দ্যা ট্রুথ উইল সেট ইউ ফ্রি!!!
লিখেছেন লিখেছেন নূরা রাজাকার ১৩ মার্চ, ২০১৩, ১০:৩৬:৩৮ রাত
আমিও মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে যারা অপরাধ সংঘঠিত করেছিল তাদের প্রকৃত আইনের মাধ্যমে বিচার চাই, যদি এই দেশের আইন তাদের বিচার না করে তবে মহান রব্বুল আ'লামীনের নিকট তাদের কৃত জঘন্য কর্মের বিচার চাই। তিনি বিচারকেরও বিচারক, তিনিই প্রকৃত বিচারকারী।
এখন দেশে যারা সরকারের দুর্ণীতির, অপরাধের, অগনতান্ত্রিক আচরনের বিরোধিতা করবে, আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করবে তারাই ‘মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি’র লোক, ‘দেশের শত্রু’ জামাত-শিবির!! দারুন স্কেপ গোটিং!! যদি বর্তমানে বঙ্গবন্ধুও বিরোধিতা করতেন তবে তাকেও একইভাবে লেবেলিং করা হত!! আর যারা পক্ষে কথা বলবে তারা রাজাকার হলেও ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি-দেশের বন্ধু’; শেয়ার বাজারে ৯৮ হাজার কোটি টাকা মেরে দিলেও ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি-দেশের বন্ধু’; পদ্মা সেতুর দুর্ণীতি করলেও, ভারতের দালালি করলেও ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি-দেশের বন্ধু’; চিন্হিত সন্ত্রাসী এবং খুনি হলেও ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি-দেশের বন্ধু’; খুনিদের ফাঁসি মাফ করে দিলেও ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি-দেশের বন্ধু’; চরম দুর্ণীতিবাজ হলেও ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি-দেশের বন্ধু’।
এই যদি ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি-দেশের বন্ধু’ দের চরিত্র হয় তবে আমার এমন ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি-দেশের বন্ধু’ হওয়ার দরকার নেই বরং ‘মুক্তিযুদ্ধের নিরপেক্ষ শক্তির লোক হয়ে বেঁচে থাকাটাই শ্রেয় মনে করছি যাতে ভন্ডামি না করে দেশের সত্যিকার কোন উপকার করতে পারি, অবশ্য যদি সন্ত্রাসীরা(সহজেই অনুমেয়) সেটা করার সুযোগ দেয়।
যে বা যারা নাস্তিক রাজিবে জানাযায় অংশ নিয়েছে তারা আল্লাহর হুকুম সরাসরি অমান্য করেছে। কারন আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুর’আনে বলেন,
"আর তাদের (কাফিরদের) মধ্য থেকে কারো মৃত্যু হলে তার উপর কখনও নামায পড়বেন না এবং তার কবরে দাঁড়াবেন না। তারা তো আল্লাহর প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে এবং রসূলের প্রতিও। বস্তুতঃ তারা না ফরমান অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে।" (আল-কুর'আন, সুরা তাওবা, আয়াত-৮৪
নাস্তিকগুলো (এবং কিছু বিশ্বাসের চাদরে মোড়া ‘আস্তিক’) পুরো ঢাকা শহরটাকেই একটা লাইভ পার্কিং লট বানিয়ে রেখেছিল, লজ্জাজনক হলো যে, যারা মহান আল্লাহ রব্বুল আ’লামিন ও মহানবী (সঃ) কে অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং মহানবীর (সঃ) প্রিয় সহধর্মীনী হযরত আয়িশা সিদ্দিকাকে (রাঃ) নানা ভাবে অশ্লীল ভাষায় অশ্লীল মন্তব্য করেছে আমাদের সরকার তাদেরকে পুলিশি প্রোটেকশন দিচ্ছে আর যারা ঐ নাস্তিকদের সমালোচনা ও ধিক্কার জানাচ্ছে তাদের পুলিশ দিয়ে হত্যা করছে, পিটাচ্ছে এবং হাজতে পুরছে। যখন নাকুলা বাসেলি নাকুলা মহানবী (সঃ) ও তাঁর সাহাবাদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও সম্মানহানি করতে চাচ্ছিল তখন ঐ লোকগুলোই প্রতিবাদ করেছিল যারা পুলিশের হাতে এখন মার খাচ্ছে, শাহবাগের কতজন তরুন/বৃদ্ধ সেই সময় রাস্তায় যেয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল? এটা জানতে রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হয় না যে বর্তমান যারা অত্যাচারিত তারাই আসলে সত্যিকার ইসলাম পালন করছে অথবা চেষ্টা করছে, যারা মায়ের কোলে বসে বুকের দুধ খাচ্ছে আর বলছে আমরা মুসলিম আমরা ইসলাম পালন করছি, ‘প্রকৃত ইসলাম’ তারা শয়তানের দ্বারা ভয়ংকর ভাবে প্রতারিত হয়েছে, তাদের দিয়ে জীবনেও ইসলামের কোন উপকার আসবে না।
ইসলামের প্রথম দিকে মুসলিমরা মক্কাতে ব্যাপকভাবে অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হচ্ছিল, হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব (রঃ) ইসলাম গ্রহনের পর দেখলেন যে, অন্য সব সাহাবারা ইসলাম গ্রহন করে মার খাচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে অথচ তিনি এরকম কোন কিছুর শিকার হচ্ছেন না, তখন তিনি অনুমান করলেন তিনি বোধহয় ঠিক ইসলাম পালন করছেন না। তিনি তাঁর চাচা, আবু জাহল্ ইবন্ হিশামের নিকট গেলেন, দরজার কড়া নাড়ালেন, তাঁর চাচা আসলে তিনি বললেন, “আমি ইসলাম কবুল করেছি,” তখন তাঁর চাচা বললেন, ওটা করোনা"। তিনি তা প্রত্যাখান করেন। তখন আবু জাহেল তাঁর মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিল কিন্তু তেমন কোন প্রতিক্রিয়া জানাল না। তিনি ভাবলেন ব্যাপারটা কি! সবাই নির্যাতিত হয়ে একাকার হয়ে যাচ্ছে অথচ আমার কিছুই হচ্ছে না!! তিনি এঘটনা জৈনক সাহাবা এটা দূর থেকে দেখছিলেন, তিনি তাঁকে বললেন তুমি জামিলকে তোমার ইসলাম গ্রহনের কথা জানাও। কারন জামিল হল লিভিং ব্রডকাস্টিং এজেন্ট সে যখনই উমারের (র) কথা শুনলো তখনই সে কা'বাতে গিয়ে বলল, ইয়া কুরাইশ, খাত্তাবের পুত্র ইসলাম গ্রহন করেছে। তখন উপস্থিত সবাই উমারকে (রঃ) দেখতে পেয়ে মারধোর করতে লাগলো, তিনি ঐ লোকগুলোর মধ্য থেকে সবচেয়ে সম্মানিত লোকটিকে বাছাই করলেন এবং তার চোখে আঙুল ঢুকিয়ে দিলেন!! তখন সবাই পালিয়ে গেল এবং একটু পর আবার উমারকে (র) আক্রমন করল। আবার উমার (র) একই কাজ করলেন, একজন সম্ভ্রান্ত মক্কাবাসীকে ধরলেন এবং তার চোখের মধ্যে আঙুল ঢুকিয়ে দিলেন আর সে চিৎকার করতে লাগলো। এভাবেই চলতে থাকলো। কিন্তু আস্তে আস্তে উমারের (র) শক্তি কমে যেতে লাগলো এবং তিনি পরাস্ত হয়ে গেলেন। তিনি তখন বললেন, "আর যদি আমাদের সাথে ৩০০ লোক থাকতো তবে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতাম, হয় আমরা থাকতাম না হলে তোমরা থাকতে।" উল্লেখ্য যে ইসলামের প্রথম যুদ্ধে ৩১৩ (প্রায়) জন মুসলিম অংশ গ্রহন করে সে অর্থে উমারের (র) এটি ছিল প্রফেটিক ভিশন। যখন লোকজন তাকে মারধোর করতে লাগলো এবং তিনি খুশি হলেন এই ভেবে যে, যাক তিনি তাহলে এখন ইসলাম ঠিকভাবেই পালন করছেন!!
আল্লাহ রব্বুল আ’লামীন সবসময় যারা নির্যাতিত উৎপীড়িত তাদের পক্ষে থাকেন, যেমনটি তিনি অত্যাচারীত বনী-ইসরাইলের প্রতি ছিলেন এবং এ সম্পর্কে বলেন:
“দেশে যাদেরকে দূর্বল করা হয়েছিল, আমার ইচ্ছা হল তাদের প্রতি অনুগ্রহ করার, তাদেরকে নেতা করার এবং তাদেরকে দেশের উত্তরাধিকারী করার।“ (আল কুর’আন, সুরা: আল-কাসাস; আয়াত: ৫)
মহানবী (স) বলেন:
আবু ম’বুদ কর্তৃক বর্ণিত, রসুলে পাক (স) বলেন, “......এবং নির্যাতিত ব্যাক্তির আভিশাপকে ভয় কর কারন তার চাওয়া এবং আল্লাহ তা’য়ালার চাওয়ার মধ্যে কোন পর্দা থাকেনা।” (সাহিহ্ বুখারী: ভলিউম-২; বই-২৪, হাদিস নং ৫৭৩)
তিনি আরও বলেন:
“একজন মুসলিম আরেকজন মুসলিমের ভাই, তাই তাকে তার ভাইকে নির্যাতন করা উচিৎ নয়, উচিৎ নয় কোন অত্যাচারীর কাছে সমর্পণ করাও। যে তার ভাই এর অভাব পূর্ণ করবে, আল্লাহ তা’য়ালা তার অভাব পূর্ণ করবেন; যে তার ভাইকে একটু কষ্ট থেকে মুক্তি দেবে, আল্লাহ তা’য়ালাও তাকে পুনরুত্থানের দিন কষ্ট থেকে মুক্তি দেবেন, এবং যে একজন মুসলিমের কোন বিষয় গোপন করবে, আল্লাহ তা’য়ালাও পুনরুত্থানের দিন তার বিষয় গোপন করবেন।” (সাহিহ্ বুখারী: ভলিউম- ৩, বই নং- ৪৩, হাদিস নং- ৬২২)
Malcom X যথার্থই বলেছেন যে, “If you're not careful, the newspapers will have you hating the people who are being oppressed, and loving the people who are doing the oppressing.”
আমরা এর সত্যতা আফগানিস্তানে, ইরাকে, লিবিয়াতে, ভারতে, ল্যাটিন আমেরিকা সহ বিশ্বের অন্যান্য জায়গাতে দেখেছি, আর এখন দেখছি স্বয়ং বাংলাদেশে। আপনার যদি চোখ(অন্তরের) থাকে, তবে এটা বুঝতে পি.এইচ.ডির দরকার হয়না বর্তমানে যারা মার খাবে ইসলাম পালন করতে গিয়ে তারাই আসলে সত্যিকারের ইসলাম পালনের চেষ্টা করছে। যদি এখনো না বুঝে থাকেন তাহলে চোখে ভাল করে পানি দেন, জেগে উঠুন। আপনি যদি নিজেকে মুসলিম/বিশ্বাসী দাবি করেন তবে জেনে রাখুন আপনি জবাব দেবেন আল্লাহ রব্বুল আ’লামীনের নিকট- হাসিনার নিকট নয়, নয় ইসরাইলের নিকট। যারা নাস্তিকদের কথায় উঠছে বসছে তাদের জানা উচিৎ যে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহ রব্বুল আ’লামিনের নিকট তাদের এই কুৎসিত কর্মের জন্য জবাব দিতে হবে। তাদের ভাবা উচিৎ যে, তাদের অভিভাবক আল্লাহ রব্বুল আ’লামিন নাকি ঐ নাস্তিক/কাফিরগুলো?
আপনি খেয়াল করে দেখবেন ঐ নাস্তিকগুলোর লক্ষ্য শুধুমাত্র একেশ্বরবাদী ধর্মগুলো, তারা অন্য ধর্ম যেগুলো মুর্তি বা প্রকৃতি পুজা করে তাদের বিরুদ্ধে সেরকম কোন লেখালেখিই করেনা, কেন? কেন শুধুমাত্র পৃথিবীর ইতিহাসে একেশ্বরবাদী ধর্মগুলোই সমালোচিত হয়েছে এবং এর উপর বিশ্বাসীরাই শুধু অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হয়েছে? কারন তারা সঠিক ছিল, এবং সত্যের পথে যারা থাকবে তারা এরকম মারধোর খাবেই।
যদি একথা সত্য হয় যে জামাত বি.এন.পি র ঘাড়ে উঠেছে তাহলে একথা বিশুদ্ধ পানির মতই পরিস্কার যে নাস্তিকেরা আওয়ামী লীগের শুধু ঘাড়েই উঠেনি বরং ঘাড় মটকে ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছে। হয়তো আওয়ামী লীগের ‘আস্তিক’ সমর্থকেরা “Too Naive to See Through”।
যে জাতির নেতৃত্বে নারী থাকবে সে জাতি কখনোই উন্নতি করতে পারবে না, অসম্ভব! মহানবী (সঃ) বলেছেন, “সে জাতি কখনোই উন্নতি করতে পারবে না যার রাষ্ট্রীয় কার্যাবলি নারী দ্বারা পরিচালিত।” (বুখারী, কিতাবুল মাগাজি, হাদিস নং ৮২; তিরমিযী, কিতাবুল ফিতান, হাদিস নং ৭৫; সুনানে নাসাই, কিতাবুল কুদাত, হাদিস নং ৮
প্রথম আলো, সমকাল, জনকন্ঠ... এবং নতুন মিডিয়ার বেশিরভাগই নাস্তিক মনসিকতার, কাজেই তারা নাস্তিক্যবাদ প্রোমোট করবে এটাই স্বাভাবিক, একথা আলাদা যে, আমি আপনি সেটা বুঝতে পারলাম কি পারলাম না। বিধর্মীরা নাস্তিকতার আড়ালে এই সুযোগে ইসলাম বিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে, আর ‘মুসলিম’রা গোগ্রাসে গিলে যাচ্ছে। কই নাস্তিকরা তো হিন্দু, খ্রিস্টান বা বৌদ্ধদের ধর্ম নিয়ে কোন কথা বলছেনা, কেন ইসলামই শুধু ভিকটিম? সত্যে সবসময় চ্যালেন্জের সম্মুখীন হয়েছে এবং বিজয়ের বেশে ফিরে এসেছে, আল্লাহর ইচ্ছায় আবার বিজয়ী হবেই, দেখার বিষয় আপনার লয়ল্টি কোথায় নাস্তিকদের কাছে নাকি আল্লাহর কাছে???
বিষয়: রাজনীতি
১৩১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন