নিরাপত্তা ও আত্মরক্ষা
লিখেছেন লিখেছেন সাইফুল ঈদগাহ কক্স ২৫ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:৫৯:২৩ দুপুর
কোনকিছু অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করা বড় কথা। রক্ষার জন্য দরকার সার্বিক নিরাপত্তা। সর্বদা সর্বক্ষেত্রে অন্যরা নিরাপত্তা দিতে পারে না। তাই প্রত্যেকেরই আত্মরক্ষার ব্যবস্থা থাকা দরকার। সর্বপ্রথম আত্মরক্ষার কৌশল জানা থাকতে হবে। অতঃপর প্রয়োজনে তা প্রয়োগ করতে হবে। তাই প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর উচিত বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ইত্যাদির মাধ্যমে আত্মরক্ষার কৌশল শিখে নেয়া। কিভাবে জানের নিরাপত্তা, মালের নিরাপত্তা, সম্মানের নিরাপত্তা, বংশের নিরাপত্তা, বিবেক-বুদ্ধির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় তা শিখতে ও প্রয়োগ করতেই হবে। লাইসেন্সকৃত অগ্নেয়াস্ত্রও সবসময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না। তবে সব ধরনের উপায় অবলম্বন করে স্রষ্টার উপর ভরসা করতে হবে এবং তার কাছেই নিরাপত্তা ও ইজ্জত-সম্মান চাইতে হবে। একমাত্র তিনিই সবাইকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিতে পারেন। তবে প্রত্যেকে নিজ দায়িত্ব পালন করছি কিনা দেখি।
প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপত্তা ও আত্মরক্ষার কৌশল শিখার ব্যবস্থা করে দেয়া সরকারের দায়িত্ব। প্রত্যেক স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসায় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বাহিনী দিয়ে সবাইকে শারিরিক ও মানসিক প্রশিক্ষণ দিতে পারে। এতে ভয়ের বা ক্ষতির কোন কারন নেই। দেশে খুনখারাবি কম হচ্ছে না। আত্মরক্ষার কৌশল জানা থাকলে প্রত্যেকেই অন্তত নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে পারে। এ ব্যবস্থা বিশ্বের অনেক দেশেই কার্যকর আছে। আমরা যদি নিজেদেরকে উন্নতদের কাতারে দেখতে চাই তবে আমাদের সবকিছুই শিখতে হবে, শিখাতে হবে। তখন মাস্তান-ডাকাতরা একটু হলেও চিন্তা করে আগাতে বাধ্য হবে। মন্দ লোকেরা ঠিকই যা দরকার তা শিখে নিচ্ছে, যা পাওয়ার তা পেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভাল লোকেরাই সর্বত্র বিপদে পড়ছে এবং তাদেরকে বিপদে পড়ার জন্য সরকারই বাধ্য করছে, প্রয়োজনীয় বিদ্যা না শিখানোর কারণে। অথচ যা না শিখলেও সবাই এমনিতেই শিখে যায় তাই শিখানোর জন্য কেউ কেউ উঠেপড়ে লেগেছে। যারা পূর্বে যৌনশিক্ষা পড়েনি তারা কি বাচ্চা জন্ম দেয়নি? আত্মরক্ষার কৌশলের মধ্যে সাঁতার শিখা, গাছে চড়া, শত্র“দের মোকাবেলা, প্রাথমিক চিকিৎসা, উপস্থিত বুদ্ধি ইত্যাদি সবই অর্ন্তভুক্ত।
নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাকে যতদিন এক কমান্ডে আনা যাবেনা, ততদিন কোথাও পরিপূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। এক কমান্ডে না থাকার ফলেই বিডিআর বিদ্রোহ, আনছার বিদ্রোহ ইত্যাদি দেখা দেয়। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, আনছার, কমিউনিটি পুলিশ ইত্যাদি সবার কেন্দ্র যখন এক হবে তখন পারস্পরিক ভালমন্দ বুঝাপড়ার সুযোগ হবে। আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমে যে কোন সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। কিন্তু যেখানে এক সাথে বসারই সুযোগ থাকবে না, সেখানে আলোচনা-পরামর্শ ও সমাধান হবে কেমনে? চোখের আড়াল তো মনের আড়াল। শারীরিক দূরত্ব মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি করে। ফলে একপক্ষ আরেক পক্ষকে সন্দেহ করতে শুরু করে। এতে পারস্পরিক দূরত্ব সৃষ্টি হয়। কেউ মনে করে যে, ওরা শুধু ব্যারাকে বসে বসে খায় আর ঘুমায়, আর আমাদেরকে সারা দিন-রাত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পাহারা দিতে হয়। কেউ মনে করে যে, ওরা সর্বদা জনগণের পকেট কেটে ধনী হয়, আর আমাদেরকে যা দেয়া হয় তা নিয়েই তুষ্ট থাকতে হয়। কিন্তু যখন সবাই একছাতার নিচে চলে আসবে তখন সবাই সবাইকে দেখার ও বোঝার সুযোগ পাবে। সবাই সবার কাছ থেকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ হবে। আবার যার যার স্বকীয়তা ও অবস্থানও ঠিক থাকবে। এ জন্য স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে এক করে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নাম দিয়ে এক মন্ত্রীর অধীনে করে দিলে সবচেয়ে ভাল হয়। তখন দেশ-বিদেশ সর্বত্র পারস্পরিক সহযোগিতা করতে পারবে। বঞ্চনা ও রেষারেষিও কমে আসবে।
----চলবে।
বিষয়: বিবিধ
৯১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন