ওল্ড চায়না (অনেক ছবি আছে)
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৯ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:৫৩:৩৯ সকাল
আজ সকাল থেকে আকাশটা মেঘলা। একটু ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। পিংহুতে বৃষ্টিপাত বেশী। পাশেই সাগর,হুটহাট আবহাওয়া খারাপ হয়ে ওঠে। কখনও কখনও সারাদিন ব্যাপী পিট পিট করে বৃষ্টি হতে থাকে। এখানে যেন মাটির দেখা পাওয়া দুষ্কর। পুরো শহর টাইলসে বাঁধানো এবং পরিচ্ছন্ন। বৃষ্টির সময় বেশ ভাল লাগে। পানির নিষ্কাষণ ব্যবস্থা এতটাই উন্নত যে ভারী বৃষ্টিপাত শেষ হলেই সব পানি নেমে যায়। কোথাও পানি জমে থাকার পরিবেশ নেই লেক ছাড়া। মশক বাহিনীর উৎপাত নেই। চারিপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে মশা জন্মাতে পারে না। এছাড়া এরা বিভিন্ন সময়ে কিটনাশক ব্যবহার করে মশার বংশ বিস্তারে বাধা প্রদান করে। তবে গগন বিদারী শব্দে ফেটে পড়া উদ্ভট ফগার গান কাওকে চালাতে দেখিনি। এ যন্ত্র কয়েক যুগ আগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ব্যবহার করত। শুনেছি আমাদের দেশের মশক কূলের টিকে থাকার যোগ্যতা অনেক বেশী। অবশ্য ভেজাল কিটনাশক এবং তাও যদি হয় পরিমানে অপ্রতুল তাহলে তো তা মশার দেহকে মূল্যবান পারফিউমে সুবাশিত করবেই। তাই ভুরভুরে গন্ধ মেখে নেচে গেয়ে তারা আমাদের কানের আশপাশটা মাতিয়ে রাখে।
ম্যানেজার সাহেব আসলেন। আজ চায়নিজ ট্রেডিশনাল পোষাক পরেছি। ভেতরে স্কিনটাইট পাতলা সুয়েটার কাম টি-শার্ট। নীচে মানানসই জিন্স,সু আর ক্যাপটা বরাবরের মতই অভ্যাসবশত: উল্টো হয়ে আছে। ম্যানেজার একবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিয়ে উচ্চসিত প্রশংসা করলেন তারপর মহা সৌজন্যতায় গাড়ির দরজা খুলে স্বাগত জানালেন। এটা গত দিনের গাড়ি নয়। চমক দেখানোর জন্যে এরা অনেক বিলাসী আচরণ করে।
রাস্তা-ঘাটে তেমন গাড়ি নেই। প্রশস্ত সড়ক ধরে এগিয়ে চলছি। হঠাৎ অডিও প্লেয়ার থেকে বাংলা গানের সূর শুনে চমকে উঠলাম। বিশ্বয়বোধক চিহ্ন নিয়ে তাকালাম। তিনি হাসলেন এবং বললেন,এই শিল্পীকে আমি চিনি। কয়েকমাস পূর্বে যখন ঢাকা গিয়েছিলাম,তখন শিল্পী আমাকে এটা উপহার দিয়েছেন। সাধারনত আমার গান শোনা হয়না। কোনো গাড়িতে যদি কখনও বাজে তাহলে শুনি। কিন্তু পছন্দের গান ছাড়া শুনতে ভাল লাগার কোনো কারন নেই। সে আমার সৌজন্যে বাংলা গান ছেড়েছে বটে,তবে তা আমাকে কোনোভাবেই খুশী করল না। এই শিল্পীর নাম গন্ধও আমি জানিনা। গানের নামে এভাবে কাওকে বিরক্ত করার জন্যে তাকে আইনের আওতায় আনা উচিৎ। পরিবেশটা এমনভাবে তৈরী হল যে, গানটা বন্ধ করার অনুরোধ করতে পারলাম না। বাজতেই থাকল এবং পুরোটা শেষ হয়ে আবারও প্রথম থেকে শুরু হচ্ছিল। আমার গা জ্বালা করতে লাগল গান শুনে। শিল্পী তার বন্ধু হওয়াতে তার বিপক্ষেও কিছু বলতে পারছিলাম না। এরমধ্যে ম্যানেজার সাহেবের একটি গান আবার দারুন পছন্দ হয়েছে। সে গান আবার তাকে তরজমা করে শোনাতে হল। বিরহের গান শুনলে এমনিতেই আমার মাথায় খুন চড়ে যায়,তাও আবার এমন সূরে গাইছে যেন ওর চৌদ্দ গুষ্টি মরে গেছে।
এক সময় বললাম,আমি কিন্তু চায়নিজ সঙ্গীত পছন্দ করি। যদিও অর্থ বুঝিনা কিন্তু সূরটা বেশ ভাল লাগে। তোমার কাছে থাকলে একটা চালাও। সে চালালো কিন্তু সেটার সূর আমার মোটেও ভাল লাগল না। কিন্তু জিজ্ঞেস করার পর বললাম,এটা খুব ভাল। সে বলল-তাই ! এটা তো আমার খুবই পছন্দের। আবারও বিপদে পড়লাম। একই গান আমাকে কয়েকবার শুনতে হল। পুরো সিডি থেকে সে ওই একটি গানই শুনল এবং শোনালো। খানিকপর কিভাবে জানি সে বুঝল আমার এটা আর ভাল লাগছে না,তখন সে আবার সেই বাংলা সিডিটা চালিয়ে দিল। শিল্পীর ছ্যাকা খাওয়া বিষাদমাখা গান শুনে কারো কান্না পেলেও পেতে পারে কিন্তু আমার মাথায় রক্ত উঠে রইল। ম্যনেজার বোধহয় আজ ওর শিল্পী বন্ধুর মরন চাচ্ছে। নইলে এভাবে উঠে পড়ে লাগবে কেন ?
সে তার মোবাইল বের করে সেই শিল্পীর নাম্বার বের করে আমাকে দিল। গা জ্বলে গেল। তারপর শিল্পীকে ফোন করে আমার সাথে কথা বলিয়ে দতে চাইল। পিত্তিটায় আগুন ধরে গেল,তবে সর্বদা মুখে মধুহাসি। বিনয়ের সাথে বললাম ঢাকায় ফিরে শিল্পীকে ফোন করে গল্প করব , এখন প্রকৃতি দেখতে মন চাচ্ছে। কথা ঘুরিয়ে চারপাশের সৌন্দর্য্যে মনোনিবেশ করলাম। শিল্পীও বাঁচল ,আমিও বাঁচলাম।
সত্যিই সৌন্দর্য্যের তুলনা হয়না। অসাধারন ! বৃষ্টিভেজা প্রশস্ত রাস্তা। ফুটপাথে নানান কারুকাজ এবং বাহারী ফুলের গাছ। নাম না জানা গাছ গাছালিতে ভরপুর কোনো কোনো স্থান। আমরা ছুটে চলেছি। কখনও চমৎকার লেক,তার চারিপাশটা পাথর আর কংক্রিটের তৈরী,পাশ ধরে সারিবদ্ধ সবুজ গাছ। একটু ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া। খুব ভাললাগা কাজ করল। আমাদের গন্তব্য চীনের প্রাচীন একটি অঞ্চল। একটি পুরোনো শহর যা তৈরী হয়েছিল তিন হাজার বছর পূর্বে।
প্রায় দুইঘন্টা ড্রাইভ করে আমরা এমন একটি বিশাল প্রাঙ্গনে উপস্থিত হলাম যেটা দেখলেও মন বড় হয়ে যায়। সম্ভবত কয়েক হাজার গাড়ি এই পার্কিং লটে নির্দিধায় ধরে যাবে। পুরোটাই কালো পাথুরে ইটের তৈরী। দেখলে মনে হবে বহু প্রাচীন কালের কোনো নগরপ্রাঙ্গন। এখানে গড়ি রেখে আমরা ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে ছাতা নিয়ে হাটতে থাকলাম। বৃষ্টির ধারা এমন যে তা ভিজিয়ে দিচ্ছেনা তবে একটানা অনেকক্ষন ধরে গায়ে লাগলে জামা কাপড় ভিজে যেতে পারে। হাটতে হাটতে কালো টাইলসের প্রাঙ্গন পেরিয়ে তিন ধাপের প্রশস্ত সিড়ি দিয়ে দুই ফুট ওপরের স্তরে আসলাম। এখান থেকে হেটে কাঠের আঙিণায় পৌছে গেলাম। শতশত টন মূল্যবান কাঠের সমান্তরাল খন্ডকে সারিবদ্ধভাবে বিন্যস্ত করে এটি তৈরী করা হয়েছে। এটা মিশেছে একটি চিকন লেকের ওপর তৈরী একই সমান্তরালে থাকা চারটি সুদর্শণ সেতুতে।
লেকের দুপাশের রেলিং বড় ও দীর্ঘ গাছের কান্ড দিয়ে তৈরী। সেতুর পাশে এবং লেকের পাশে রয়েছে দীর্ঘ বাকল সমৃদ্ধ গাছ। আমরা অল্প কয়েক কদমে লেক পার হলাম। এপাশে পুরোনো রীতিতে তৈরী বিশাল কিছু বাড়ি রয়েছে। এর চারপাশে সু-প্রশস্ত আঙিনা,যা বিভিন্ন রঙের মার্বেল টাইলস ও কংক্রিটের তৈরী।
আমরা একশত ষাট ইউয়ান দিয়ে দুটি প্রবেশ টিকেট কিনলাম। পুরোনো মডেলের বাড়ির ভেতরে থাকা আধুনিক কম্পিউটারাইজড মেশিনে টিকেট পাঞ্চ করে ভেতরে প্রবেশ করলাম। আহ কি সুন্দর !
বৃষ্টি থেমে গেছে। রাস্তা ভেজা। রাস্তার দুপাশের ঘাসের ওপর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ফোটা দৃশ্যমান। এখানথেকে একটা লেক শুরু হয়েছে যা নদীর মত এঁকে বেঁকে কয়েক কি:মি: পর্যন্ত চলে গেছে।
শুরুর এ অংশে বেশকিছু দোকানপাট আছে যারা নানান সুভেন্যির বিক্রী করছে। কাঠ,বাঁশের বিভিন্ন দ্রব্যাদী,পোড়ামাটির পুতুল,খেলনা,বাঁশি,জুতো,হাতে তৈরী কাপড়সহ বহু রকমের জিনিসপত্র বিক্রি করতে দেখলাম। বেশকিছু খাবার দোকান,রেস্টুরেন্টও রয়েছে। দেখলাম কয়েকটি দোকান তৈরী করা হচ্ছে গাছের ছালযুক্ত ডাল এবং কাঠের গুড়ি দিয়ে। এখানে যা কিছু তৈরী হয়,তা সব পুরোনো রীতি রীতি অনুযায়ী। বামে লেক তারপর সবুজ ঘাস এবং বিভিন্ন গাছগাছালি,ডানে রাস্তা এবং রাস্তার ডানে অনুরূপ গাছগাছালি এবং ফুলের বাগান। বৃষ্টিস্নাত প্রায় মসৃণ রাস্তা ধরে এগিয়ে চললাম। লেকটি এঁকে বেঁকে চলে গেছে ।
আরেকটি ছোট সেতু পার হলাম। সবগুলো সেতু প্রায় একই রকম ডিজাইনের। এপাশ থেকে অর্ধগোলাকৃতিতে ওপারে গিয়ে মিশেছে। সিড়ি বেয়ে ওপরে উঠে সমতল তারপর আবার সিড়ি দিয়ে নীচে নামা। পুরোটাই নানান পাথরের কারুকাজ। লেকের দুধারে মানুষের বসবাস। শুরুর এ অংশে বাড়িঘর নতুন মনে হচ্ছে। এরা মূল জনপদের বাসিন্দা নয়।
আমরা প্রাচীন জনপদের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। লেকের ওপর নানান স্থাপনা তৈরী হয়েছে।
একটি রেস্টুরেন্ট দেখলাম যেটার নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এটি একইসাথে সেতু এবং রেস্টুরেন্ট। আরও একটি দৃষ্টিনন্দন সেতু পার হয়ে একটি সুন্দর পার্কে প্রবেশ করলাম। এ পার্কের অংশের লেকের পাড় বড় বড় পাথরের চাক দিয়ে তৈরী। কোথাও কোথাও সিড়ি নেমে গেছে পানিতে। কিছু প্রাচীন বাড়ি দেখলাম,যার সিড়ি নেমে গেছে পানিতে। পূর্বে বোধহয় এরা এখানে গোসল করত অথবা নৌযান ভিড়ত এখানে। লেকটি আসলে বহু পূর্বে একটি নদী ছিল। কালের কবলে পড়ে এটি এখন মূল থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে স্রোতহীন বয়ে চলেছে। তবে কয়েকযুগ পূর্বে এটি বেশ গভীরভাবে খনন করে দুপাড় কংক্রিট দিয়ে বাধানো হয়েছে।
হেটেই চলেছি,এবার একটি কাঠের সেতু পার হলাম। ওপারে বেশ ঘনবসতি। একটি চমৎকার বিশ্রামাার চোখে পড়ল। এই এলাকাটি একটি বিখ্যাত পর্যটন এরিয়া। প্রচুর লোকসমাগম দেখলাম। এখানে লেকটা বা নদীটা চওড়ায় প্রায় একশ ফুট হবে। বামপাশ ধরে হাটতে থাকলাম।
এখানে ছোট ছোট ঘরবাড়ি। দারিদ্রের চিহ্ন সুস্পষ্ট। এখনও মানুষ সেখানে বসবাস করছে। বহুকাল পূর্বে এ নদীর তীরে মানুষেরা বসবাস শুরু করে। প্রাচীন প্রায় সকল সভ্যতাই নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে দেখা যায়।
সভ্যতা বিকাশে নদীর অবদান অনেক। নদীর পানি পান করা এবং তা দিয়ে কৃষিকাজ চলত। পরবর্তীতে নৌযান এসে মানুষকে যাতাযাতের ব্যস্থা করে দেয়। নৌযানের ইতিহাস আমার জানা নেই ,অবশ্য ইতিহাস লেখা হয়েছে বেশীদিন হয়নি। হযরত নূহ(আঃ) এর নৌকা তৈরীর ঘটনা আল কুরআনে এসেছে। যদিও সময় সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়না,তারপরও এটি যে বহু হাজার বছর পূর্বের ঘটনা তা বলা যায়। একদল বিশেষজ্ঞ অবশ্য তৎকালীন জুডি পাহাড়ের(সিরিয়া) ওপর একটি বিশাল নৌকার ধ্বংসাবশেষ অবিষ্কার করেছেন কিন্তু এটাই যে সেই নৌকা তা নিশ্চিত করে বলা যায়না।
যাইহোক এখানে এই সরু নদীতে নৌকা চলতে দেখে যে কোনো লোকেরই ভাল লাগবে। তবে এখন আর তারা নিজেদের প্রয়োজনে নৌকা তেমন ব্যবহার করেনা,এরা পর্যটকদেরকে ভ্রমনের জন্যেই তাদের নৌকা ব্যবহার করে। নৌকাগুলো কাঠের তৈরী এবং এরমধ্যে পিতল,লোহারও কারুকাজ করা আছে।
নৌকার ওপরে ছাদ তৈরী করা হয়েছে কাঠ এবং বাঁশের চাচ দ্বারা। নৌকার মাথা চারকোনাকৃতির। এগুলো ইঞ্জিনচালিত তবে ইঞ্জিনের শব্দ জোরালো নয় এবং এগুলো বেশ ধীর গতির। পেছনে রয়েছে একটি কাঠের হাল,যেটি ধরে আছে চালক। কখনও বৃষ্টি হচ্ছে কখনও থামছে তাই নৌকার চারিপাশে কাপড়ের পর্দা টাঙানো হয়েছে। আমার খুব লোভ হল নৌকাগুলো দেখে। আমার মনে হচ্ছিল ফ্লাশব্যাক করে অনেক প্রাচীন কোনো নগরীতে চলে এসেছি। বিশেষ করে খুব ছোটবেলায় দেখা একটা স্বপ্নের কথা মনে পড়ল। আমাদের বাড়ির পাশের রেল লাইন,সুইপার পল্লী পার হয়ে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই কাচা বাজার। স্বপ্নে দেখলাম কাচা বাজারের স্থলে একটা নদী অথবা লেক,যার পুরোটাই ছোট ছোট সবুজ শ্যাওলায় ঢাকা। সেখানে ছোট ছোট নৌকা ভেড়ানো রয়েছে। বহু সংখ্যক নৌকা সারিবদ্ধভাবে সাজানো। বাঁশের খুটির সাথে সেগুলো বাধা। পানির মধ্যেও বিভিন্নভাবে বাঁশ পোতা রয়েছে,বোধহয় বাশের সাঁকোও ছিল। কোনো মাঝিকে দেখলাম না। আমি একটি ঘরের বারান্দায় দাড়িয়ে আছি মাঝির অপেক্ষায়,মামু বাড়ি যাব। সে সময় মামু বাড়িতে নৌকায় চড়ে যেতাম। বৈঠা চালিত সেসব নৌকায় উজান স্রোতে ১৪/১৫কি:মি: পথ পাড়ি দিতে দিন পার হয়ে যেত। মানুষের অত্যাচারে কপোতাক্ষ নৌকাশুণ্য হল প্রায় এক যুগ হয়ে গেল। চায়নার মত কেউ সেসব স্মৃতি সংরক্ষনে এগিয়ে আসল না।
মামু বাড়ি যাওয়া ছিল আমার কাছে সবথেকে আনন্দের,অতি ছোটকালের সেসব স্মৃতির অনেকটাই ভুলে গেছি কিন্তু সুন্দর সেই স্বপ্নের কথা আজও মনে আছে। এখানকার নৌকা দেখে মনে হল এই নৌকাতে চড়তে পারলে ভাল লাগত। আমি আশা প্রকাশ করলে ম্যানেজার নৌকা চড়াতেন,এমনকি তিনি প্রস্তাব করাতেও আমি রাজি হয়নি। কারন খানিকক্ষনের জন্যে চড়লেও অনেক পয়সা খরচ হয়। আমি চাইনি তিনি এটা খরচ করেন,আর আমার পকেটের অবস্থাও ভাল ছিলনা। নইলে আমি অবশ্যই এতে চড়তাম।
আমরা এমন একটা এলাকার মধ্য দিয়ে চলছি যেটা সাংঘাতিক ঘনবসতিপূর্ণ এবং প্রাচীন। ছোট ছোট একতলা ঘর ,যার ছাদে টালি বসানো রয়েছে। ভেতরে কাঠের কারুকাজ এবং বহু প্রাচীন কালের কাঠ হলেও তা তেমন নষ্ট হয়নি। স্থানটি তেমন পরিচ্ছন্ন মনে হলনা। লোকজন ঠাসাঠাসি করে বসবাস করে। এটি পর্যটন এরিয়া হওয়াতে শতশত দোকানপাট গড়ে উঠেছে। বেশীরভাগই স্থানীয় সস্তাগোছের পণ্য। এসকল পণ্যের অধিকাংশই আমার দৃষ্টিতে অপ্রয়োজনীয়। তবে তা বেশ বিক্রি হতে দেখলাম। কোনো বিশেষ স্থানে এসে বেশীরভাগ মানুষ কিছু না কিছু কিনে নিয়ে যায়। অনেকে স্মৃতি সংরক্ষণ করে আনন্দ পায়,আমিও ব্যতিক্রম নই। তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বিষয়টি আমি মস্তিষ্কে জমা রেখে অনন্দ লাভ করতে চাই। এতে পয়সা খরচের সম্ভাবনা নেই। তবে পয়সা আমি দেদারছে খরচ করি। আমার পয়সা খরচের খাতের মধ্যে অন্যের অধিকার বেশী। অপরকে আনন্দিত হতে দেখে নিজের মনে যে আনন্দ উপভোগ করা হয় তাই’ই আত্মিক এবং এটাই প্রকৃত আনন্দ।
আমরা একটি বিশেষ হলরুমে প্রবেশ করলাম। এখানে এসেও আমাদের টিকেটটি পাঞ্চ করতে হল। এখানে এ অঞ্চলের প্রাচীন নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে। সেখানে আমি কিকি দেখেছিলাম তা এখন মনে করতে পারছি না। তবে বেশ প্রাচীন কিছু জিনিস দেখেছিলাম। কিছু বৌদ্ধ মূর্তি ছিল। তবে ছবি না তুলে ভুল করেছি। ছবি দেখে খানিক বর্ণনা করা যেত। আমার স্মৃতিশক্তির দশা দেখে নিজেরই মায়া লাগছে। সৈয়দ মুজতবা আলী তার ‘দেশে বিদেশে’ নামক ভ্রমন কাহিনী ভ্রমনের ৬ বছর পরে লিখেছিলেন। তার বর্ণনা পড়ে মনে হয়েছে তিনি বোধহয় ঘটনা দেখে দেখে লিখেছেন। আর আমি ঘটনার ৫ মাসের মাথায় ঘটনা মনে করতে হিমশিম খাচ্ছি। যাক, তার সাথে নিজের তুলনা করে তাকে অপমান করার ইচ্ছা নেই। আমি বরং যা পারি তাই লিখি।
আমরা একটি ছোট বৌদ্ধমঠে প্রবেশ করলাম। এখানে একটি ব্যতিক্রমী বুদ্ধ মূর্তী আছে। সারা পৃথিবীতে এটাই একমাত্র দাড়িওয়ালা বুদ্ধ। ভেতরে ঢুকতেই দেখলাম একটি লোহার স্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে। এর দুটি ছাদ এবং উচ্চতা সব মিলিয়ে ১২ফুটের মত হবে। এর গায়ে অনেকগুলো ঘন্টা স্থাপন করা হয়েছে। এটি স্থানান্তর করা যায়। এরপরেই রয়েছে একটি প্রাচীন ঘর,যেটি তেমন বড় নয়। তবে এটি তিন হাজার বছরের পুরোনো। ঘরের ছাদে পোড়ামাটির টালি ব্যবহৃত হয়েছে,তার নীচে অর্থাৎ ঘরের ভেতরের পাশে মসৃন টাইস ব্যবহৃত হয়েছে। পুরো ঘরের রং লাল। ভেতরে কাঠের কারুকাজ করা। পূর্বে ইট দিয়ে এটি তৈরী হয়েছিল কিনা জানিনা তবে বর্তমান সংষ্করনে ইটের কাজ চোখে পড়েছে। আমি এখানে ঢুকেই ছবি উঠিয়েছি। বলা যায় এটা আমার একটা চালাকি স্টাইল। যখনই আমি কোনো স্থান দেখে বুঝি ,এটি বেশ গুরুত্বপুর্ণ তখনই ছবি তুলে ফেলি। পরক্ষনেই দেখা যায় কেউ নিষেধ করছে,কারন ছবি তোলা নিষেধ। তখন আমি দুঃখ প্রকাশ করি। এভাবে আমি বহু বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেছি,আবার বহু স্থানে গোপন ক্যামেরায় ছবি উঠিয়েছি। দুটো ছবি তোলার পর ম্যানেজার সাহেব বললেন এটা নিষিদ্ধ। আমি ক্ষ্যান্ত হলাম। তবে দাড়িওয়ালা বুদ্ধকে তেমন সুন্দরভাবে তৈরী করা হয়নি। দাড়িওয়ালা বুদ্ধকে অপরিচিত লাগছিল। এর বিশেষত্ব হল,এটি প্রাচীন। তবে বাস্তবে গৌতম বুদ্ধ কখনও দাড়ি রেখেছিলেন বলে আমার জানা নেই। এই মঠে বেশ কয়েকটি বড় বড় ঘর রয়েছে,যা একই রকম ডিজাইনের তবে সেসব ঘরের রং হলুদ। মনে হল সম্মানিত ঘরগুলোর রং লাল। ধারনা করছি লালগুলো প্রার্থনা করার জন্যে আর হলুদ বাড়িগুলো ভিক্ষুদের থাকার জন্যে। একসময় এখানে অনেক বৌদ্ধ-ভিক্ষু থাকত,ধর্ম চর্চা করত কিন্তু কালক্রমে তা এখন শো-পিছ হিসেবে টিকে রয়েছে। যে কোনো প্রাচীন জিনিস দেখতে আমার ভাল লাগে। আধুনিক সভ্যতার কাছ থেকে বেশ কিছু জরুরী সুবিধা না পেলে আমি হাজার বছর পেছনে গিয়ে বসবাসের ইচ্ছা প্রকাশ করতাম,যদিও এটি অবান্তর।
হাটতে লাগলাম। প্রচুর মানুষ এসেছে এখানে। কোথাও কোথাও মানুষের জ্যাম তৈরী হয়েছে। ছোট ছোট খোলামেলা খাবার দোকানে মানুষের ভীড় বেশী। সেখানে সিংগাড়া,সমুচার মত কিছু জিনিস ভাজা হচ্ছে,ফ্রেন্সফ্রাই,চিংড়ী মাছ আরও কত কি । আমরা এসব সস্তা খাবার খাবনা। তবে আমি একা থাকলে এ জিনিসের স্বাদ না নিয়ে ফিরতাম না। রাস্তার পাশে দেখলাম একজন বড় একটি কাঠের পাত্রে ময়দার খামির জাতীয় একটা জিনিসের ওপর বড় কাঠের হাতুড়ী দিয়ে ক্রমাগতভাবে পেটাচ্ছে। থামলাম এবং দেখলাম কৌতুহলী কেউ কেউ লোকটির কাছ থেকে হাতুড়ী নিয়ে পেটাচ্ছে। ভারী মজা, আমিও নিয়ে দু ঘা বসিয়ে দিলাম। জিনিসটি আসলে চালের তৈরী।
চালের সাথে আরও কিছু মিশিয়ে হাতুড়ি পেটা করে তাকে মন্ডে পরিনত করা হয়। এটা হয় একটু আঠাল,খানিকটা চুইংগামের মত। এরপর এটি ছোটো ছোটো পিছ পিছ করে কেটে একটি পাউডার জাতিয় জিনিসের সাথে মিশিয়ে বিশেষ প্যাকেটে করে বিক্রিী করা হয়। এ ঐতিহ্যবাহী জিনিসটি না খেলে আত্মা কষ্ট পাবে। কেনা হল। পুরোটাই ম্যানেজার খেল ভক্তি করে। আমার কাছে এটি অন্যতম অখাদ্য। এর স্বাদ বর্ণনা করছি শুনুন:-কতক আটা নিয়ে পানি দিয়ে চটকাতে থাকুন। খানিক পর খামির তৈরী হলে হাত দিয়ে কেটে গোল গোল করুন। এবার এটি আটার গুড়োর মধ্যে ছেড়ে দিন এবং উঠিয়ে মুখে পুরে দিন। কেমন লাগবে আপনি বুঝে নিন।
আবারও হাটলাম। নদীর ধারে কোথাও কোথাও মানুষের বিশ্রামের জন্যে বিশেষভাবে কিছু বিশ্রামাগার নির্মিত হয়েছে। সেগুলোতে বসতে মন চায়,কিন্তু আমি হেটেই চলেছি।
নদীর এপার থেকে ওপারে তাকালে সারিবদ্ধ বাড়িঘর চোখে পড়ে। ওপারে ঠিক পানির ওপরেই বাড়িগুলো নির্মিত হয়েছে। সেসব বাড়ি ঘরগুলো ছোট ছোট। দেখে বোঝা যায় এগুলো বহু পুরোনো। অতীতে এরা বাড়ি থেকে বের হয়েই নৌকাতে উঠে কোথাও যেত। অনেকের বাড়ির সামনে নৌকা বাধা রয়েছে।
