আমির,সালমান,শাহরুখ এবং আমি
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৯:৫৬:২০ রাত
সাধারণত টিভি তেমন দেখা হয়না,আর টিভি সিরিয়াল হল সবথেকে অপছন্দনীয় বিষয়ের একটি। কিন্তু রাতে স্বপ্ন দেখলাম আমি ভারতের কোনো এক টিভি চ্যানেলের সিরিয়ালে অভিনয় করছি। সে এক মহা অভিনয়। কিছু ডায়লগ বলেছিলাম,তা আর মনে নেই। তবে এটা স্পষ্ট মনে আছে যে দর্শকদেরকে দেখাচ্ছিলাম কারো মাসল যদি বিশাল মোটা হয় তাহলে তার হাটাচলা কেমন হতে পারে। আমি রোবটিকভাবে হেটে দেখালাম যে,তাদের চাল চলন রোবটিক টাইপ হবে। এরপর দেখালাম স্বাভাবিক মাসল হলে তার চাল চলন কেমন হবে। আমার অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে কর্তৃপক্ষ আমাকে প্রমোশন দিল। এরপর দেখলাম সালমান খান আমার সাক্ষাৎকার নিচ্ছে কোনো এক টিভি চ্যানেলে। সে একটা টুলের ওপর বসা ছিল,সেখানে আরও কয়েকজন মহিলা ছিল। আমি ছিলাম ফ্লোরে বসা এবং ঘরের মাঝামাঝি। সালমান কিছু জিজ্ঞেস করল,আর আমি পেছনে সরে গেলাম একেবারে দেওয়ালের কাছে। সেখানে থাকা এক চেয়ারের ওপর বসা অবস্থাতেই ডান পা তুলে দিলাম চেয়ারের ওপর। এটা স্পষ্ট বেয়াদবী। সালমান আমাকে এটা করতে নিষেধ করল,আমি শুনলাম। সাক্ষাৎকার ওই পর্যন্তই।
সম্ভবত: আমার সাক্ষাৎকারটি প্রশংসার যোগ্য ছিল(!) । এরপর আমাকে বলিউডের সিনেমা পরিচালক,সমালোচক ইত্যাদী বানানো হল। আমি বলিউডে প্রবেশ করে দেখলাম,একটি সিনেমার শেষের অংশের শুটিং চলছে। সেখানে দেখলাম পানির ট্যাঙ্কীর মত একটি তিন চলা সমান উচু ঘর। যার মধ্যে ২০জনের মত মানুষ ধরবে। সেটাকে বানানো হয়েছে মসজিদ এবং মন্দীর উভয়ই। শেষ দৃশ্যে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে সদ্ভাব প্রদর্শনের স্বার্থে এটা করা। দেখলাম হিন্দুরা ঘন্টা বাজাচ্ছে এবং মুসলিমরা সেখানে ইবাদত করছে একইসাথে। কয়েকবার আমি তাকিয়ে একটু পাশে গিয়ে চিন্তা করছিলাম,কার মুখে জুতা মারব, কোন হারামজাদা এই সিনেমা তৈরী করল ইত্যাদী।
খানিকপর দেখলাম আমার আবারও প্রমোশন হয়েছে। এবার শাহরুখ খানের এক সিনেমায় ডিরেকশন দিচ্ছি। এমনকি একটি দৃশ্যে মেকআপটা ঠিক না হওয়াতে সমালোচনাও করলাম। শাহরুখ খান আমার খাতির করল।
খানিক পর দেখলাম একটা ঘরে আমি,আমিরখান এবং শাহরুখ খান দাড়িয়ে আছি,এমন সময় এক বয়ষ্ক মহিলা সেখানে প্রবেশ করল। সে মহিলা কোনো এক বিরাট খাজা বাবার মুরীদ এবং নিজেও মহিলা পীর। তার শিরকী বয়ান শুনে মনে হল এই নায়ক দুজন ঠাটিয়ে চড় মারবে কিন্তু না, তারা গভীর মনোযোগের সাথে তার ফাউল কথা শুনতে থাকল। তাদের মনোযোগের কারনে আমি আর ডাইরেক্ট এ্যাকশনে গেলাম না। মহিলা দেখতে ভারতীয় কিন্তু রাশিয়ার কোনো একটা এলাকা থেকে আগত। আমি বারবার অন্য প্রসঙ্গ টানার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম। তারা যখন তার বয়ান শুনছিল তখন আমার সামনে তার ইবাদতখানার চিত্র ভেসে উঠল। দেখলাম বিরাট খানকাহ শরীফ। সেটা গোল্ডেন কালার অথবা গোল্ডের তৈরী। বেশ জাকজমকপূর্ণ। মনে মনে থুথু দিলাম। বুঝতে পারছিলাম সে হয় ভন্ড নয়ত অজ্ঞ। মহিলা তার খানকায় টাকা পয়সা দান করতেও বলছিল এবং এটার সুফলও বয়ান করছিল।
খানিক পর শাহরুখ বলল ,আচ্ছা ঠিক আছে আমরা একটু খোজ খবর করি তারপর দেখা যাবে। আমীর বলল,আচ্ছা ঠিক আছে আমরা আরও ভালভাবে জেনে নেই তারপর দেখছি কি করা যায় ইত্যাদী।
আমি বললাম, ব্রাদার আমির এবং শাহরূখ আমি কিছু লোকের মাধ্যমে এই ভন্ড মহিলার ব্যাপারে খোজ নিয়ে আপনাদের জানাচ্ছি। মনে মনে ভাবলাম গোপনে তার আস্তানা ভিজিট করব এবং রহস্য উদঘাটন করব। তাদেরকে বললাম-এসবের ব্যাপারে সহী হাদীসে কি আছে তা আপনাদেরকে জানাচ্ছি। কিন্তু মহিলার ভন্ডামী উদঘাটনে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। খারাপ লাগল। তারা গভীরভাবে তার কথা শুনল কিন্তু ইসলাম অনুধাবনের চেষ্টা করল না। মনে হচ্ছিল মহিলা একটু ভেলকী দেখালে এরা গলে যেত। আমি শাহরূখ কে মাটিতে চিত্র একে বুঝানোর চেষ্টা করছিলাম এটা ঘটছে,সে ভন্ড,এই এই কারনে ভন্ড। তারা বুঝল না। মহিলার শিরকী আকিদা এবং এদের বিকারগ্রস্থতা দেখে গা জ্বালা করল। ভাবলাম মহিলাকে চরম অপমান করব কিনা। কিন্তু পারলাম না। নায়কগুলোর ইসলামের কনসেপ্ট শুণ্য তা বুঝলাম তবে ধর্মীয় বিষয়গুলো শ্রদ্ধা করে সেটা বুঝলাম। এক্ষেত্রে হার্ডলাইনে যাওয়া যায়না। শাহরুখ খান আমাকে জানিয়ে কোথায় জানি চলে গেল। মনে হয় সিনেমার কোনো কাজে।
উল্লেখ্য: ইতিপূর্বে শাহরুখকে স্বপ্নে একবার এক বিপদ থেকে বাচিয়েছি। আমি সিনেমার কোনো নায়ককেই আদর্শ ভাবিনা,এদের কেউ’ই আমার পছন্দের নয়,তবুও স্বপ্নে এরা আসে হেহেহে। এটাও হতে পারে যে, যেসব তরুন,যুবক আজ এদেরকে অনুসরণ করছে তাদেরকে পথে ফেরানোর জন্যে আল্লাহ আমাকে ইঙ্গিত করছেন। কারণ নতুন প্রজন্ম তো শাহরুখ,সালমানকে আইডল মনে করছে।
বিষয়: বিবিধ
৪১৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন