পোর্টল্যান্ড টু ক্লাকামাস
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১২:০১:৩৩ দুপুর
আজ রবীবার,তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট। একটু ঠান্ড কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছেনা এটাই বড় পাওয়া। পোর্টল্যান্ডর কাছাকাছি পৌছাতে আকাশে সূর্য উদীত হল। গত দুই সপ্তাহে সম্ভবত এটা নিয়ে ২ দিন সূর্যের মুখ দেখলাম।
উইনকো আমার অন্যতম পছন্দের স্টোর। আগে ভারতীয় ছোট স্টোর থেকে কেনাকাটা করলেও অনেক দাম দিতে হত। এখানে বেশ সস্তায় বিভিন্ন স্পাইসসহ প্রয়োজনীয় জিনিস পেয়ে যাই। কেনাকাটা সারলাম। হিসেব করে দেখেছি বাসায় জিনিস পত্র থাকলেও আমার কিনতে ইচ্ছা করে। অপ্রয়োজনেও কিছুটা কিনে থাকি। এখান থেকে গেলাম আরও দুটো স্টোরে। তারপর প্যাসিফিক হাইওয়ে ধরে চলতে শুরু করলাম। হাতের বামে প্রথমবারের মত এশিয়ান স্টোর দেখাম্ ভেতরে ঢুকে তো পুরো টাস্কি ! চায়নিজ মালিকানায় পরিচালিত এই স্টোরে আমার পরিচিত অনেক সব্জী এবং মাছ রয়েছে। ফলমূল,সব্জী,মাছ,মশলা,খাদ্য দ্রব্য বেশ সস্তা। ভারতয়ি দোকানের পর এবারই প্রথম ঝিঙ্গা,লাউ,কাচ কলা দেখলাম। পূর্বে প্রতি পাউন্ড লাউ কিনেছি ২.৫ ডলারে আর এখানে মাত্র ৯৯ সেন্ট। ঝিঙ্গারও একই দাম। ব্যপক কিনলাম। তবে পেপে আমার বেশ প্রিয় হওয়াতে সস্তা দামের মধ্যে কিনলাম। ছোট আকৃতির এক ধরনের পেপে আছে ,দাম প্রতি পাউন্ড(৪৫৩ গ্রাম) ৩.৬৭ ডলার। আমি কিনেছি সস্তা এবং বড় আকৃতির টা,যেটা ১.৩৭ ডলার প্রতি পাউন্ড। কিন্তু সব কিছু ওজনে কিনে তেমন পোষায় না। অনেক রকমের ফলমূল,মাছ কিনে বেশ সন্তুষ্ট হলাম। এরকম একটা দারুন স্টোরের খবর আগে কেন পেলাম না,বুঝলাম না।
এবার গেলাম টাইগার্ডের হালাল স্টোরে। এখান থেকে গরুর মাংসের কিমা,মুরগী,গরুর সামনের পায়ের মাসল কিনলাম। চিন্তা করে দেখেছি প্রখ্যাত সব স্টোরগুলো মাংস থেকে ব্যপক লাভ করে। তারা মাংসকে তাজা রাখতে এর ভেতর পানি মেশায়। এতে তাজা থাকার পাশাপাশি পানির কারনে ওজনে ভারী হয়। আর হালাল স্টোর জীবনেও এই কাজটি করেনা। তাদের মাংস একটু শুকনো ধরনের। এবং এদের মাংসে চর্বী কম। ক্রেতা এখান থেকে বেশী লাভবান হয়। এদের মার্কেটিং ভাল হলে দামী ব্রান্ডের স্টোরগুলো মাইর খেত ব্যবসায়ে।
এবার গেলাম ক্লাকামাস শপিং টাউনে। ওরেগস সিটি পার হয়েই ক্লাকামাস। একটি বড় এরিয়ায় বড় একটি শপিং জোন তৈরী করা হয়েছে। সেখানে বিশ্বের অনেক দামী ব্রান্ড কোম্পানী তাদের দোকান খুলেছে। ছোট ,মাঝারী,বড় সব ধরনের দোকান রয়েছে। ডিসেম্বর ডিসকাউন্টের মাস। কোথাও ৭৫% ডিসকাউন্ট দেখলাম। তবে দুনিয়ার সর্বত্রই এক নিয়ম। যেসব পন্য কম চলে,খুব বেশী সুবিধার নয়,সেসবে বেশী ডিসকাউন্ট।
অনেক পন্য নেড়েচেড়ে দেখলাম। কেনার ইচ্ছা কষ্টে দমন করে রাখলাম। ৭%% ডিসকাউন্টের পরও অনেক পন্য কেনার যোগ্যতা নেই মনে হল। ভেতরের বিশাল এবং চকচকে করিডোরে হাটতে ভাল লাগছিল। হাটতে থাকলাম। মিল্কিবার নামক চকলেট খাচ্ছিলাম টুকটাক। এই চকলেট বেশ দারুন,ভেতরে ক্যরামেল। এসব অনেক সময় পকেটে থাকে। এতে হাটার রুচী বাড়ে।
এরপর ফার্মহাউসের রাস্তা ধরে ড্রাইভ করলাম,যেটা আমার সবথেকে পছন্দের। সারাদিন দুই শতাধীক মাইলের বেশী চলে বাসায় আসলাম। ভাত আর পেপের তরকারী রান্না করলাম। এটাই আমেরিকাতে প্রথম পেপের তরকারী খাচ্ছি। এক কড়াই পেপের তরকারীর সাথে ভাত ঝেড়ে দিলাম। পাউরুটির সাথে নিজের বানানো সন্দেশ খেয়ে ভাবছি আর কি খাওয়া যায়......রাতে আমি অবশ্য বেশী খাওয়া পছন্দ করিনা।
বিষয়: বিবিধ
১৩৯৮ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সন্দেশ চলছে রসগোল্লার কি অবস্থা?
বিশ্বাস করেন নতুন এক্সপেরিমেন্টের রসগোল্লা একেবারে মালালার মাথার মত শক্ত হয়েছে। যখন চুলায় ছিল তখন বড় হয়েছিল,ঠান্ডা হওয়ার পর ছোট হয়ে গেল...
মন্তব্য করতে লগইন করুন