কিছু তিক্ত কথা; যাদের সহ্য ক্ষমতা আছে, শুধুই তাদের জন্যে।
লিখেছেন লিখেছেন অপ্রিয় সত্য কথা ১৫ এপ্রিল, ২০১৪, ০৭:২০:৫১ সন্ধ্যা
যাদের আজ বাঙলাদেশের রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্টর হওয়ার কথা ছিল, সবার চেয়ে গুরুত্ব পাওয়ার কথা ছিল বেশি, তারা আজ অস্পৃশ্য, দেউলিয়া। শহরে-বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে সাধারণ জনগণের সাথে যাদের রক্তের সম্পর্ক, আত্মার যোগসূত্র, সেই তারাই যেন আজ জনবিচ্ছিন্ন। অথচ সত্যিকার অর্থে জনবিচ্ছিন্নরাই আজ গণভিত্তি পাওয়ার অসার দাবি তোলে। আর যে সমাজটি সবার থেকে বেশি জনসম্পৃক্তি থাকার কথা, তারা আজ কার্যত গৃহবন্দী। শুধুই গৃহবন্দী বললে হবে না; স্বেচ্ছা-গৃহান্তরীণ।
হ্যাঁ, বাঙলাদেশের আলিম সমাজের কথাই বলছি। শুধুই ধর্মীয় দিক দিয়ে নয়; সর্ববিষয়ে যারা জাতির রাহবার বা পথপ্রদর্শক, সত্যিকারভাবে জাতির বিবেকও। বাঙলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা আর সঙ্কট নিরসনে এই আলিম সমাজের ভূমিকা থাকার কথা ছিল সবার উপরে, কিন্তু তারা আজ পারস্পরিক দ্বন্দ্বে এতটাই জড়িয়ে পড়েছেন যে, বাইরের বিষয় নিয়ে চিন্তা করা তাদের প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অথচ জাতির খুবই প্রয়োজন ছিল আজ তাদের। এই সঙ্কটকালে জাতীয় ইস্যুতে ভূমিকা রাখা তাদের জন্যে অবশ্যম্ভাবী ছিল।
জেনারেল এরশাদ যদি আজ বাঙলাদেশের রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে, যার তৃণমূল শক্তি নিভু নিভু প্রায়; তাহলে আলিম সমাজ কেন এদেশের রাজনীতিতে বিরাট ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারেন না? যাদের রয়েছে বিশাল জনশক্তি, রয়েছে তৃণমূলে ঈর্ষণীয় গণভিত্তি। এখনো যাদের কথা সাধারণ মানুষ অপ্তবাক্যের মত মেনে নেয়। বিশ্ব ইজতেমায় ত্রিশলক্ষ মানুষ কাদের ডাকে সাড়া দিয়ে টঙ্গি মাঠে জমায়েত হয়? শাপলা চত্বরে জীবন বাজি রেখে দশলক্ষাধিক মানুষ কাদের ডাকে জমায়েত হয়েছিল? চরমোনাইয়ে বছরে দুইবার কিসের টানে লাখ লাখ মানুষ পঙ্গপালের মত ছুটে যায়? বাঙলাদেশের বড় বড় গণজমায়েতগুলো তো আলিম-উলামার ডাকেই সংগঠিত হয়ে থাকে, তাহলে এই আলিম সমাজ রাজনীতির মাঠে এত পিছিয়ে কেন? কেন তারা এখানে এসে এত মার খান? এখানে ব্যর্থতার একমাত্র কারণটিও যে তারা জানেন না, তা কিন্তু নয়; পারস্পরিক অনৈক্য যে আলিম সমাজকে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দিচ্ছে, এটা তাদের ভালোকরেই জানা। কিন্তু প্রজা ছাড়া যে সিংহাসনের কোনো মূল্য নেই, শিষ্য ছাড়া যে শিক্ষক হওয়ার কোনো সার্থকতা নেই, কর্মী ছাড়া যে নেতার কোনো দাম নেই, এই জিনিসটি তারা বুঝতে চান না, বা বুঝার চেষ্টা করেন না। রাজত্ব হারানো ভয় এবং নেতৃত্বের লোভ সংবরণ করতে না পেরে প্রজাহীন সিংহাসনেই তারা তৃপ্তি পান। যাকে কৃত্রিম তৃপ্তি ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় না।
আলিম সমাজ যদি আজ একই প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ থাকতেন, তাহলে যেকোনো দাবি-দাওয়া আদায় করা আজ পান্তাভাত ঠেকত। বড় দু'টি দলের যে-ই ক্ষমতায় যেতে চায় না কেন, আলিম সমাজকে সমীহ করেই আসতে হতো। বাঙলাদেশে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড বৈধতা পাওয়া তো দূরের কথা, ইসলামের অনুকূলে অনেক আইন পাশ করানো যেত। অতএব বাঙলাদেশে ইসলামবিরোধী কার্যকলাপে দায়ভারটা কাদের উপর গিয়ে বর্তায় একটু ভাবা দরকার।
( সংগৃহীত)
বিষয়: বিবিধ
১৪৬০ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর আমি কাদাঁ ছুড়ি না।অপ্রিয় সত্য কথা গুলি বল।ইহা আপনি যেভাবে দেখেন আর কি?
আর যদি বলেন কাদঁ ছুড়া-ছড়ি?তাহলে বলবে এক্ষেত্রে আপনারা আমার চেয়ে অগ্রগামী।
লেখেছেন।
এখন সকলের একত্রিত হওয়া সময়ের দাবি। যেখানে ইসলাম ই বিপন্ন সেখানে মাসয়ালা নিয়ে তর্ক করার চিন্তা তারা করেন কিকরে।
"হুনায়ুনের যুদ্ধে মক্কার কাফেররা মুসলিমদের পক্ষে যুদ্ধ করেছিল। রাসুল (সা) যদি মুসলিম বাহিনীর সাথে কাফেরদের নিতে পারেন, তাহলে হেফাজতীরা আহলে হাদীস বা জামাতী বা অন্যদের সাথে নিতে পারবেনা কেন?
আহরে হাদীস বা জামাতিদের নেওয়ার ব্যাপারে হেফাজাতের কোথায়ও নিষেধ করছে তা আমার জানা নাই।
তবে মুনাফিক থেকে সবসময়ই সতর্ক থাকাই মমিনের অন্যতম বৈশিস্ঠ।
@ড: মনজুর আশরাফ ভাই “নেতৃত্বের শ্রেষ্ঠ গুণ” নামে একটি চমৎকার পোস্ট দিয়েছেন আজকেঃ
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/bloglist/1964/manzur
আপনার প্রশ্নের উত্তরটি নিজে না লিখে গুগল মামার সাহায্য নিয়ে দিলামঃ
“মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী হুনাইনের পার্বত্য অঞ্চল আওতাস। আরবের বিখ্যাত হাওয়াযেন ও সাকিফ গোত্র তাদের অন্যান্য মিত্র গোত্রসহ বিরাট এক বাহিনী নিয়ে সেখানে এসে শিবির গেড়েছে। তারা চায়, মক্কাজয়ী ইসলামী শক্তির উপরে শেষ এবং চূড়ান্ত আঘাত হানতে। তারা সাথে করে নিয়ে এসেছে তাদের নারী, শিশু এবং বৃদ্ধদেরকেও। উদেশ্য, এদের বিপদ ও ভবিষ্যত চিন্তা করে যাতে কেউ যুদ্ধের ময়দান পরিত্যাগ না করে। হাওয়াযেন ও সাকিফ গোত্রের বিখ্যাত তীরন্দাজরা গিরিপথ ও গিরিখাতগুলোতে গোপন অবস্থান গ্রহণ করেছে।
অষ্টম হিজরী। শাওয়াল মাস। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নেতৃতে ১২ হাজার সৈন্যের মুসলিম বাহিনী হাওয়াযেন ও সাকিফ বাহিনীর মুখোমুখি এসে দাঁড়াল। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই প্রথমবারের মত একটি মিশ্র বাহিনীর নেতৃত দিলেন। মুসলিম বাহিনীতে সদ্য ইসলাম গ্রহণ কারী নও মুসলিম ছাড়াও প্রায় দু’হাজারের মত এমন লোক শামিল ছিল যারা তখনও ইসলাম গ্রহণ করেনি। বিশেষ করে মুসলিম সৈন্যদের অগ্রবর্তী বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন খালিদ ইবন অয়ালিদ। তাঁর অধীনে অধিকাংশই ছিল অতিমাত্রায় উৎসাহী নব্য দীক্ষিত তরুনের দল। সুসজ্জিত ও বিশাল বাহিনীর মনে সেদিন এমন একটি ভাবের সৃষ্টি হলোঃ ‘আজ আমদের সাথে যুদ্ধে জয়ী হয় এমন সাধ্য কার?’”
বিস্তারিতঃ http://amin-baig.blogspot.com/2013/11/blog-post_23.html
হুনাইনের যুদ্ধ নিয়ে আরো কিছু লিঙ্কঃ
http://www.ebanglalibrary.com/religious/?p=1314
http://www.shahriar.info/post-item/7968.html
ইখতিলাফী বিষয় নিয়ে সমালোচনা করবার সুন্নাতী তরিকা আছে। কাউকে ঢালাও ভাবে মুনাফিক বলা ঠিক নয়। আহলে হাদীস সালাফীদের ভারতীয় রূপ। এই সালাফীরা কিন্তু মক্কা ও মদীনার দুই মসজিদের খাদেম গত বহু দশক ধরে। রিবা শব্দের অর্থ চক্রবৃদ্ধি সুদ, এই অর্থ ধরে অনেক মুজতাহিদ সরল সুদকে হারাম বলেন নাই, এই জন্য সেইসব আলীমদের আমরা মুনাফেক বলতে পারি না। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞানী।
With regards to you question, it is the opinion of the Ahle Sunnah Wal Jamaat that a mujtahid can be correct or incorrect on a legal issue. However, one of the rulings is correct, but we do not know which one it is. Therefore, we do not criticize any mujtahids opinion. (Nurul Anwar p.246)
মন্তব্য করতে লগইন করুন