ডার্লিং হারবার
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১২ জুন, ২০১৩, ০৬:৫৬:৪৭ সন্ধ্যা
ডার্লিং হারবারে এসে ভাবলাম ট্রামে বসেই থাকব। কিন্তু এটা শেষ। নামনেই হবে। আমি সিড়ি দিয়ে ওপরে উঠে দেখলাম এটা এক বিশাল শপিং মল। এটি সিডনীর সবথেকে দামী শপিং মলের একটি। সিডনীর ট্রেন স্টেশনের সাথেই বড় বড় শপিং সেন্টার যুক্ত। শহরের প্রত্যেকটা স্টেশনের ওপরের অংশে শপিং সেন্টার। এতে ব্যবসায়ীদের বেশ লাভ হয়েছে। যাত্রীরা যাওয়া আসার মাঝে কেনাকাটা করতে পারে। তবে সহজে যাতাযাতের কথা ভেবে অনেক স্থানেই বিভিন্ন রাস্তার পাশ থেকেও পাতাল পথে ট্রেন স্টেশনে যাবার রাস্তা তৈরী করা আছে।
আমি অতি ঝকঝকে কাচ এবং খুব দামী টাইলসে মোড়ানো এ শপিং মলটির ভেতর হাটতে লাগলাম। কিছু ঘড়ি দেখলাম এক দোকানে; রোলেক্স,ওমেগা ব্রান্ডও গরিব মনে হল। কিছু ঘড়ির দাম দেখলাম পঞ্চাশ হাজার ডলার। এর চাইতে দামীও আছে। ঘড়ির চারিপাশে ডায়মন্ড যুক্ত করা হয়েছে। এটা বোধহয় সাদা স্বর্ণের তৈরী। উজ্জল টাইলসের কারুকার্যময় সিড়ি ভেঙ্গে ওপরে উঠলাম। দেখলাম জাকজমকপূর্ণ একটি ফ্লোর। ভেতরে চলে যাচ্ছি কিন্তু এক ভদ্রলোক আটকালো এবং আমার পাস দেখতে চাইলো। ওহ আচ্ছা বলে চলে আসলাম। খানিক পেছনে এসে ভাল করে তাকিয়ে বুঝলাম এটা ক্যাসিনো। এখানে ধনীরা এসে জুয়া খেলে সময় কাটায়,মদ-নারী নিয়ে ফুর্তী করে,আরও বহুভাবে সময় উপভোগ করে থাকে। ওই লোক পাস দিয়ে পায়ে ধরলেও তো ওর মধ্যে ঢুকব না। তবে এটার জাকজমক সাংঘাতিক। মনে হচ্ছে ডলার নির্মিত ভবনটি ডলার দিয়ে সাজানো।
এত দামী জায়গায় আমার মত সস্তা মানুষ ফিট না। বাইরে আসলাম। ডার্লিং হারবারে গেলাম। আমি বহু ঘুরেও ডার্লিং হারবারের ম্যাপ মাথার মধ্যে আনতে পারিনি। বেশ কয়েকবার ঘুরেও এর মাথা মুন্ডু বুঝতে পারিনি। এর কয়েকটা অংশ আছে এবং কোনো অংশে গেলে অন্ন অংশের হদীস পাইনা। বুঝতেও পারিনা কিছুদিন আগে আমি কোনদিক দিয়ে এসেছিলাম। বেশ কয়েকটি এলাকা জুড়ে এটি প্রতিষ্ঠিত। আজ আবহাওয়া খানিক ঠান্ডা,বোধহয় ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস হবে। আমি জাহাজ ঘাটের সু প্রশস্ত করিডোরে হাটাহাটি করলাম। লোকজনের উপস্থিতি তেমন নেই। মনে হচ্ছে হাজার হাজার নৌযান ফেলে রেখে তারা পালিয়েছে। এখান থেকে নৌযান ভাড়া করে ভ্রমন করা যায়। ট্যুরিস্টদের জন্যে অনেকে কিছু বিজ্ঞাপনও দিয়েছে। একস্থানে দেখলাম অনেকগুলো মোটর বাইক রাখা আছে। চার উঞ্জিন বিশিষ্ট বিশাল মোটা চাকার সেসব বিখ্যাত ব্রান্ডের মোটর বাইক দেখে মনে হল নিয়ে পালাই। হার্লে ডেভিডসন,বি.এম.ডব্লিউ,হোন্ডা,তিন চাকার মার্সিডিস বেঞ্জ এর ছড়াছড়ি। আবশ্য আমি চোর নই কিন্তু এদের রূপ আমাকে ধোকা দেওয়ার চেষ্টা করছে। মনে হল কিনতে না পারি গায়ে একটু হাত বুলিয়ে যাই কিন্তু এদেশের আইন কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তা আর করলাম না। ডার্লিং হারবারে এসে অতি উন্নত,উৎকৃষ্ট মানের জাহাজ,বোট দেখে আকৃষ্ট হব,তা না হয়ে আমি পড়লাম মোটর বাইকের প্রেমে,একি সহ্য হয় !
বিষয়: বিবিধ
৩০১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন