কাফফারা
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৯ জুন, ২০১৩, ০৬:০৬:১৬ সন্ধ্যা
গতরাতে আমার বোন যখন ডিনার করছিল তখন বাসার ছেলেটা তার রুমে ঢুকে ব্যাগ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে নেয়। আমি টিভিতে মহা বিজ্ঞানীদের কথোপকথন শুনছিলাম যদিও সেটা তেমন ভাল লাগছিল না। পানি খেতে চেয়ে ছেলেটাকে ডাকার সময়ই বুঝতে পারল সে পালিয়েছে। এই ছেলেটা খুবই নম্র এবং ভদ্র ছিল। প্রচন্ড হাসিখুশী ছেলেটা এমন কাজ করতে পারে ভাবাই যায়না। সে বিশ্বস্ত ছিল। সম্ভববত এর আগেও সে ব্যাগ থেকে টুকটাক টাকা নিয়েছে নইলে হঠাৎ করেই ব্যাগ খুলে এত টাকা নেওয়া সম্ভব নয়। তবে তার জ্ঞান বুদ্ধী আছে। আজ আমার বোন দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে এটা সে জানত।
তবে আমি বরাবরই এদের প্রতি দয়ালু। এর অগে এক মেয়ে আমার বোনের সব গহনা নিয়ে পালিয়েছিল। কিন্তু আমি পুলিশকে ঢিলেঢালা ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। এবং মামলার কপি তার এলাকায় পাঠায়নি। ভেবেছিলাম গরিব মেয়েটার বিয়ে শাদীটা ভালভাবে হোক।
গতরাতের ঘটনার পর নীচে নেমে দেখলাম গার্ডগুলো ঘুমাচ্ছে। এরা রাতের পাহারাদার অথচ রাতে ঘুমায়। এদের বেতন হালাল হচ্ছে না। বুঝলাম একজন দারোয়ান একেবারে নির্বেধ ধরনের। সে তাতে যেতে দেখেছে কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করেনি। আমি গত রাত থেকে এখনও মামলা করিনি,তবে পুলিশের সাথে কথা বলে রেখেছি। সন্ধ্যার পরও তার বাড়ী থেকে কোনো রিপোর্ট না আসলে ব্যবস্থা নিব ইনশাআল্লাহ।
এসব ক্ষেত্রে দেখেছি দৌড়াদৌড়ী বেশী হয়। যারা টাকা নিয়ে পালায় তাদের চাইতে বেশী দৌড়াদৌড়ী করতে হয় ,যাদের টাকা হারায় তাদের। কিন্তু এই ছেলেটাকে আমি পছন্দ করতাম। তাকে আমি অনেক কিছু কিনে দিয়েছি। তার অধিকার তাকে পূর্ণমাত্রায় দিয়েছি। সে কাজের ছেলে এটা কখনও প্রকাশ পায়নি। তার সাথে প্রত্যেকটা আচরনের সময় আমি সুন্নাহর দিকে খেয়াল রেখেছি। তাকে দিয়ে আমার ব্যক্তিগত কাজ খুব কম করিয়েছি। সে মহা আরামে ছিল এটা বলতে আমার দ্বিধা নেই। কারন আমি আর আমার বোন সাধারনত সন্ধ্যা বা রাতে বাসায় ঢুকি। সে চরম স্বাধীনতায় নিজের মত চলত। আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম তাকে ধীরে ধীরে বড় কোনো দায়িত্ব দিব..ইত্যাদী। কিন্তু সে খুব বড় বিশ্বাস ঘাতকতা করল। আল্লাহ তার মঙ্গল করুক। পৃথিবী এবং আখিরাতে শান্তিতে রাখুক। শুধুমাত্র আইনী প্রক্রিয়ার স্বার্থে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি কিন্তু তার অপরাধ যেটুকু ক্ষমা করার এখতিয়ার আমার আছে আমি সেটা ক্ষমা করে দিলাম। মনে হচ্ছে এটা কোনো কিছুর কাফফারা হয়ে গেল।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন