নিউ চায়না.... ১৭

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০৯:১৬:৫৬ সকাল



ইব্রাহীম ভাই আর তার বোন

বাস চলতে লাগল। রাস্তাগুলো আসলেই দারুন। চারিদিকের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করতে করতে দুই ঘন্টা কেটে গেল এবং গাড়ি চিশি সিটিতে চলে আসল। এই সিটিতে আমি আরও এসেছি কিন্তু চিনতে পারলাম না। ভ্রদ্র মহিলা আমাকে আমার গন্তব্য জানিয়ে দিলেন,আসলে এটাই শেষ স্টপ। ড্রাইভার আমাকে গেট চিনিয়ে দিল। আমি এগিয়ে যেতেই অপেক্ষমান দুজন ভদ্রলোক আমাকে আমন্ত্রন জানালো। আর চিন্তা নেই। সস্তা দামের মানুষটা কোটি টাকার গাড়িতে চড়ে গন্তব্যে চলল।

দুপুরে অফিসিয়াল মিটিং সেরে লাঞ্চ করলাম কোম্পানীর কর্মকর্তাদের সাথে। তারা আমার জন্যে বেশ ভাল মানের হোটেলের আয়োজন করল। এখানে আমার আরও ১৫দিন থাকার কথা থাকলেও আমাকে আরও আগে ফেরত যেতে হবে। এখানে এরা আমাকে এতটা সম্মান দেখিয়েছে যে তা ভোলার নয়। যদিও এটা ব্যবসা সংক্রান্ত তারপরও ভাল লাগল।

পরদিন সকালে ম্যানেজারের জন্যে অপেক্ষমান থাকলাম। অনেক পূর্বেই তৈরী হয়েছি বলে একটু হাটাহাটি করতে থাকলাম। রাস্তাঘাট এখানে আরও সুন্দর। যে রাস্তায় হাটলাম,সে রাস্তার মাঝ বরাবর অন্তত ১৫ফুট চওড়া ফুলের বাগান এবং আরও আছে তালগাছ,অন্যান্য গাছ। দুপাশেই তিন লেনের রাস্তা। এবং দুপাশেই প্রশস্ত ফুটপাথ,এরপাশেও ফুল ও বিভিন্ন গাছগাছালির বাগান। হঠাৎ একটা ছোট গাছের ডালে চোখ আটকে গেল।



দেখলাম কেউ একজন মনষ্কামনা পূর্ণ করার নিয়তে গাছের ডালে এক প্যাকেট চকলেট রেখে দিয়েছে। ছবি তুলে ফেললাম। মনে মনে হাসলাম। আমি জানতাম ভারতবর্ষের হিন্দুরাই এমন করে কিন্তু এটা আরও অনেক জাতি-গোষ্ঠীর লোক করে থাকে; এমনকি অস্ট্রেলিয়ায় এক বে-ব্রীজের ওপর একই উদ্দেশ্যে তালা ঝুলিয়ে রাখতে দেখেছি। একবার মনে হল চকলেটগুলো নিয়ে খেতে থাকি। কিন্তু পরক্ষনেই মনে হল,ম্যানেজার সাহেব চলে আসলে ব্যাপারটা ভাল দেখাবে না। তারপর মনে হল হাতের নাগালে থাকা চকলেটগুলো এভাবে নষ্ট হবে ! দু-একটা তো খাওয়াই যায়। কিন্তু মানুষিক দ্বিধা-দ্বন্দের কারনে তা আর হলনা। ম্যানেজার আসলে আমরা একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে বহু ধরনের খাবার খেলাম। এখানকার রান্না মোটামুটি ভালই লগল।

এই সিটিতে আমার বেশ কিছু বন্ধু আছে। তারা আমাকে ফোন এবং এসএমএস দিল এবং কখন তারা আমাকে নিতে আসবে সে সময় জানতে চাইল। আমি এতটা ব্যস্ত সময় কাটালাম যে তাদেরকে সময় দিতে পারলাম না।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আমাকে দেশে ফিরতে হবে আর এখানে চায়নিজ হলিডে শুরু হচ্ছে ৪দিন পর। সারা চায়নার অফিস-আদালত আগামী প্রায় ১২ দিন বন্ধ থাকবে। এরা এদের বিশেষ বিশেষ হলিডেতে কেনো রকম কাজকর্ম করেনা। কর্মচারীরা গ্রামের বাড়ি চলে যায় এবং পরিবারের সাথে একান্তে সময় কাটায়। আমার ফ্লাইট পরিবর্তনের জন্যে এখানকার এয়ারলাইন্স কোম্পানীতে ফোন করে জানতে পারলাম যে,আমাকে চারশ পঞ্চাশ ডলার দিতে হবে। অথচ ঢাকা থেকে টিকেট কাটার সময় শুনেছিলাম মাত্র বিশ ডলারে পরিবর্তন করা যাবে। চায়নিজরা অনেক কিছু বুঝেনা অথবা বুঝতে চায়না। এদের কারনে অনেক সময় বিপদে পড়তে হয়। আমি ঢাকায় ফোন দিয়ে আমার বোনকে পেলাম না,সে আজই ব্যাংকক চলে গেছে। আমি যদি এদেরকে এত ডলার দেই তাহলে আমার চলতে সমস্যা হবে। আমি পড়লাম বিপদে। আমি আমার বোনকে মেইল করলাম,পরদিন সে ব্যবস্থা করে ফেলল। ঢাকার ট্রাভেল এজেন্ট ই-মেইলে টিকেটটি পাঠিয়ে দিল। আমি বিপদমুক্ত হলাম।

ইহা চলমান......

বিষয়: বিবিধ

১৫৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File