ফেনী জেলার কৃতীসন্তান শহীদ মেজর এম এ খালেক ১৯৪২-১৯৭১ সাল

লিখেছেন লিখেছেন ানিক ফেনী ০৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৮:৫৯:০৬ রাত



শহীদ মেজর এম এ খালেক ১৯৪২ সালে জানুয়ারি মাসে তৎকালিন ফেনী থানার অন্তরগত দাগনভূঞা ইউনিয়নের উদরাজপুর গ্রামের এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহন করে। তিনি ১৯৫৮সালের দাগনভূঞা আতাতুর্ক হাই স্কুল হইতে ১ম বিভাগে মাধ্যমিক পাস করেন। ঐ বছর তৎকালিন ফোজদার হাট ক্যাডেট কলেজ হইতে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬০ সালে তৎকালিন পাকিস্তান মেলেটারি একাডেমী কাবুল হইতে ১৯৬৩ সালের নভেম্বর মাসে কমিশন লাভ করেন। এবং তখন তিনি পাকিস্তানে গোলন্দাজ বাহীনিতে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে তিনি সিলেট সিমান্তে সেনাবাহিনীর মোকাবেলা করেন। অতঃপর ১৯৬৬ সালে তিনি ক্যাপটেন পদে পদন্নিত হন। ১৯৬৫ সনের ডিসেম্বর মাসে তিনি তৎকালিন পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থার ইনটার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্ট (ওঝও) যোগ দেন। ১৯৬৮ সালের তিনি চীন হইতে উচ্চতর প্রশিক্ষন লাভ করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি মেজর পদে উন্নিত হন। ওই বছরে তিনি তৎকালিন পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার চট্টগ্রাম ডিভিশনের কমান্ডার হিসাবে যোগদান করেন। যাহার হেড কোয়াটার ছিল কুমিল্লা কেন্টনমেন্ট। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের পূর্ব হইতে পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থার বাঙ্গালী অফিসারদের যথেষ্ট অবদান ছিল। কারন তাহারা পাকিস্তান সরকারের সমস্ত গোপনীয় তথ্য তৎকালিন রাজনৈতিক নেতাদের অবহিত করে দিতেন। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ সকালবেলা পূর্ব পাকিস্তানে কর্মরত ১১জন বাঙ্গালী অফিসারকে পাকিস্তানিরা আটক করেন এবং অত্যন্ত নির্মমভাবে হতা করেন।তার সরকারী জাবতীয় কাগজপত্র কুমিল্লা কেন্টনমেন্টে সংরক্ষিত আছে।শহীদ মেজর এম এ খালেক মৃত্যুকালে স্ত্রী, ১ পুত্র, ২ কন্যা সন্তান রেখে যান। বর্তমানে দাগনভ‚ঞা পৌরসভায় গনিপুর নিজ পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। (বর্তমান গণিপুর বাজার সংলগ্ন) আব্দুল কারী মুন্সি বাড়ি।১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সকাল বেলায় পূর্ব পাকিস্তানের ১৪জন আর্মি অফিসারকে পাকিস্তান কর্তৃক লেলিয়ে দেয়া হানাদার পেটুয়া বাহিনী গুলি করে মেরে কুমিল্লা ক্যান্টিনমেন্ট সংলগ্ন তৎকারীন ইষ্টান বাইন্ডারী রোডের পাশ্বে একটি গর্তে ১৪ জন আর্মি অফিসারকে গণকবর দেওয়া হয়। তাদের কোন খোজ ছিল না। ১৯৭২ সালের ২৯ মার্চ ক্যন্টনমেন্ট মসজিদের ইমামের দেয়া তথ্যমতে ৪৯ মাইনটের রেজিমেন্ট এর অফিসারের নেতৃত্বে গণকবর খুড়ে সেখানে পাওয়া গেছে কর্ণের আনোয়ার কর্ণেল জাহাঙ্গীর, ইন্টার সার্বিস ইন্টিলিজেন্সের শহীদ মেজর খালেক যার নং ৬৭৭২ মেজর আমজাদ মেজর শামছুজ্জামান সহ তাদেরকে শনাক্ত করা হয়। সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় সকলের বেইজ ও আইডেনটি কার্ড দেখে তবে সবচেয়ে আশ্বার্যের বিষয় হলো পরিহিত সাময়িক পোশাক ও পায়ের জুতা ছিল অক্ষত। শহীদ মেজর খালেককে ১৩ মাস ১ দিন পর তার ভাই মফিজুর রহমাননের বোন ভাগ্নিদের হাতে লাশ তুলে দিয়ে আর্মি অফিসার ক্যাপট্যেন নুরজ্জামানের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন চৌকস অফিসার তার কফিন নিয়ে দাগনভ‚ঞা নিজ বাড়ি গণিপুরে লাশ দাফন করা হয়। তৎকালিন কুমিল্লা ক্যান্টিনম্যন্টের অর্থায়নে তার কবরটি পাকা করে চতুরদিকে লোহার গ্রিল দিয়ে ঘেরাও করা হয়। ৪-৫ বছর কুমিল্লা ক্যান্টনম্যান্টের অফিসার পুস্পমালা অর্পন করলেও এরপর এ বীর সন্তানদের কবরে আর কেউ শ্রদ্ধা জানাতে আসে না। এভাবে অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকে শহীদ এম এ খালেকের কবর।

বিষয়: বিবিধ

১০৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File