যুদ্ধবন্দী দাস

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২২ জুলাই, ২০১৪, ১২:১৪:২৩ দুপুর



আমরা আলোচনা করেছি যে, পূর্বে যুদ্ধে প্রতিপক্ষের লোকদেরকে বা পরাজিতদেরকে দাস হিসেবে গ্রহন করা হত বা দাসত্বে বাধ্য করা হত। এটি ছিল বিশ্বব্যপী স্বীকৃত পদ্ধতি। মুসলিমদের সাথে কাফিরদের যুদ্ধেও কাফিররা মুসলিমদের সাথে এরূপ আচরণ করত। অর্থাৎ এই বিষয়টি ছিল একটি আর্ন্তজাতিক নিয়ম পদ্ধতি বা পন্থা। ফলে মুসলিমরা যদি এই পদ্ধতি একতরফা বাতিল করে, তবে ভারসাম্য রক্ষিত হয় না। যুদ্ধ হল একটি কঠিন অবস্থার নাম, সেখানে প্রত্যেক পক্ষই তার প্রতিপক্ষের ব্যাপারে হুশিয়ার এবং চরম কঠোর। সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থার নাম যুদ্ধ। এটি কোনো গ্রহনযোগ্য পন্থা হতে পারে না যে-যুদ্ধে মুসলিমরা তাদের প্রতিপক্ষের আটক ব্যক্তিদেরকে মুক্ত করে দেবে,আর মুসলিমদের প্রতিপক্ষ বাহিনী আটককৃত মুসলিমদেরকে হত্যা করবে অথবা দাসদাসীতে পরিনত করবে। বরং এক্ষেত্রে সমান নীতি অবলম্বন করাটাই সমিচিন। তবে কিছু বিষয় পারষ্পরিক চুক্তির উপর নির্ভরশীল, আর চুক্তির প্রতি সম্মান মুসলিমদের মত এমনভাবে কেউ দেখায়নি। অর্থাৎ যদি আন্তর্জাতিক নিয়ম এমন হয় যে, যুদ্ধবন্দীদেরকে দাস-দাসী বানানো যাবে না, অথবা যদি মুসলিমরা প্রস্তাব করে এখন থেকে যুদ্ধবন্দীদেরকে দাস-দাসী বানানো যাবে না, তাহলে প্রতিপক্ষের সাথে মুসলিমরা এই চুক্তি অনুযায়ীই আচরণ করবে। যেমন ওসমানীয় খিলাফতের খলিফা ২য় মুহাম্মদ বা মুহাম্মদ আল ফাতেহ এ লক্ষ্যে বিশ্ব-সন্ধী চুক্তি করেছিলেন,এই বিবেচনায় যে যুদ্ধবন্দীদের পরিনতীর ব্যাপারে শাসককে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। তিনি ইচ্ছা করলে আটককৃত যোদ্ধাদেরকে হত্যার আদেশ দিতে পারেন,দাস হিসেবে গ্রহন করতে পারেন,শর্তসাপেক্ষে বা মুক্তিপণ নিয়ে মুক্তি দিতে পারেন অথবা শর্তহীন মুক্তি দিতে পারেন। এই বিষয়টি এমন ভাবেই বৈধ রাখা হয়েছে।

আর ইসলাম এই অনুমোদন দিয়েছে শুধুমাত্র এমন যুদ্ধের ক্ষেত্রে যা আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের উদ্দেশ্যে হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন-“যারা মুমিন তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে”।-( সূরা আননিসা-৭৬) অর্থাৎ মান-মর্যাদা,অহংকার প্রকাশ,শুধু বিজয়ের আকাঙ্খা,সম্পদ প্রতিপত্তির জন্যে সংঘঠিত যুদ্ধের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিপক্ষকে দাস বানানোর কোনো অনুমোদন নেই। যুদ্ধ হতে হবে একমাত্র আল্লাহর রাস্তায়,সুন্নাহ অনুযায়ী। এবং তখনই রাজনৈতিক,সামরিক পরিস্থিতি অনুযায়ী মুসলিমদের শাসক যুদ্ধবন্দী প্রতিপক্ষ সম্পর্কে কঠিন অথবা কোমল সকল ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। প্রতিপক্ষকে দাস বানানো ইসলামের অবিচ্ছেদ্য বিধান নয়,বরং এটি একটি অপশন,যা পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবহৃত হয়। রসূল(সাঃ) তার জীবদ্দশায় পরিচালিত ২৭টি যুদ্ধের মধ্যে মাত্র দুটি যুদ্ধে বনূ কুরায়জা ও হুনায়নের যুদ্ধের পর যুদ্ধবন্দীদের সাথে এই পন্থা ব্যবহার করেছিলেন কিন্তু সেটি ছিল যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত বিষয়,আর সে শাস্তি ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাত দ্বিতীয় বিবরণ,২০:১০-১৪ অনুযায়ীও বৈধ ছিল। বনূ নাযীরের সাথে কৃত আচরনের ব্যাপারেও সমালোচনা করা হয়(তাদেরকে বিতাড়িত করা হয়)। সামনে আমরা এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

নি¤েœাক্ত কারনে মুসলিমরা যুদ্ধ করে:

১. আক্রমন প্রতিহতকরণ: যখন মুসলিমরা আক্রান্ত হয় তখন তারা তা প্রতিহত করতে যুদ্ধ করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন-“আর যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে,তোমরাও আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্দে যুদ্ধ কর, কিন্তু সীমালঙ্ঘন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।”-(সূরা বাকারা-১৯০)

২. ফিতনা দূর করতে এবং আল্লাহর দ্বীনের বাস্তবায়নে: আল্লাহর যমিনে আল্লাহর দ্বীনকে পরিপূর্ণরূপে রাস্তবায়নের জন্যে মুসলিমরা যুদ্ধ করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন-“আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে থাকবে,যতক্ষন না ফিৎনা দূর হয় এবং দ্বীন পরিপূর্ণরূপে আল্লাহর জন্যে হয়ে যায়।”-(সূরা আনফাল: ৩৯)

৩. তাগুতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম বা ইসলামের প্রতিরোধকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ : আল্লাহ তায়ালা বলেন-“ আর যারা কাফির তারা যুদ্ধ করে তাগূতের পথে। কাজেই তোমরা শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, শয়তানের কৌশল অবশ্যই দূর্বল।”-(সূরা আন-নিসা ৭৬)

৪. শান্তিচুক্তি সম্পাদনের পর তা ভঙ্গ করলে: আল্লাহ তায়ালা বলেন-“আর যদি তারা তাদের চুক্তির পর তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দ্বীন সম্বন্ধে কুটুক্তি করে,তবে কুফরের নেতাদের সাথে যুদ্ধ কর; এরা এমন লোক,যাদের কোনো প্রতিশ্রুতি নেই, যেন তারা নিবৃত্ত হয়।”-(সূরা আত-তওবা-১২)

এ ব্যাপারটি মদীনাতে দেখা গেছে। ইহুদীরা মুসলিমদের সাথে শান্তি চুক্তিতে আবদ্ধ ছিল। তারা মুসলিমদের শত্রুকে সাহায্য করবে না,এমন চুক্তি করেছিল। কিন্তু কাফিররা যতবার মুসলিমদেরকে আক্রমন করেছে বা আক্রমনের পরিকল্পনা করেছে,ততবার ইহুদীরা তাদেরকে গোপনে সহায়তা করেছে,গোপনে কাফিরদেরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়তে প্ররোচিত করেছে এমনকি মুসলিমদেরকে আক্রমনে কাফিরদের সাথে অংশও নিয়েছে। এবং তারা প্রকাশ্যেও চুক্তি ভঙ্গ করেছে। যখন কেউ এরূপে বন্ধু বেশে স্পষ্ট ধ্বংসে মেতে ওঠে,তখন শত্রুর সাথে তার কোনো পার্থক্য থাকেনা, বরং এমন শত্রুর শাস্তি হওয়া উচিৎ ভয়াবহতম এবং দৃষ্টান্ত মূলক। তাই এক্ষেত্রে এজাতীয় প্রতারকচক্র,যারা পেছন দিক থেকে আক্রমন করে,তাদের সাথে যুদ্ধের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

মুসলিম সম্প্রদায় ততক্ষন পর্যন্ত কাফির-মুশরিকের সাথে যুদ্ধ করবে না,যতক্ষন না তাদেরকে আমন্ত্রন জানানো হয়-ইসলাম গ্রহনে। তারা ইসলাম গ্রহন করলে মুসলিমদের ভাই হয়ে যাবে এবং একই রকম সম্মান,অধিকার ভোগ করবে। সে দাবী প্রত্যাখ্যাত হলে জিজিয়ার শর্তে নিরাপত্তা চুক্তি হবে। এই চুক্তিতে মুসলিম রাষ্ট্র বা গোত্র বা সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে এবং তাদের শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করে। তাদের নিরাপত্তায় নিজেদের অর্থ,সম্পদ,নীতি-কৌশল,সামরিক বাহিনী ব্যবহার করে। এটি এমন একটি কর,যা কাফির-মুশরিকদের সক্ষম পুরুষরা প্রদান করে। সেটি নির্ণিত হয় তাদের আর্থিক সঙ্গতি অনুযায়ী। আর এর বিনিময়ে তারা প্রতিপক্ষের সাথে যুদ্ধ করার দায় থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত হয় এবং স্বাধীনভাবে নিজেদের ধর্ম পালন করতে পারে। মুসলিমরা তাদের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ হলে বা অপারগ হলে জিজিয়া ফেরত দিবে,পূর্বে এটি বহুবার ঘটেছে। জিজিয়ার দাবী প্রত্যাখ্যান করা হলেই তাদেরকে যুদ্ধের ব্যাপারে সতর্ক করা হয় এবং তারা তা বুঝতে ব্যর্থ হলেই শুধুমাত্র যুদ্ধ হতে পারে। তবে যুদ্ধের মধ্যে যদি তারা সন্ধির দিকে ঝুকে পড়ে, তবে মুসলিমরাও সন্ধির দিকে ঝুকবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন-“আর তারা যদি সন্ধির দিকে ঝুকে পড়ে,তবে আপনিও সন্ধির দিকে ঝুকবেন এবং আল্লাহর উপর নির্ভর করুন, নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা,সর্বজ্ঞ।-(সূরা আনফাল-৬১)

অর্থাৎ কাফিররা যুদ্ধের মধ্যে সন্ধির প্রস্তাব করলে, মুসলিমরা তা সর্বোচ্চ বিবেচনা করে বা তাদেরকে আসন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সন্ধির দিকে ঝুকবে। এটি মুসলিমদের পক্ষ থেকে তাদেরকে প্রদত্ত একটি সম্মান ও দয়া।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যে সকল বিষয়ে যুদ্ধের অনুমোদন দিয়েছেন,সেসকল বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে যখন মুসলিমরা যুদ্ধে অংশ নিবে তখন ইসলাম মুসলিম শাসককে প্রতিপক্ষ যুদ্ধবন্দীদের ক্ষেত্রে ৪টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করেছেন:

১. কোনো বিনিময় ছাড়াই যুদ্দবন্দীদেরকে নি:শর্ত মুক্ত করে দেওয়া, এটা হল তাদের প্রতি বিশেষ অনুকম্পা বা দয়া। আল্লাহ তায়ালা বলেন-“তারপর হয় অনুকম্পা,নয়ত মুক্তিপণ; যতক্ষন না যুদ্ধের ভার(অস্ত্র) নামিয়ে ফেলা হবে।”-(সূরা মুহাম্মদ: ৪)

২. মুক্তিপণ বা কিছু বিনিময়ের মাধমে তাদেরকে মুক্ত করে দেওয়া। বদর যুদ্ধসহ আরও বহু যুদ্ধে আমরা এটা দেখেছি।

৩ .হত্যা করা: আল্লাহ তায়ালা বলেন- “কোনো নবীর জন্যে সঙ্গত নয় যে,তার নিকট যুদ্ধবন্দী থাকবে,যতক্ষন না যমিনে(তাদের)রক্ত প্রবাহিত করে।”-(সূরা আনফাল-৬৭)

৪ .দাস-দাসী হিসেবে গ্রহন করা: রসূল(সাHappy মাত্র দুটি যুদ্ধে যুদ্ধবন্দীদেরকে দাস-দাসী হিসেবে গ্রহন করেছিলেন। যেমন- বনূ কুরায়জা, বনূ নাযীরের যুদ্ধে তাদের নারী ও সন্তানদেরকে দাস-দাসীতে পরিনত করেন। যুদ্ধবন্দীদেরকে ঢালাওভাবে দাস-দাসী বানানো হয়নি(যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে মূতা বিয়ের মাধ্যমে আবদ্ধ হয়ে মুসলিমরা স্ত্রী হিসেবে আচরণ করেছিল এবং তাদেরকে সম্মান প্রদান করেছিল,সেটা কোনোভাবেই ধর্ষন ছিলনা। সে সময়ে মূতা বিয়ের অনুমোদন ছিল,পরে মূতা বিয়ে রোহিত হয়ে যায়)। বরং অধিকাংশ সময়ই প্রতিপক্ষের উপর দয়া প্রদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি বিবেচিত হয় আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক,সামরিক পরিস্তিতি,গুরুত্ব অনুযায়ী। প্রতিপক্ষ বাহিনী আটককৃত মুসলিম যোদ্ধাদেরকে দাস-দাসী বানাবে না, এমন চুক্তি করলে বা প্রতিশ্রুতি দিলে মুসলিমরাও তাদের হাতে থাকা যুদ্ধবন্দীদেরকে দাস-দাসী বানাবে না, এমনটাই বিধান।

উপরোক্ত ৪টি বিষয়ের প্রত্যেকটিই পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল, আর এসকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহনে মুসলিম শাসকের উপর ক্ষমতা অর্পন করা হয়েছে। যদি যুদ্ধের প্রতিপক্ষ বহিনী মুসলিমদের সাথে সুআচরণ করে ,তবে মুসলিমরাও তাদের প্রতি সু-আচরণ প্রদর্শণ করবে। তবে কখনও কখনও তারা মুসলিমদের প্রতি ভয়াবহ খারাপ আচরণ করা সত্ত্বেও তাদের সাথে সু-আচরণ করা হয়েছে। তারা মুসলিমদেরকে হত্যা করলেও তাদের আটককৃত সৈন্য বাহিনীকে নি:শর্ত ক্ষমা করে মুক্ত করা হয়েছে। মুসলিমরা কম খেয়ে তাদেরকে ভাল খেতে দিয়েছে। আটককৃত অবস্থায় সু-আচরণ করেছে।

যখন মুসলিম সৈন্য প্রতিপক্ষের হাতে ধৃত এবং তাদের উপর নির্যাতন হচ্ছে বা হত্যা করা হচ্ছে,তখন মুসলিমদের হাতে আটককৃত কাফির সৈন্যদের সাথে অনুরূপ আচরণ করাই হল ইনসাফ। বিষয়টি একটি রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক পন্থার অংশও। এক্ষেত্রে মুসলিমরা প্রতিপক্ষের আবেদন বিবেচনা করে যুদ্ধবন্দী বিনিময়ের প্রস্তাব গ্রহন করতে পারে, মুক্তিপণ নিয়ে শত্রুর আটককৃত লোকেদের মুক্তি দিতে পারে, অনুগ্রহ করে নি:শর্ত মুক্ত করে দিতে পারে,তাদেরকে দাস-দাসী হিসেবে গ্রহন করতে পারে,আবার অবস্থার প্রেক্ষিতে তাদেরকে হত্যাও করতে পারে।

যেহেতু দাসপ্রথা ছিল সারা বিশ্বব্যপী স্বীকৃত এবং সহজাত সামাজিক প্রক্রিয়ার অংশ। তাই নিজেদের ভেতর থাকা দাসদের মুক্ত করতে পারলেও অন্য কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রনে থাকা দাসদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিলনা। আর যুদ্ধবন্দী সংক্রান্ত বিষয়টি একতরফা নয়, সেখানে প্রতিপক্ষের আগ্রহ,আচরণ জড়িত। আর প্রতিপক্ষের কঠোর আচরনের হাত থেকে মুসলিমদের রক্ষা করাও শাসকের দায়িত্ব,কর্তব্য, তাই ইসলাম শুধুমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রে একটি রাজনৈতিক ও সমর নীতির প্রয়োজনে,প্রতিপক্ষকে চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে যুদ্ধবন্দীদেরকে প্রয়োজনে দাস-দাসী হিসেবে গ্রহনের অনুমতি দিয়েছে। এটি প্রয়োজনের উপর নির্ভরশীল এবং পারষ্পরিক চুক্তির উপরও নির্ভরশীল। এটি যুদ্ধবন্দীদের অবধারিত কোনো নিয়তি নয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন- “ আর মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ”-(সূরা আশ-শুয়ারা-৪০)। অর্থাৎ প্রতিপক্ষ কঠোর হলে মুসলিমরা যুদ্ধের ক্ষেত্রে কঠোর হতে পারবে।

আমরা পূর্ববর্তী সময়ে দেখেছি মুসলিম শাসক বা সেনাপতি প্রতিপক্ষের প্রতি উদারতা প্রদর্শন করে তাদেরকে নি:শর্ত ক্ষমাও করেছেন। রসূল(সাঃ)এর ওফাতের পর পরবর্তী খলিফাগনের সময় বহির্বিশ্বে জিহাদ পরিচালিত হয়েছিল ব্যপকভাবে এবং রোম,পারশ্য সা¤্রাজ্য মুসলিমরা বিজয় করে। অথচ সে সময়ে অথবা তারও পরবর্তী সময়ে কোনো যুদ্ধবন্দীকে দাস-দাসী বানানো হয়নি। প্রতিপক্ষের প্রতি যুদ্ধের ময়দানেও মুসলিমরা উদারতা প্রকাশ করেছে।

৪৯০ হিজরী বা ১০৯৭ সাল। ক্রসের ধারকেরা মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল এডেসা,এন্টিওক,আলেপ্পো দখল করে নিল। এরপর ১০৯৯ সালে পবীত্র নগরী জেরুজালেম দখল হয়ে যায়। এর কয়েক বছরের মধ্যে ফিলিস্থিন,সিরিয়ার কিছু অংশ ক্রুসেডারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

খ্রিষ্টান ঐতিহাসিকরা লিখেছে-“বাইতুল মুকাদ্দাসে বিজয়ীর বেশে প্রবেশ করার পর ক্রুসেড যোদ্ধারা এমনভাবে ব্যপক হত্যাযজ্ঞ চালায় যে, যেসব ক্রুসেড যোদ্ধা ঘোড়ায় চড়ে ‘মসজিদ ই ওমর’ এ গিয়েছিল তাদের ঘোড়ার হাটু পর্যন্ত রক্তের বন্যায় ডুবে গিয়েছিল। বাচ্চা শিশুদের পা ধরে দেওয়ালে আছাড় দিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং প্রাচীরের ওপর থেকে তাদেরকে চক্রাকারে ঘুরিয়ে দূরে নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়েছে। ইহুদীদেরকে তাদের উপাসনালয়ের মধ্যেই হত্যা করা হয়েছে পুড়িয়ে।

এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা,৬ষ্ট খন্ডের ৬২৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত রয়েছে ঃ “দ্বিতীয় দিন জ্ঞাতসারে, সম্পুর্ণ ঠান্ডা মাথায় এর চেয়েও ভয়াবহ ও হ্নদকম্প সৃষ্টিকারী নির্যাতনের পূনরাবৃত্তি করা হয়(উপরের বর্ণনাটা প্রথম দিনের)সেনাপতি ট্যাংকার্ড তিন শত বন্দীর জীবনের নিরাপত্তা দানের ওয়াদা করেছিল। কিন্তু তাদের সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরপর শুরু হয় ব্যপক গণহত্যা। নারী,পুরুষ,শিশু সবাইকে হত্যা করার পর তাদের দেহ কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। নিহত মানুষের লাশ ও কর্র্তিত অঙ্গ প্রত্যঙ্গের স্তুপ জমে ওঠে এখানে সেখানে। অবশেষে এই নির্মম হত্যাযজ্ঞের পরিসমাপ্তি ঘটলে আরব বন্দীদের দিয়েই তা পরিষ্কার করা হয়।”

প্রখ্যাত ইংরেজ খ্রিষ্টান ঐতিহাসিক লেনপুল বলেন ঃ “এই চরম হতাশাজনক পরিস্থিতিতে মুসলিমদের জিহাদ ঘোষণার প্রয়োজন দেখা দিল। প্রয়োজন দেখা দিল এমন একজন নেতার আবির্ভাবের যার বীরত্ব,সাহসিকতা ও সামরিক ব্যক্তিত্বের কথা সবাই একবাক্যে স্বীকার করবে। উপরন্তু তূর্কমেন সর্দার ও তাদের অধীনস্ত বিভিন্ন রাজ্যের শাসকদের এমন একদল যুদ্ধবাজ,ঈমানদার নওযোয়ান সৃষ্টির প্রয়োজন ছিল যারা ক্রুসেডারদের কৃত যুলুম ও বাড়াবাড়ির হিসেব নেবে এবং এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবে।”(সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী,পৃষ্ঠা- ২৯)

কুসেডাররা এক দিনে ৭০ হাজার নিরিহ নিরস্ত্র মুসলিমকে হত্যা করে।

১১৮৭ সালে হিত্তিনের যুদ্ধে সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী ক্রুসেডারদেরকে পরাজিত করে ফিলিস্থিনের পুরো অংশ উদ্ধার করেন। এ যুদ্ধের বর্ণনা দিচ্ছেন খ্রিষ্টান ঐতিহাসিক লেনপুল ঃ

“খ্রিষ্টান বাহিনীর অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্য,যারা জীবিত ছিল তাদের সকলেই মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়েছিল। সবাই অবাক বিশ্ময়ে লক্ষ্য করলো যে,এক এক জন মুসলিম সৈন্য ৩০(ত্রিশ)জনের মত খ্রিষ্টান সৈন্যের প্লাটুনকে তাবুর দড়ী দিয়ে বেধে টেনে নিয়ে যাচ্ছে,যাদেরকে সে বন্দী করেছিল। ক্রুসেডারদের লাশ এমনভাবে স্তুপাকারে পড়ে ছিল যেমনভাবে পাথরের উপর পাথর স্তুপাকারে পড়ে থাকে।” (প্রাগুক্ত , পৃঃ ১৮৯)

যুদ্ধবন্দীদের মধ্যে ছিলেন ক্রুসেডারদের সম্রাট ‘গাঈ’। তিনি যখন নিজের মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছিলেন (পূর্বের আচরণ চিন্তাকরে তার পক্ষে নিজের মৃত্যু ছাড়া অন্য কিছু ভাবা সম্ভব ছিলনা)তখন সুলতান তাকে বরফ মিশ্রিত ঠান্ডা পানি পান করান এবং তাকে তিনি ক্ষমা করে দেন।

সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী ১১৮৭ সালে বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করেন বিজয়ীর বেশে। ক্রুসেডাররা মুসলিমদের উপর বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। প্রথম ক্রুসের যুদ্ধে খ্রিষ্টানরা ৭০ হাজার সারাধরন নিরস্ত্র মুসলিমকে হত্যা করে। ইহুদীদেরকেও রেহাই দেয়নি। কিন্তু সালাহ্উদ্দীন এখানকার সকল খ্রিষ্টানকে ক্ষমা করে দেন নিঃশর্তভাবে। যুদ্ধবন্দীদের অধিকাংশকেই মুক্তি দেন নিঃশর্তভাবে। জেরুজালেম বিজয় করে তিনি বিজাতীয়দের প্রতি যে উদারতা,নমনীয়তা, প্রদর্শন করেছিলেন,ইতিহাসে তা বিরল নয়,তা ঘটেছিল এবং এই ইতিহাস শুধুমাত্র মুসলিমরাই সৃষ্টি করেছিল।

প্রথম যুদ্ধ বদর বিজয়ের পর মুসলিমরা প্রতিপক্ষ সৈন্যদের সাথে যে অবস্থায় সুআচরণ করেছিল,তা না করলেই বরং ইনসাফ হত। কাফিররা অনেক সংখ্যক সাহাবীকে হত্যা করেছে,নির্যাতন করেছে,বিতাড়িত করেছে নির্দয়ভাবে। আল্লাহর রসূলকে(সাঃ) শারিরীক,মানুষিকভাবে চরম নির্যাতন করেছে,এমনকি শেষে তাকে হত্যা করতে অভিযান চালিয়েছে। মুসলিমদেরকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি সাধন করেছে,তাদের নারীদের উপর অত্যাচার করেছে,গৃহহীন করেছে এবং নানামুখী অত্যাচার করেছে। আর তাদের সাথেই যখন যুদ্ধ হল, তখন তাদের প্রতিই সুআচরণ করা হল। তাদের যুদ্দবন্দী সৈন্যদেরকে উট,ঘোড়ায় সওয়ার বানিয়ে মুসলিমরা হেটে রওনা হল। নিজেরা কম খেয়ে তাদেরকে বেশী খেতে দিল,তাদের বাধন ঢিলা করে দিল। তাদের কাওকে মুক্ত করা হল মুসলিমদেরকে লেখা-পড়া শিক্ষা প্রদান করার সহজ চুক্তিতে,কাওকে কিছু মুক্তিপনের মাধ্যমে,আর একটা বড় সংখ্যক যুদ্ধবন্দীদেরকে নি:শর্ত মুক্তি দেওয়া হয়। মুসলিমদের উদারতায় কেউ কেউ ইসলাম গ্রহনও করে।(সীরাতে বিষয়গুলো বিস্তারিত রয়েছে)

রসূল(সাঃ)প্রত্যেক অভিযানে সেনা প্রেরনের পূর্বে বার বার কঠোরভাবে যেসব উপদেশ প্রদান করতেন,তা হল এই যে- খবরদার প্রতিপক্ষের নারী-শিশুদের উপর আঘাত করবে না,বৃদ্ধদের উপর আঘাত করবে না,যারা ধার্মিক এবং যারা ধর্মীয় উপাসনালয়ে বা আশ্রমে বসবাস করে তাদের উপর আঘাত করবে না।-(বুখারী)

বদরের যুদ্ধ থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রায় সব কটি যুদ্ধ,রসূলের(সাঃ) ওফাতের পর রোম,পারস্যের যুদ্ধ এবং পরবর্তী কালের যুদ্ধেও মুসলিম শাসকগণ অমুসলিম প্রতিপক্ষের সাথে সুআচরণ করেছেন। তারা প্রতারনা করছে জেনেও তাদের সাথে সন্ধীর চুক্তি করা হয়েছে। যুদ্ধে বার বার ছাড় দেওয়া হয়েছে। তাদের কঠোরতার বিপরীতেও কঠোর না হয়ে ইহসানপূর্বক সাহানুভূতিশীল আচরণ করা হয়েছে। বনূ কুরায়জার ইহুদী এবং হুনায়নের যুদ্ধের পর যুদ্বদবন্দীদের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তার কারন এটা নয় যে, তারা ইহুদী, বরং তারা কিছু ভয়াবহ শত্রুতায় লিপ্ত ছিল। এটা আমরা এখন আলোচনা করব:

পরের পর্ব আসছে......

বিষয়: বিবিধ

১২২৬ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

247088
২২ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:২৪
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এক স্থানে লেখায় একটু ভুল হয়েছে। বনূ নাযীরকে বন্দী করা হয়নি। তাদেরকে মদীনা থেকে ৩ দিনের নোটিসে চলে যেতে বলা হয়েছিল। হুনায়নের যুদ্ধের পর যুদ্ধবন্দীদেরকে দাস-দাসী বানানো হয়েছিল কিনা সেটা স্পষ্ট না হলেও ধরে নিলাম,সেটাই ঠিক। এটার বিস্তারিত পরের পর্বে আসবে..
২২ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:১৫
192005
বুড়া মিয়া লিখেছেন : হ্যা তারা হাশরের দিকে চলে গিয়েছিল বলেই জানতাম
২৩ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:৫৬
192140
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জি হাশরের দিকে মানে সিরিয়ার দিকে Happy
247099
২২ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮
আফরা লিখেছেন : কমেন্ট না করলে মনে রাইখেন সাথে আছি ।
২২ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০১:১৩
191890
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ। কোনো পর্ব মিস করবেন না।এইটা আদেশHappy Happy Happy আমি আমার সব টাইম স্যাকরিফাইস করে এটা লেখায় হাত দিয়েছি। এইটা লিখতে চুলায় থাকা অনেক তরকারী পুড়েছে...Worried Worried Worried
247104
২২ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪
চোরাবালি লিখেছেন : অপেক্ষা আগামী পর্বের
২৩ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:৫৭
192141
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ধন্যবাদ
247123
২২ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০১:৩৮
দিশারি লিখেছেন : ভালো লাগলো। আরও লিখুন...
২৩ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:৫৮
192142
দ্য স্লেভ লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck
247127
২২ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:১৫
শুভ্র আহমেদ লিখেছেন : thanks
২৩ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:৫৮
192143
দ্য স্লেভ লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck
247136
২২ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:৪২
আহমদ মুসা লিখেছেন : হারানো এবং না জানা ইতিহাস জানানোর এ মহান প্রচেষ্টা আল্লাহ কবুল করুক। চালিয়ে যান। সাথেই আছি।
২৩ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:৫৮
192144
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ
247212
২২ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : যে ক্রিতদাস প্রথা বিংশ শতাব্দির শুরুতেও বিভিন্ন ভাবে চালু ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও সেই ক্রিতদাস প্রথার জন্য কেবল মুসলিমদের দায়ি করার চেষ্টা আসলেই হাস্যকর। আব্রাহাম লিংকন এর পরেও বেশকিছুদিন ক্রিতদাস প্রথা চালু ছিল।বরং ইসলাম ই ক্রিতদাস দের সর্বোচ্চ মানবিক মর্যাদা দিয়েছে।এই সুন্দর যুক্তিযুক্ত পোষ্টটির জন্য ধন্যবাদ।বনু কুরায়জার ক্ষেত্রে তারা একজন নিরপেক্ষ বিচারক হিসেবে তাদের পুর্ব মিত্র মদিনার আওস গোত্রের নেতা সা'দ ইবনে মা'য়াজ (রাঃ) কে তারাই নিযুক্ত করেছিল। সা'দ (রাঃ) ই সিদ্ধান্তদেন তাদের সকল প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ কে হত্যা করা হবে এবং বাকিদের ক্রিতদাসে পরিনিত করা হবে। বনু কুরায়জা খন্দক এর যুদ্ধের সময় আক্রমনকারিদের সহায়তা দিয়েছিল এবং মদিনার অভ্যন্তরে গোলযোগ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিল। যা ছিল সুস্পষ্ট অপরাধ এবং মদিনা সনদ এর লংঘন।
২৩ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:০০
192147
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এবং এই সিদ্ধান্ত তাওরাতেও ছিল,তাওরাতের আয়াতটি উল্লেখ করব। ....ইহুদীরা এসব নিয়ে তেমন কথা বলেনা, তবে কেন জানি বর্ণ হিন্দুরা মাতামাতি করে...
247320
২২ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:০৩
শেখের পোলা লিখেছেন : পরের পর্ব আসুক৷ আর বাংলার মুসলীম যে আওয়ামীদের ক্রীতদাস হতে চলেছে সে বিষয়েও আলোকপাত চাই৷
২৩ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:০১
192148
দ্য স্লেভ লিখেছেন : Happy Happy Happy Happy Happy Happy
247327
২২ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:২৫
বুড়া মিয়া লিখেছেন : তবে এভাবে একেক পর্বের একেক নাম না দিয়ে, নতুন পর্বের নামটা সিরিজ-টাইটেল এর শেষ জায়গায় উল্লেখ করে পুরো সিরিজটা একনামে এবং শেষে পর্বের নাম্বার উল্লেখ করলে আমার মতে সুবিধা হবে আমার মতো পাঠকদের।
২৩ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:০২
192149
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হুমম, পোস্ট করেছি প্রায় সাড়ে তিনশ, অভিজ্ঞতা বলে ওভাবে জনতা খেতে পছন্দ করেনা Happy
২৩ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০৩:২৯
192173
বুড়া মিয়া লিখেছেন : বেশ ভালো অভিজ্ঞতার কথা জানলাম।
১০
247668
২৪ জুলাই ২০১৪ রাত ১২:০১
মাটিরলাঠি লিখেছেন :
ভালো লাগলো। Rose Rose Good Luck Good Luck
২৪ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:১৮
192421
দ্য স্লেভ লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File