পান্তা-ইলিশ ও ফুড পয়জনিং!
লিখেছেন লিখেছেন ফারুক আহমদে ১৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৬:৫২:১৯ সন্ধ্যা
পান্তা-ইলিশ ও ফুড পয়জনিং!
পান্তা ভাত ও ইলিশ মাছ বাঙালি সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে পান্তা উৎসবের মাধ্যমে অনেকেই নতুন বছরকে বরণ করে নেন।
নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাতকে পানিতে প্রায় একদিন ডুবিয়ে রাখলেই তা পান্তায় পরিনত হয়। ভাত মূলত পুরোটাই শর্করা। ভাতে পানি দিয়ে রাখলে বিভিন্ন গাজনকারি ব্যাক্টেরিয়া বা ইস্ট শর্করা ভেঙ্গে ইথানল ও ল্যাকটিক এসিড তৈরি করে। এই ইথানলই পান্তাভাতের ভিন্ন রকম স্বাদের জন্য দায়ী।
মূলত পান্তা ভাত, ভাত সংরক্ষণের একটি পদ্ধতি। ভাত বেশিক্ষণ রেখে দিলে তা পচে খাবার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। কিন্তু পানি দিয়ে রাখলে গাজনকারি ব্যাক্টেরিয়া সেখানে ল্যাকটিক এসিড তৈরি করে যার ফলে পান্তা ভাতের অম্লত্ব বেড়ে যায়। তখন পচনকারি ও অনান্য ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাক ভাত নষ্ট করতে পারে না।
যাদের নিয়মিত পান্তা খাওয়ার অভ্যাস নেই, তাদের ফুড পয়জনিং হয়ে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হতে পারে। ফুড পয়জনিং-এর রোগীদের সাধারণত খাবার স্যালাইন খেতে দেয়া হয়। পাশাপাশি রোগীর অবস্থা অনুযায়ী জীবাণুনাশক বা এন্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ সেবনের প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে সিপ্রোফ্লকাসিন দেয়া যেতে পারে। আর শিশুদের ক্ষেত্রে এজিথ্রোমাইসিন দিনে ১ বার তিন দিন দেয়া যায়। যেহেতু ফুড পয়জনিং জীবাণুদ্বারা সংক্রমিত হয় তাই এন্টিবায়োটিক ভালো কাজ করে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত এন্টিবায়োটিক সেবন বাঞ্ছনীয় নয়। এছাড়া জ্বর থাকলে শুধু প্যারাসিটামল সেবন করা যায়। প্যারাসিটামল ভরাপেটে খেতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে যেকোন ভালো কোম্পানির প্যারাসিটামল বয়স অনুযায়ী দিতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে ফুড পয়জনিং-এর ক্ষেত্রে এন্টিস্পাসমোটিক জাতীয় ওষুধ সেবন করা যাবে না। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়। আর যদি পাতলা পায়খানা, বমি নিয়ন্ত্রণে আনা না যায় তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন