ন্যায়পরায়ণ শাসকের গুনাবলী - পর্ব ২

লিখেছেন লিখেছেন আস্তিক ব্লগার ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০২:৪৩:১০ দুপুর

অতএব, হে আমীরুল মু’মিনীন!আল্লাহ যাবতীয় অশ্লীলতা ও নোংরামি দূর করার জন্য হদ তথা নির্ধারিত শাস্তির বিধান দিয়েছেন। শাসকরাই যদি তা করে তাহলে তা দূর হবে কিভাবে? আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জীবন রক্ষার্থে কিসাসের বিধান দিয়েছেন। সেই বিধান যিনি বাস্তবায়ন করবেন তিনিই যদি বান্দাদের হত্যা করেন তাহলে জীবন রক্ষা হবে কিভাবে?

অতএব, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি মৃত্যু ও তার পরবর্তী অবস্থা এবং সেখানে আপনার লোক-লস্কর ও সাহায্যকারীর স্বল্পতার কথা স্মরুণ করুন। আপনি মৃত্যু ও তার পরবর্তী বিভীষিকাময় অবস্থার জন্য পাথেয় প্রস্তুত করুন।

অতএব, হে আমীরুল মু’মিনীন! জেনে রাখুন, আপনি যে বাড়ীতে আছেন, সেটি ছাড়াও আপনার আরেকটি বাড়ী আছে। সেখানে আপনার অবস্থান হবে অনেক দীর্ঘ। আপনার আত্নীয়-বন্ধুরা আপনাকে একাকী কবরের গর্তে রেখে আপনার থেকে পৃথক হয়ে যাবে। আপনি সেই দিনের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করুন যে দিন কেউ আপনার সঙ্গী হবেনা।

“যে দিন মানুষ তার ভাই, মাতা-পিতা, স্ত্রী ও সন্তানদের থেকে পালিয়ে যাবে” আবাসা – ৩৪

অতএব, হে আমীরুল মু’মিনীন! স্মরণ করুনঃ

“যখন কবরে যা আছে তা উত্থিত হবে এবং অন্তরে যা আছে তা প্রকাশ করা হবে। তখন সকল গোপন রহস্য প্রকাশ হয়ে পড়বে।” আল আদিয়াত – ৯

“আর গ্রন্থ ছোট বড় কিছুই উপেক্ষা করছে না। সবই লিখে রাখছে।“ আল-কাহ্ফ – ৪৯

অতএব, অতএব, হে আমীরুল মু’মিনীন! মৃত্যুর আগমন এবং আশা-আরজু বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বে আপনি সুযোগের ব্যবহার করুন। আপনি আল্লাহর বান্দাদেরকে জাহিলী আইন ও রীতি পদ্ধতিতে শাসন করবেন না। আপনি তাদের সাথে অত্যাচারী শাসকদের মতো আচরণ করবেন না। দূর্বলদের উপর ক্ষমতাগর্বী ও অহংকারীদের মতো প্রভুত্ব কায়েম করবেন না। কারণ, তারা কোন মু’মিনের সাথে আত্নীয়তার ও অঙ্গীকারের মর্যাদা রক্ষা করে না। অতঃপর আপনি আপনার নিজের ও তাদের পাপ ও বোঝা বহন করবেন। তাদের ভোগ –বিলাসী জীবন, যার মধ্যে রয়েছে আপনার দুর্ভাগ্য, আপনাকে যেন ধোঁকায় না ফেলে। আপনার পরকালীন জীবণের সুখ-সুবিধার বিনিময়ে তাদের উপাদেয় খাদ্য-খাবার যেন আপনাকে প্রতারিত না করে। আপনার আজকের শক্তি-ক্ষমতার দিকে দৃষ্টি না দিয়ে আগামীকাল মৃত্যুর ফাঁদে আটকা পড়ার পর আপনার ক্ষমতার দিকে দৃষ্টিপাত করুন। যখন আপনি মৃত্যুর ফাঁদে জড়িয়ে ফেরেশতামণ্ডলী ও নবী-রাসূলদের উপস্থিতিতে আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে থাকবেন। যখন চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারকের নিকট সকলেই হবে অধোবদন।

আমীরুল মু’মিনীন! আমি আমার এই উপদেশ দ্বারা সেই কাজ করতে পারবো না যা আমার পূর্বে জ্ঞানী ব্যক্তিরা করেছেন। তবে আমি আপনার প্রতি দরদ ও সহানুভূতি প্রকাশ করতে ও উপদেশ দান করতে বিরত থাকিনি। আমার এই পত্রটিকে আপনি সেই বন্ধুর মতো মনে করুন, যে তার অসুস্থ বন্ধুকে অত্যন্ত তিক্ত ঔষুধ জোর করে পান করায় তার সুস্থতার আশায়।

আমীরুল মু’মিনীন! আস্-সালামু আলাইকা অয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিষয়: বিবিধ

১৩৬৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

292114
০৭ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৫
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : অনেক চমৎকার উপদেশওয়ালা চিঠি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File