আমরা অবশ্যই অহংকারী
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১১ মার্চ, ২০১৫, ০৮:২৩:২২ রাত
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে মানুষ মাত্রেই অহংকারী। আল্লাহ মানুষকে কিছু বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। আর সেখানে নিয়ন্ত্রন আনার জন্যে আদেশ করেছেন। যারা সেটা আল্লাহর বিধান মোতাবেক নিয়ন্ত্রন করবে তারাই সফল।
কিন্তু দু:খের বিষয় হল এই যে,আমরা অযথাও অহংকার করি। কখনও কখনও আমরা পৃথিবীতে কিছু বিষয়ে প্রতিষ্ঠা পেলে গর্বে গর্ভবতী হয়ে উঠি। এবং সে অনুভূতি ডেলিভারী করতে মরিয়া হয়ে যাই। যেসকল বিষয়ে নিজের ভাল দখল রয়েছে বা কোনো বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অজূন করেছি,সেটা ইনিয়ে বিনিয়ে অন্যকে জানিয়ে আন্তরিক শান্তি উপলব্ধী করার চেষ্টা করি। আর একইসাথে অন্যকে নীজের তুলনায় খাটো করার চেষ্টা করি। এমন কথা এমন সময় বলি যার কারনে অন্যরা ছোট হয় এবং নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
চাকুরী,ব্যবসা ইত্যাদী ক্ষেত্রে কেউ প্রতিষ্ঠিত হলে অন্যদেরকে তা এমনভাবে জানিয়ে দেই যে অন্যরা নিজেদেরকে ছোট ভাবতে থাকে,অথবা আমাদেরকে বিশাল ব্যক্তি ভাবতে থাকে।
মায়েরা তাদের সন্তানদের আলোচনায় অনেক সময় অন্যের সন্তানের উর্ধ্বে নিজের সন্তানের যোগ্যতা উপস্থাপন করেন। তাদের পারিবারিক অবস্থা,স্বামীর যোগ্যতা নিয়েও অন্যকে শুনিয়ে মজা অনুভব করেন।
আরও এক কাঠি সরেশ লোকেরা সরাসরি অন্যকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। তার সামনে অন্য লোকের প্রশংসা সহ্য করতে পারে না। কেউ সেটা বললে সঙ্গে সঙ্গে নিজের ব্যাপারে ৫ কথা শুনিয়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করে।
তবে বোধ করি সবথেকে ভয়াবহ অহংকার ইবাদাত নিয়ে। অনেকে তার ইবাদতসমূহ অন্যের সামনে এই উদ্দেশ্যে প্রকাশ করেন,যাতে তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশিত হয়। রাতে তাহাজ্জুদ পড়েন,প্রতি বছর আল্লাহর মহব্বতে হজ্জে যান,মানুষকে সাহায্য করেন,মসজিদ,মাদ্রাসা নির্মান করেন,নফল রোজা রাখেন ইত্যাদী বিষয়ে বলতে শোনা যায়। আর কিছু আলিম আছেন,যারা সরাসরি অন্য আলেমদের জ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করেন। নিজেদেরকে ভরা মজলিশে মহা-জ্ঞানী সাব্যস্ত করেন। তার অনুসারীদের থেকে ভরা মজলিশে প্রশংসা শুনে আত্মতৃপ্তী লাভ করেন।
এসবই হল অহংকার। আর রসূল(সা বলেন-অহংকার নেক আমলকে সেভাবে পুড়িয়ে ধ্বংস করে,যেভাবে আগুন শুকনো খড় কুটোকে পুড়িয়ে শেষ করে দেয়।(সম্ভবত বুখারী)
আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা) বলেছেনঃ
“যার অন্তরে অণু পরিমান অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা।” এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলঃ যদি কেউ সুন্দর জামা আর সুন্দর জুতা পরিধান করতে ভালবাসে? তখন নবী করীম (সা) বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। অহংকার মানে হল সত্য প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা।” [সহীহ্ মুসলিম; কিতাবুল ঈমান, অধ্যায়ঃ ১, হাদীস নম্বরঃ ১৬৪]
অহংকারীর ঠিকানা হল জাহান্নাম। আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ
“সুতরাং,তোমরা দ্বারগুলি দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ কর, সেখানে স্থায়ী হবার জন্যে; দেখ অহংকারীদের আবাসস্থল কত নিকৃষ্ট।”[সূরা নাহল; ১৬:২৯]
আল্লাহ যেন আমাদের প্রকাশ্য ও গুপ্ত সকল প্রকার অহংকার থেকে মুক্ত করেন। আমাদের সকল নেক আমলসমূহকে গ্রহন করেন এবং সকল পাপকে ক্ষমা করেন !
বিষয়: বিবিধ
১১৭৬ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যখন আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদেরকে বললেন আদম (আঃ)কে সিজদা করতে তখন সবাই সিজদা করলো ইবলিস ছাড়া । সে অহংকার করে বলেছিল যে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে আগুন থেকে আর আদম (আঃ)কে সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি থেকে ।
আগুন থেকে সৃষ্ট বলে সে নিজেকে আদম (আঃ) অপেক্ষা শ্রেয়তর মনে করেছিল ।
আল্লাহ যেন আমাদের প্রকাশ্য ও গুপ্ত সকল প্রকার অহংকার থেকে মুক্ত করেন। আমাদের সকল নেক আমলসমূহকে গ্রহন করেন এবং সকল পাপকে ক্ষমা করেন !
আমীন।
আল্লাহ যেন এগুলো আমার ক্ষেত্রেও কবুল করেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন