এক লাথিতেই শিক্ষা

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৪ অক্টোবর, ২০১৩, ০৮:৩৫:১২ সকাল



একটি শিক্ষনীয় স্বপ্ন দেখলাম একটু আগে। তারিখ ২৪শে অক্টোবর,২০১৩। ফজরের নামাজের পর ঘুমালাম এবং এটা দেখলাম। দেখলাম একটি এলাকায় খুব চমৎকার একটি মেলা হচ্ছে বাচ্চাদের জন্যে। একটি সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় অনেকগুলো ছোট ছোট কুড়ে ঘর নির্মিত হয়েছে এবং সেখানে বাচ্চাদের জন্যে বিভিন্ন জিনিসপত্র রয়েছে। মজার ব্যাপার হল,সকল ঘর স্থাপিত হয়েছে হাটু পর্যন্ত পানির মধ্যে এবং ঘরগুলো একটু দূরে দূরে অবস্থিত। মেলার স্থাপনাটা দারুন লাগল। সবগুলো স্টল ছিল কুড়েঘর স্টাইলের। বাচ্চারা এতে মজা পাবে মনে হল।

এরপর দেখলাম- আমি একটি মার্শাল-আর্ট স্কুলের শিক্ষক। আমি প্রতিদিন শিক্ষা দেই এবং আমার এই প্রতিষ্ঠানের মালিকই প্রধান শিক্ষক। এখানে বাচ্চাদের শিক্ষা দেওয়া হয়। কেউ ধনী মানুষের পুত্র আবার কেউ মধ্যবিত্ত। একদিন যখন শিক্ষা দিচ্ছি ,তখন এক বাচ্চার জাদরেল মা এসে উপস্থিত। তার দাবী হল তিনি ধনী বলে তার বাচ্চার শিক্ষা বাবদ বেশী টাকা রাখা হয়েছে এবং শুধুমাত্র তার সন্তানের জন্যে নানামুখী খাত তৈরী করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়েছে,যা স¤পূর্ণ অন্যায়। তিনি আসলেন এবং আমাদের প্রধান শিক্ষককে খুঁজতে লাগলেন। আমাকে জিজ্ঞেস করলে,আমি বললাম আসলে এটা আমি জানিনা। তখন আমার প্রধান শিক্ষকের ওপর আমার খুব রাগ হল,কারণ তিনি অন্যায় করেছেন। আর তিনি প্রচন্ড লোভী একজন মানুষ। খুব বিরক্ত হলাম তার ওপর। আর অনেক স্টুডেন্টের সামনে ওই ছাত্রের মা এসে বেশ গোলমাল করল,এটাও আমার খুব খারাপ লাগল। প্রধান শিক্ষক তখন ছিল না। আমি চিন্তা করলাম শিক্ষা না দিয়ে চলে যাব।

হঠাৎ দেখলাম সেই মহিলার সাথে আরও কয়েকজন এসেছে এবং মার্শাল-আর্ট ক্লাবের পাশে থাকা আমাদের প্রধান শিক্ষকের খেলার সামগ্রীর দোকান লুটপাট করছে। আমি বাধা দিতে চাইলাম কিন্তু আমার পরক্ষনেই মনে হল-আমার শিক্ষক অনেক স্টুডেন্টকে ঠকিয়েছে। তাদের থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়েছে। ফলে এরা প্রতিশোধ নিচ্ছে। তাছাড়া তার প্রতি আমি খুশী না থাকাতেও বাধা দিলাম না। তখন মনে হচ্ছিল উচিৎ শিক্ষা হচ্ছে। কিন্তু তারা বেশী কিছু লুট করেনি। ১০/১৫টা ক্রিকেট ব্যাট এবং আরও এরকম কিছু নিয়ে গেল। এসময় আমি চিন্তা করছিলাম এখানে থাকা আমার জন্যে নিরাপদ হবে কিনা। কারণ স্টুডেন্টের পরিবার ক্ষিপ্ত এবং আমার শিক্ষকও শয়তান। এদের মধ্যে পড়ে আমার দশা কি হয় কে জানে। আমি বরং বাড়ি চলে যায়। কিন্তু আমি গেলাম না। বেশকিছু মানুষের পাশে দাড়িয়ে থাকলাম।

পরক্ষনেই দেখলাম আমার প্রধান শিক্ষক এসেছেন। তিনি দেখতে সুদর্শন নয় এবং আচরনেও ভাল না। প্রতারক শিক্ষক। তিনি এসে যখন দেখলেন তার দোকান লুট হয়েছে ,তখন তিনি প্রচন্ড ক্রোধান্বিত হলেন। আমি দেখলাম একটি চমৎকার মাইক্রোবাসের ভেতর বসে রয়েছে ভারতের বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী লতা মুঙ্গেশকার। তার পুত্রও আমাদের মার্শাল আর্ট স্কুলের ছাত্র। আমার শিক্ষক রাগে ক্ষোভে তার ওপর প্রতিশোধ পরায়ন হলেন,যেহেতু তিনিও একজন ধনী মা। দেখলাম-শিক্ষক তার গাড়ীর দরজা জোরপূর্বক খুলে ফেলল এবং লতা মুঙ্গেশকারকে বের করে আনল,তখন তাকে খুব অসহায় মনে হচ্ছিল। যদিও তিনি বৃদ্ধ তারপরও আমার শিক্ষক সকলের সামনে তাকে ধর্ষনের জন্যে জবরদস্তি শুরু করল। তিনি শাড়ী পরিহিত ছিলেন।

আমি এতক্ষন ভাবছিলাম আমি বাড়ি চলে যাব কি না। কারণ লুটপাটের বিষয়,শিক্ষকের প্রতারনা ইত্যাদী অপ্রীতিকর বিষয় ভাল লাগছিল না। কিন্তু যখনই দেখলাম আমার প্রধান শিক্ষক ধর্ষণ করার চেষ্টা করছে,তখন মাথার মধ্যে ভূমীকম্প হয়ে গেল। তখন আমার সামনে এক ধর্ষক ছাড়া আর কাওকে দেখতে পেলাম না। আমি প্রচন্ড ক্রোধে ফুসতে লাগলাম এবং তীরের মত দৌড়ে গিয়ে আমার শ্রদ্ধেয় প্রধান শিক্ষকের মুখ বরাবর প্রচন্ড এক ফ্লাইং কিক করলাম কিন্তু কিকটি গিয়ে লাগল তার বুকে। তিনি উড়ে গেলেন এবং ধুলোর মধ্যে গিয়ে পড়লেন। সম্ভবত: তার নাক-মুখ ফেটে গেল। তার শরীরে উত্তম পোষাক ছিল কিন্তু তা ধুলো ময়লায় মাখামাখি। লতা মুঙ্গেশকার আবার তার গাড়িতে গিয়ে বসলেন। তাকে বিধ্বস্ত মনে হচ্ছিল। আর শিক্ষক তার ভুল বুঝতে পারল। শিক্ষকও বেশ লজ্জিতভাবে উঠে দাড়াল। এক লাথিতে শিক্ষা। যখন দেখলাম শিক্ষক তার অন্যায় বুঝতে পেরেছেন,তখন আমি তার শরীর থেকে ধুলো পরিষ্কার করে দিতে থাকলাম। কিন্তু তার শরীরে এত ময়লা লেগেছিল যে আমি তা উঠাতে পারলাম না।

এর কিছুক্ষনের মধ্যেই দেখলাম উক্ত প্রাঙ্গনে একজন অতি সম্মানিত ব্যক্তি আগমন করতে যাচ্ছেন। তিনি হয়ত প্রধান মন্ত্রী বা এরকম পদের কেউ একজন হবেন। বহু সংখ্যক লোক তাকে অভ্যার্থনা জানাতে সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হল। সকলের পরনে একই ধরনের পোষাক। প্যান্ট এবং ঝকঝকে রেশমী ধরনের ফুলহাতা শার্ট ইন করা। আমিও সেই সারীতে ছিলাম। আমার পাশে প্রধান শিক্ষককে দেখলাম,তার শরীরেও একই পোষাক কিন্তু তার পোষাকে প্রচুর ময়লা। তিনি অন্যদের মধ্যে নিজেকে আড়াল করে দাড়ালেন কিন্তু তারপরও তার ময়লা পোষাক দেখা যাচ্ছিল।

বিষয়: বিবিধ

১৪৬২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File