২০৩০ সালের একটি চমকপ্রদ ঘটনাঃ
লিখেছেন লিখেছেন আস্তিক ব্লগার ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৪:৫১:২৬ বিকাল
বাংলাদেশে তখনও প্রধানমন্ত্রী যথারীতি শেখ হাসিনা। তার ছেলে জয় পর্যন্ত অস্থির হয়ে আছে কবে মায়ের কিছু হবে আর সে দেশের প্রধানমন্ত্রী হবে। কিন্ত হাসিনা এখনও অটুট স্বাস্থ্য নিয়ে দেশের শাসন কার্য চালিয়ে যাচ্ছেন দূর্দান্ত প্রতাপের সাথে। যেভাবে লিবিয়ার গাদ্দাফী আর মিশরের হোসনী মোবারক দেশ শাসন করে গেছেন ঠিক যেন সেই ভাবে। ইতিমধ্যেই সফলভাবে বাংলাদেশ থেকে পাক এবং পাকি শব্দকে তিনি চিরতরে নিষিদ্ধ করে ফেলছেন। দেশের কোন বাপের বেটার সাহস নেই এখন এই শব্দ গুলো উচ্চারণ করার। দেশ এখন যথার্থভাবেই চেতনার ডান্ডায় দন্ডায়মান।
হঠাৎ করেই শেখ হাসিনার অসুখ দেখা দিল। দেশের সমস্ত বড় বড় ডাক্তারদের ঘাম বেরিয়ে যাচ্ছে অসুখ বের করতে। কিন্ত কোন ডাক্তারই সাহস করে বলতে পারছেনা অসুখটা কি? হঠাৎ একজন ডাক্তার খুব বুদ্ধি করে হাসিনা কে জানালেন আসলে তার অসুখটা কি? সেই ডাক্তার বললো আপনার বঙ্গস্থলীতে সমস্যা।
হাসিনা তো ভেব পেলনা বঙ্গস্থলী আবার কি? কিন্ত জিজ্ঞাসা করবেন তাও পারছেন না। কারণ ডাক্তার আবার বলে বসতে পারে সবজান্তা হাসিনা এই শব্দটিও জানেনা! যাই হোক ডাক্তার যাওয়ার পরেই ডাক পড়ল ছেলে জয়ের। জানতে চাইলেন বঙ্গস্থলী মানে কি? ছেলে তথ্য বাবা বলল, এই বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য নেই। হাসিনা রেগে গিয়ে বললো, এটা কোন তথ্যের বিষয় নয়,এটা শব্দের বিষয়। গর্দভ কোথাকার! ডাক আমার উপদেষ্টাদেরকে। কিন্ত কাকে ডাকবেন ভেবে পেলেন না। গওহর রিজভী তো বাংলা জানেনা। মশিউরের দ্বারা তো সম্ভব নয়। আরও যারা পর্দার আড়ালে আছেন তারা তো হিন্দী আর ইংরাজী শব্দে পারদর্শী। এই বাংলা শব্দের অর্থ তো তারা জানেনা। তাহলে কাকে ডাকবেন তিনি? হঠাৎ তার মনে হলো একমাত্র এইচ টি ইমাম ই পারবেন তাকে উদ্ধার করতে। তিনি তো বিসিএস ক্যাডার পরিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ান। তিনিই পারবেন এই শব্দের ব্যাখ্যা দিতে।
ডাক পড়লো এইচ টি ইমামের। হন্তদন্ত হয়ে এইচ টি ইমাম উপস্থিত। হাসিনা জানতে চাইলেন বঙ্গস্থলী মানে কি? এইচ টি ইমাম তো আকাশ থেকে পড়লো! এমন শব্দ তো তিনি বাপের জন্মে শুনেননি! তিনি পড়ামর্শ দিলেন এই বিষয়ে জাফর ষাড় খুবই উস্তাদ লোক। বিশ্বের সমস্ত নাম করা উপন্যাস অনুবাদ করে তিনি নিজের নামে চালাইয়া দেন। সুতরাং তার কাছে বহু শব্দ ভান্ডার থাকবে। তিনিই বলতে পারবেন এই শব্দের অর্থ। ডাকা হলো জাফর ষাড় কে। তিনি বললেন, এই ধরণের শব্দ বাংলা ভাষাতে নতুন। আর এই নতুন শব্দগুলোর আবির্ভাব হয় তরুণ প্রজন্মের দ্বারা। বিশেষ করে যারা চটি লেখে তারা নিত্য নতুন শব্দ আবিস্কারে উস্তাদ। তাদেরকে ডাকা হোক এই শব্দের অর্থ উদ্ধারে।
ডাক পড়লো চটি পিয়ালের। চটি পিয়ালও ঘেমে নেয়ে গেল শব্দের অর্থ উদ্ধারে কিন্তু কোন লাভ হলোনা। চলে আসতে লাগলো একে একে অসংখ্য বুদ্ধিজীবি। কেউই অর্থ উদ্ধারে সক্ষম হলোনা। শুরু করলেন তারা স্মৃতির জাবড় কাটা। ইসস ... আজ যদি হুমায়ন আজাদ বেঁচে থাকতেন তাহলে তিনি তাদেরকে উদ্ধার করতে পারতেন। অন্যের গবেষণার একটি লাইনও বাদ না দিয়ে অনুবাদ করে নিজের নামে চালিয়ে দিয়ে তিনি জিতে নিয়েছিলেন বাংলা একাডেমী পুরস্কার। এত্ত বড় উস্তাদ লোক অবশ্যই পারতেন এর অর্থ উদ্ধার করতে। এই সব চিন্তা করতে করতে হঠাৎ তাদের মনে হলো আগাচৌ এর কথা। তিনিও তো কম যান না। তিনিই পারবেন তাদেরকে উদ্ধার করতে। আর তিনি না পারলেও সমস্যা নেই। তার তো আছে ফোন অপশন। ফোন দিয়ে তিনি জেনে নেবেন তার বান্ধবীর কাছ থেকে। সাথে সাথেই যোগাযোগ করা হলো আগাচৌ এর সাথে। তিনি অনেক ভেবে চিন্তে জানালেন এই মূহুর্তে তার মনে পড়ছেনা এই শব্দের কথা। তিনি জানালেন, শৌচ কর্ম সেরেই ফোন দিবেন তার বান্ধবীকে। বান্ধবীর কাছ থেকে জেনেই তিনি জানাবেন তাদের এই শব্দের অর্থ। কিন্তু সেই ফোন অপশনও ব্যার্থ হলো। কোন ভাবেই শব্দের অর্থ বের করা গেল না।
ডাকা হলো শিল্পী এমপি মমতাজকে। তিনি হাটে মাঠে গ্রামে গঞ্জে গান করে বেড়াতেন। অনেক গ্রাম্য শব্দ তার জানা। তিনি হয়তো জানেন এই শব্দের অর্থ। কিন্তু সেখানেও পন্ডশ্রম, কোন লাভ হলো না। ডাকা হলো তরুণ মন্ত্রী পুলককে, তিনি ইন্টারনেটের যাদু দিয়ে নিমেষে পদ্মা সেতুর মডেল তৈরী করতে পারেন। ইন্টারনেট থেকে তিনিই পারবেন এই শব্দের অর্থ উদ্ধার করতে। কিন্তু তিনিও হলেন ব্যার্থ। তারানারা হালিম ইদানিং সব খুলে দিয়ে ফেসবুকের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে ব্যাস্ত। ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি হয়তো পারবেন এই শব্দের অর্থ উদ্ধারে। কিন্তু তিনিও হলেন ব্যার্থ।
সকলেই যখন ব্যর্থ তখন শেখ হাসিনা ফোন তুলে নিলেন র্যাবের মহাপরিচালকের সাথে যোগাযোগের জন্য। বললেন, এখনই ঐ ডাক্তার বেটাকে রিমান্ডে নিয়ে জেনে নাও বঙ্গস্থলীর অর্থ। সাথে সাথেই মাঠে নেমে পড়লেন বেনজির। ডাক্তারের কাছ থেকে জানতে পারলেন শব্দের অর্থ। কিন্তু তিনিও পড়লেন মহা বিপদে, কিভাবে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলবেন, আসলে এটা বঙ্গস্থলী নয় এটা পাকস্থলী। প্রধানমন্ত্রী তো পাক কথাটা শুনলেন তার গর্দান নিয়ে নিবেন। ঘেমে নেয়ে গেলেন বেনজির কিন্তু সমাধান খুজে পেলেন না।
বিষয়: বিবিধ
২২৯৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এই রকম উপন্যাস কিভাবে আপনার মাথায় এল।
fantastic. thanks.
উর্বর মস্তিষ্কের প্রশংসা করতেই হয়!!
০ বঙ্গস্থলীতে পাথর হয় না । এখানে আলসার , টিউমার হয় ।
হতে পারে ফিউচারে গিয়ে আপনি হয়ত এসব নতুন নতুন কেস দেখে এসেছেন ।
হাসুবুর পাক/পাকি শব্দের চেয়ে ''জিয়া'' শব্দটার প্রতি বেশী এলার্জি আছে ।
জিয়া শব্দটার প্রতি হাসুবুর বিরোধী পক্ষ কিন্তু বাংলাদেশী - এদের ফ্যাসিনেশন আছে ।
পাক/পাকি শব্দটার প্রতি ফ্যাসিনেশন আছে যারা পাকিস্তানকে এখনও পছন্দ করে বাংলাদেশের চেয়েও বেশী ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন