আমরা এসব ভ্রান্ত দীবসে উদ্ভ্রান্ত হব না !!!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১২:০৭:৩৪ দুপুর
(আপনার জীবনটা এই সুন্দর ফুলটির মতই সুন্দর এবং পবিত্র হোক,অথবা এর চাইতেও বেশী সুন্দর ! )
পশ্চিমা প্রায় সকল দীবসকে আমি ব্যবসায়িক দীবস মনে করে থাকি,কারন এসব দীবসগুলো ব্যবসায়ীরাই পরিচিত করেছে,তাদের পন্য বিক্রীর উপলক্ষ্য হিসেবে। ভ্যালেন্টিনো যেভাবে প্রেমের জন্যে মারা গেছে সেভাবে দুনিয়ার বহু লোক বহু প্রান্তে মরেছে কিন্তু সেসবকে কেন্দ্র করে মানুষের ভালবাসার এরকম উল্লস্ফন ঘটেনি। মূলত বর্তমানের ভ্যালেন্টাইন ডে একটি সামাজিক স্টাটাস মেইনটেইনকারী দীবস,যেটাকে উপলক্ষ করে কপোত কপোতীরা আবেগপ্রবন হয়ে পড়ে বা আবেগের অভিনয় করে থাকে। আর আবেগের লভ্যাংশের একটি অংশ যায় ব্যবসায়ীদের পকেটে,আরেক অংশ যায় কুফর সভ্যতার রাজনৈতিক পকেটে।
বাংলাদেশে দেড় দশক আগেও এটি অপরিচিত বিষয় ছিল। শোনা যায় সাংবাদিক শফিক রেহমান এটা প্রথম আমদানী করে,পরবর্তীতে প্রথম আলো গ্রুপ ও কিছু সুশীলরা এটা প্রতিষ্ঠিত করে। যেই'ই আমদানী করুক না কেন,বাঙ্গালীর নিয়ম হল হুজুগে নাচা। নাচতে গিয়ে পা না ভাঙ্গা পর্যন্ত তারা থামতে পারেনা। অনেকে আবার ভাঙ্গা পায়েও নাচতে পারে।
তথ্যপ্রযুক্তির যথেচ্চাচার ,সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়া,শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন তরুন যুবকদেরকে মানুষিকতায় ব্যপকধর্মী পরিবর্তন এনেছে। পূর্বে যেসব বিষয় তাদের ভাবনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল,তা এখন বিনা বাধায় সংঘটিত হচ্ছে। এর কারনে তারা তেমন তিরষ্কৃতও হচ্ছেনা। সমাজের যে অংশ বাধা হয়ে দাড়াতো তারা তাগুতী ঝড়ে ধ্বংস বা ব্যপকভাবে কোনঠাসা হয়ে পড়াতে নব্য তরুনদের সভ্যতার নামে অসভ্যতার রাজত্ব কায়েম হয়েছে। এটাই আধুনিকতা নামে পরিচিত্ । এটার দাপটেই আজ মানুষ বেশী নিরাপত্তাহীন জীবন যাপন করছে,এটার দাপটেই পূর্বের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশী নারী ধর্ষিত হচ্ছে,ব্যপক মাত্রায় এবরশন,টিজিং,ব্যভীচার,পরোকীয়া,মাদকাসক্তী বৃদ্ধী পেয়েছে।ধ্বংসোম্মুখ এই সমাজের উপর দাড়িয়ে কিছু সংখ্যক পাপাচারী ঘোষনা করছে আমরা উন্নতির উচ্চ শিখরের দিকে চলেছি। অপদার্থ শ্রেনীর উম্মুক্ত পাপাচারকে সাহসীকতা হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।
যুবক তরুনদেরকে জীবন সম্পর্কে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি,ভ্রান্ত চেতনা দিয়ে তাদেরকে মানুষিক প্রতিবন্দী বানিয়ে নিজেদের ও তাদের প্রভূদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত করতে সহায়তা করছে। প্রতিটি বছরকে তারা নানান শয়তানী দীবসে মুড়িয়ে রেখে তরুন যুবকদেরকে সারা বছর সেদিকে ব্যস্ত রাখছে। এমন একটি স্রোত তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে যে,এর বিপরীত স্রোতে থাকা মানুষেরা সমাজের অপাঙ্কতেয় হিসেবে পরিগনিত হয়ে পড়েছে। আর এই বিষয়টি দীর্ঘস্থায়ী হওয়া মানেই তরুনরা তারুন্যকে শুধুই মজা করার জন্যে খরচ করবে। চিন্তাহীন হয়ে এই চক্রে ঘুরতে থাকবে। যে বয়সে তার বিয়ে করার কথা সে বয়সে সে প্রেমের পেছনে ছুটবে, সেটা নিয়ে মাতামাতিতে হতাশ হয়ে নিজেকে নানান উপায়ে ধ্বংসে মেতে উঠবে। কৌশলে একাধিক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক সংরক্ষনের বিষয়টিকে সাহসীকতা হিসেবে মেনে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা করবে। জাতীর জন্যে হিরো না হয়ে,সে নিজের ঈন্দ্রীয়কে খুশী করার যুদ্ধে বিজয়ী হওয়াকে নায়কোচীত মনে করতে থাকবে। .....এটাই ঘটছে।
১৪ই ফেব্রুয়ারী তরুন-যুবকদের জন্যে একটি ধ্বংসাত্মক দীবস। যেহেতু সমাজ,রাষ্ট্র কুফরী শাসন দ্বারা পরিচালিত এবং শক্তিশালীভাবে এটাকে বন্ধ করার উপায় দেখা যাচ্ছে না, তাই রাষ্ট্রের কাছে কিছু আশা না করে নিজেদেরকে নিজে বাচানোর জন্যে এটাকে প্রত্যাখান করুন। অন্তত নিজেদের ঘরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাচান। প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। পিতা তার পরিবারে,অফিসের কর্মকর্তা তার অফিসে, এভাবে প্রত্যেকেরই কিছু অধিনস্ত রয়েছে এবং তারা তাদের ব্যাপারে হাশরে কৈফিয়ৎ প্রদান করবে। প্রত্যেকেরই এমন কিছু না কিছু লোক রয়েছে ,যারা তার কথা শুনে এবং মান্য করে। তাই প্রত্যেকে যেন প্রত্যেকের অধিনস্ত বা ওইসব কথা শোনা লোকেদেরকে সতর্ক করে।
আমাদের সর্বোচ্চ ভাল ব্যবহারের প্রধান অংশীদার আমাদের মা। আপনার মাকে ভালবাসুন,আপনার পিতাকেও। আপনার স্বামী,স্ত্রীকে ভালবাসুন এবং আপনার সন্তানকে। আপনার আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করুন।তাদের সাথে সদা সুসম্পর্ক রক্ষা করুন। আপনার প্রতিবেশীর হক আদায় করুন। তাদের কাছে আদর্শ প্রতিবেশী হউন। ছোটদেরকে স্নেহ করুন,বড়দেরকে সম্মান করুন। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে প্রত্যেকটি হালাল কাজ করুন,হারাম পরিত্যাগ করুন। আপনার জীবনটা পৃথিবীতেই প্রায় জান্নাতের মত সুন্দর হয়ে উঠবে্ । এর মধ্যেই শান্তি এবং কল্যান রয়েছে। কুফর সাষ্কৃতির পরিনাম পৃথিবী এবং আধিরাত উভয় স্থানেই ভয়াবহ।
বিষয়: বিবিধ
১৩২০ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এর বাইরে যা কিছু, বুঝতে হবে ওটায় কোন কল্যাণ নেই। কারন ইসলামের বাইরে কোন কল্যাণ নেই।।
মন্তব্য করতে লগইন করুন