আমরা আসলাম ড্রাংক গার্ডেনে।এটি তৈরী হয়েছে প্রাচীন ইট,আনহুই ইট,এলিফেন্ট পুল রক,কাঠ,বাঁশের সমন্বয়ে। বর্তমানে এটি একটি ছোট আর্ট গ্যালারী। এর দায়িত্বে আছেন একজন প্রফেসর,তিনি একজন চমৎকার চিত্রকর। এখানে বনসাই এর একটি ক্ষুদ্র গার্ডেন আছে। স্থানটি আমার খুব পছন্দ হল। ছোট ছোট ঘর কিন্তু ঘরের বারান্দার সাধে ছোট জলাধর এবং তার ওপাশে বনসাই এবং অন্যান্য গাছ,লতাপাতা। বিভিন্ন স্থানে পাথর স্থাপন করা হয়েছে বিষয়টিতে আরও পুরোনো প্রাচীন আবহ আনার জন্যে। এখানে ছোট ছোট গাছের মধ্যে ছোট মন্দীর তৈরী করা হয়েছে এবং বাড়িঘর ,কোথাও পানির ফোয়ারা। কাছ থেকে দেখেও মনে হবে বহু দূর থেকে কোনো পুরপূর্ণ প্রাচীন নগরীকে দেখছি।
একটা ঘরে ঢুকে দেখলাম মূল্যবান মসৃন পাথরের তৈরী চেয়ার টেবিল। ঘরটি কাঠের তৈরী। ঘরের দেওয়ালে ঝুলানো সাদকালো ছবি দেখে ভাবছিলাম এগুলো নিশ্চয়ই হাজার বছরের পুরোনো। খুব ভক্তি নিয়ে দেখছিলাম। খানিকপর দেখলাম প্রফেসর সাহেব মন দিয়ে চিত্র অঙ্কন করছেণ এবং বিশেষ একধরনের কালির কারনে তার অঙ্কিত চিত্র প্রাচীন দেখাচ্ছে।
তার চিত্রের বৈশিষ্ট্য হল,এটি বহু সংখ্যক রেখার সমন্বয়ে তৈরী। কোনো কোনোটা দেখে মনে হচ্ছে এটাতে ব্রাশের সাহায্যে অঙ্কন করা হয়েছে কিন্তু না,কাছ থেকে দেখলে স্পষ্ট বোঝা যায় সেখানে রেখার ঘনত্ব বেশী। মনেজার এই প্রফেসর সাহেবকে চিনতেন। তারসাথে ভাব বিনিময় হল। তারকাছ থেকে ম্যানেজার একটি চিত্র কিনলেন। একটি ঘরে ঢুকলাম,এটি দেখে মনে হল বহু পুরোনো। বহু পুরোনো কাঠের দরজা,সিলিং এবং কাঠের দেওয়াল দেখলাম। ভাল লাগল। পুরোনো জিনিসে হাত বুলানোর মাঝেও আরাম আছে।
বের হয়ে আসলাম। এদিকে নদী একটু সরু হয়ে এসেছে,আনুমানিক ৪০ফুটের মত হবে। এখানে একটি ছোট সেতু রয়েছে।
সেখান দিয়ে এপার ওপার মানুষ যাতায়াত করে। আরও হাটলাম। নদীর ওপারে কোনো কোনো বাড়ি একতলা,কোনোটা দ্বিতল। কোথাও কোথাও সেখানথেকে সিঁড়ি এসে পানিতে নেমে গেছে। সবগুলোর ওপরের দৃশ্য একই রকম। ওপরে টালি দেওয়া। বহুদিনের পুরোনো হওয়াতে ছ্যাদলা পড়ে তা কালো হয়ে গেছে। এসব বাড়িগুলোতে মানুষ বসবাস করছে নিশ্চিন্তে। অনেকগুলোকে আবার রেস্টুরেন্টও বানানো হয়েছে। কিছু আছে মদের বার। এবার একটি তুলনামূলক প্রশস্ত সেতুর ওপর আসলাম। দেখলাম অনেক মানুষ এখানে বসে আছে। সিড়ি দিয়ে সেতুর ওপরে উঠলেই সমতল বসার স্থান। ওপরে ছাদ আছে। অনেক লোককে দেখলাম বসে গল্প করছে।
এখানে নৌঘাট রয়েছে। সাতার না জানা লোকেরা গায়ে বিশেষ জ্যাকেট পরে নৌকায় চড়ছে। এখান থেকে নদীটি অজানার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। প্রাচীন নগরীর এটাই শেষ তবে নদীর ওপারটা তো দেখা হয়নি,তাই সেতুটি পার হলাম।
এপারে বাজার ঘাট রয়েছে। অনেক রেস্টুরেন্ট,বার দেখলাম মানুষে পরিপূর্ণ। রাস্তাগুলো সরু এবং সেটা ছোট ছোট পাথরের ইট দ্বারা নির্মিত। ফানফুর্তির আবহ তৈরী করা হয়েছে এখানে। ওপারের চাইতে এপারে জাঁকজমক বেশী। লম্বা কাঠিতে গাথা আলুর চিপ্স খেলাম। এখানে জামা,কাপড়,প্রসাধনী,সুভেন্যির,খাবার সব রকমের দোকান পাট দেখলাম।
একজন আর্টিস্ট দেখলাম মুখে হাত দিয়ে বসে আছে। সে কিছু টাকার বিনিময়ে মানুষের চিত্র আঁকে। মানুষের বোধহয় খায়েশ কমে আসছে। মানুষের কিছু কিছু অপ্রয়োজনীয় খায়েশের ওপর নির্ভর করে যাদের জীবন জীবিকা নির্ভর করে,তাদের জন্যে শুভ সংবাদ সোনার হরিণ হয়ে গেছে।
একখানে দেখলাম একটি বিশাল কাঠের চাকা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। প্রথমে ভাবলাম গরুর গাড়ির চাকা বোধহয়; কিন্তু গরুরগাড়ির চাকা তো এতবড় হবার কথা নয়। পরে বুঝলাম এটি আসলে প্রাচীন পানি পাম্প করার যন্ত্র। এটা কোনো জলাধরে ঘুরলে এর ভেতরের পাশে চক্রাকারে অবস্থিত অনেকগুলো প্লেট পানি তুলে একটি বড় পাত্রের ওপর ফেলে এরপর সেখান থেকে ড্রেনের মাধ্যমে অন্যদিকে প্রবাহিত করা হয়। এদিকের অধিকাংশ বাড়িই দেখলাম দ্বিতল। এপাশে মানুষ দেখলাম বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র কেনাকাটায় ব্যস্ত।
আবারও পিটপিট করে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ছাতাটা খুলে মাথায় ধরলাম। ভাবছিলাম ঢোকার পথে যে চমৎকার ফ্রেন্স ফ্রাই দেখেছিলাম সেটা খাব বেশ,অনেকক্ষণ হাটাহাটি করে ক্ষুধা লেগেছে। কিন্তু আমরা ওপথে ফিরলাম না। এদিকে আরেকটি রাস্তা আছে যা সোজা পার্কিং জোনের কাছে চলে গেছে। এলাকাটি ছেড়ে যেতে মন চাচ্ছিল না। একা আসলে আমি নদীরধারে বসে থাকতাম। এখানে দেখার মত তেমন কিছু হয়ত নেই কিন্তু কি এক পুরোনো গন্ধে মানুষ এখানে বারবার ছুটে আসে। পুরোনো হয়েও যেন এটি পুরোনো নয়। এর আকর্ষণ কমেনি। বারবার পেছনে ফিরে তাকাচ্ছিলাম আর মনের মধ্যে স্থানটির চিত্র গেথে যাচ্ছিল। এ এলাকাটিকে আমি কখনই ভুলব না।
গাড়ির ছিটে বসেও ভাবছিলাম আমি সেখানে হাটছি। আবারও পেছনে ফিরে গেছি। হাজার হাজার বছরের পুরোনো সেই শহরে। আনমনে রাস্তা ধরে হাটছি। পাশেই নদীতে নৌকা চলছে। সরল সহজ মানুষেরা নিজনিজ কাজে ব্যস্ত। আমিই শুধু উদ্দেশ্যহীন হেটে চলেছি। চোখ বুজে অনুভবের চেষ্টা করলঅম।
হা ভাল লাগছে। খুব ভাল লাগছে। কিন্তু না, সুখ আমার কপালে বেশিক্ষণ সহ্য হল না। আবারও সেই বাংলা গান বাজতে শুরু করেছে। স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি গায়ক আমার সামনে মরে পড়ে রয়েছে এবং সেখানে তার নিজের গানটিই করুন সূরে বেজে চলেছে। সূরগুলোও ফার্মগেটের ফকিরদের কাছ থেকে ধার করা। সন্ধ্যায় দারুন একটা ডিনারের পর গায়কের হাত থেকে মুক্তি পেলাম।
বিষয়: বিবিধ
৫৫৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন