পেরেছেন আলহামদুলিল্লাহ!
আল্লাহ আপনাকে ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন। বোনের জন্য দোআর আবেদন রইলো!
আপনার মত খাদককেও তো ৩০০ টাকা হবে না, অন্যদের কি খাওয়াবেন। ধন্যবাদ।
রেষ্টুরেন্ট এ আমাদের দাওয়াত কবে?
তবে সিঙ্গারা, সমুচা, চা খাওয়ানো যেতে পারে এই টাকায় বেশ কিছু লোককে।
আপনার স্বপ্নের চমৎকার সাবলীল বর্ণনা মনে করিয়ে দেয় আপনার সুন্দর ভাবনার কথা সর্বোপরি আল্লাহ্ পাকের কথা।
হৃদয়ছোঁয়া শিক্ষণীয় লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন