বিষয়ঃ জামায়াত শিবিরের ভিন্ন ধর্মীদের ধর্মীয় উৎসবে অভিনন্দনঃ এর সমালোচনা ও তার জবাব
লিখেছেন লিখেছেন আস্তিক ব্লগার ২৯ অক্টোবর, ২০১৫, ০৭:৪৪:৪০ সকাল
আমি সার্বিক তাত্বিক আলোচনাকে পাশ কাটিয়ে প্রথমেই বাস্তব কিছু অবস্থার কথা তুলে ধরতে চাই এবং বাস্তবতার আলোকে কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করতে চাই।
প্রথমেই চিন্তা করে দেখুন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সবচেয়ে বেশী নিরাপত্তা কোন দলের কাছে পাবে বলে মনে করে? নিঃস্বন্দেহে সেই দলের নাম আওয়ামিলীগ। অথচ বাস্তবতা হলো, সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের উপর সবচেয়ে বেশী অত্যাচার, নিপীড়ন এবং তাদের সম্পদ ভোগ দখলে সবচেয়ে বেশী অগ্রগামী আওয়ামিলীগের নেতা কর্মীরা।
প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে কেন আওয়ামিলীগের কাছেই তারা নিরাপদ বলে মনে করে। এর সহজ সরল উত্তর হচ্ছে বি,এন,পি ও জামায়াতের মতো দল গুলো এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সেইভাবে আহবান করতে পারেনা বা সেই ভাবে কাছে ডাকতে পারেনা, যেভাবে আওয়ামিলীগ পারে। তাই আওয়ামিলীগের তাদের উপর অত্যাচার আর নিপীড়নকে তারা বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করে এবং এই দায়ভার গুলো দল আওয়ামিলীগের উপর চাপিয়ে দিতে তারা চায়না।
পক্ষান্তরে, জামায়াতের কোন নেতা কর্মী দ্বারা কখনই কোন সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটার প্রমাণ না থাকলেও যখনই কোন সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে তখনই যত দায় তা চেপে যায় এই দলের উপর। এমনকি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ জনগণের একটা বিরাট অংশ এই প্রচারণাকে বিশ্বাসও করে।
এই বিশ্বাস এবং এই বাস্তবতার দায়ভার শুধু মিডিয়া বা জনগণকে দিলেই হবেনা। এই দায়ভার কিছুটা হলেও জামায়াতেরও বটে। জামায়াতকে জনগণ সাম্প্রদায়িক দল বলে ভাবে, বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন আরও বেশী ভাবে। অথচ ইসলাম সাম্প্রদায়িক নয় বরং ইসলাম অন্যান্ন সকলের অধিকার সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞ। ইসলাম এসেছে কোন একটি গ্রুপের পক্ষ থেকে নয়, বরং সকল সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তার নিকট থেকে। তিনি তাঁর সকল সৃষ্টিকে শতকোটি গুন বেশী ভালোবাসেন যতটা ভালোবাসা একজন মা তার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে দিতে পারেন। এই কথাটি স্বয়ং রাসূল (সাঃ) বলেছেন। তাই কোন দল যদি সত্যিকার ইসলামী দল হয় তারা কখনই সাম্প্রদায়িক হতে পারেনা এবং এই ধরণের কথাকে তারা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে এটাই স্বাভাবিক। জামায়াত এই ভাবনা থেকে জনগণ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বের করে আনতে অনেকাংশেই ব্যার্থ হয়েছে। বরং মনে হয়েছে অনেক জামায়াতের নেতা কর্মীই তাদের দলের এই ধরণের পরিচিতিতেই অনেক বেশী তৃপ্ত।
এই তৃপ্ত শ্রেণীই জামায়াত এবং শিবিরের সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় উতসবে অভিনন্দন জানানোর বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি। তারাই সবচেয়ে বেশী সমালোচনায় মুখরিত। এমনকি জামায়াত শিবিরের ভিন্ন ধর্মীদের ধর্মীয় উৎসবের এই অভিনন্দন দেয়াকে ইসলাম ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক বলেও মনে করছেন দলের অনেক গোড়া সমর্থক।
বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভুতি প্রবল। কিন্তু ধর্ম সম্পর্কে পড়াশোনার সংখ্যা সেই অনুপাতে নেহায়েতই অল্প। এই জন্যে বাংলাদেশে ধর্ম নিয়ে প্রতারণা হয় সবচেয়ে বেশী। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি এবং ব্যাবসা দুইটার বাজারই গরম থাকে সব সময়। তবে পড়াশোনার কারণে এই দিক থেকে জামায়াত ও শিবিরের নেতা কর্মীরা অনেকটাই সচেতন। তারপরও দেশের সাংস্কৃতি এবং সাধারণ মানুষের ব্যাপক ধারণাগুলো তাদের মধ্যেও অল্প বিস্তর থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। এই কারণে জামায়াতের অনেক নেতা কর্মীর পক্ষেও ইসলামের অনেক উদারতা গ্রহণ করাও অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। এই কারণেই এই অভিনন্দন দেয়াটাকে অনেকেই সহজভাবে নিতে পারেননি। জামায়াত ও শিবির অতীতে এই উদারতা দেখাতে পারেনি বলে সেটাও একটা জটিলতা তৈরী করেছে।
আমি লেখার শুরুতেই বাংলাদেশের কিছু বাস্তবতা তুলে ধরেছি। সেই বাস্তবতাকে সামনে রেখে নিজের বুকে হাত দিয়ে বলুন, বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা পেলে সংখ্যালঘু নির্যাতন বাড়বে না কম হবে ? সত্যিকার ইসলাম প্রতিষ্ঠা পেলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে না হ্রাস পাবে? যদি ইসলাম সংখ্যালঘুদের সার্বিক নিরাপত্তা দেয়, তাদের প্রতি যেকোন অবিচারের পথ রুদ্ধ করে দেয়, তাহলে তারাও কি চাইবেনা সেই ধরণের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হোক? যেখানে তাদের অধিকার সংরক্ষিত থাকবে। এই বিষয়গুলো আপনি যেভাবে বিশ্বাস করেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সেভাবে বিশ্বাস করাতে হলে বাস্তব কিছু পদক্ষেপ অবশ্যই আপনাকে নিতে হবে।
এই বাস্তব পদক্ষেপের মধ্যে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের তাদের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করতে হবে। তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেন নির্বিঘ্নে ঘটে সেই জন্য তাদেরকে সার্বিক সহযোগীতার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে এবং সার্বিক সহযোগীতা করতে হবে। পরিস্থিতি প্রতিকুল হলে স্বয়ং মসজিদের ইমামের নেতৃত্বে তাদের ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দিতে হবে। প্রয়োজনে শীর্ষ আলেমদের তাদের উপাসনালয়ে যেয়ে সংখ্যালঘুদের সাথে থাকার প্রত্যয় জানাতে হবে। জনগণ যেন তাদের বিরুদ্ধে কোন উস্কানীতে সাড়া না দেয় সে আহবান জানাতে হবে। তাদের এই পবিত্র উৎসবকে বা তাদের ধর্ম মতকে যে আমরা সম্মান করি সেটা বোঝানোর জন্য তাদের ধর্মীয় উৎসবে আমাদেরকে অভিনন্দন জানাতে হবে। এর ফলে ইসলাম ধর্ম কলঙ্কিত হবেনা বরং আলোকিত হবে। রাসূল (সাঃ) এর যুগে এবং পরবর্তী বিভিন্ন ইসলামী খেলাফত আমলে এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে যা অনেক বিধর্মীকেই ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করেছে।
হযরত ওমর(রাঃ) যখন জেরুজালেম বিজয়ের চাবি নিতে জেরুজালেম গমন করেন। তখন সেখানকার খৃষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরুর(পাদ্রীর) রুমে থাকা অবস্থায় নামাজের সময় হলে তিনি সেই ঘর থেকে বের হয়ে এসে সিড়ির উপরে নামাজ পড়েন। পাদ্রীকে পরবর্তীতে বলেন, আমি এ আশংকায় আপনার ঘরে নামাজ পড়লাম না যে, আমাদের পরবর্তী অনুসারীরা সেখানে আবার মসজিদ করে না ফেলে। সত্যি সত্যি সেই সিড়ির জায়গাতেই পরবর্তীতে মসজিদ তৈরী হয় ওমর (রাঃ) এর নামাজের স্মৃতিকে মাথায় রেখে।
এভাবে আমাদের ধর্মের শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তিগণ অন্যান্ন ধর্মকে সম্মান করতে , তাদের ধর্মীয় উপাসনালয় ও উতসবের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে কখনই হীনমন্নতা দেখাননি। আমরাও যেন তাদের অনুসারী হতে পারি। আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন। আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১৮৪৩ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ঐ যে বল্লেন গোড়া সমর্থক, হ্যাঁ আমি নিজেও একজন ইসলামের গোড়া সমর্থক, জামায়াতে ইসলামীর গোড়া সমর্থক না। আর তাই ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু মনে হলে সেটার সমলোচলা করি, সেটা জামায়াতে ইসলামী করুক কিংবা নিজামে ইসলামী করুক, তাতে তেমন কিছু আসে যায় না।
বর্তমানে জামায়াত রাস্ট্রীয় ক্ষমতায় নাই, আর তাই রাস্ট্রের নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিস্চিত করা, জামা্য়াতের দায়িত্ব না। জামায়াত যদি সরকারের প্রতি জোর দাবী জানাতো যে, রাস্ট্রের পক্ষ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়কে দুর্গাপূজার সর্বিক নিরাপওার দেয়া হউক, তাহলে মনে হয় অনেক ভালো হতো।
আমার আল্লাহ বলেন, “আর পাপিষ্ঠদের প্রতি ঝুঁকবে না। নতুবা তোমাদেরকেও আগুনে ধরবে। আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু নাই। অতএব কোথাও সাহায্য পাবে না।”
[সূরা হূদঃ-১১৩]
আল্লাহ আরো বলেন,
“হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের
সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।” [সূরা আল-মা´ইদাঃ-৫১]
জামায়াতের ওয়েভ সাইটে দেখলাম উনারা
দেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে দুর্গাপূজার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন (১৯ অক্টোবর ২০১৫, সোমবার,)
লিংক নীচে। http://jamaat-e-islami.org/newsdetails.php?nid=MzkzOQ%3
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোন একটা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো মানে কী? মানে সেই উপলক্ষটা ভাল এবং তা শুভ হোক; সেই উপলক্ষে উৎসব পালনকারীদের কল্যাণ হোক। এই তো! আমরা ঈদ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাই এবং বলি "ঈদ মুবারক" বা "তাক্বাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম" ইত্যাদি। প্রথমটা হল ঈদ বরকতময় হোক। দ্বীতিয়টার মানে হল "আল্লাহ আপনাদের ও আমাদের ভাল কাজ কবুল করুন।"
এখন হিন্দুদের পার্বণ উপলক্ষে মুসলমান কী শুভেচ্ছা জানাবে? তাহলে মুসলমান কি গিয়ে বলবে, "শুভ দূর্গা পূজা"/"আপনাদের পূজা শুভ হোক"/ "আপনাদের পূজা আল্লাহ ক্ববূল করুন"/"মা দূর্গা আমাদের সবার জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি অয়ে আনুন", ইত্যাদি?
তাদের এই শির্কের উৎসবে তৌহীদবাদী কিভাবে শুভেচ্ছা বিনিময় করবে? যারা শুভেচ্ছা বিনিময়ে কোন সমস্যা নেই বলছেন তাঁরা দয়া করে আমাদেরকে শুভেচ্ছা বিনিময়ের একটা পথ বাতলে দেন।
আমাদের মনে রাখতে হবে, কৌশলের নামে মিথ্যার আশ্রয় সেতো সত্য বিমুখতার প্রথম ধাপ। কিছু কৌশল মানুষকে সাময়িক মুক্তি দিতে পারে, পোঁছতে পারে টার্গেটে, কিন্তু তাতে চুড়ান্ত বিজয় তথা আল্লাহর নৈকট্য লাভ কি করে সম্ভব?
আমরা কি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সংগঠন করি? নাকি সংগঠনের সমৃদ্ধির জন্য?
আফসোস!
আজ যখন মডারেট ইসলামিস্ট যুবকদের দেখি এমনসব কাজে লিপ্ত, তখন সত্যিই ভয় হয়। কেন জানি মনে হয় ইবরাহিম (আঃ) যেটা করেছিলেন, আজ যদি তিনি তাই করতেন, তবে সবচেয়ে আগে আপনারাই বলতেন, তিনি গোড়া, মাথামোটা, উগ্র, তিনি ওয়াল্ড হেরিটেজ ধ্বংশ করেছেন ব্লা ব্লা। আপনি কিছু অমুসলিমদের কথা উল্লেখ করেছেন। যাদের কথা উল্লেখ করেছেন, তারা কেউ মুশরিক ছিলনা তারা ছিল ইহুদি ও খৃষ্টান। রাসূল (সঃ) এর সময়ে খৃষ্টানরা নিজেদের গির্জা সংষ্কারের জন্য বাইতুল মাল থেকে অর্থ সাহায্যও পেয়েছিল। কিন্তু মূর্তি বানানোর জন্য আল্লাহর রাসূল (সঃ) একটা টাকাও ব্যয় করেননি। কুরআন তো ক্লিয়ারলি বলছেই, আর মুশরিকদের মধ্য থেকে যদি কোন ব্যক্তি তোমার কাছে আশ্রয় চায়, তবে অবশ্যই তুমি আশ্রয় দিবে, যাতে করে সে আল্লাহ তায়ালার বাণী শুনতে পায়, অতঃপর তাকে তার নিরাপদ আশ্রয়ে পৌছে দিবে, এটা এজন্যই যে, এরা এমন সম্প্রদায়ের লোক যারা কিছুই জানেনা। (আনকাবুত:৬)
কাজেই তারা আশ্রিত থাকলে নিরাপত্তা পাবে কিন্তু তাদেরকে শিরকের কাজে শুভেচ্ছা জানানো!!
আপনারা আজ গণতন্ত্রের সাথে খিলাফত গুলিয়ে এক করে ফেলেছেন। খলিফা মনোনয়নের জন্য মুসলিমদের নিকট হতে মতামত নেয়া হয় ও সেই মতামতকে সামনে রেখে আলিমদের মাঝে আলাপ আলোচনার দ্বারা খলিফা নির্ধারণ করা হয় আপনারা আধুনিক ভোটকে তুলনা করেন এর সাথে। মেনেও নিলাম কিন্তু খলিফা মনোনয়ণের জন্য কি কোন মুশরিকের ভোট বা রায়ের প্রয়োজন আছে? ইসলাম কি সেটাকে গ্রহণ করে??? তাহলে হিন্দুদের ভোট প্রাপ্তির কামণা আপনারা করেন কুরআন-হাদিস ভিত্তিক কোন দলিলের ভিত্তিতে?? এটি কি বৈধ?? আপনারা যদি সত্যিকার অর্থেই দাবি করেন যে, আপনারা ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাহলে ইসলামের প্রকৃত ধারণাটা হিন্দুদের কাছে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন। কুরানের রেফারেন্স দিয়ে সরকারের কাছে দাবি করেন তাদের নিরাপত্তার জন্য কিন্তু তা না করে হিন্দুদের ভোট প্রাপ্তিতে ক্ষমতায় গিয়ে তথাকথিত ইসলাম কায়েমের কথা বলা বোকামি না? রাসূল (সঃ) যখন মদিনায় খিলাফত রাষ্ঠ্রব্যবস্হা কায়েম করলেন, তখন কি মক্কার মুশরিকদের কাছ থেকে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন?
যদি তারা তাদের ধর্ম চাপিয়ে দিতে চায় বা গ্রহণ করতে বলে তখন জবাব দাও - নিজ নিজ ধর্ম বজায় রাখতে।
খেয়াল করেন সূরা শুরু হয়েছে 'কুল' মানে 'বল' দিয়ে।
মানেন গিয়া কে নিষেধ করছে!
অন্ধ ভক্ত!
কথা হল - কোরান হাদিসের ভূল ব্যাখ্যার কথা অনেক সময় বলি আমরা। কিন্তু নিজেরা কতটুকু সঠিক ব্যাখ্যা দেই তাও খেয়াল রাখতে হবে।
কোরানের রেফারেন্স এ এক লাইনের উল্লেখ আমি কখনই সমর্থন করিনা। কোরান মহামণিষীর বাণীর সংকলন নয়।
ইহুদী ক্রিস্টান হিন্দুকে বন্ধু না বানালে ইসলামের সৌন্দর্য্য কার কাছে পৌছে দিবেন?
ইসলাম গ্রহনের আগে ত সবাই ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ছিল।
যে আয়াতে বন্ধু না বানানোর কথা বলা হয়েছে সেই সূরা এবং 'শানে উযুল' পড়ে এবং ব্যাখ্যা করে মত দিন।
আপনার এই মন্তব্যের অংশটুকু আমার কাছে ভয়ংকর রকমের ভয়ের মনে হয়েছে,
'ইহুদী ক্রিস্টান হিন্দুকে বন্ধু না বানালে ইসলামের সৌন্দর্য্য কার কাছে পৌছে দিবেন? ইসলাম গ্রহনের আগে ত সবাই ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ছিল'।
- কারন আমি কোরান এ ইয়াহুদী আর খৃষ্টানদেরকে ক্লিয়ারলী হিন্দু কিংবা মুশরিকদের থেকে পৃথকভাবে উপস্থাপিত হতে দেখেছি। কিন্তু আপনি সেই হিন্দুকে আহলে কিতাবধারীদের অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছেন ধর্মের মেসেজ পৌছাবার নামে। আমার মনে হয়েছে অমন করলে তা কোরানের সাথে সরাসরি কন্ট্রাডিকশান করে কোরান এর সাথে।
সুরা মায়েদার ৫১ নং আয়াত টি আমরা এমন করেই পড়তাম এবং জানতাম।
O you who believe, do not take the Jews and the Christians for intimate friends. They are friends to each other. Whoever takes them as intimate friends is one of them. Surely, Allah does not take the unjust people to the right path. (51)
কিন্তু এ আয়াতের অর্থ যথার্থ হয় এবং সুরা মায়েদার ই ৮২ নং আয়াতের সাথে সামন্জস্যপূর্ন হয় - যদি তা আপনি পড়তে পারেন, বুঝতে পারেন কিংবা ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড অনুবাদ করে বুঝতে চান-
৫১ নং আয়াতটি ফিউচার কে ফোকাস করে আল্লাহ রাসুলের সঃ এর উপর অবতীর্ন করেছেন। কারন আল্লাহর রাসুল সঃ এর সময় হতে শুরু করে সব সময় ই ট্রু ইয়াহুদী ও ট্রু খৃষ্টানরা পরস্পর পরস্পরের শত্রু ছিল। ইয়াহুদীরা মনে করতে ইসা আঃ এর ফলোয়ার রা ধর্মাদ্রোহী, আর খৃষ্টানরা মনে করতো ইয়াহুদীরা তাদের ঈশ্বর কিংবা ঈশ্বরের ছেলেকে হত্যা করেছে।
O you who believe, do not take those Jews and the Christians as intimate friends who themselves are friends to each other. Whoever takes them as intimate friends (protectors) is one of them. Surely, Allah does not take the unjust people to the right path. (51)
কিন্তু ১৮৯৭ এর এর পর হতে চার্চ হতে বের হয়ে যাওয়া নব্য এক খৃষ্টান সম্প্রদায়ের সাথে সাদা চামড়ার কনভার্টেড এক ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের বন্ধুত্ব হয়েছে - যারা পৃথিবীর মানুষের উপর চড়ি ঘুরাচ্ছে, মুসলমান মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে তাদের প্রটেকশান এ নিয়েছে বা যেতে বাধ্য করেছে। আল্লাহ এই পার্টিকুলার বন্ধুত্বকে ইন্ডিকেট করেছেন এই আয়াতে। (আল্লাহ ভাল জানেন)
আর এবার নিচের আয়াতটিকে দেখুন এটাও ফিউচারকে ফোকাস করে বলা হয়েছে।
And you will certainly find that the people most hostile against the believers are the Jews and the ones who ascribe partners to Allah. You will certainly find that the closest of them in friendship with the believers are those who say, “We are Christians.” That is because among them there are priests and monks, and because they are not arrogant. (82)
সো আপনার যুক্তিটি আসলে কোরানকে সাপোর্ট করছে না বরং কন্ট্রাডিক্ট করছে।
সো আমার মনে হয় - আমাদের সবাইকে সামহাউ সময় সুযোগ পেলে পুরোনো অনুবাদ সমূহকে নতুন করে যাচাই বাচাই করে এক্সেপ্ট কিংবা রিজেক্ট করা উচিত।
হিন্দুদের দেশ ভারতের আশির্বাদ লাগে বাংলাদেশের মসনদে যেতে হলে । আর এখন তো কট্টর হিন্দু মোদি ক্ষমতায় । তাই ইদানিং সংখ্যালঘু হিন্দুদের তোয়াজ করা বেড়ে গেছে নেতাদের মধ্যে ।
উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন - ভারতের আশির্বাদে ক্ষমতায় যাওয়া বা টিকে থাকা ।
সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানদের দেশে জামায়াত পারে নি মুসলমানদের ভোট বিজেপির মত বাগাতে ৭১ পরবর্তী ভাল মানুষ হয়ে গিয়েও । তাই তারা এখন মূলস্রোতে শামিল হয়েছে ।
এটা জামায়াতের বদলে ফেলা নীতিরই একটা বহিঃপ্রকাশ ।
একজন মুসলমান হয়ে আমি মনে করি - বাংলাদেশের হিন্দুরা কখনই বাংলাদেশের ভাল চায় না ভারতের আগে । তারা এদেশের খেয়ে পড়ে , বেড়ে উঠে , এদেশে কামাই রোজগার করে ভারতে পাঠিয়ে দেয়।
আমার মতে এদের উৎসবে অভিনন্দন জানানোর দিকে না গিয়ে চুপ থাকাই ভাল , তবে যারা আইনশৃঙ্খলার ও এতদসংক্রান্ত কাজে আছেন তারা অন্যসব ধর্মের মত এদের জন্যও তাদের দ্বায়িত্ব পালন করবেন ।
এই চুপ থাকলেও পার্শবর্তী দেশ ভারতের চেয়ে আমরা কম ক্ষতিকর - কারণ ওদের ওখানে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ক্বুরবানীর ঈদকে ঘিরে , গরুর মাংশ খাওয়া নিয়ে কি তুলকালাম কান্ডই না করছে হিন্দুবাদীরা !
সে তুলনায় বাংলাদেশের মুসলমানেরা তো ফেরেশতা তুল্য !
এদেশের হিন্দুরা কি এসব দেখে না যে তাদের পেয়ারের দেশ ভারত কি আচরণ করে সে দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর ?
আপনি বললেন, 'রাসূল (সাঃ) এর যুগে এবং পরবর্তী বিভিন্ন ইসলামী খেলাফত আমলে এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে যা অনেক বিধর্মীকেই ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করেছে'।
এক দুটি উদাহরন উপস্থাপন করে তার সাথে - শুভেচ্ছা জানানো বিষয়টির তুলনামূলক চিত্র দেখালে - বুঝা যেত আপনি ঠিক বলেছেন - না কি আপনার কোথাও কোন ভুল হয়েছে।
কিন্তু আমরা আপনার মতামত পেলাম ঠিকই - রেফারেন্স পেলাম না। স্বভাবতঃই সেটা তখন আর ইসলামিক থাকে না। তাই না?
মন্তব্য করতে লগইন করুন