বিজয় অগ্নী পূজারীদের জন্যে নয়

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৮:২১:২৫ সকাল



রসূল(সা: )বলেন- কোনো ব্যক্তি যেন রাগান্বিত অবস্থায় বিচার ফয়সালা না করে।-(বুখারী-মুসলিম)

তিনি(সা: )বলেন-যাকে বিচারক হিসেবে মনোনিত করা হয়েছে,তাকে যেন ছুরি ছাড়াই জবাই করা হল-(আহমদ,তিরমিযি,আবু দাউদ,ইবনে মাজাহ)

রসূল(সা: )বলেন-তিন প্রকারের বিচারক রয়েছে এরমধ্যে এক প্রকারের জন্যে জান্নাত, অন্য দুই প্রকারের জন্যে জাহান্নাম অবধারিত। সেই বিচারক জান্নাতে প্রবেশ করবেন ,যিন সত্য উপলব্ধি করেছেন এবং সে অনুযায়ী বিচার করেছেন। আর যে বিচারক সত্য উপলব্দী করেও বিচারের মধ্যে অন্যায় করল সে বিচারক জাহান্নামী। আবার সে বিচারকও জাহান্নামী হবে,যে অজ্ঞতার সাথে মানুষের বিচার করল।-(আবু দাউদ,ইবনে মাজাহ)

যে ব্যক্তি শাসক হয়ে শাসনকার্য পরিচালনা করেছে তাকে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় আল্লাহর সামনে উপস্থিত করা হবে যে একজন ফেরেশতা তার ঘাড় ধরে উঁচু করে রাখবে। অত:পর সেই অবস্থায় ফেরেশতা তার মাথা উপরের দিকে তুলবেন,তখন আল্লাহ যদি বলেন তাকে ছেড়ে দাও তখন ফেরেশতা তাকে জাহান্নামের তলদেশে নিক্ষেপ করবেন,যার গভীরতা ৪০বছরের পথ।-(ইবনে মাজাহ,আহমদ,বায়হাকী)

আমি জানি অনেকে হয়ত বলবে জামাতকে সমর্থন করছি,কিন্তু এটাই একটা প্রমান যে আমরা ন্যায় বিচারে অভ্যস্ত নই বরং পক্ষপাতিত্বে অভ্যস্ত। কোনো কথা উচ্চারিত হবার সাথে সাথে আমরা তার রাজনৈতিক লেবেল লাগাতে মরিয়া হই। আমরা রাষ্ট্রের সকল বিষয়কে দল বা জাহেলিয়ার গোত্রগত বন্ধনে আবদ্ধ করেছি। আমরা জাহেলিয়ার এই নীতি প্রতিষ্ঠিত করেছি যে- প্রভাবশালীদের বিচার করা যাবেনা। এটি বনী ইসরাইলদের মধ্যে বিরাজমান ছিল,এটি আইয়ামে জাহেলিয়ার আরবদের মধ্যে ছিল,এটি ছিল রোম,পারস্য সাম্রাজ্যসহ পৃথিবীর সভ্যতাসমূহে। অভিজাতদের বিচার হবেনা। তারা আইনের উর্ধ্বে। এদেশে অভিজাত শ্রেণী ৫ বছর পরপর পাল্টায়,আর আম জনতা তো শুরু থেকেই গোলামের বাচ্চা গোলাম।

এখানে বিচার হয় হিসেব কষে। সচেতন জনতা পর্যন্ত বিচারের রায় বুঝতে পারে প্রমান পঞ্জি ছাড়াই। এখানে বিচার হয় মানুষের ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়,এখানে বিচার হয় মানুষের দাবীর মুখে। এখানে বিচার হয় কোনো কর্তৃপক্ষকে খুশীর আশায়। বিচার হয় সুবিধা প্রাপ্তীর নেশায়। বিচার হয় রাজনৈতিক বিজয়ের লক্ষ্যে। এখানে বিচারের নামে জাহান্নাম কেনা বেচা হয়।

অসুস্থ্য মানুষেরা যে দিকে দৌড়াতে চাচ্ছে,তা তাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। যারা সচেতনভাবে যুলুম করছেন,তারা আল্লাহকে ভয় করুন ! অতি ক্ষুদ্র এই জীবন আপনাদেরকে মহাশান্তি দান করেনি,এটি মহাশান্তিতেও নিক্ষেপ করবে না। আফসোস তাদের জন্যে,যারা দুনিয়াতেও ভীত সন্ত্রস্ত এবং নানাভাবে বঞ্চিত ,আর আখিরাতেও তাদের জন্যে আছে চীরস্থায়ী যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। শাসক যদি আল্লাহকে ভয় না পায়,তাহলে এতে আল্লাহর কিছুই এসে যায় না, সকলের জন্যে একটি নির্ধারিত কাল নির্ধারিণ করা হয়েছে। অবকাশ প্রাপ্ত মানুষেরা যেন না ভাবে- তাদের ক্ষমতা তাদেরকে স্থায়িত্ব দান করবে,অমর করবে। জাহান্নামকে বেছে নেওয়া কখনই বুদ্ধিমানের কাজ হবেনা।

কোনো বিশেষ দলের প্রতি ভালবাসা নয়,বরং একটি অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করছি আল্লাহর এক নগন্য বান্দা হিসেবে। ৭১ এর রাজাকারের তালিকা করলে তা হয়ত লক্ষের কোটা ছাড়িয়ে যাবে,আর তা একাধিক রাজনৈতিক দলকে অতিক্রম করবে। কিন্তু রাজাকার ধরা হবে একটি দল থেকেই এবং তাও আবার বিশেষ সময়ে। রাজাকারের রাজাকারীকে সমর্থনের কোনো সুযোগ নেই। যুদ্ধাপরাদীদের ন্যায়সঙ্গত বিচার হোক, কিন্তু আমরা যা দেখেছি,তাকে কিভাবে ন্যায় বিচার বলব ? একজন কাদের মোল্লার মৃত্যুতে পৃথিবীর তেমন কিছু আসবে যাবে না,কিন্তু এই অবিচারের পরিণতী জাতিকেই বহন করতে হবে। কাল যারা ক্ষমতায় আসবে,তারাও এমন হিংসাত্মক কর্মকান্ড সম্পাদন করবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। যারা এই ভূখন্ডটিকে উত্তপ্ত ও ফুটন্ত তেলের কড়াই বানাতে চায়,তারাও দগ্ধ হবে। যে প্রতিহিংসা পরায়নতার জন্ম দেওয়া হয়েছে,তার রেশ থেকে যাবে বংশ পরম্পরায়। উত্তরসূরীদের জন্যে আমরা যা রেখে যাচ্ছি,তা তাদেরকে বিপর্যস্ত করবে।

বিষয়: বিবিধ

১৭১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File