পাম বীচ
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০২ আগস্ট, ২০১৩, ১০:৫৮:০৭ সকাল
আমি যাব পাম বীচে। সেটা এখান থেকে অনেক দূর। উইনইয়ার্ড থেকে বাসে দেড় ঘন্টার মত লাগে। সেখানে বেশ কয়েকটা বীচ রয়েছে এবং স্থানটি সাগরের ভেতর হারপুনের মত গিয়ে বিধেছে। আমি বাসের অপেক্ষায় আশপাশে ঘোরাফেরা করতে লাগলাম। উইনইয়ার্ড রেলওয়ে স্টেশন থেকে ক্যারিংটন স্ট্রিট অভিমূখে বের হলেই এই বাস স্টপেজ। এখান থেকে অনেক এলাকায় বাসে যাওয়া যায়।
বাস আসতে বেশ দেরী হবে তাই আশপাশের রাস্তাগুলোতে একটু ঘোরাঘুরি করলাম। এক পত্রিকার দোকানে ঢুকে ম্যাগাজিন পড়তে লাগলাম। এগুলোর দাম বেশ চড়া ৬ থেকে আট ডলার। পত্রিকার দামও কম নয় তবে বহু পত্রিকা ফ্রি দিয়ে থাকে। বাস,ট্রেন স্টপে অনেক তরুন-যুবক ফ্রী পত্রিকা নিয়ে অনুরোধ করে একটা নেওয়ার জন্যে। কেউ নেয় ,কেউ নেয়না। এদের লাভ হল,এসকল পত্রিকায় প্রচুর বিজ্ঞাপন দেওয়া থাকে। সেসব বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কোনো পত্রিকা উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন ছাপায় এবং যেহেতু এজাতীয় অধিক বিজ্ঞাপনযুক্ত পত্রিকা পয়সা দিয়ে মানুষ কেনার পক্ষে নয়,তাই তারা ফ্রী বিতরন করে থাকে। আর পত্রিকাগুলো উক্ত কোম্পানীর কাছথেকে যে টাকা পেয়ে থাকে তাতে ৪০/৫০ পৃষ্ঠার পত্রিকা তারা সকলকে ফ্রী প্রদান করতে পারে।
তো পত্রিকার দোকানে একটি ম্যাগাজিন খুলে দেখলাম ভারতের খবর। ভারতের কিছু ধর্মগুরুকে নিয়ে রিপোর্ট করা হয়েছে। একজন হিন্দু সাধকের ব্যাপারে লেখা হয়েছে যে,তিনি গত চল্লিশ বছর ধরে নিজের ডান হাত ওপরে তুলে রেখেছেন। এটি আমি এর আগেও শুনেছি কিন্তু বিশ্বাস করতাম না। কারণ আমি নিজে হাত খানিক ওপরে তুলে রাখলে চরম অস্বস্তি লাগে আর তিনি চল্লিশ বছর কিভাবে রাখলেন ! তাছাড়া খাওয়া দাওয়া,চলাচল,ঘুম,আরও অনেক কাজ কারবার করার ফলে তাকে হাত নীচে নামানোর প্রয়োজন রয়েছে । কিন্তু উক্ত সাধকের ছবি দেখে বুঝতে পারলাম আসল ব্যাপার। তিনি বহুদিন ধরে অনেক ব্যাথা সহ্য করে ,প্রচন্ড ধৈর্য্যধারণ করে নিজের ডানহাতটি ওপরে তুলে রেখেছিলেন এবং কোনোভাবেই সেটি না নামানোর কারনে একসময় হাতটি অবশ হয়ে যায় এবং হাড়ের সংযোগস্থলও শক্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে তার ডান হাতটি ওপরেই উঠে থাকে। সে হাতটি একেবারে অপূষ্ট হয়ে একটি হাড়ের মত মাথার ওপরে উঠে রয়েছে। এতে তার ভক্তকূলে সংখ্যা বেড়েছে অনেক। বহু ভক্ত তার সেই হাত থেকে আশির্বাদ নিয়ে থাকে এবং নিজেদেরকে ধন্য মনে করেন। সাধারণত তিনি জনসম্মুখে আসেন না। নিভৃতে থাকেন এবং সাধনা করেন। ভারতীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের ভেতর তার প্রচন্ড কদর থাকলেও এই ম্যাগাজিনে তার কাজকে মহা আহাম্মকের কাজ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আরও বেশকিছু সাধু সন্নাসির ব্যাপারে লেখা হয়েছে।
একজন আছেন যিনি গত দশ বছর ধরে দাড়িয়ে রয়েছেন। এবং উলঙ্গ হয়ে একপায়ে দাড়িয়ে আছেন। আমি এই সাধকটিকে ডিসকভারী চ্যানেলে দেখেছি। দেখলাম, তিনি বিবস্ত্র অবস্থায় একটি ঝুলন্ত দড়িতে ভর করে দাড়িয়ে আছেন। আরেকটি ঝুলন্ত দড়িতে একটি পা পেচিয়ে রেখে আরেক পা নীচে রেখে দাড়িয়েছেন। তিনি পা পরিবর্তন করেন। তার পা ফুলে গেছে এবং উভয় পায়ের উপরীভাগে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। তার ভক্তরা জানিয়েছে,প্রথমে তার পা ফুলে গিয়েছিল কিন্তু আস্তে আস্তে এটিতে তিনি অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। শরীরকে চরম ব্যাথা দিয়ে তিনি সাধনার শীর্ষে ওঠার চেষ্টায় রত। তার যখন ঘুম আসে তখন তিনি দড়িতে হাত মাথা পেচিয়ে দাড়িয়ে থাকেন। দু-বছর এভাবে দাড়িয়ে থাকার পর তার পায়ে আর তেমন সমস্যা হয়নি অথবা তিনি সমস্যায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তার লম্বা চুল,দাড়ি রয়েছে দেখলাম। এরা গোসল করেনা। কিন্তু যেহেতু খেতে হয়,তাই প্রাকৃতিক কাজও সমাধা করতে হয়। সেটি অবশ্যই দাড়িয়ে দাড়িয়েই করতে হয়। কারণ তিনি গত দশ বছরে স্থানচ্যুত হননি এবং বসেননি। তার একদল নিখাদ ভক্তবৃন্দ ছাড়া এ সাধনায় টিকে থাকা সম্ভবপর ছিলনা। একটি ডকুমেন্টারীতে দেখলাম তিনি ভক্ত বৃন্দকে আশির্বাদ করছেন। এবং বলছেন,১২ বছর পর তার এ সাধনা শেষ হবে,তিনি সাধনার শীর্ষে উঠে যাবেন। তখন তার আশির্বাদ নিয়ে অন্য কেউ এরূপ সাধনা চালিয়ে যাবেন এবং তা চলতেই থাকবে।
আরেকজন সাধুকে দেখলাম নিজের ওপর ব্যাথা দিয়ে সাধনা চালাচ্ছেন। তিনি তার শরীরের অপ্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসেবে তার পুরুষাঙ্গটিকে ব্যাথা দিচ্ছেন তাতে ১৭ কেজি ইট ঝুলিয়ে। তিনি তার অঙ্গটিতে দড়ি বেধে একটি ছোট গাড়ি টানতে পারেন। তিনি যে মহা সাধক এবং মানব জাতির কল্যানে মহা ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা প্রমানিত। তার এ সাধনায় প্রচুর কসরত করতে হয়েছে নিশ্চিত। হিন্দুরা এই বিবস্ত্র সাধকের কাছ থেকে আশির্বাদ নিচ্ছে দেখলাম। কেউ কেউ তার বিশেষ অঙ্গে স্পর্শ করে গর্ব অনুভব করছে।
আরেকজন সাধককে দেখলাম তিনি গড়ানো বাবা নামে পরিচিত। তিনি পাচ হাজার কিলোমিটারেরও অধিক পথ গড়িয়ে পাড়ি দিয়ে ইতিমধ্যেই গিনেজ বুকে নাম লিখিয়েছেন। তিনিও একজন মহান সাধক। এবং তাকে ছুয়ে হিন্দুরা আশির্বাদ নিয়ে থাকে। পাশ্চাত্যের লোকেরা এসকল মহান সাধুকে মহা আহাম্মক বললেও তাদের তাতে কিছুই এসে যায় না। এরা ভক্তবৃন্দের কাছ থেকে অতি উচু পর্যায়ের সস্মান প্রাপ্ত হয়ে থাকেন। ভারতবর্ষে এরূপ নাগা বাবা,ছাইবাবা বা মহান সাধকের পরিমান পঞ্চাশ লক্ষেরও বেশী।
একটা সিগারেটের প্যাকেটে ভয়ঙ্কর ছবি দেখে অস্বস্তি লাগল। এরা সিগারেটকে নিরুৎসাহিত করার জন্যে সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে ধুমপানে সৃষ্ট রোগ-ব্যাধীযুক্ত মানুষের বিভৎস্য ছবি যুক্ত করার বিধান চালু করেছে। যাতে মনিুষ এই ছবিগুলো দেখে নিজেদের পরিণতীর কথা ভাবে এবং অন্তত অস্বস্তিতে এই প্যাকেটটিকে এড়িয়ে চলে। ১৮বছরের নীচে কারো জন্যে সিগারেট নিষিদ্ধ। কিন্তু লাভ হয়নি। এটা নেশার জিনিস,তাই মল-মূত্রের গহবরে ফেলে রাখলেও মানুষ উঠিয়ে মুখে পুরে দিবে।
বিষয়: বিবিধ
১৯৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন