ফ্লাম মব
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৮ মার্চ, ২০১৪, ১০:৪৬:৫৫ সকাল
সম্প্রতি কিছু সংখ্যক বাংলাদেশী তরুনদের দ্বারা নির্মিত ফ্লাশ মব নামক একটি অত্যন্ত কুরূচীকর ভিডিও চোখে পড়েছে। দেখার পর থেকেই মনে হচ্ছিল কিছু লেখা দরকার।
ফ্লাশ মব হল কোনো একটি বিষয়কে পচানো। এটি বিভিন্ন ইঙ্গিতের মাধ্যমে কোনো একটি বিষয়কে ব্যঙ্গ বিদ্রুপাকারে তুলে ধরা। একটু ফান করা এবং তার মধ্য দিয়ে কিছু উপস্থাপন করা বা মানুষকে মেসেজ দেওয়া।
এটা পাশ্চাত্যের সাংষ্কৃতি। ইউরোপ আমেরিকার তরুন যুবকরা বালেগ হওয়ার পর মনে করে,তাদের মনে যা চায়,সেটা প্রকাশ করাই হল ব্যক্তি স্বাধীনতা। তাদের পিতা-মাতাও তাদেরকে এগুলো শিখিয়েছে। এ সময় তারা ফান করতে করতে এমন কিছু সীমা অতিক্রম করে যেখানে শয়তানও যেতে ভয় পায়। আমি আমেরিকাতে কিছু সিরিয়াল দেখেছি বা কিছু লোকের চাপে পড়ে দেখতে বাধ্য হয়েছি,আর যা দেখেছি তা প্রকাশ করতে লজ্জা পাচ্ছি। পুরোটা দেখিনি ,তবে যেটুকু দেখেছি,তাতে মনে হয়েছে ফ্লাশ মবের জনকরা মানুষের কাতারে পড়ার যোগ্যতা হারিয়েছে।
এরা যে কোনো বেহায়া কর্মকান্ডকেই জায়েজ ভাবে,যদি তা একজনকেও আনন্দ দিতে সমর্থ হয়। এরা সহজ /সস্তা জনপ্রিয়তাটাকে অতি প্রাধান্য দিয়ে দু:সাহসী খারাপ কাজ করতে শুরু করে। কিন্তু অবাক হয়েছি বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এরকম কুরুচীকর ভিডিও নির্মান করে বাহবা কুড়াচ্ছে। কতটা দ্রুত একটা দেশের সাংষ্কৃতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে ফেলা যায়,তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল বাংলাদেশ। সরকার ব্যবস্থা এসবকে প্রশ্রয় দেয় আধুনিকতার নামে। আর শুশিল সমাজ শয়তানের কোলে বসে আইসক্রিম খায়। আলেম সমাজ নামক এক ধরনের সমাজ সেসব শয়তানের কাছ থেকে দোয়া প্রার্থনা করে। যখন পিটিয়ে মেরুদন্ড বের করে উইকেট বানানোর কথা,তখন মুখের মিস্ট কথায় সওয়াব কামানোর ধান্দায় থাকে যে আলেম সমাজ,তাদের উপর লানত পড়বে নাতো কাদের উপর পড়বে ?
পূর্ববর্তী সময়ে একটি জনপদ চরমভাবে আল্লাহ বিরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল,ব্যপক সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছিল। তখন আল্লাহ ফেরেশতা জিবরাঈলকে সেই এলাকা ধ্বংসের জন্যে পাঠালেন। জিবরাঈল ফিরে এসে বললেন-আমি তো সেখানে এমন একজন সাধুকে দেখেছি ,যিনি সর্বদা আপনার ইবাদতে মশগুল,ইয়া আল্লাহ ! তখন আল্লাহ বললেন-ওকে দিয়ে ধ্বংসের কাজ শুরু কর,অথবা পুরো এলাকা তুলে ওর মাথার উপর ধ্বংস কর ! বুখারী,অথবা হাদীসে কুদসী।
আমেরিকাতে তরুন,যুবক,শিশুদের অধিকংশই কথা বলার সময়,বা রাগ প্রকাশ করার সময়,বা কোনো আবেগ প্রকাশ করার সময় ইংরেজী "এফ" অদ্যাক্ষরের একটি শব্দ উচ্চারন করে। এমনকি তাদের মা বাবাকেও এটা বলে। এদের একটি বড় অংশই কিম্ভুত কিমাকার অবস্থা পছন্দ করে। এদের দেখাদেখী বা শোনাশুনী বাংলাদেশের কিছু তরুন যুবকরাও এমনটা করে। একই শব্দ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করে।
শেষ কথা হল, আমেরিকাতেও এদেরকে ভদ্র সমাজ পছন্দ করেনা। অনেকে এদেরকে সভ্যই ভাবেনা। কোনো ভাল চাকুরীর ক্ষেতেও এদরকে পছন্দ করা হয়না। এরা হল এখানকার খ্যাত। তাহলে এদেরকে যারা অনুসরণ করছে,তারা কি ???
ছাগলের ৩ নং বাচ্চা দুধ তেমন পায়না বলে,সর্বদা ফালাফালি চিৎকার করে,ওটা তার বাস্তবতা। কিন্তু দুধ খাওয়া বাচ্চা ছাগলের ৩ নম্বরটার মত হওয়ার চেষ্টা করলে তাকে কি বলবেন ???
উ: ওটাই ফ্লাশ মব = ছাগলের ৩ নং (ভদ্রভাবে বললাম)
রসূল(সা বলেন- তোমার যদি লজ্জা শরম না থাকে তাহলে যা ইচ্ছা তাই করতে পার...বুখারী
বিষয়: বিবিধ
১৪৫২ বার পঠিত, ৩২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ.....
তাই এসব নিয়ে আমাদের আফসোসে কিছু আসে যায় না।
ড্রেনের নোংরা পানি থেকে আমার সবুজ ফসলকে বাঁচাতে হলে ড্রেনের পানিতে ড্রাম ড্রাম আতর ঢাললে কাজ হবেনা;দরকার ড্রেনের মুখ পরিবর্তন করা।
‘একটি অবাধ্য সমাজ মানে
সামনে নূহের প্লাবন
অনাগত ধ্বংস,
আরেকটি নতুন সভ্যতার আমূল উদ্বোধন...’
অনেক ধন্যবাদ
শাহ আলম বাদশা লিখেছেন : দেশের সরকারই আসল নিয়ামক যেকোন ব্যাপারে; আমরা সারাজীবন ওয়াজ করলে-যা হবেনা; সরকারের একটা আইন বা অর্ডারে হাজার গুণ কাজ হয়ে যায়।
সুন্দর শিক্ষামূলক পোষ্ট ।
মানুষ খারাপটাই আগে গ্রহন করে, আর থাকে বিরত রাখাই ভাল কাজবা আমলে সালেহ৷ বর্তমানের অনেক আলেম পীর মাশায়েখই এ আমল থেকে অনেক দূরে৷ এটি আমাদের দূর্ভাগ্য৷
মন্তব্য করতে লগইন করুন