ইহুদি সিসি চালিত মিসর ইসরাইল অধিকৃত?

লিখেছেন লিখেছেন অপ্রিয় সত্য কথা ৩০ এপ্রিল, ২০১৪, ০৬:৩১:২৪ সন্ধ্যা



নীল থেকে ফোরাত পর্যন্ত সব ভূখণ্ড করায়ত্ত করার দীর্ঘমেয়াদি জায়নবাদী প্রকল্প ‘দ্য গ্রেটার ইসরাইল প্রজেক্টে’র বাস্তবায়ন এখন নতুনভাবে গতিপ্রাপ্ত হয়েছে। তারা এবার নীলনদ দখল করে নিলো।

মিসরের নতুন জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসির মা মালিকাহ তিতানি মরক্কোর আসেফি এলাকার ইহুদি। আর এর ফলে আল-সিসি জন্মসূত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ইসরাইলের নাগরিক হয়ে গেছেন (ইসরাইলের আইন অনুযায়ী পৃথিবীর যেকোনো দেশের ইহুদি মায়ের সন্তান জন্মসূত্রে ইসরাইলের নাগরিক হতে পারেন)। সিসি একজন ইহুদি সমস্যা কিন্তু সেটা নয়। অবাধ ও নিরপে নির্বাচনের মাধ্যমে যদি মিসরীয় জনগণ কোনো ইহুদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। (যেভাবে তারা নির্বাচিত করেছিল মুসলিম ব্রাদারহুডকে, তারা নি¤œœকে ৭৩ ভাগ এবং উচ্চকে ৮০ ভাগ ভোট পেয়েছিল। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট পেয়েছিল ৫২ ভাগ। সংবিধান অনুমোদিত হয়েছিল ৬৪ ভাগ ভোটে।) সমস্যা হলো আল-সিসি তার ইহুদি পরিচিতি এবং ইসরাইলের সাথে যোগাযোগের বিষয়টি মিসরীয় জনগণের কাছে গোপন করে রেখেছেন। সেইসাথে তিনি প্রতারণা ও গণহত্যার মাধ্যমে সদ্য পরিষ্ফুট মিসরের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন।

আরো বড় একটি সমস্যা হলো প্রায় নিশ্চিতভাবেই জেনারেল আল-সিসি ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট। এর মানে হলো আল-সিসির মিসর কেবল একটি নৃশংস, পরনির্ভর স্বৈরতান্ত্রিক দেশই নয়, এটা ইসরাইলের এক ধরনের অধিকৃত ভূখণ্ড : কার্যত সদা সম্প্রসারণশীল বৃহত্তর ইসরাইলের নতুনতম ও বৃহত্তম প্রদেশে পরিণত। ফলে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত যখন আল-সিসিকে ‘সব ইহুদির জাতীয় বীর’ হিসেবে অভিহিত করেন, তখন অবাক হওয়ার কিছু নেই।

আল-সিসির মামা ইউরি সাইবাগ (অনেক সময় সাবাগ নামেও তাকে ডাকা হতো) ১৯৪৮ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত জুইশ ডিফেন্স লিগে কাজ করার সুবাদে ইহুদি হিসেবে ইসরাইলে অভিবাসন গ্রহণ করেন। ইহুদি দেশটিতে তিনি বেন গুরিয়ানের রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। ১৯৬৮ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ইসরাইলি লেবার পার্টির সচিবের দায়িত্বও পালন করেছিলেন জেনারেল সিসির মামা।

ইউরির বোন তথা আল-সিসির মা মালিকাহ তিতানি খুব সম্ভবত মোসাদের মিশনে মিসরে অভিবাসন করেছিলেন। ওই মিশন সর্বোচ্চ সাফল্য পায় যখন মোসাদ ২০১৩ সালের ৩ জুলাই সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মুরসিকে উৎখাত করে তাদের এজেন্ট আল-সিসিকে মতায় বসাতে সম হয়।

শুরু থেকেই আল-সিসি যে মোসাদের এজেন্ট তার নানা প্রমাণ পাওয়া যায়। তার মিশন হলো কোনো আরব মুসলিম দেশে মতার সর্বোচ্চপর্যায়ে অনুপ্রবেশ করা। আল-সিসি হলেন আলি কোহেনের আধুনিক কালের সংস্করণ। ওই লোকটি কামাল আমিন সাবেত নাম নিয়ে সিরিয়ায় মতার সর্বোচ্চপর্যায়ে অনুপ্রবেশ করতে পেরেছিলেন। তবে যখন তার প্রকৃত মুখোশ উন্মোচিত হয়েছিল, তখন দামাস্কাসের পাবলিক স্কয়ারে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে জর্জ ডব্লিউ বুশের একটি বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করা যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘জনগণ যদি সত্য জানতে পারে, তারা আমাদের ধাওয়া করে রাজপথে ছুড়ে ফেলবে, ফাঁসিতে লটকে দেবে’। এটা আল-সিসির েেত্র পুরোপুরি মিলে যায়।

মূলধারার মিডিয়ার পাশাপাশি আরো বিশ্বস্ত সূত্রগুলোতে অনেকবারই বলা হয়েছে যে, আল-সিসি দীর্ঘ দিন ইসরাইলের সাথে মিসরীয় সামরিক বাহিনীর যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছেন। ৩ জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের সময় তিনি ইসরাইলি ও আমেরিকান সামরিক বাহিনীর সাথে সার্বণিক যোগাযোগ রা করে চলেছিলেন। ইসরাইল তাকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার প্রতিশ্র“তি দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র চেঁচামেচি করলেও ইসরাইল আশ্বস্ত করছিল যে ওয়াশিংটনের সাহায্য কমবে না।

মিসরের অভ্যুত্থানটি, বিশেষ করে প্রপাগান্ডার ধরনটি পুরোপুরি ইসরাইলি কায়দার সাথে মিলে যায়। মিসরের ইসরাইলের সাথে সংশ্লিষ্ট মূল ধারার মিডিয়ায় (হঁঁ্যাঁ, তারা সেখানের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও বড় বড় মিডিয়ার মালিক) বারবার প্রেসিডেন্ট মুরসিকে এডলফ হিটলারের সাথে তুলনা করা হতে থাকে! অভ্যুত্থানের নেপথ্যশক্তির ‘মুরসি হলেন আরেক হিটলার’ বক্তব্যেই প্রমাণিত হয় যে, ওই কুচক্রীরা ছিল জায়নবাদীরা, মিসরীয়রা নয়। জায়নবাদীরা দৃশ্যত ড. স্ট্র্যাঞ্জলাভ কায়দায় হিটলারবিরোধী স্লোগান দেয়া থেকে একটিবারের জন্যও বিরত থাকেনি। এসবের মাধ্যমে তারা আল-সিসির অভ্যুত্থানটি সফল করতে পেরেছে।

অভ্যুত্থানের পর থেকে আল-সিসিকে স্ট্রংম্যান হিসেবে আখ্যা দিয়ে তার প্রশংসা, অর্থ ও সমর্থন বর্ষণ করতে থাকে ইসরাইল। গাজার জনগণের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাজা সীমান্তের সুড়ঙ্গগুলো পুরোপুরি বন্ধ করার মাধ্যমে মোসাদ এজেন্ট আল-সিসি কার্যত ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। অধিকন্তু আল-সিসি রথচাইলন্ড পুতুলদের এবং একই সাথে ‘সৌদ পরিবার’ হিসেবে পরিচয় দানকারী ছদ্মবেশীদের কাছ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার নিয়েছেন।

নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ইহুদি প্রাধান্যবিশিষ্ট পাশ্চাত্য এবং মধ্যপ্রাচ্যে এর পুতুলগুলো কখনো মুসলমানদের অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে তুলনামূলক সৎ নেতা বাছাই করতে দেবে না। তারা বরং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রাধান্য বিস্তার করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ল্েয প্রতারণা আর সহিংসতার আশ্রয় নেবে।

মিসরীয় জনগণ বিপুল ভোটে মুসলিম ব্রাদারহুডকে নির্বাচন করেছিল। ব্রাদারহুড নির্বাচনে যে ভোট পেয়েছিল আমেরিকার ইতিহাসে একটিবারের জন্যও কোনো রাজনৈতিক দল পায়নি। এখন মিসরীয় জনগণের প্রয়োজন সত্যিকারের গণতন্ত্রের জন্য খাঁটি ইসলামি বিপ্লব। এটা ছাড়া মিসরে নিশ্চিতভাবেই চিরদিনের জন্যই ‘মানুষের মুখে বুটের পদাঘাত’ লেগে থাকবে... এবং মিসর হয়ে থাকবে বৃহত্তর ইসরাইলের একটি স্থায়ী প্রদেশ, পরিচালিত হবে প্রকৃত ইতিহাস ও আনুগত্যের বিষয়টি গোপনকারী কোনো ইহুদি-জায়নবাদী দুর্বৃত্তের মাধ্যমে, যিনি ফারাও হিসেবে নিজেকে নিযুক্ত করবেন।

বিষয়: বিবিধ

১১৫৩ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

215528
৩০ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৬
215580
৩০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:৪৭
এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী লিখেছেন : এই বদমাইশযে ইহুদির বাচ্ছা , তা তার কর্মকান্ডেই প্রমান করে।কিন্তু মুসলিম ব্রাদারহুড ওর ব্যাপারে ছিল একদম উদাস!যার ফলাফল আজকে মিসরের এই দুরবাস্থা।
৩০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:২৫
163870
অপ্রিয় সত্য কথা লিখেছেন : :Thinking :Thinking :Thinking :Thinking
215588
৩০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:০৫
পুস্পিতা লিখেছেন : ঠিক বাংলাদেশের মতো, হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশ যেন ভারত অধিকৃত!
৩০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:২৫
163871
অপ্রিয় সত্য কথা লিখেছেন : :Thinking :Thinking :Thinking :Thinking
215600
৩০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:২৫
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানেও মুসলিম নামধারী ভারতীয় গোয়েন্দাদেরকে প্রেরন করা হয়েছিল চক্রান্ত করে মুসলমানদের মধ্যে ফাটল ধরানোর জন্য।
৩০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:৩৩
163873
অপ্রিয় সত্য কথা লিখেছেন : :Thinking :Thinking :Thinking

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File