কী চাওয়া আর কী পাওয়া ! (কাল্পনিক প্রেমের গল্প)
লিখেছেন লিখেছেন সমুদ্রবিলাস ০৫ মার্চ, ২০১৩, ০৭:৩৬:৪৫ সন্ধ্যা
“মামা, দুটা গোল্ডলিফ......আর লাইটারটা দেন” – আমার মুখে এমন কথা শুনে বাড়ীর কাছের দোকানদার বেশ অবাক হলেন। তিনি কল্পনাও করতে পারেননি যে রাত ৮ টার সময় আমার মত ছেলে [বাসারআশপাশের লোকজন আমাকে ‘ভাজা মাছটাও উলটে খেতে পারেনা’ টাইপ ছেলে হিসেবে জানে] এসে তার কাছে সিগারেট চাবে। আমার চোখের উপর হালকা দৃষ্টি বুলিয়ে, একটু দ্বিধান্বিত হয়ে আমার হাতে সিগারেট আর লাইটারটা দিলেন। আমার চোখ তখন টকটকে লাল......যেন এখুনি চোখ ফেটে রক্ত বেরিয়ে আসবে।
সময়টা ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সাল।
দোকানের পাশ দিয়ে যে পিচঢালা রাস্তাটি গেছে, সেটা শেষ হয়েছে একদম কর্ণফুলি পর্যন্ত গিয়ে।রাতের বেলা জায়গাটা একদম নির্জন থাকে। একসময়সিগারেট জিনিসটাকে আমি খুব ঘৃণা করতাম......এমনকি সিগারেটের গন্ধ পর্যন্ত সহ্য করতে পারতাম না। কিন্তু আজ আমি, নিতান্তই জেদের বশে সিগারেট খাচ্ছি......নিজেরউপর নয়, আরেকজনের উপর জেদ করে। বন্ধুরা বলতো, প্রথম প্রথম খেলে নাকি খুব কাশি আসে। তাই আমার মাঝে একটা মানসিক প্রস্তুতি ছিল এই যে, আমি জোর করে হলেও নিজের কাশি আটকে রাখবো । মানে সবার থেকে একটু আলাদা হওয়ার চিন্তা আর কি!!
আমি সিগারেট ধরালাম। প্রথম টানেই মাথার মাঝেজোরেশোরে একটা ধাক্কা লাগলো......আর গলার কাছে কেমন যেন একটা জ্বলে যাওয়া স্বাদ পেতে লাগলাম। ভিতর থেকে কাশির প্রচণ্ড একটা দমক উঠে আসতে লাগলো,কিন্তু আমি একগুঁয়ের মত কাশিটা আটকে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করলাম......এবং সফল হলাম...। প্রথম টানের ধাক্কা সামলে পরের টানটা দিলাম, আগের মত অতটা অস্বস্তি লাগলোনা; কিন্তু মুখের মাঝে, গলারকাছে সেই জ্বলে যাওয়া স্বাদটা পেতেই লাগলাম।অর্ধেকটা টানা শেষ করে বুঝলাম, এখন যদি আমি হাঁটতে থাকি, মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। ধপ করে বসে পড়লাম রাস্তার ধারে ।
তখন পুরো আকাশ ভেসে যাচ্ছে জোছনার আলোয়। চাঁদের আলোয় চারপাশ কেমন যেন অদ্ভুত সুন্দর লাগছে......সাথে হালকা ভুতুড়ে ভাবওনেমে এসেছে পরিবেশটাতে। আমি কাঁপা হাতে সেলফোনটা বের করলাম। যার উপর জেদ করে এতকিছু করেছি, সে sms দিল ।
সে- I am sorry.
আমি- sry তো আমারই বলার কথা । এতদিন তো আমিই তোকে জালালাম । তোকে ৫ মে , ২০১১ তে যখন দেখেছিলাম , তখনই তোর প্রেমে পরেছিলাম । ওই দিনের মত আজকের দিন ও আমার কাছে স্মরণীয় । . . .. . . . . . . .এখন তোকে ভুলার চেষ্টায় smoking শুরু করলাম । . . . . . . .anyway, ur life, ur decision. .i respect it. . . wishing good luck for u.
সে- smoking ! ur life, ur decision, যাই কর , আগে তোর মা বাবার কথা মনে রাখিস । good luck for u too.
আমি- smoker দের আবার কিসের গুড লাক !
আর কোন reply আসল না । বমি আসবে মনে হল । তাও
আমি রাস্তার পাশে বসে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দ্বিতীয় সিগারেটটা ধরালাম। দেখতে লাগলাম ফোনের আগের মেসেজগলো , ফেসবুকে তার ও আমার মেসেজগুলো ।
মেসেজগুলো ডিলেট করতে চাইলেও পারলাম না । আমি সুখটান দিতে লাগলাম। চোখের কোণে হালকা পানি জমেছিলো...গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ার আগেই মুছেফেললাম। যা চলে গেছে, তা নিয়ে আফসোস করে লাভ কি আর...আর যত যাই হোক, ছেলেদের কখনও কাঁদতে নেই। তারপর ও আমার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরছিল।
আর হ্যাঁ, সেদিন থেকেই শুরু আমার ধুম্র-ইতিহাসের! !!
পুনশ্চঃ আমি এখনো তাকেই ভালবাসি । সে যদি ওই একটু জোর করে আমাকে smoking না করতে বলত , তাহলে কখনোই সিগারেট ধরতাম না । তার চেয়ে তো আমার কাছে সিগারেট কখনোই বড় নয় ! কিন্তু সে তোআমাকে বুঝল না !
হে আল্লাহ , আমার জীবনে আর কোন মেয়ে না আসুক ।
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন