ধর্ষনের পশ্চাতে লক্ষণীয় কিছু কারন
লিখেছেন লিখেছেন অবুঝ মানুষ ২৮ মার্চ, ২০১৩, ১২:০৯:০৪ রাত
বর্তমান বিশ্বে তথাকথিত আধুনিকতা ও পশ্চিমা সভ্যতার প্রভাবে মানুষের জীবন ধারাকে এমন একটি পর্যায়ে উন্নিত করেছে যে, মানবতার ভবিষ্যত এখন অনিশ্চিত।
মানুষের নৈতিক, পরিবার ও সমাজ জীবন আজ চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে।
নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা আর প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণে নানা ধরনের উপায় উপকরণের সহজলভ্যতার ফলাফল স্বরুপ নারীরা অহরহ ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে, এমনকি এই বিকৃত আচরণ থেকে নিষ্পাপ শিশুরা পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না।
বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এদেশও প্রতিবছর ধর্ষিত কিংম্বা ধর্ষণের পর নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার হয় অসংখ্য নারী ও শিশু । সাম্প্রতিক এক পুলিশি রিপোর্টে বলা হয়েছে দেশব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে এক জন ধর্ষিতা।
প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় ধর্ষণ একটি নিত্যকার সংবাদে পরিনত হয়েছে । অপর দিকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন গুলোর প্রতিবাদ, সভা ও সমাবেশ আর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ধর্ষণ বিরোধী অভিযান। সাম্প্রতিক প্রতিবেশী দেশ ভারতেও এক মেডিক্যাল ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে সমগ্র ভারত উত্তাল। এ আন্দোলনের মাঝেও সেদেশে আবার ধর্ষণের ঘটনা অব্যহত আছে।
ধর্ষণ প্রতিরোধে আমাদের দেশে আইন রয়েছে এছাড়াও ধষর্ণ প্রতিরোধে কঠোর আইন করার দাবি জানাচ্ছে সামাজিক সংগঠন গুলো। কিন্তু শুধু মাত্র আইন করে কি ধর্ষণ প্রতিরোধ করা সম্ভব? ধর্ষণ উৎসাহিত করার যাবতীয় উপকরণকে যদি মুলোৎপাটন না করা যায় তাহলে কি ধর্ষণ বন্ধ হবে?
আসুন দেখে নেই আমাদের সমাজে যে সমস্ত বিষয় গুলো ধর্ষণের পশ্চাতে ইন্দন যোগাচ্ছে :
• টেলিভিশন , সিনেমা, নাটক, বিজ্ঞাপন ইত্যাদিতে নারীদের অর্ধনগ্ন করে প্রদর্শন করা হচ্ছে। সকল বয়সের মানুষ এসব দেখে প্রভাবিত হচ্ছে।
• সুন্দরী প্রতিযোগীতার নামে নারীদেরকে অশ্লিল ভাবে উপস্হাপন করা হচ্ছে। যা দেখে যুব সমাজ তাদের প্রতি আকর্ষিত হচ্ছে এবং তাদের প্রবৃত্তির বাসনা চরিতার্থ করতে ধর্ষনের আশ্রয় নি্চ্ছে।
• মদ, ইয়াবা ও নেশা জাতীয় সহজ লভ্যতার কারণে যুব সমাজ নেশাগ্রস্থ হয়ে ধর্ষণের মত ঘৃণ্য কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
• ইন্টারনেটের পর্ণগ্রাফি সাইট এমনকি সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকেও পর্নগ্রাফি বৃদ্ধি পেয়েছে।
• শিক্ষা ব্যবস্থার সকল স্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামুলক না থাকায় নৈতিকতা বোধে উদ্ভুদ্ধ জাতি তৈরী হচ্ছে না।
• পর্ণ ছবি ও ভিডিওতে বাজার সয়লাভ । যা উঠতি বয়সের তরুনদেরকে ধর্ষণের দিকে ব্যপক ভাবে প্রভাবিত করছে।
• ধর্ষণ কারীদের কঠোর শাস্তি ও দ্রুত আইনে বিচার না হওয়া।
• কর্ম ও শিক্ষা ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের অবাধ মেলা মেশা।
• নারী ও পুরুষের পর্দা না মানা। মনে রাখতে হবে পর্দা প্রগতির অন্তরায় নয় বরং যারা পর্দার কারণে নিজেদের অবৈধ স্বার্থ চরিতার্থ করতে পারেনা পর্দা তাদের অন্তরায়।
আমরা জানি যে, যে কোন সমস্যার সমাধানের জন্য সে সমস্যার কারণ খুজে তার সমাধান করতে হয়। অথচ আমাদের সমাজ ব্যবস্থার নীতি নির্ধারকরা উপরোক্ত বিষয় গুলি নিয়ে চিন্তা গবেষণার মাধ্যমে সমাধান না করে বরং নানা ভাবে এসব কাজে উৎসাহ দিচ্ছে ও এসকল কাজের সুযোগ তৈরী করে দিচ্ছে আর তারা ধর্ষণ প্রতিরোধে সভা সমাবেশ, সচেতনতা, শাস্তি দাবি ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত যা গাছের শেকড় কেটে মাথায় পানি ঢালার নামান্তর মাত্র।
বিষয়: বিবিধ
১৫৫১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন