নিশ্চয়ই কষ্টের পরেই আছে স্বস্তি,অবশ্যই কষ্টের পরেই আছে স্বস্তি
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৯ মার্চ, ২০১৫, ০১:১৮:১৯ দুপুর
শিরোনামটি আমার তৈরী নয়। এটি সারা জাহানের মালিক আল্লাহ তার প্রেরিত আল কুরআনে উল্লেখ করেছেন।
এই পৃথিবীতে সুখ এবং দু:খ নিরবচ্ছিন্ন নয়। একটার পরই আরেকটির অবস্থান। সুখের ও দুখের সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকম হতে পারে। প্রত্যেকের অবস্থানে না আসা পর্যন্ত বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার হয়না।
দু:খ এমন একটি উপাদান,যা আল্লাহ তার সবথেকে প্রিয় মানুষগন যারা নবী,রসূল তাদেরকেও দিয়েছেন। যাদের জন্যে জান্নাত অবধারিত তারাই দু:খ কষ্ট পেয়েছেন,তাহলে আমরা কোন ছার ?
পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের যে কোনো মানুষের এই দুটি অবস্থা রয়েছে,অর্থাৎ শান্তি ও অশান্তি,সুখ ও দু:খ। আর তাই বুদ্ধিমানরাই কেবল সেই কষ্টের ভেতর থেকে আশান্বিত হতে পারে,যে কষ্ট তাকে অবধারিত শান্তির দিকে ধাবিত করে। আর এই নিশ্চয়তা কেবল স্রষ্টার কাছ থেকেই পাওয়া যায়। যারা মুমিন বা মুমিন হতে চায়,তারা তাদের সকল বিষয়কে আল্লাহর উদ্দেশ্যে পরিচালিত করে। আর এরপর আল্লাহ তাদেরকে কষ্ট চাপিয়ে দেয়,দু:খ দারিদ্র,ভয় ভীতি চাপিয়ে দেয়। আর যখন তারা সেখানে ধৈর্য ধারন করে,আল্লাহর উপর অটল থাকে,তখন আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে তাদেরকে এমন কিছু দান করেন যা তাদের ধারনার বাইরে ছিল।
মুমিন কখনও হতাশ হয়না। সে ভেঙ্গে পড়েনা,কারন তার কাছে সকল অবস্থার ব্যাখ্যা আছে। কিন্তু তারপরও বহুবার নবীদের সঙ্গীদের বলতে শোনা গেছে,আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে ? মূলত মানুষের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই সে ভাবতে থাকে এর চাইতেও কি বেশী কঠিন পরিস্থিতি হতে পারে ! কিন্তু আল্লাহ বলছেন-তিনি কারো উপর সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা অর্পন করেন না। তারপরও মানুষের কাছে আরোপিত ভারকে অধিক মনে হয়। এটি মানবিক দূর্বলতা,যা থেকে নবী,রসূলগন ছাড়া অার কেউ মুক্ত নন।
আল্লাহ সকলকে সমানভাবে কষ্ট বা সুখ দান করেন না। তিনি এটির তারতম্য করেন। কারন তিনি বিভিন্ন অবস্থা সৃষ্টি করে মানুষকে পরিক্ষা করেন। মুমিনের কষ্টও তার লাভের কারন যদি সে সঠিকভাবে আল্লাহর দ্বীনের উপর অটল থাকে,ধৈর্য ধারন করে। আল্লাহ কাওকে পৃথিবী ও আখিরাত উভয় স্থানে সুখী করেন,কাওকে পৃথিবীতে বেশী দু:খ দিয়ে আখিরাতে বেশী সুখী করেন,কাওকে সব ভাল জিনিস এখানেই দিয়ে দেন,কাওকে উভয় কালেই বঞ্চিত করেন। এটা হল আল্লাহর সাথে বান্দার আচরন।
আরেকটি বিষয় হল বান্দার সাথে বান্দার আচরণ। এটি বেশ মারাত্মক বিষয়। আল্লাহ অসিম দয়ালু তিনি ক্ষমা করতেই পছন্দ করেন। কিন্তু বিষয়টা বান্দার সাথে বান্দার মধ্যে আসলে সেখানে নানান অবস্থা পরিলক্ষিত হয়। প্রথম সমস্যাটা তৈরী হয় বোঝাপড়া নিয়ে। আল্লাহ মানুষের অন্তরসমূহ জানেন,ফলে তিনি সেটা দেখে বিচার করতে পারেন। কিন্তু মানুষ দেখতে পায় উচ্চারিত শব্দ এবং সেখানে বিশ্লেষনে তারতম্য হয়,ভুল ভ্রান্তিও হয়। একজনের অনিচ্ছাকৃত মন্তব্যে আরেকজন কষ্ট পেতে পারে,আবার ইচ্ছাকৃত বাকা মন্তব্য বুঝতে না পেরেও আনন্দ লাভ করতে পারে,আবার বাক্যের গভীরে গিয়ে সেটা আত্মস্থ না করতে পেরে বা ভিন্নভাবে বিশ্লেষন করে কষ্ট পেতে পারে। সুখের ক্ষেত্রে তাই। এ কারনে এই বিষয়টি মারাত্মক হয়ে যায়,কারন বিচারক এমন সীমাবদ্ধসম্পন্ন মানুষ যার চিন্তা,আচরনসহ সকল ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
মহান আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন ! আমরা মানুষের প্রতি যেন দয়ালু হই,তাহলে আকাশের মালিকও আমাদের প্রতি দয়ালু আচরণ করবেন। আল্লাহর রহমত,বরকত ছাড়া পৃথিবী সংকীর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আর আল্লাহ যার সাথে থাকবে,তার কোনো চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। মুমিন তো উভয় কালেই সুন্দরভাবে বাঁচে
বিষয়: বিবিধ
৩১৯৩ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের জীবন চলার পথে আপদ- বিপদ ,বালা - মসিবত আসবেই আল্লাহর পরিক্ষাস্বরূপ ।
হৃদয় শীতলকারি লিখাটার জন্য অনেক জাজাকাল্লাহ ।
জাযাকাল্লাহ খাইর। ভাইয়া সুস্থ আছেন তো? সব্জি কেমন খাওয়া হচ্ছে?
খুবই ভালো লিখেছেন ভাইয়া! সত্যিই মহান আল্লাহ ছাড়া আমরা অসহায় সব সময়! আল্লাহর রহমত আমাদের পাথেয়! আল্লাহ সহায় হোন আমাদের সকলের!
আপনার গুনাহ সমূহ এই সুন্দর পোস্টা উছিলাতে ক্ষমা করে দিন ও কবুল করে নিন আপনার সকল আমল!
পৃথিবীর জীবন হচ্ছে "সংগ্রামের জীবন" যা দুঃখ,কষ্টে পরিপূর্ণ। যেখানেই বাঁধা, প্রতিবন্ধকতা, অশান্তি, যন্ত্রণা, সংগ্রাম, সেখানেই আল্লাহ্ তাঁর বান্দার জন্য সমাধানের পথ প্রশস্ত করেছেন ; সংগ্রামের বোঝা লাঘব করেছেন দুঃখ-কষ্টের উপশম করেছেন; সুখ ও শান্তির পথ উম্মুক্ত করেছেন। পৃথিবীর জীবন সংগ্রামকে, দুঃখ-কষ্টকে, বাঁধা -বিপত্তিকে তখনই সুখ-শান্তিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব, যদি আমরা আল্লাহ্র নির্দ্দেশিত পথে অটল থাকি, আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসে দৃঢ় থাকি এবং ধৈর্য্য অবলম্বন করে একমাত্র আল্লাহ্র উপরেই নির্ভরশীল হই। দুঃখের বোঝার লাঘব বা সংগ্রামের সমাধান যে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে ঘটবে এ কথা ভাবার অবসর নাই। কষ্টের যে স্বস্তি বা সমাধান আল্লাহ্ তা তার বান্দার জন্য সরবরাহ করে থাকেন সত্য, তবে বান্দাকে তা ধৈর্য্য, অধ্যাবসায় ও বিশ্বাসের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। সে কারণেই বলা হয়েছে " কষ্টের সাথে অবশ্যই আছে যন্ত্রণার লাঘব।" (তাফসীর থেকে)
চমৎকার বিশ্লেষন এবং সাবলীল বর্ননার জন্য শুকরিয়া!
জাযাকাল্লাহু খাইর!
মুমিনের দূর্দিনে, চরম হতাশার দিনে, আয়াত হতাশাগ্রস্ত মনের আকাশে আশার আলোয় ভরিয়ে তুলতে অধিক বেশি কার্যকর। আর আপনি এই উপলব্দিটি অত্যন্ত সুন্দর এবং প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপন করেছেন। শোকরিয়া।
আল্লাহর রাসূল বলেছেন, মুমিনের জন্য প্রত্যেকটি অবস্থাই কল্যাণকর। যখন সে বিপদে আপতিত হয়য় তখন আল্লাহর নিকট থেকে পরীক্ষা ভেবে ধোইর্য ধারণ করে আর যখন সুখে স্বাচ্ছন্দে থাকে তখন আল্লাহর শোকরিয়া জ্ঞাপন করে।
আবারো ধন্যবাদ এমন সুন্দর, উপযোগী একটি বিষয় অবতারণার জন্য।
আল্লাহর রাসূল বলেছেন, মুমিনের জন্য প্রত্যেকটি অবস্থাই কল্যাণকর। যখন সে বিপদে আপতিত হয়য় তখন আল্লাহর নিকট থেকে পরীক্ষা ভেবে ধোইর্য ধারণ করে আর যখন সুখে স্বাচ্ছন্দে থাকে তখন আল্লাহর শোকরিয়া জ্ঞাপন করে। ...
এই পৃথিবীতে সুখ এবং দু:খ নিরবচ্ছিন্ন নয়। একটার পরই আরেকটির অবস্থান। সুখের ও দুখের সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকম হতে পারে। প্রত্যেকের অবস্থানে না আসা পর্যন্ত বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার হয়না!)))
আপনার উল্লেখিত কথা গুলো আমরা নিজেরা বুজলে এবং সহ সঙ্গীদের বুঝতে পরলে সুখের মিছিল আসবে অনায়াসে প্রতিটি ঘরে ঘরে....
মন্তব্য করতে লগইন করুন