হাইড পার্ক
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০১ আগস্ট, ২০১৩, ১১:০২:০৪ সকাল
একদিন হাইড পার্কে হাটছিলাম। এখানে পার্কের মাঝ বরাবর প্রশস্ত একটি রাস্তা রয়েছে যা সুন্দর টাইলসে তৈরী। রাস্তার দুপাশে বড়বড় বৃক্ষ সুশৃঙ্খলভাবে দাড়িয়ে আছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় গাছগুলো রাস্তার ওপর ছাদ তৈরী করেছে। গাছের ডালগুলোও সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তার ওপর এসে পড়েছে। রাস্তা ছায়াঢাকা এবং চারিদিকে প্রচন্ড গরম থাকলেও এখানে বেশ ঠান্ডা। প্রচন্ড গরমে অনেকে এখানে বসে থাকে বা হাটাহাটি করে। অনেক যুগলকে দেখলাম খুবই ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে আছে। এটা অবশ্য স্বাভাবিক দৃশ্য। এপার্কে আমি অনেকবার এসেছি। এই পার্কের নীচ দিয়ে ট্রেনলাইন চলে গেছে। পার্কের একপাশে মিউজিয়াম স্টেশন এবং অপর পাশে সেন্ট জেম্স স্টেশন। পাশের রাস্তাগুলোও খুব চমৎকার। এর যেপাশে মিউজিয়াম এবং সেন্ট মেরী ক্যাথেড্রাল রয়েছে সেখানকার রাস্তা বেশ প্রসস্ত এবং সে রাস্তার ফুটপাথে হাটতে আমার ভাল লেগেছে। আমি এ এলাকার প্রায় প্রতিটা রাস্তা চিনি কারণ সে রাস্তাগুলোতে প্রচুর হেটেছি। হাইডপার্কের ভেতরে একটি চমৎকার ঝর্ণা সম্বলিত ভাষ্কর্য রয়েছে। রয়েছে বেশ প্রসস্ত প্রাঙ্গন। সেখানে বাচ্চারা খেলাধুলা করতে পারে। সে প্রাঙ্গন থেকে ওপাশের অতিরিক্ত সুন্দর ক্যাথেড্রালটা অসাধারণ সুন্দর লাগে। এরা ধর্মীয় উপাসনালয় খুব সুন্দর করে তৈরী করে আর মানুষেরা এগুলোর জন্যে প্রচুর দান খয়রাত করে থাকে। পার্কের ভেতর চমৎকার বসার জায়গা রয়েছে। তবে সবুজঘাসে পূর্ণ মাঠ বেশী আকর্ষণ করে। এখানে একটি বিশাল স্মৃতি স্তম্ভ রয়েছে। এর ভেতর একটি ছোট মিউজিয়াম। পাশেই একটি ছোট সরোবর। আর পাখি ঘুরে বেড়ায় সর্বত্র। যখন দুপুর হয় তখন আশপাশের অফিসের অনেককে দেখেছি ওই সময়টুকু তারা পার্কে এসে বসে। অনেকে দল বেধে দুপুরের খাবারটা এখানে সারে। টিফিন বক্স থেকে সযতনে খাবার বের করে খেতে দেখেছি অনেককে। অনেকে কোনো স্নাক্সের দোকান থেকে কিছু কিনে এনে এখানে বসে খায়। স্কুলের বাচ্চাদেরকে দলবেধে এখানে বসে দুপুরের খাবার ভাগাভাগি করে খেতে দেখেছি। এরা টিফিনের সময়টুকু এখানে এসে উপভোগ করে,কারণ এটি উপভোগ করার মত একটি স্থান। এখানে খুবই পরিকল্পিতভাবে গাছপালা,রাস্তা,সবুজ মাঠ,সরোবর,ভাষ্কর্য তৈরী করা হয়েছে। ফলে পার্কের ভেতর ঢুকলে ভাল না লেগে উপায় নেই। ভেতরে অনেক প্রাচীন গাছপালা রয়েছে,সেগুলো অনেক বেশী আকর্ষণ করে।
এখান থেকে উইনহয়ার্ড বেশ কাছে কিন্তু রাস্তাটা চিনতে পারছিলাম না। সেখানে আমার যাওয়া প্রয়োজন। আমি চলমান এক বয়ষ্ক লোককে জিজ্ঞেস করলাম উইনইয়ার্ডের রাস্তাটা কোনদিকে ? তিনি আমাকে বললেন, বাংলাদেশ ? হাহাহা, জি বাংলাদেশ-বললাম আমি।
তিনি তখন বললেন,আস সালামুআলাইকুম। আমি আবারও হাসলাম। বললাম আপনি গিয়েছেন বাংলাদেশ ? তিনি বললেন,বেশ কয়েকবার গিয়েছি। তার জ্ঞান বুদ্ধি দেখলাম বেশ পাকা। বাংলাদেশ,মুসলিম ইত্যাদী সম্পর্কে তার অনেক জানা আছে বুঝলাম। লোকটা খানিকক্ষনের মধ্যে বেশ প্রিয় হয়ে উঠল। আমাকে বললেন,আমার সাথে হাটতে থাকো তোমাকে রাস্তা দেখিয়ে দেব। আমি তার সাথে কথা বলতে বলতে এগিয়ে চললাম। তিনি খানিক দূর গিয়ে আমার পিঠে হাত রেখে খুব দরদের সাথে রাস্তাটা দেখিয়ে দিয়ে নিজের রাস্তা ধরলেন,তাকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে আমি সামনে এগিয়ে গেলাম।
বিষয়: বিবিধ
২৭৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন