ব্লগার ওরিয়নের সাথে একদিন(ব্লগার ভায়ের সম্মানে পোস্টটি স্কিটি হোক)

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৭ মে, ২০১৩, ১১:৩০:১৭ সকাল





ব্লগিংএর সুবাদে ব্লগার ওরিয়নের সাথে পরিচয়। আমরা একে অন্যের লেখা পছন্দ করতাম। তার কমেন্টগুলোও ছিল খুবই মার্জিত। তার লেখা এবং কমেন্টের মাধ্যমে তার সম্পর্কে একটা সু-ধারনা তৈরী হয়েছিল। আমরা বার্তা আদান প্রদান করতাম এবং জানলাম তিনি অস্ট্রেলিয়াতে থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার হোস্টেল লাইফ নিয়ে তার একটি লেখা পড়ে ভাবলাম তিনি একজন শিক্ষার্থী। আমি অস্ট্রেলিয়া আসছি শুনে তিনি আমাকে তার ফোন নাম্বার দিয়ে যোগাযোগ করতে বললেন।

অস্ট্রেলিয়া আসার অন্তত দুই সপ্তাহ পর একদিন যখন শহরে ঘুরছি তখন ব্লগার ওরিয়ন ভাইকে মনে পড়ল। তাকে ফোন দিলাম। তিনি খুব খুশী হলেন। এর আগে একবার কথা হয়েছিল এবং তিনি তার বাসায় আসতে বলেছিলেন। তিনি থাকেন লাকেম্বায়। লাকেম্বার মসজিদ এবং মুসলিম কমিউনিটির ব্যাপারে তিনি একটি লেখা পোস্ট করেছিলেন। সেই মসজিদে নামাজ পড়ার ইচ্ছা জন্মেছিল আমার। যাইহোক তিনি আমার অবস্থান জেনে নিলেন। আমি তখন সার্কুলার কী এর কাছাকাছি ছিলাম। অফিসে কাজ থাকার কারনে তিনি এতদূর আসতে পারবেন না, জানালেন। আমাকে আমার গন্তব্য বুঝিয়ে দিলেন। আমি বাসে চড়ে সার্কুলার কী আসলাম। এখানে ট্রেন স্টেশনের এক কর্মচারীকে লাকেম্বায় যাবার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম। এরা অসাধারন অমায়িক লোক। কেউ কিছু জানতে চাইলে তা জানানো এরা কর্তব্য মনে করে এবং খুবই দায়িত্বশীলতার সাথে দিক নির্দেশনা দেয়।

যেমন-কয়েক দিন পূর্বে জর্জ রোড থেকে হাইড পার্কে যাবার রাস্তা জিজ্ঞেস করাতে একজন ভদ্রলোক যার দুই হাতে ছিল তিনটি বড় পানির বোতল। তিনি থেমে আমাকে রাস্তার এক পাশে নিয়ে আসলেন এবং একটি বোতল ধরলেন দু-পায়ের মাঝে,অন্য দুটি ধরলেন বাম বোগলদাবায়। এবার পকেট থেকে আইফোন বের করে নেট থেকে ম্যাপে গেলেন। তারপর আমাকে রাস্তা বোঝালেন খুবই অন্তরিকতার সাথে। আমি তার অতি দায়িত্বশীলতায় খুবই ইতস্তত করতে লাগলাম। আমার লজ্জাবোধ প্রবল হল। তিনি ছাড়লেন না। এবার তিনি আমাকে ম্যাপে থাকা রাস্তা এবং বাস্তবের রাস্তা দুটোই চিনিয়ে দিলেন। তারপর আমার কাধে হাত রেখে আমাকে ঘুরিয়ে দিলেন এক রাস্তা বরাবর। এবং বললেন সোজা গিয়ে ডানে চলবে পাচশ মিটার তারপর বামের রাস্তা পার হয়ে কিছুদূর গেলেই হাইডপার্ক। আর চিনতে না পারলে মানুষকে জিজ্ঞেস করবে। লোকটাকে অনেক ধন্যবাদ জানালাম যদিও এজাতীয় লোকদেরকে শুধু ধন্যবাদ দিয়ে শুকরিয়া আদায় করা যায়না।

তখন বিকেল আমি জানলাম কিছুক্ষন পূর্বেই লাকেম্বার ট্রেন ছেড়ে গেছে। পরবর্তী ট্রেন সার্কুলার কী স্টেশনে থামবে না। আমাকে এক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। ব্লগার ভাই আধা ঘন্টা পর সর্কুলার কী এবং লাকেম্বার মাঝামাঝি একটি স্টেশনে আসবেন। এখান থেকে তার অফিস কাছে। আমাকে উইনইয়ার্ডে যেতে হল। উইনইয়ার্ড হল এদিককার মাদার স্টেশন। শহরের সব ট্রেন এখানে আসে। আমি খানিক অপেক্ষা করে লাকেম্বার ট্রেনে উঠলাম। এ লাইনে খুব একটা ভাল মানের ট্রেন চলেনা। বেশীরভাগই নন এসি এবং পুরোনো মডেলের। তবে চলে সব একই গতিতে। ব্লগার ভাই ফোন করতে থাকলেন আর আমি স্টেশন গুনতে গুনতে অগ্রসর হলাম। আধুনিক ট্রেনগুলোর ভেতরে ডিজিটাল স্ক্রিনে একের পর এক গন্তব্যের ব্যাপারে তথ্য দেওয়া হয়। কিন্তু এই ট্রেনে ভরসা হল নিজের চোখ এবং সহযাত্রী। আমি অবশেষে নির্ধারিত স্টেশনে নামলাম। তবে ভুল পাশে নেমে তাকে খোঁজার চেষ্টা করলাম। সঙ্গত কারনেই তাকে পেলাম না। তখন তিনি ফোন করে স্টেশনের অপর পাশে আসতে বললেন। আমি একটু দূর থেকেই অনুমানে তাকে চিনে ফেললাম,যদিও আমার কল্পনার চিত্রের সাথে মোটেও মিল ছিলনা। তবে তিনি আমার মুখের দিকে একবার তাকিয়েই নির্দিধায় পাশ ঘেষে চলে যাওয়াতে মনে খটকা লাগল। এদেশে বাঙালী অহরহ দেখা যায় তাই এ অবস্থার সৃষ্টি হল। উনি আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলেও আমার দৃষ্টি উনার ওপরই ছিল। দেখলাম খানিক সামনে গিয়ে উনি আবার ফিরে আসলেন। বুঝলাম উনি কাওকে খুঁজছেন এবং তা আমিই। সম্ভবত: উনি আমার পোষাক পরিচ্ছদ দেখে আমাকে প্রথম দর্শনে চিনতে পারেননি। দুজনের পোষাকে এবং চেহারা সুরতে উত্তর-দক্ষিণ সম্পর্ক। প্যান্টের সাথে ফুলহাতা শার্ট ,কথা-বার্তা,চাল-চলনে দারুন স্মার্ট।

সালাম বিনিময় হল এবং জানতে পারলাম তিনি ব্লগার ওরিয়ন খ্যাত আলতাফ ভাই। মুখে তার দাড়ি। কল্পনার আলতাফ ভায়ের মুখে দাড়ি ছিলনা,কারনটা বোধহয় আমার মুখে দাড়ি না থাকা। তবে কি একই কারনে উনি আমাকে প্রথম দর্শনে এড়িয়ে গেলেন ! আল্লাহ’ই মালুম।

তার সাথে পরিচিত হয়ে বুঝলাম এবং অতি চমৎকার মানুষ তিনি। প্রথমেই তিনি মাফ চাইলেন ,কারন তিনি আমাকে তার গাড়িতে করে নিয়ে আসতে পারেননি; তার অফিসের মিটিংয়ের কারনে। তিনি একটি বৃহৎ কনস্ট্রাকশন কোম্পানীর প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন। আলাতাফ ভাই ড্রাইভ করছিল আর আমি চারিপাশের প্রকৃতি দেখছিলাম। সিডনীতে সড়ক পথ সোজা সাপ্টা নয় বরং যথেষ্ট সর্পীল। তবে প্রকৃতি মারাত্মক সুন্দর। আমরা যে রাস্তা ধরে আগালাম,তা ছিল অসাধারন এবং কখনও কখনও সুন্দর বাগান,সি-বীচ,খোলা মাঠ ইত্যাদীর পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছিলাম। তার সাথে গল্প কখনও থেমে ছিলনা। তাকে দেখে মনে হয়েছে তিনি হাস্যরস খানিক পছন্দ করেন বটে তবে তার সীমা বেশীদূর বিস্তৃত নয় এবং চরম নীতি নৈতিকতার মধ্যে চলে থাকেন। তবে কাঠ খোট্টা টাইপ লোকও তিনি নন। তার রস আছে তবে তা অতি চাপা। সম্ভবত: খুব দ্রুত তিনি অন্যের সাথে হালকা হয়ে উঠতে পারেন না। তার মানে এটাও নয় যে,তিনি নিজের ওজন ধরে রেখে আচরন করেন। তিনি যথেষ্ট খোলামেলা তবে পরিমিতি জ্ঞান রয়েছে এবং মনে হল মেপে মেপে কথা বলেন এবং খুবই সতর্কতার সাথে আচরণ করেন। তার আচরনে আমি খুশী। কারন তিনি যে একজন ভাল মানুষ তা আমি খানিকক্ষনের মধ্যেই বুঝেছি। আমার সাথে অবশ্য খারাপ মানুষের খুব একটা জমে না। সকল ভালোর বৈশিষ্ট্য এক রকম নয়।



তিনি আমাকে আজকের পকিল্পনা জানিয়ে দিলেন এবং আমার আপত্তি আছে কিনা জানতে চাইলেন। আমার কোনো আপত্তি নেই। আমরা বিকেল ৭টার দিকে লাকেম্বার বড় মসজিদে আসলাম। এটিই অস্ট্রেলিয়ার সবথেকে বড় মসজিদ,জানলাম। এটি তৈরী করেছে লাকেম্বার মুসলিমরা। লাকেম্বা হল সিডনীর অন্যতম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা। মসজিদটা এখানকার তুলনায় বড় হলেও তেমন একটা বড় নয়। আমি এখানে আসরের নামাজ পড়লাম। বহু সংখ্যক মুসলিম যুবককে নামাজ আদায় করতে দেখলাম,যাদের মধ্যে আরব মুসলিমও ছিল।



আলতাফ ভাইকে তার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে আসতে হবে। তারা তাদের নিজস্ব পড়ার পাশাপাশি মাদ্রাসায়ও পড়ছে। আমি লাকেম্বার রাস্তায় খানিক হাটাহাটি করে কাটালাম। এখানে প্রচুর বাঙ্গালী। বেশ কিছু বাঙ্গালী রেস্টুরেন্টও আছে। অনেক বাঙ্গালী এখানে ব্যবসা করছেন। বিভিন্ন দোকানে বাংলাদেশী পণ্যও দেখলাম। হাটাহাটি করতে বেশ ভালই লাগল। এখানে বাঙ্গালীরা এমনভাবে চলছে এবং অন্যের সাথে আলাপ করছে,যেন তারা ঢাকার কোনো গলিপথে দাড়িয়ে কথা বলছে। কিছু ভারতীয় এবং পাকিস্থানীও আছে। আলতাফ ভাই চলে এসেছে তার বাচ্চাদের নিয়ে। তারা আমাকে দেখেই সালাম দিল,প্রিত হলাম। আমরা তার বাসায় চলে আসলাম।

আমাকে বাইরে রেখেই আলতাফ ভাই ভেতরে কিছু কাজ সেরে আমাকে ভেতরে ডেকে নিলেন। এটাই ইসলামিক রীতি এবং এতে আমি খুশী হয়েছি। আলতাফ ভাই লেবানিজ রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার কিনে এনেছেন। লেবানিজরা পিৎজা তৈরী করে অসাধারণ। অবার্নে একবার অতি চমৎকার পিৎজা খেয়েছিলাম। এরা যে সাইজের পিৎজা তৈরী করে তাতে চার জন মিলে একটা পিৎজা খেলেও প্রত্যেকের পেট ভরে যাবে। স্বাদেও তা অতি অসাধারণ। কিন্তু আলতাফ ভাই যে পিৎজা নিয়ে এসেছেন তা আমার খাওয়া পিৎজার অনুরূপ নয়। এরা অনেক রকমের পিৎজা তৈরী করে। এটা ভিন্ন রকম তবে খেতে দারুন। তিনি আরও বেশ কিছু খাবার কিনেছিলেন,নাম মনে করতে পারছিনা। এরপর খেলাম তার স্ত্রীর হাতে তৈরী মিস্টি,সেমাই। কালোজাম তৈরী করেছিলেন। পোড়া পোড়া মত জিনিসটি দেখেই আমার মনে হচ্ছিল আলতাফ ভায়ের সাথে আরো আগে যোগাযোগ হওয়া উচিৎ ছিল। আর মনে হচ্ছিল সবগুলো যদি খেয়ে ফেলি তাহলে কি তারা আমাকে হাভাতে ভাববে ? তারপর ভাবলাম ভাবে ভাবুক, এ জিনিস সব সময় জোটেনা। তারপর ভাবলাম , না , মান ইজ্জত বলে একটা ব্যাপার তো আছে ! তাছাড়া উনার সাথে পরিচয় হল মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে। এত তাড়াতাড়ি এ কাজ করা ঠিক হবে ! তাই দুটো খেয়ে থামলাম। এরপর আলতাফ ভাই অনুরোধ করাতে....মানে উনার অনুরোধ তো আর আমি ফেলতে পারিনা ! উনি মনে কষ্ট পেতে পারেন,কারো মনে কষ্ট দেওয়া উচিৎ নয় ....তাই আরেকটা আলগোছে ঝেড়ে দিলাম। কিন্তু তারপরও কোথায় যেন একটা অতৃপ্তীভাব কাজ করতে লাগল। ব্যাপারটা চেপে গেলাম। মানে আমার নিজের গলায় পা দিয়ে চেপে ধরলাম আর কি ... ।

তার বাচ্চারাও আমার সাথে খেল। তাদের সাথে খানিক কথা বলে মনে হল,এরা আমার লাইনের না। ওদের বয়সে আমি কি চিজ ছিলাম তা এরা জীবনেও জানতে পারবে না। পূর্বেই অনুমানে বুঝেছিলাম যে উনার স্ত্রী সামনে আসবেন না। তার সাথে আমার দেখা করা জরুরীও ছিলনা এবং এ সা®কৃতির সাথে আমি পূর্বেই পরিচিত। আমার এক সাংঘাতিক চমৎকার বন্ধু ছিল। আমি তার সাথে বহু সময় কাটানোর পরও মনে হত আরো কয়েক ঘন্টা কাটালে ভাল লাগত। সে আমাকে বুঝত। আর আমি যে হাভাতে টাইপের তা সে জানত। আমি গেলেই সে অনেক কিছু খাওয়াতো। তার পিতা ছিলেন অতি উচ্চ পদস্ত সরকারী কর্মকর্তা এবং সে সুবাদে তার মা দেশ বিদেশের বহু নামি-দামী রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে তা শখের বসে তৈরী করার পদ্ধতিও শিখে নিয়েছিলেন। রান্না ছিল তার শখ,আর খাওয়া ছিল আমার শখ। আমি যে তার মায়ের রান্না পছন্দ করি সেটা বন্ধুর মা ভালই বুঝেছিলেন তাই তিনিও বিভিন্ন মজাদার জিনিস খাওয়াতেন। আমি তার ঘরে ঢোকার কিছুক্ষন পর দরজায় নক করা হত। এ আওয়াজ ছিল আমার কাছে চরম আকাঙ্খিত। এ আওয়াজ একটি বিশেষ সঙ্কেত বহন করত আর আমার মস্তিষ্কের পূর্বেই আমার পেট তা বুঝে ফেলত। এমন খুব কমই ঘটেছে যে,তিনি খাবার পাঠিয়েছেন আর তার অবশিষ্টাংশ ফেরৎ গেছে। তিনি মজাদার বিস্কুট,কেক,খিচুড়ী,বিরিয়ানী,নানা রকম মিস্টি তৈরী করতেন ,আমি কখনও কখনও খাবার পর বাকীটুকু কাগজে মুড়ে আমার ব্যাগে ভরে ফেলতাম। একবার তো বড় এক বয়েম বগলদাবা করে দৌড় দিচ্ছিলাম আমার বন্ধু ধরে বললেন,আরেকজন আসবে তার জন্যে কয়েকপিছ রেখে যাওয়া উচিৎ। নেহায়েৎ আমার দয়ার শরীর তাই কিছু রেখে দিলাম। কিন্তু আমার বন্ধুর মা এবং বোনের সাথে আমার দেখা হত না। তার বোনকে আমি জীবনেও দেখিনি এবং তার মাকে আমি দুই একবার দেখেছি,সেটাও না দেখার মতই। তার বাসা থেকে বের হবার সময় সে আমার পূর্বে বের হয়ে আমাকে গ্রীন সিগনাল দিলে তবেই মাথা নীচু করে,দৃষ্টি নীচে রেখে বের হতাম এবং ঢোকার সময়ও তাই। আমরা দরজা বন্ধ করে গল্প করতাম। এরকম আরো কিছু বন্ধু ছিল,যারা পারিবারিকভাবে পর্দা মেনে চলতেন। ফলে আলতাফ ভায়ের পারিবারিক পর্দা ব্যবস্থায় আমার কোনো সমস্যা হয়নি। বরং এটাই আমি পছন্দ করি। তার এবং তার পরিবারের প্রতি আমার দোয়া রইল। সু-মহান আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া এবং আখিরাতে মহা কল্যান দান করুন !





আমরা রাস্তা ধরে খানিক হাটলাম। বেশ কিছু মানুষের সাথে তার কথা হল। এখানে দুটি বাংলা পত্রিকা আছে যা স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত হয়। সেখানেও আলতাফ ভাই লিখে থাকেন। আমরা অন্য একটি মসজিদে আসলাম মাগরীবের নামাজ আদায়ের জন্যে। মাইকে আযান দেওয়া নিষিদ্ধ,এতে নাকি শব্দ দূষণ হয়;তবে মাইকে সর্বোচ্চ ভলিউমে মিউজিক্যাল অনুষ্ঠান,অন্যান্ন অনুষ্ঠানাদী পালন করলে তা শব্দ দূষন ঘটায় না। এখানে নামাজের সময় দেখলাম স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না। এরা বেশ নামাজী। ভীড়ের কারনে আলতাফ ভায়ের পাশে দাড়িয়ে নামাজ পড়তে পারলাম না। পিটপিট করে বৃষ্টি পড়ছে। আজ দুপুরের পর থেকেই একটু ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া। এর মধ্যেই বিদায় নিলাম।

এরপর আমি একটা চায়নিজ ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে কিছু কেনাকাটা করে নিকটবর্তী ট্রেন স্টেশনে আসলাম। এখান থেকে আমার জন্যে সরাসরি ট্রেন নেই। লিভারপূলের ট্রেন আসতে ৪৫ মিনিট লাগবে। অপেক্ষায় থাকলাম। এসময় দেখলাম বিভিন্ন স্থান থেকে আগত যাত্রীদের অনেকেই মুসলিম। এ দৃশ্য আমার ভাল লাগল। ইসলামের প্রতি আবেগই এর কারন।

বসে বসে কল্পনা করছিলাম যদি প্রকৃত ঈমানদার স্ত্রী পেতাম কতই না ভাল হত ! উত্তম স্বামী/স্ত্রীর ন্যায় শ্রেষ্ঠ সম্পদ মানুষের জীবনে আর হতে পারে না। মনে মনে আশা করলাম একজন উত্তম নারী আসুক এবং তার সাথে বাকী জীবন কাটিয়ে দেই। সে হবে এমন একজন,যাকে দেখে ভাল লাগবে,আত্মা প্রশান্ত হবে,যে আমাকে সত্যের পথে সহযোগীতা করবে। ভাবনার এ পর্যায়ে একটি ট্রেন এসে থামল এবং একটি কালো রঙের হিজাব পরিহিতা এক মেয়েকে দেখলাম বের হয়ে আসল,বোধহয় লেবানিজ বা অন্য কোনো অরব দেশের হবে। হুবহু আমার কল্পনার অনুরূপ। কিন্তু ব্যাপারটা কল্পনাতেই থেকে গেল.....। আরও কিছুক্ষন অপেক্ষার পর লিভারপুলের ট্রেন ধরলাম। সেখান থেকে ক্যাম্পবেল টাউন হয়ে ইঙ্গেলবার্ন ফিরতে অনেক সময় লেগে গেল।



চলবে.......

বিষয়: বিবিধ

২৩৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File