ও পুটির মা
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২১ মার্চ, ২০১৫, ০২:১২:১৫ রাত
পুটির মা, আরে ও পুটির মা ! আরে গেলে কই...কি সর্বনাশ ,আরে লোকটা কি উড়ে গেল নাাকি....তাও বা কিভাবে সম্ভব , তার তো পাখনা গজায়নি ! তবে হলটা কি !
আরে পুটির মা....গেল কই । ওগো মনুর মা, পুটির মাকে দেখেছো নাকি ?
: পুটির মা আবার কে ? তোমার মাথা গেছে দেখছি..
: আচ্ছা ঠিক আছে,আমি দেখছি লোকটা গেল কোথায়....কিন্তু হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেল কেন তা তো বুঝলাম না..
আহা রাতেও ছিল,সকালেও ছিল...বলে গেলাম দুজনে আজ বিকেলে যাব নদীর ধারে ঘুরতে। কি সুন্দর কাশফুল ফুটেছে। হাজান মাঝিকে বলে রাখলাম নৌকাটা যেন ঠিক রাখে। নিজে নৌকা চালাবো। ওপারে সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠে খানিক বসে কাশ বনের দিকে পাশাপাশি হাটব....আকাবাকা পথে চলে যাব বহুদূর...আর পুটির মা গেল কোথায়...আরে ও পুটির মা...
: এই বাবু দেখেছিস নাকি পুটির মাকে ?
: পুটি মাছ ?
: দূর হ এখান থেকে...খাওয়া ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না,,হতচ্ছাড়া...
কিন্তু এক ঘন্টা হতে চলল-পুটির মা আসেনা ক্যান ? মানুষটা গেল কোথায় ? আমার উপর আবার রাগ করল নাতো ? তার তো আবার মাঝে মাঝে বিনা কারনে রাগ হয়। কিন্তু এমন কিছু করেছি বলে তো মনে হচ্ছে না...নাকি আমি নিজেই ভুলে গেলাম !! নাহ ...কিছুই তো ঘটেনি,তাহলে সে গেল কই ?
আরে ও পুটির মা গেলে কোথায় ?
: ও চাচা,পুটির মা কি এদিকে এসেছিল ?
: তুমি বাপু যত বড় হচ্ছ,তোমার তোমার পুলাপাইনের স্বভাবটা ততই বাড়ছে...এদিকে কোনো পুটির মা টা নেই...
: কিন্তু লোকটা গেল কোথায় ? নাকি আবার বাপের বাড়ি গেল ? কিন্তু সেখানে সে তো একা যায় না। আমাকেই দিয়ে আসতে হয়। আর ৭ দিনের কথা বলে ৩/৪দিন পরেই ফেরত আসে। সেবার সে যাবার পরের দিন ফোন করে বললাম,তা এতদিন হয়ে গেল ,তোমার তো ফেরার নাম নেই! সে বলল-মিনষে ঢং করো ? মাত্র ২ দিন হল আসলাম। লোকে কি বলবে এমন করলে ? আমি বললাম লোকের গুলি মারি, আমি কি লোকেদের বিয়ে করেছি নাকি ? সে বলল-তা বিয়ে করেছো বলেই তুমি পুলাপাইনের মত করবে ? আচ্ছা তুমি এক কাজ করো। তুমিই চলে এসো। মা আজ মজার মজার জিনিস রান্না করেছে। আমার আবার জিহবায় একটু সমস্যা আছে। নাহ,মানে সেরকম সমস্যা না,,, খাবারের কথা উচ্চারিত হলে সবার আগে আমার জিহবা শুনতে পায়...। সেদিন অফিস কামাই করলাম আর চলে গেলাম শ্বসুর বাড়ি। ধুমধাম খাবারের পর রাতেও থাকতে হল। পরের দিন বললাম-আচ্ছা আমি যে এখন তোমাকে রেখে বাড়িতে যাব,কিন্তু করবটা কি ? আর এত যে দারুন সব খাবার খেলাম-বাড়ি গিয়ে তো আমাকে যা তা খেতে হবে। শেষে বৌ বলল-বুঝছি..চলো যাই।
এই হলো সেই বৌ,কিন্তু মানুষটা হঠাৎ গেল কই ? হাজান মাঝির নৌকা তৈরী। বেশ দারুন নৌকা,,,কিন্তু সময় যে বয়ে যায়...লোকটা গেল কই ? ও পুটির মা,বলি গেলে কই ?...
দেখী আবার বাড়ি ঢুকে দেখী....ভাত তরকারী তো আমার জন্যে ঢেকে রেখেছে দেখছি...কিন্তু তাকে ছাড়া আমি কি খেয়েছি কখনও। তবে রাগ করল নাকি ? কিন্তু সে গেল কোথায় ? ঘরে নেই,বাইরে নেই...কেউ জানেনা তার খবর....
ঠিক আছে আমিও রাগ করলাম, খাব না ভাত। সারা বিকেল আমি একাই নৌকা চালাবো। রাতেও খাব না। ট্রাউজার পরে রেডী হয়ে নেই......তবে তার জন্যে যে চকলেটটা কিনে এনেছি এটাই আগে সবাড় করি তবেই হবে তার উচিৎ.....
না......ওইটা আমার চকলেট....খবরদার..ওটা আমার ,আমারটা আগে আমাকে দাও....
হায় আল্লাহ !!!!!.....তুমি এখানে.....!!! সে আমি দিচ্ছি কিন্তু তুমি ছিলে কোথায় ??
: ওই পর্দার আড়ালে ছিলাম ।
:কি জঘন্ন তুমি...তুমি ওই পর্দার আড়ালে ছিলে ? আমি যে এলাকা মাথায় তুলে তোমাকে খুজলাম...
: আমি জানি..
: তুমি জানো ? তাহলে চুপ ছিলে ক্যানো ?
: তুমি আমাকে পুটির মা বললে কেন ?
: ওহোহোহো......এই ব্যাপার !!!! হাহাহাহাহাহাহা..দেখো দেখি কি কান্ড.....আহা তাই তো...আমি ..ওহ একারনেই বাইরের লোকরা পুটির মাকে চিনতে পারল না..হাহাহাহা...
: হুহাহাহাহা রাখো..আগে খাবে চলো.....তোমার জন্যে শিং মাছের ঝোল রেধেছি....
: আহ এ জিনিসের উপর কোনো জিনিস নেই....
: তুমি একটা যেন কি..সেদিন লাউ আর কৈ মাছ খেয়ে বললে এটার উপর কোনো জিনিস নেই,আর আজ বলছো শিং মাছ..
: হাহাহা...কথা ঠিক, আসলে তোমার হাত ভাল..
: আর পা ?
: ওই দ্যাখো, কোথাকার পানি কোথায় নিয়ে গেল...তোমার রান্না ভাল,এবার হয়েছে ? আসলে তোমার রান্নায় আমার কিছু এসে যায় না, তুমিই আসলে ভাল,এজন্যে তোমার সবকিছু ভাল..
: হয়েছে,,হয়েছে,,, আজ কিন্তু অনেকক্ষন নৌকায় ঘুরব..
: তা তো হবার নয় পুটির মা।
: আবার পুটির মা....শরবতে লবন মিশিয়ে দেব বললাম...
: না না না...তার দরকার নেই, পুটির মা বাদ..
:পুটির মা বাদ মানে ?
: না না..মানে এই নামটা বাদ.....
: কি ? এই নামটা বাদ মানে ?
: মানে তুমি পুটির মা ডাকা পছন্দ করনা,তাই বললাম...
: হ, তরে কইছে,তুই বেশি জানোস...
:হাহাহাহাহা..পুলাপাইন তুমিও কম না..
: আচ্ছা তাড়াতাড়ি চলো,সময় নষ্ট হচ্ছে...আজ অনেকক্ষন ঘুরব...
:ওহ দু:খিত....জনাবা....তুমি অনেক সময় নষ্ট করেছো,আর মাগরিবের আযানের আগেই ফিরতে হবে...
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৫ বার পঠিত, ৩৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তাহলে ঘুম থেকে উঠেই পড়ি। অনেকে একনো পেঁচার মত ড্যাব ড্যাব তাকিয়ে আছে, অপেক্ষা করেন, হুতুম পেঁচারা একটু পরেই তাদের উপস্থিতি জানান দিবে।
এইতো জীবন।
এটাই হচ্ছে স্বামী স্ত্রীর ভালবাসা এটাই মনে ভালবাসার জোর! এটা নিয়ে জীবন সুন্দর করে সাজিয়ে নেয়া যাবে! অসাধারণ উপস্থাপনা! ধন্যবাদ।।
পুঁটির মাকে দেখতে চাই ভাইয়া! তাড়াতাড়ি! বশ মজা পেলাম!
আসলে আমার ব্যর্থতা , যদি থার্ড পারসনে লিখতাম ভুল বুঝতো না কেউ! মৃত্যুক ঘিরে যে অনুভূতি হয়েছিলো সেটার সাথে দেশে যাওয়ার আর ফিরার অনেক মিল পেয়েছিলাম! সেটা লিখতে গিয়ে পাঁচ বছর আগের ঘটনা লিখতে হলো!২য় পর্বে চেস্টা করছি ক্লিয়ার করতে!
হ্যা ভাই একেবারে ছোট আর এখানকার নদীর তাজা পুঁটি !জিহবায় বড়শি দেন ভাই
আপনার প্রোফাইলে চেহারা দেখে কেমন রসকষহীন মনে হয়য় অথচ রসে টুইটুম্বুর!
কিন্তু আমি যে ছোট, ছওট মানুষদের কি এতো রোমান্টিক গল্প শুনতে হয়? আপনাদের মতই পুটির মা, কইয়ের মা, টিয়া ময়না পাখি ডাকতে ইচ্ছে করে না বুঝি!
যাক ভাই। সাত সকালে একটা চমৎকার বিনোদন দানের জন্য অশেষ ধন্যোবাদ।
যত কিছু লিখুন না কেন খাওয়ার বিষয় লিখতে তো ভুললেন না। জাতীয় খাদক তো আপনি!
এখন তাহলে গোস্ত ছেড়ে পুটি মাছের প্রতি নজর দিচ্ছেন না! ছোট মাছে নাকি অনেক ক্যালসিয়াম, আপনাদের ওখানে পাওয়া যায় তো?
মন্তব্য করতে লগইন করুন