আইন লঙ্ঘন করে নতুন বার্তা ডটকম’র দুই সাংবাদিককে আটকে রেখেছে ডিবি পুলিশ

লিখেছেন লিখেছেন রাতদিন ০৯ মার্চ, ২০১৩, ০৮:৫৯:২৯ রাত

আইন লঙ্ঘন করে নতুন বার্তা ডটকম’র দুই

সাংবাদিককে আটকে রেখেছে ডিবি পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন বার্তা ডটকম

ঢাকা: শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের সংবাদ কাভার করতে যাওয়া নতুন বার্তা ডটকম’র দুই রিপোর্টারকে বিনা কারণে আটক করে শক্রবার থেকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আটক ব্যক্তিকে হাজির করতে হয়। কিন্তু এই দুই সাংবাদিকের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন করেছে ডিবি পুলিশ। পুলিশ আইনের কোনো তোয়াক্কা করছে না।

আটকের পর ডিবি অফিস থেকে বার বার তাদের ছেড়ে দেয়ার কথা বলা হলেও শনিবার রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত তাদের ছাড়েনি। তাদের নানা ধরনের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের সঙ্গে কাউকে যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না ডিবি।

এই বিষয়ে ডিবি কর্মকর্তারা একেক সময়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছেন। কেউ দায়িত্ব নিয়ে কোনো কথা বলছেন না।

এ বিষয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরী নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “আমরা তাদেরকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি আটক দুই সাংবাদিককে ছেড়ে দেবার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।”

এই বিষয় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “একজন আটক ব্যক্তিকে আইন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হয়। তা না করা হলে পুলিশও আইনের আওতায় আসতে পারে। কারণ আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে মামলা না দিয়ে এভাবে আটক রাখতে পারে না পুলিশ। এভাবে আটক রাখা অবৈধ। এভাবে আটক রাখার বিধান আইনে নেই।”

শুক্রবার শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের সংবাদ কাভার করতে গেলে নতুন বার্তা ডটকমের দুই রিপোর্টারকে আটক করে ডিবি পুলিশ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের আটক করা হয়। কী কারণে তাদের আটক করা হয়েছে সে ব্যাপারে পুলিশ কিছু বলছে না।

শুক্রবার বিকেল চারটা ৫০ মিনিটে গণজাগরণ মঞ্চের কাছাকাছি দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের পর প্রত্যক্ষদর্শীরা বলতে থাকেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের পাঁচতলা থেকে দুটি ককটেল ছুড়ে মারা হয়েছে। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা ওই ভবনের পাঁচতলায় ছুটে যায়। তাদের সঙ্গে নতুন বার্তা ডটকমের স্টাফ রিপোর্টার কাজী মুস্তাফিজ সেখানে যান। তিনি সেখান থেকে মোবাইল ফোনে নতুন বার্তা ডটকমের অফিসে নিউজ দিচ্ছিলেন। তার এবং ইমদাদুল হকের পাঠানো রিপোর্টটি নতুন বার্তা ডটকমে লিড নিউজ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচতলায় যারা গিয়েছিলেন, তাদের পুলিশ আটক করে। সাংবাদিক পরিচয় দেয়া এবং আইডি কার্ড দেখানোর পরও কাজী মুস্তাফিজকে বের হতে দেয়া হয়নি। পরে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না।

পরে রাত সোয়া আটটার দিকে কাজী মুস্তাফিজকে খুঁজতে নতুন বার্তা ডটকমের আরেক স্টাফ রিপোর্টার ইমদাদুল হক বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচতলায় ওঠেন। পুলিশ তাকেও আটক করে। এর পরপরই তাদের দুইজনকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।

দুই রিপোর্টারের সহকর্মীরা দিনভর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান কার্যালয়ে বার বার যোগাযোগ করছেন। কিন্তু ডিবির কর্মকর্তারা ‘এই ছেড়ে দিচ্ছি’, ‘এক্ষুণি ছেড়ে দিচ্ছি’ বলে কেবল কালক্ষেপণ করছেন।

এই বিষয়ে উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা) জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বরের সঙ্গে শনিবার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “দুই সাংবাদিককে দ্রুত ছেড়ে দেয়া হবে। আমরা বিষয়টি দেখছি।”

নতুন বার্তা/এসএফ

বিষয়: বিবিধ

১০৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File