হিজরত পলায়ন,নাকি রাজনৈতিক বিচক্ষনতা ?..শেষ পর্ব
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৫ জুলাই, ২০১৪, ০৯:১৫:৫৬ সকাল
রসূল(সাএর মায়ের বংশের সাথে মদীনার আত্মীয়তা ছিল। এ বিষয়টিও রসূল(সা কে আশাবাদী করেছিল। অপরদিকে যখন মদীনায় হিযরতের বিষয়টি অত্যাসন্ন হয়ে উঠল এবং মদীনাতে আগমনের পূর্বেই সেখানে রসূলের একটি প্রভাব জনমনে প্রতিষ্ঠিত হল,তখন খায়বর ও মদীনার ইহুদীদের বড় অংশই মনে করতে থাকে যে,যেহেতু রসূল(সা আল্লাহর পক্ষ থেকে কিতাব প্রাপ্ত তাই কিতাবী হিসেবে তিনি আমাদেরকে সমর্থন করবেন। মদীনার প্রভাবশালী ইহুদীদের এই মানুষিকতাও হিযরতের ক্ষেত্রকে মজবুত করে।
আমরা পূর্বে মক্কা থেকে বানিজ্য কাফেলার যেসব রাস্তা বর্ণনা করেছি,তা মদীনার ওপর দিয়ে চলে গেছে,ফলে মদীনাকে যদি ইসলামী হুকুমতের কেন্দ্র বানানো যায় তাহলে মক্কার ওপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করা যাবে। এ চিন্তাও মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে। আর এটি মদীনার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। কারণ মক্কাবাসীদের পক্ষে মদীনার এই সুন্দর রাস্তা পরিত্যাগ করে ভিন্ন পথে কাফেলা পরিচালনা ধ্বংসের নামান্তর। কারণ তারা দীর্ঘ জটিল,বন্ধুর পথে খাদ্য পানীয় প্রাপ্ত হবেনা। সেদিক দিয়ে বানিজ্য কাফেলা পরিচালিত হলে হয়ত জীবন নিয়েই ফিরতে পারবে না। তাছাড়া মক্কাবাসীরা মদীনার খাদ্যশস্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এটা বহুকাল পূর্ব থেকেই চলে আসছিল। এমনকি রসূলের(সাপিতা আব্দুল্লাহকে আব্দুল মুত্তালিব মদীনাতে খেজুর আনতে পাঠিয়েছিলেন কিন্তু পথিমধ্যে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন।
আমরা এতক্ষন যা আলোচনা করলাম তা হল বাস্তব এবং যুক্তিপূর্ণ,কিন্তু হিজরত ছিল আল্লাহর একটি আদেশ। রসূল(সা আল্লাহর আদেশেই হিজরত করেছেন। এবং আল্লাহ তাকে বিজয় দান করেছেন।
মদীনাতে আসার পর রসূল(সামসজিদে নববী প্রতিষ্ঠিত করেন এবং সকল মুসলিমকে একই বিশ্বাসে একত্রিত করেন। তিনি আনসার ও মুহাজিরদের ভেতর ভ্রাতৃত্ব বন্ধন সৃষ্টি করেন। তাদের নতুন এই বন্ধন গোটা মদীনাতে মুসলিমদের অবস্থানকে শক্তিশালী করে। তিনি এমন একটি সরকার কাঠামো তৈরী করেন যেখানে পদ্ধতিগতভাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের দ্বারা সকল বিষয়ের মিমাংসা হত। মদীনা ছিল ক্ষুদ্র এলাকায় প্রতিষ্ঠিত এমন একটি পরিপূর্ণ রাষ্ট্র ,যার মুসলিমরা ইসলাম নামক ব্যবস্থাপনা বা জীবন বিধানের জন্যে স্বতস্ফুর্তভাবে জীবন উৎসর্গে কখনও কুন্ঠিত হয়নি। মুসলিমদের ঈমানী চেতনা,দক্ষতা এমন এক সক্ষমতার জন্ম দেয়,যার কারনে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তারা পুরো বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে থাকে। আর এর পেছনে ছিল আল্লাহর রসূলের(সাসেই হিযরত, যাকে ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই। সেখানে ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষিত বিজয়ের নিশ্চয়তা। মক্কাবাসিরা যাকে রাতের আধারে হত্যা করতে চেয়েছিল, তিনি হিজরতের পর মদীনায় এমন একটি ব্যবস্থাপনা তৈরী করলেন,যা কিছুকালের মধ্যেই পৌত্তলিক মক্কাকে তার(সা নেতৃত্বে, ইসলামের অধীনে নিয়ে আসল। এর পরবর্তী ইতিহাস বিজয়ের।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
( অ.ট.) আপনি 'খেলাঘর' এর পোস্টে কমেন্ট করেন কেন ? ওকে খোঁচালে ও আরো একটা ইসলাম বিদ্বেষী কথা বেশি বলে ! যত বেশী কমেন্ট , তত বেশি ইসলাম বিরুদ্ধতা .......
মন্তব্য করতে লগইন করুন