ইসলামে নারী অধিকার...৩

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২২ মে, ২০১৩, ০৬:৫৩:৪৬ সকাল



ইসলাম নারীকে পর্দা করতে বলেছে এবং পর্দা করে সে বৈধ সকল কাজই করতে পারবে। পর্দা মানে বোরখা নয় বরং পর্দা হিসেবে বোরখা খুবই প্রচলিত। পর্দার অর্থ হচ্ছে নারীরা তাদের দেহকে কাপড় দ্বারা এমনভাবে ঢেকে রাখবে যাতে তাদের শরীর দেখা না যায়। একই সাথে নারী-পুরুষের দৃষ্টিকে সংযত রাখতে বলা হয়েছে, আল্লাহ বলেন, “মুমিনদেরকে বলুন,তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।”(আল-কুরআন,২৪ঃ৩০)“মুমিন নারীদেরকে বলুন,তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।”(আল-কুরআন,২৪ঃ৩১)

এগুলো সরাসরি আল্লাহর আদেশ। মানুষের ইচ্ছা অনিচ্ছার ব্যাপার এটি নয়। সামাজিক দৃষ্টিকোন থেকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে- সামাজিক অপরাধের (নারী ঘটিত) অন্যতম প্রধান কারণ হলো নারীদের খোলামেলা বিচরণ। কারণ, যেসব পুরুষদের মানুষিক ব্যাধী আছে ,তারা আকৃষ্ট হয়ে এ সংক্রান্ত অপরাধ সংঘটিত করে। তবে পর্দা করা মহিলাদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা সচরাচর দেখা যায়নি বা শোনা যায়নি। ব্যাপারটি পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অবশ্য ইউরোপ আমেরিকার মানুষগুলো এ ব্যাপারে এক কাঠি বেশী সরেশ তাই সেখানে নারী কর্তৃক পুরুষকে ধর্ষনের ঘটনাও হর হামেশা ঘটতে দেখা যায়। যাই হোক এগুলো যে সমস্যা, তা তাদের(পাশ্চাত্যের) রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালকরাও জানে। মজার ব্যাপার হচ্ছে ইসলামের বিরুদ্ধে এত অপপ্রচার সত্ত্বেও পাশ্চাত্যে অমুসলিমদের ইসলাম গ্রহণের হার পূর্বের থেকে এখন অনেক বেশী। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতি বছর ৩৫০০০ অমুসলিম, ইসলাম গ্রহন করছে। ইউরোপের অন্যন্য স্থানেও ইসলাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের অন্তরের অন্তঃস্থলে, কারণ মানুষের মনকে তো আর

আইন দিয়ে ঠেকানো যায় না ! সত্য তো চেপে রাখা সম্ভব নয়। তাছাড়া নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশায় তারাও হাফিয়ে উঠেছে। এর মধ্যে আর যাই হোক শান্তি নেই, তা তারা বুঝতে পারছে। মার্কিন নারীরা গড়ে জীবনে ৬ বার স্বামী পাল্টায়(পত্রিকায় পড়লাম একজন ২১ বার স্বামী পাল্টিয়ে আলোচনায় এসেছেন,তাদের অনেকে আবার বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়ে আলোচনায় আসতে পছন্দ করে)। তাহলে তাদের সন্তানদের অবস্থা কি হয়, তা কি ভেবে দেখেছেন ? আবার অধিক ব্যক্তিত্বপনা,স্বাতন্ত্র( চৎরাবপু) সংরক্ষণ করতে গিয়ে সামাজিক বন্ধনও তাদের খুব নড়বড়ে তাই একে অন্যের প্রয়োজনে যাবার আগে নিজের স্বার্থের কথা কয়েকবার চিন্তা করে। বৃদ্ধদের অবস্থা তো ভয়াবহ, তাদের সাথে কথা বলা থেকেও তারা বিরত থাকে। তরুণ যুবকরা তাদের প্রতি মহা বিরক্ত। প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনদের সাথে সুন্দর সু-সম্পর্ক, অপরের বিপদে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া, অপরের জন্য নিজেকে বির্সজন দেওয়া,স্ত্রীর সাথে বিশ্বস্থতার সম্পর্ক রক্ষা করা, সন্তান লালন পালন ইত্যাদি সমস্ত ব্যাপারে তাদেরকে দূর্বল বা অনেকটা অযোগ্য দেখা যায়। এর কারণ হলো তাদের ইসলামের মত মোটিভেশন নেই। তাদের এসংক্রান্ত বিষয় ব্যক্তিগত বিষয়ের মধ্যে পড়াতে এবং চৎধাবপু রক্ষা করার খাতিরে তারা, এ সমস্ত সম্পর্ক নিজেদের খেয়াল খুশি মত স্থাপন করেছে বা করতে পারে। আর এই স্বাতন্ত্রপনার এ ব্যাপারটি তাদের পারিবারিক,সামাজিক জীবনকেও বিপর্যস্ত করেছে।

রসূল (সাঃ) বলেন, “তরকারীতে বেশী ঝোল রাখ যাতে প্রতিবেশীকেও এক বাটি দিতে পার”-(মুসলিম) আরো বলেন, “যে লোক পেট ভরে খায় অথচ তার প্রতিবেশী অভুক্ত অবস্থায় রাত্রী যাপন করে, সে আমাদের সমাজভুক্ত (মুসলিম,বায়হাকী) নয়” তিঁনি বলেন, “যে লোক সকালে উঠে উম্মার খোজঁ খবর করেনা সে আমার উম্মত নয়” এভাবে বিভিন্নভাবে বলা হয়েছে এবং তা পালন করা হয়েছে। ফলে এখানে সামাজিক বন্ধন হয়েছে শক্তিশালী আর তথাকথিত উন্নত দেশগুলোর অবস্থা এমন যে, কেউ কিছু খাবার সময় অন্যকে আমন্ত্রণ জানালে সে ব্যক্তি অতি পরিচিত হলেও আমন্ত্রণে সাড়া দেয়না আর যদি দেয় অর্থাৎ খায় তবে তার পেটে কোন সমস্যা দেখা দিলে সে মামলা করে ক্ষতিপূরণ আদায় করে। এ ব্যাপারটি তাদেরকে সামাজিক বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। অথচ ইসলামের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি ভিন্ন, এখানে কেউ কিছু খেলে তার আশে পাশে থাকা মানুষকে সে আমন্ত্রণ জানাবে এটাই রীতি। খাবার কম হলেও সে ভাগ করে খেতে উৎসাহী হয়। আর আমন্ত্রিত ব্যক্তি খাবার খেয়ে হাসপাতালে গেলেও খাবার পরিবেশনকারীকে জানতে দেয় না যে, তার খাবার খেয়ে এমনটি হয়েছে বরং সে শুকরিয়া জ্ঞাপন করে খাবারের জন্য। আর এভাবে পুরো প্রকৃয়া সম্পন্ন হয় আল্লাহর ইবাদত হিসেবে। আর আল্লাহ মানুষের বাহ্যিকতা নয়, অন্তরকে দেখেন। তাই ইসলাম গ্রহনকারী ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে তার কাজ সম্পাদন করে। ইসলামী সমাজ হলো সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ আর এই সমাজে নারী পুরুষের মধ্যে বৈধ এবং সুন্দর সম্পর্ক রক্ষিত হয় আর তা হয় মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী। এ পরিবেশে সন্তানরা সুস্থ্য স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে ওঠে। সর্বোপরি একটি সুখী সমৃদ্ধশালী সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো গড়ে ওঠে। তাই ইসলামী সমাজ ব্যবস্থাই শ্রেষ্ঠ,কল্যানকর সমাজ ব্যবস্থা ,মানুষের এতে আকৃষ্ট হওয়াই স্বাভাবিক।

চলবে...

বিষয়: বিবিধ

২২৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File