ঐশীর কোনো দোষ নেই
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৩ আগস্ট, ২০১৩, ০৭:২২:২৪ সন্ধ্যা
ঐশীর ছবিটা দিলাম না। কারন আমার চোখে সে নির্দোষ।
একজন সরকারী অফিসার যার সৎ হওয়াটা প্রফেশন। তিনি সততার বিষয়টি বিসর্জন দিয়ে যখন অসত উপায়ে পয়সা উপার্জন করেন তখন তা সমাজকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি অসৎ আচরনের আচ নিজের পরিবারে লাগা স্বাভাবিক। আর যদি তিনি হন পুলিশ অফিসার,তাহলে বিষয়টি আরও ভয়াবহ হতে পারে,কারন পুলিশ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। অর্থাত যারা অপরাধীদেরকে নিয়ন্ত্রন করবে,তারা দূর্নিতি করলে অপরাধীরা পার পেয়ে যাবে। আর এতে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাবে এবং আম জনতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
একজন অসত ব্যবসায়ীর অসততার দায় আমাদের ওপর পড়ে কিন্তু সেটি অর্থনৈতিক হওয়াতে অনেক সময় প্যাচের কারনে বুঝতে অসুবিধা হয়। কিন্তু সরাসরি অপরাধী,সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হলে ক্ষতি বুঝতে বিদ্যান হওয়া লাগেনা।
অফিসারটি অসত হওয়ার কারনে অনেক সহজ বিষয়কে প্যাচাতে হয়েছে,ভাল লোককে ফাসাতে হয়েছে,আর তার চরিত্রটি তার পরিবারের কাছেও ফুটে উঠতে পারে। কিশোরী মেয়েটি তার পিতার অতিরিক্ত পয়সার বিষয়টি সম্পর্কে বন্ধু মহল থেকেও বাজে ধারনা পেয়ে থাকতে পারে। অনেক অসৎ কর্মকর্তার সন্তানরা বন্ধুদের দ্বারা নাজেহাল হয়। তাছাড়া টাকার গরমে পিতা-মাতার মানুষিকতা বিগড়ে যেতে পারে। গরিব প্রতিবেশী,আত্মীয়দেরকে হেয় প্রতিপন্ন করা,তাচ্ছিল্য সন্তানরা অনেক সময় মানতে পারেনা। ফলে ভেতরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
চারিত্রিক ত্রুটি এবং প্রচুর টাকা দুটি একসাথে আসলে পুরুষ ফুর্তিবাজ হয়ে পড়তে পারে। এদিক ওদিক নারী,মদ নিয়ে ফুর্তি করে থাকতে পারে। এতে স্ত্রীর প্রতি স্বভাবিক মমত্ত্ববোধ কাজ নাও করতে পারে। তার প্রতি অবহেলা স্ত্রীকেও এমনই খারাপ কোনো কিছুর দিকে ঠেলে দিতে পারে। আর এর প্রভাব পড়ে সন্তানের ওপর। দিনের পর দিন এমনটা ঘটতে থাকায় সন্তানের ভেতর শুণ্যতার সৃষ্টি হয়। এবং তার হাতেও টাকা আসার পর নিজেকে মুক্ত বিহঙ্গ মনে করা স্বাভাবিক। আর এই অবস্থা সেটিসফেকশন দিতে না পারার কারনে ,পিতা-মাতার কাছ থেকে ভাল সাপোর্ট না পাওয়ার কারনে বন্ধুদেরকে বেশী সময় দিতে থাকে। এটাই স্বাভাবিক। আর বিশেষ কিছু দূর্বলতার সময় সে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে থাকতে পারে। একই পথ ধরে মাদক চলে এসেছে।
সমাজ তাকে এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা দেয়নি ,যেখানে সে নৈতিক শিক্ষা পূর্ণমাত্রায় পেতে পারে। বরং প্রতিনিয়ত তাকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে উপস্থাপন করেছে। নিজের ইচ্ছাকে যাচ্ছেতাইভাবে চরিতার্থ করতে শিখিয়েছে। ফানকে বর্ধিত করতে শিখিয়েছে। নিজের আবেগ অনুভূতিকে সকলের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে শেয়ার করতে শিখিয়েছে।নষ্ট হওয়ার বহু উপকরন তৈরী করে তার কাছে সযতনে পৌছে দিয়েছে। ফলে সে হয়ে পড়েছে ইচ্ছা বা অভ্যাসের দাস।
সে যা করেছে,তা করতে তাকে সর্বোচ্চ ইন্ধন দেওয়া হয়েছে। তার পরিবার,সমাজ সকলেই তাকে প্রতিনিয়ত এই পরিনতির দিকে ধাবিত করেছে। আর যখন সে অঘটন ঘটালো তখন এমন সব বিষয় দিয়ে তাকে মোটিভেট করা হবে,যার পরিনতি আবারও এসব করা, অর্থাৎ ভুলকে ভুল দ্বারা সংশোধন করা হবে। সে পূণর্বাসিত হবার নামে আবারও সুশীলদের তথাকথিত প্রগতিশীল চিন্তাধারার বলী হবে।
সার্বিক বিচারে এই কিশোরীর দোষ তেমন দেওয়া যায়না। সে জন্মগতভাবে নেশাখোর,চারিত্রিক ত্রুটি সম্পন্ন ছিলনা। একটি নির্মম পরিনতির দিকে তাকে ধাক্কা দিয়ে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এখন সমাজ তার সমালোচনা করছে।
এ বিষয়টি আমাদের জন্যে একটি সতর্ক বার্তা বহন করে। তা হল, যারা সমাজ পরিচালনা করছে,তাদের ব্রেইন ওয়াশ হওয়া দরকার। তাহলে সমাজের চেহারা বদলে যাবে। এবং সেই বদলের পরিনতি হবে একটি সুস্থ্য শিশু,সুস্থ্য পরিবার,সুস্থ্য সমাজ-রাষ্ট্র। এর ফল ভোগ করবে সকলে। কাজেই সমাজ ব্যবস্থায় একটি লো-লেভেল ফরমেট দরকার।এটি এমনভাবে পচেছে, রিপেয়ারের সুযোগ নেই।
বিষয়: বিবিধ
২১৭৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন