একবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ট শহীদঃ শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা রহিমাকুমুল্লাহ

লিখেছেন লিখেছেন আস্তিক ব্লগার ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১২:৪১:৫৩ দুপুর

বাংলাদেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবি আর মিডিয়ার মাধ্যমে প্রায় সকলের কাছে পৌছে গেছে একটি কথা "হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী শেখ মুজিব"। কিন্তু কাদের মোল্লার ফাঁসী পরবর্তী অবস্থা দেখে ঐ কথাটিতে আজ প্রশ্ন উঠেছে। ঐ কথাটিকে যেন চরমভাবে ব্যাঙ্গ করছেন শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা।

শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট হিসাবে থাকাকালীন অবস্থায় নিহত হওয়ার পরও তার জানাযায় লোক হয়েছিলো মাত্র ২২ জন। যার মধ্যে ১৬ থেকে ১৮ জন সামরিক বাহিনীর লোক। সারা বিশ্বে কোথাও কোন জানাযা হওয়া তো দূরে থাক তার জন্য দূঃখ আফসোস করার কোন লোক ছিলনা। বরং ইনুদের মতো ট্যাংকের উপর নাচ করার লোক ছিল অনেক। সবাই যেন এক অসস্থি থেকে মুক্তি পেয়েছিল।

কিন্তু ছোট্ট একটি কাদের মোল্লা যেন সারা বিশ্বকে তোলপাড় করে ছাড়লো। কোন ফাঁসী কার্যকর না করার জন্য এতো আন্তর্জাতিক অনুরোধ ও চাপ সম্ভবত পৃথিবীর ইতিহাসে আর লক্ষ্য করা যায়নি।ফাঁসী বন্ধের জন্য মিডিয়াতেও সম্ভবত এতো লেখালেখি হয়নি।

আর ফাঁসী পরবর্তী যে অবস্থা দাড়িয়েছে তা তো অকল্পনীয়।পৃথিবীর ইতিহাসে এক ব্যাক্তির জন্য এতো গায়েবানা জানাজার এটি মনে হয় একটি বিশ্বরেকর্ড।কোন এক ব্যাক্তির জন্য এমন কোটি কোটি মানুষের গায়েবানা জানাজায় অংশগ্রহণও যেন একটি রেকর্ড।

আওয়ামী সরকার বুঝতে পেরেছিলো, কাদের মোল্লাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে বাংলার জনতার বুকে তার বিরুদ্ধে ঘৃণা তৈরী করতে তারা চরমভাবে ব্যার্থ হয়েছে। বরং এই হত্যার পর তিনি জনতার কাছে শহীদ ই মর্যাদায় মর্যাদা প্রাপ্ত এক বিশাল ব্যাক্তিতে পরিণত হয়েছেন। এখন যদি তার জানাযার নামাজের অনুমতি দেয়া হয় তাহলে তিনি জাতীয় হিরোতে পরিণত হবেন।তাইতো রাতের অন্ধকারে দায়সারা গোসের একটি জানাজা দিয়ে তাঁকে দাফন দেয়া হলো।

কিন্তু এটিই যেন কাল হয়ে গেল আওয়ামিলীগের। যে মানুষটি জাতীয় নায়কে রূপান্তরিত হতে পারে বলে জানাজার নামাজে বাধা দেয়া হলো। সেই বাঁধার কারণেই আজ তিনি জাতীয় নেতা থেকে আন্তর্জাতিক নেতাতে পরিণত হলেন। সারা মুসলিম বিশ্বের কাছে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শহীদ বলে বিবেচিত শহীদ সাইয়্যেদ কুতুবের কাতারে তিনি সামিল হলেন। হয়তো একসময় ইতিহাসে লেখা হবে এক বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ট শহীদ “শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা (রঃ)”।

প্রকৃতপক্ষে, ইসলামের রীতি হচ্ছে, কোন ব্যাক্তির যদি স্বাভাবিক জানাজা হয় তাহলে মানুষ তার জন্য দু’আ করবে। গায়েবানা জানাজা তার জন্য আর পড়া যাবেনা। কিন্তু কোন ব্যাক্তির জানাজা যদি করতে দেয়া না হয়, বা জানাজা করা সম্ভব না হয় তখন সারা বিশ্বের মুসলমানগণ তার জন্য গায়েবানা জানাজা পড়তে পারবেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আবিসিনিয়ার রাজা নাজ্জাশি’র গায়েবানা নামাজ পড়েছিলেন। তারপর থেকেই এই রীতি চলে আসছে মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। তাই আওয়ামি নীতি নির্ধারণী বুদ্ধিজীবিদের কেউ যদি ইসলামের এই রীতির সাথে পরিচিত থাকতেন, তাহলে তার এই ইসলামী আন্দোলনের নেতার জানাজার নামাজ পড়তে দিতেন। তাহলে আর সারাবিশ্বে গায়েবানা জানাজা হতোনা। তিনিও পরিণত হতেন না, জাতিয় নায়ক থেকে আন্তর্জাতিক নায়কে।

প্রকৃতপক্ষে এভাবেই আল্লাহ ব্যার্থ করে দেন আল্লাহর দুশমনদের আর প্রতিষ্ঠিত করে দেন তার প্রিয় বান্দাদের দুনিয়া ও আখেরাতে। আমরা বিশ্বাস করি শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা দুনিয়াতে যে সম্মান পেলেন আখেরাতেও সেই সম্মান পাবেন। পক্ষান্তরে শেখ মুজিব যেভাবে লাঞ্ছিত হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন সেভাবে আখেরাতেও লাঞ্ছিত হবেন। আর তার মেয়েও যেন দ্রুত সে পথেই ধাবিত হচ্ছে। এভাবেই আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে দিয়ে থাকেন তার বান্দাদের কর্মফল, যা তারা কামাই করেছে।

বিষয়: বিবিধ

১২৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File