মেলায় যাইরে !!!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৮ মে, ২০১৪, ১২:৫১:৩০ দুপুর
১৬-১৭ই মে,২০১৪
সাইকেল চালাচ্ছিলাম উদ্দেশ্যহীনভাবে। নিকটস্থ এক হাইস্কুল মাঠে দেখলাম বেজবল টুর্নামেন্ট হচ্ছে। খানিক দেখলাম। এই খেলাটা অনেকটা ক্রিকেটের মত। মাঠের চারিদিকে ফিল্ডার থাকে,একজন বল ছোড়ে,আরেকজন কষে পেটায়। বেজবল খেলা না বুঝলেও এই ব্যাট বহু কাল পূর্ব থেকেই আমার প্রিয়। অনেক আগে থেকে প্লান ছিল কাকে কাকে এটা দিয়ে কষে পেটাব। এখন বহু সংখ্যক রাজনৈতিক নেতাকে এই ব্যাট দিয়ে পেটাতে মন চায়। এমনকি আমার ভাইও এই জিনিস পছন্দ করে। তাকে একটা গিফট করব বলে পণ করেছিলাম কিন্তু কেন জানি দেওয়া হয়নি।
ফেরার পথে মাঠের কাছাকাছি এক বৃদ্ধার সাথে দেখা হল। খানিকক্ষন কথা বললাম,তিনি আমার পূর্ব পরিচিত। খানিক পর এক বোতল উৎকৃষ্ট মানের জুস নিয়ে আসলেন। তার সামনেই সেটা সেরে ফেললাম। খাওয়ার স্টাইল দেখে কিনা জানিনা,তিনি জিজ্ঞেস করলেন আমি চকলেট খেতে চাই কিনা। বললাম এ জিনিস আমার অতি প্রিয়। তিনি আবারও বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে বড় এক পাত্রে থাকা চকলেট নিয়ে আসলেন। বললেন যত খুশী নিতে পার। আমি আমার ট্রাউজারের পকেটে ভরলাম,জ্যাকেটের পকেটে ভরলাম,হাতে কিছু নিলাম। খেতে থাকলাম,তারপর ধন্যবাদ দিয়ে চলে আসলাম। রাস্তায় চলার সময় মনে হল বহুবার চকলেট আমার পকেটে গলে গেছে, এটার বিহীত করতে না পারলে কপালে সর্বনাশ আছে। চলন্ত রাস্তায় ব্রেক কষে কষে ট্রাউজারের পকেটে থাকা সবগুলো চকলেট শেষ করলাম। এবার ভাবলাম বন্ধুদের কাছাকাছি গেলে যদি দিতে হয় ! তাই কারো কাছে গেলাম না। খানিক পর অন্য পকেটে থাকা সবগুলো চকলেট খেয়ে ফেললাম।
মুরগীর কলিজা আলু দিয়ে ভুনা করলাম বেশ দারুন হয়েছে। মেক্সিকো থেকে আমাদের দেশের মত কাচকলা আসে, সেটা কিনলাম এবং রান্না করেছি। এটাও বেশ লাগল। আজ ১৭ তারিখ শনিবার, হেল্থ মেলায় গেলাম। বেশ বড় সড় জায়গা জুড়ে অনুষ্ঠিত হল। সুবিশাল হল রুমে বহু সংখ্যক ইন্সুরেন্স কোম্পানী নানাবিধ মুলো নিয়ে বসে আছে দেখলাম। কিছু ডাক্তারও ছিল। জানতে পারলাম এরা বেশীরভাগই বুড়োদের সেবা নিয়ে ভাবছে। এর কারন আছে। ক্লায়েন্ট হিসেবে বুড়োরা বেশ ভাল। আর বুড়োদের বেশ টাকাও থাকে দেখেছি। নানারকম কাহিনী পেচিয়ে বহু লোক চেয়ার টেবিল দলিল দস্তাবেজ,লিফলেট,চকলেট,কলম এবং নানান উপহার সামগ্রী নিয়ে বসে আছে। আস্তে আস্তে হেটে অগ্রসর হচ্ছিলাম আর তারা শুভেচ্ছা জানাচ্ছিল। বেশ ভাল লাগছিল। একজন ডেকে বলল, আপনি কি আমাদের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পূর্বে জেনেছেন ? বললাম না। তিনি তখন বলতে শুরু করলেন,আমি মনযোগ দিয়ে শুনলাম। শোনা শেষ হলে বললাম, এখানে রাখা চকলেটগুলো কি দর্শনার্থীদের জন্যে ? বললেন-হ্যা। একটা তার সামনেই খেলাম,এটা মিল্কবার,ভেতরে ক্যারামেল। এগুলোর দাম বেশ। সাধারণত টাকা দিয়ে এসব আমি কিনিনা। আরেকটার দিকে তাকিয়ে দেখলাম এটা চকলেট বার। খুলে খেলাম এবং বললাম চকলেট আমার বেশ প্রিয়। কয়েকটা নিতে পারি ? বললেন-অবশ্যই ! আমি মাত্র ৬টা নিয়েছি আর ৪টা খেয়েছি। পাশে দেখলাম কলম অনেকগুলো। বললাম, একটা নেই ? বললেন-অবশ্যই ! আরেকটা নিয়ে বললাম- আমার এক বন্ধুকে একটা দেব। আসলেই দেব, মিথ্যা বলিনি।
এবার লক্ষ্য করলাম প্রত্যেক স্টলেই চকলেট এবং কলম আছে। ওরে...এতক্ষনেই আমি বুঝলাম দিনটা সুবিধার হতে যাচ্ছে ! এক স্টল থেকে ব্যাগ নিলাম দুটো,মানে তারা খুশী হয়েই দিল। সেই ব্যাগে চকলেট জমা করতে থাকলাম। এক স্টলে দেখলাম চরকা খেলা হচ্ছে, তবে এটা হালাল তরিকা। প্রচুর উপহার রয়েছে ফ্রি ,যেমন টি-শার্ট,কলম,চকলেট,ঘড়ি,ব্যাগ ইত্যাদী। আমি চরকা ঘুরালাম , গরমে একটা দারুন টি-শার্ট মন্দ কি ! কিন্তু চরকাও বোধহয় আমাকে চিনতে পেরেছে, সে ঘুরতে ঘুরতে এসে চকলেট লেখা অংশে থামল। চিন্তা করলাম এতকিছু থাকতে এই খাওয়ার জিনিস বাধল কেন ! নাহ, সেল্ফ কন্ট্রোল আসন্ন !
দেখলাম কয়েক স্থানে ম্যাসাজ খেরাপী চলছে। কাছাকাছি যেতেই এক তরুনী বলল-মেরুদন্ডের ব্যাথার জন্যে এইটা বেশ ভাল। আমাদের অভিজ্ঞ থেরাপিস্ট আছেন,আজ ফ্রি ম্যাসাজ দেওয়া হচ্ছে। আগ্রহী হলে এখানে নাম লেখাতে পারেন। বললাম, আমার কোনো ব্যাথা নেই। হঠাৎ একটা কথা মনে পড়ে যাওয়াতে মনে মনে হাসতে হাসতে খুন হলাম। কিছুদিন আগে ঢাকায় কোনো এক স্থানে ম্যাসাজ থেরাপীর নামে দেহ ব্যবসা ধরা পড়েছিল। সেটা নিয়ে পত্রিকায় লেখালিখি হয়েছিল। সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে অভিযুক্ত মালিক বলেছিল, বাতের ব্যাথার রোগীরা এখানে আসে, ম্যাসাজের পর অনেকের বাতের ব্যাথা সেরে গেছে।...এই কথাটুকু পড়ে হাসতে হাসতে শেষ হয়েছিলাম। আজ এই ম্যাসাজ থেরাপী দেখে পূর্বের কথা মনে পড়াতে মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠল। জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা এটাতে কি বাতের ব্যাথা সারে ? তিনি বললেন, স্পাইনের সাথে,নার্ভের সাথে,মেরুদন্ডের সাথে সম্পৃক্ত কি কি যেন আছে। সেখানে ম্যাসাজ করলে সেটার উপকার হয়। অনুমানে বুঝলাম এটা জাতের জিনিস না। যতদূর জানি রক্তে ইউরিক এ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে তা শরীরের নীচের অংশে জমা হয়। যেমন পায়ের গোড়ালী,আঙ্গুল,হাটু,কনুই,কব্জী,বাহু ইত্যাদী আরও অনেক জয়েন্টে সেটা জমা হয় এবং টিস্যুতে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এতে প্রচন্ড ব্যাথা হয়। এটা আথ্রাইটিসের ছোট ভাই। এখান থেকে পরিত্রানের উপায় হল- যেসব খাবারে ইউরিক এ্যাসিড বাড়ে যেমন লাল মাংস,মাটির নীচের তরকারী,চিংড়ী মাছ,বীজ জাতীয় খাবার ইত্যাদী এড়িয়ে চলা বা কম খাওয়া। আর কিছু চিকিৎস্যা নিয়ে এটা ঠিক করতে হয়, অবশ্যই ম্যাসাজ থেরাপী এটা নিরাময় করতে পারেনা। তবে কিছুক্ষনের জন্যে স্বস্তি দিতে পারে। যাইহোক আমার হাসি উথলে ওঠার কারনে তাড়াতাড়ি সরে পড়লাম।
এক স্থানে দেখলাম এক মহিলা ড্যান্সিং ব্যায়াম শেখাচ্ছে। মিউজিকের তালে তালে শারিরীক কসরত করছে, আর তার সাথে বেশ কিছু মহিলা-পুরুষ অনুসরণ করছে। যারা অনুসরণ করছে তাদের একেক জনের শরীর দিয়ে আমার মত অন্তত দুজনকে আড়াল করা যাবে। স্পষ্ট জানি এই মহিলা এরকম নেচে ওরকম ফিগার তৈরী করেনি। ওটা সে বহু কসরত এবং ডায়েট করে তৈরী করেছে। কিন্তু তার ক্লাবের সদস্য বাড়ানোর জন্যে মনোরম নৃত্যের ফাঁদে ফেলে নিয়মিত কিছু টাকার বন্দোবস্তে নেমেছে। মানুষের পেটের মেদ কমুক না কমুক, তার পকেটের মেদ বাড়বে,সন্দেহ নেই। আমেরিকার প্রধান খবরই বোধহয় মেদ কমানো। এমন কোনো উল্লেখযোগ্য সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিন নেই,যেখানে এই মেদ নিয়ে সংবাদ থাকেনা। পত্রিকা খুললেই কোন নায়ক,নায়িকা,সেলিব্রিটি কত মোটা হয়েছে অথবা কতটুকু ওজন কমিয়েছে সেই খবর। আর এই বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শের অভাব নেই। আছে শত শত ডায়েট কন্ট্রোল পিল,স্লিমিং পিল এর বিজ্ঞাপন। কিন্তু এরা এত বেশী খায় যে, তেতুলের বিচির মত এক টুকরো ওষুধ পেটে পড়ে একেবারে দিকবিদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে পড়ে। ওষুধ নিজেই বলতে থাকে- এ আমি কনে আলাম ! ওজন কমাবে কি, বরং সেই’ই তখন স্বেচ্ছায় অন্তত এক গ্রাম চর্বিতে বিবর্তিত হয়।
এক স্থানে দেখলাম ডেন্টাল ইন্সুরেন্স কোম্পানী। আশান্বিত হলাম, এটা বেশ দরকারী। বিশেষ করে যারা খেতে ভালবাসে তাদের জন্যে। এদেশে আসার আগে ডাক্তারের কাছে ভাল করে দেখিয়ে এসেছি কিন্তু দাঁতের যা ব্যবহার, তাতে এর ডাক্তারের সাথে সুসম্পর্ক রাখা জরুরী। কিন্তু না, হল না। ভেবেছিলাম সস্তায় যদি একটা ইন্সুরেন্স করা যেত ! আমার কর্মস্থল আগামী ৪ মাস পর আমার ইন্সুরেন্সের ব্যবস্থা করবে কিন্তু তার পূর্বে একটা সিস্টেম করা গেলে মন্দ কি ! কিন্তু কপালে নেই। এই ভদ্র মহিলার প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, যারা মোটেও নড়াচড়া করতে পারেনা,বা দাঁত পরিষ্কার করতে পারেনা। তাদের দাত ব্রাশ করতে সাহায্য করে টাকার বিনিময়ে এবং কিভাবে দাঁত সুন্দর রাখা যায় সে বিষয়ে এরা পরামর্শ দেয়। এসব বিষয় আমাদের দেশের লোকেরা কল্পনাও করেনা। আমাদের পরিবারের সদস্যরা,আত্মীয়-স্বজনরা তাদের বৃদ্ধ পিতা-মাতা বা আত্মীয়দেরকে কত টাকা দামের সার্ভিস বিনা পয়সায় দিয়ে যাচ্ছে,তা তারা কখনও জানেনা। আমার ধারনা এসব বুড়ো-বুড়িরাও আমাদের ফ্রি সার্ভিসের বিষয়ে কিছুই জানেনা। মুসলিমরা ইসলামের ছিটেফোটা অনুসরণ করে ব্যক্তিগত,পারিবারিক,সামাজিকভাবে কতটা লাভবান,সেটা আসলেই তাদের জানা জরুরী। এতে অন্তত পাশ্চাত্যের পশ্চাতে অন্ধভাবে দৌড়ানোর প্রবণতা কিছুটা হলেও কমবে।
মেলায় দেখলাম কয়েকটা বিশাল বাস। এটার সাথে টয়লেটও আছে। কোনো কোনোটা শুধু এই প্রদেশেই ভ্রমন করার জন্যে,আর কোনো কোনোটা এখান থেকে ভিন্ন প্রদেশে যাবার জন্যে। ভেতরে ঢুকে ঘুরে ঘুরে দেখলাম। বেশ আরামদায়ক বাস।
এক স্টল থেকে অনেকগুলো কলম নিলাম। এগুলো বেশ দামী। পাশে দেখলাম একটা ছোট ডিভাইস। জিজ্ঞেস করলাম এটা কি ? জানলাম এটা পেডোমিটার। এটা নিয়ে হাটলে কত দূরত্ব অতিক্রম করছি তা দেখা যায়। সেদিন এক স্টোরে এটার দাম দেখলাম ২০ ডলার। এটা আমার খুব জরুরী জিনিস। ফ্রিতে এটা পাব কল্পনাই করিনি। একটার স্থানে দুটো নিলাম,তারা দিয়েই যেন সন্তুষ্ট,আর আমি নিয়ে। ওহ সত্যিই এটা একটা দারুন জিনিস ! এটা সোলার এবং ব্যাটারী দুটোতেই চলে। মেলায় ঘোরা স্বার্থক হল।
হাটাহাটি করে পিপাসা লাগল। এখানে কোমল পানীয় বিক্রী হচ্ছিল,কিন্তু একেবারে নিরুপায় না হলে আমি কোমল পানীয় খাইনা। খুঁজতে থাকলাম এখানে কেউ ফ্রি পানি খাওয়াচ্ছে কিনা। পেয়ে গেলাম এক স্টল। এক বোতল পানি একবারে শেষ করে ফেললাম। মেলা দেখা শেষ। হেল্থ ইন্সুরেন্সে গুলি মারো, আমার যা পাওয়ার তা পেয়ে গেছি। আজ বাইরে বেশ গরম। এবার সাইকেলে ঘুরব। আসলে আজ দূরে কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল,কিন্তু কোথায় যাব,সেটা গতরাত থেকে চিন্তা করেও ঠিক করতে পারিনি।
বিকেলে সাইকেল নিয়ে কোলস নামক একটা দামী পোষাকের দোকানে ঢুকলাম। দেখলাম কোনো কোনো পোষাকে ৮০% পর্যন্ত গৃষ্মকালীন ছাড় দেওয়া হয়েছে। দু-একটা জিনিস না কিনে পারলাম না। ১১০ ডলারের একটা জুতো মাত্র ২১ ডলারে পেলাম। ৭০ ডলারের একটা প্যান্ট পেলাম ১২ ডলারে। আরও অনেক জিনিস যাতে মূল্য ছাড় দেওয়া হয়েছে ব্যাপক। মূল্যহ্রাসের জিনিস আমার দেখতেও ভাল লাগে। ফ্রেড মায়ার,কে-মার্টে গেলাম,একটা স্পোর্টসের দোকানেও গেলাম। রাস্তায় ঘুরলাম,একাধীক পার্কের মনোরম রাস্তায় সাইকেল চালালাম। দুপুরে দেখেছিলাম পার্কে পরিবারসহ মানুষ এসেছে। অনেকে স্টেক বানাচ্ছে, হইহুল্লোড় করছে। গৃষ্মে এরা একটু মাতামাতি করে। এবার ঘরে ফেরার পালা। আকাশ মেঘলা হয়ে এসেছে। বোধহয় বৃষ্টি নামবে। বাসায় ফেরার পর বৃষ্টি শুরু হল। এখানে মেঘের ডায়রিয়া হতে বেশী সময় লাগেনা। আল্হামদুলিল্লাহ আমি এসব থেকে মুক্ত।
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৯ বার পঠিত, ৩৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার সাইজের কিছু পাইলে জানাইয়েন।
পঠন এও অর্ধভোজন হলো।
ফ্রি একটা পেডোমিটার পাইলে মন্দ হতোনা। কেউ ফ্রি বেসবল ব্যাট দিচ্ছিলনা? আমারও বেসবল ব্যাট দিয়া সবাইকে পিটাইতে ইচ্ছা করে।
"মুসলিমরা ইসলামের ছিটেফোটা অনুসরণ করে ব্যক্তিগত,পারিবারিক,সামাজিকভাবে কতটা লাভবান,সেটা আসলেই তাদের জানা জরুরী। এতে অন্তত পাশ্চাত্যের পশ্চাতে অন্ধভাবে দৌড়ানোর প্রবণতা কিছুটা হলেও কমবে।"
বোতল পর্যন্ত পড়ে মনে হলো আপনি কি বোতল খান নাকি!
মন্তব্য করতে লগইন করুন