স্রষ্টার অত্বিত্ব !!!
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১১ জুলাই, ২০১৩, ০১:২১:২৭ দুপুর
স্রষ্টার অস্তিত্বের যৌক্তিক প্রমান
প্রতিটি মানুষের মধ্যেই অন্য (নিজের থেকে বৃহৎ, শক্তিশালী, শ্রেষ্ঠ) কারো কাছে নিজেকে সমর্পণ করার প্রবণতা থাকে, যা সহজাত। মানুষ নিজেকে এভাবে সঁপে দিয়ে বা সমর্পণ করে আত্মতৃপ্তি লাভ করে। মানব সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই এ প্রবণতা মানুষের মধ্যে ছিল এবং এটি মানুষের এমন একটি উপাদান যা প্রত্যেকটি মানুষ জন্মগত ভাবে লাভ করে থাকে। আস্তিক, নাস্তিক উভয় শ্রেণীর মানুষের মধ্যেই এ প্রবণতা রয়েছে। একজন আস্তিক তার ধর্মের রীতি অনুযায়ী সে যাকে সর্বশক্তিমান বলে মনে করে, তার উদ্দেশ্যে নিজেকে সমর্পণ করে। নাস্তিকরা এ কাজটিই করে, তবে তা কোন ধর্মীয় রীতি বা পদ্ধতি অনুযায়ী নয়। তারা মানুষের মধ্যে বিশেষ কোন শ্রেণীকে বা মানুষের তৈরী কোন বিধানের নিকট আত্মসমর্পণ করে।
যেমন নাস্তিকদের কাছে কোন সমস্যার সমাধান চাইলে, তারা যে কোন একটি উৎস থেকে উৎসরিত চিন্তা দিয়ে উক্ত সমস্যার সমাধান করার কথা বলেন। এখানে তিনি উক্ত চিন্তার উৎসকে (ব্যক্তি, তার চিন্তা, বস্তু) সর্বশক্তিমান মনে করেন এবং তার কাছে মাথা নত করেন (সমাজতন্ত্রীরা স্রষ্টা বিশ্বাস না করলেও কার্ল মার্কস, লেনিন’কে এজাতীয় অবস্থানে রেখে নিজেদেরকে তার/তাদের কাছে নত করেছেন এমনকি সমাজতন্ত্রের পতনের পরও এ মতবাদের প্রভাবকে জনতার মনে দীর্ঘস্থায়ী করার মানসে লেলিনের লাশ তারা সযতেœ সংরক্ষণ করেছেন। মুখে স্রষ্টাকে অস্বীকার করলেও লেনিনকে তারা মৃত্যুর পরও স্রষ্টার আসনে আসীন রেখেছেন)। কোন নাস্তিকের কাছে কোন সমস্যার সমাধান চাইলে তিনি এমন বলেন না যে, ‘আমি কিছুই মানি না বা কিছুই বিশ্বাস করি না, তাই কিছুই বলব না বরং তিনি তার এক জাতীয় বিশ্বাস (এখান থেকে জন্ম নেওয়া কনসেপ্ট) থেকে কথা বলা শুরু করেন। মূলতঃ তিনি তার এই বিশ্বাসের কাছে আত্মসমর্পন করেছেন, যার কারণে তিনি বার বার উক্ত উৎসের কাছে ফিরে যান। এ ব্যাপারে অমুক এ রকম বলেছেন,তমুক ওরকম বলেছেন করতে করতে লোকটা আসলে একটি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা একটু লক্ষ্য করলেই দেখব ব্যাপারটা সহজাত অর্থাৎ সবার ক্ষেত্রে ঘটে।
মানুষ যদি এমন কোন কঠিন বিপদে পড়ে, যেখান থেকে উদ্ধার পাওয়া প্রায় অসম্ভব বা কেউ নেই সে বিপদ থেকে উদ্ধার করার, তাহলে এ অবস্থায় মানুষ অসহায় হয়ে এমন এক শক্তির উপর নির্ভর করে, যে শক্তি তাকে সে বিপদ থেকে উদ্ধার করবে (উক্ত শক্তি সম্পর্কে তার জ্ঞান থাকুক বা না থাকুক, ব্যপারটি এভাবেই ঘটে)। মানুষ তার শক্তির সর্বোচ্চ প্রয়োগেও যখন সফল হতে পারেনা বা উদ্ধার পেতে পারে না,তখন সে নিজের অজান্তেই এক মহা শক্তির দ্বারস্থ হয়ে পড়ে। এটা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি,যা প্রত্যেকটি মানুষের ক্ষেত্রেই এক।
এটা যদি সহজাত প্রবৃত্তি হয় তাহলে মানুষের উচিৎ এমন কারো কাছে আত্মসমর্পণ করা যিনি অনাদী, অনন্ত, অসীম, সর্বশক্তিমান, যিনি সকল কালেই বর্তমান। কিন্তু এমন কারো কাছে নিজেকে সমর্পণ করার আগে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে যে, এমন কারো অস্তিত্ব সত্যিই আছে কিনা বা থাকাটা জরুরী কিনা ?
আমরা সৃষ্ট বিভিন্ন জিনিসের দিকে তাকাতে পারি। এখানে আমাদের কিছু মৌলিক প্রশ্ন আছে যেমনঃ এগুলো এখানে ছিল ? নাকি এগুলোকে এখানে আনা হয়েছে ? যে সমস্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে আমাদের জ্ঞান আছে, সে সমস্ত বিষয়ের ব্যাপারে আমরা একেবারে দ্বিমত পোষণ করব, যদি বলা হয়- এগুলো এখানে ছিল এবং আছে। বরং আমরা বলব কেউ এগুলোকে এখানে এনেছে। যেমন টেবিলের উপর মোবাইল সেটটি পড়ে থাকতে দেখে আমরা বুঝতে পারি যে, এটা এখানে রাখা হয়েছে। এখানে এটা এমনিতেই ছিলনা বা আসেনি। একই সাথে আমরা এমন একটা কিছুর অস্তিত্ব অনুভব করতে পারি যে, কেউ এই জিনিসটাকে এখানে রেখে গেছে। এভাবে চিন্তা করাটা মানুষের পক্ষে খুবই স্বাভাবিক এবং এটি মৌলিক প্রশ্ন বা চিন্তা।
এই একই জাতীয় প্রশ্ন আমাদের নিজেদের ক্ষেত্রেও আমরা করতে পারি। যেমনঃ আমি এখানে কেন ? কিভাবে আসলাম ? আমার এখানে আসার উদ্দেশ্য কি ? কোথায় যাব বা গন্তব্য কোথায় ? ইত্যাদি। আমরা যদি একটু চিন্তা করি তাহলে বুঝতে পারব যে- যখন বলছি টেবিলের উপর গ্লাসটা,মোবাইলটা,কলমটা কেউ রেখেছে তখন বিজ্ঞান বলছে এটি একটি সাধারণ ব্যপার, এটাতো জিজ্ঞাসা করার মতো বিষয় নয়। আবার যদি বলি টেবিলের উপর গ্লাসটা কেউ আনেনি, এটা এমনিতেই এখানে ছিল এবং সে কারনেই এটা আছে। তখন বিজ্ঞান বলছে, আমার মতো মূর্খ ইহজগতে নেই। কারণ একটা বাচ্চাও এটা বুঝতে পারে যে, এমনিতে এটা এখানে আসতে পারে না।
লক্ষ্য করুন ! আমি এই ছোট বস্তু সম্পর্কে বোকার মতো প্রশ্ন করার পর যখন গোটা মহাবিশ্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করি অর্থাৎ গ্রহ, নক্ষ্যত্র, ব্লাকহোল, ছায়াপথ, ইত্যাদি বড় বড় বিষয় নিয়ে অথবা পৃথিবীর অভ্যন্তরের যাবতীয় বড় বড় বিষয় যেমন সাগর, পাহাড়, বাতাস, প্রকৃতি, ইত্যাদি বস্তুগুলো এমনিতেই এসেছে বা এগুলো ছিল, তখন এই একই বিজ্ঞান আমাকে বুদ্ধিমান বলে আখ্যায়িত করে। অন্যভাবে বলি ‘টেবিলের উপরের গ্লাসটা এমনিতে
বিষয়:
২১৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন